Saturday, October 06, 2012

বৌদ্ধপল্লিতে হামলাঃ ৪০ হামলাকারী শনাক্ত, মূল শক্তি অজানা

রামুর বৌদ্ধপল্লি ও মন্দিরে হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত ৪০ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ ও এলাকাবাসী। তাদের মধ্যে আছেন জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গসংগঠনের সদস্য, মাদ্রাসাছাত্র ও রোহিঙ্গা নেতা। তবে কারা তাঁদের ইন্ধন দিয়েছে, তা এখনো অস্পষ্ট।পুলিশ, তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র ও প্রথম আলোর অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে।

রামুর ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত এবং নকশা অনুযায়ী করা হয়েছেঃ সাংবাদিকদের মিজানুর রহমান

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রামুতে বৌদ্ধমন্দির পোড়ানোর ঘটনাটি হঠাৎ উত্তেজনাবশত হয়নি। এটি পূর্বপরিকল্পিত এবং নকশা অনুযায়ী করা হয়েছে।

বৌদ্ধবিহারে হামলার পরিকল্পনা কক্সবাজার শহরে

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে হামলার পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এ সহিংস ঘটনার পরিকল্পনা হয়েছে কক্সবাজার শহরের একটি বাড়িতে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন অনিশ্চিত

সহসাই বাস্তবায়ন হচ্ছে না চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি। যদিও এ রেললাইনকে ঘিরে স্বপ্নের শেষ নেই চট্টগ্রামবাসীর। শুধুই কি চট্টগ্রামের মানুষ! দেশবাসীর বিশেষ আগ্রহ রয়েছে এ রেললাইন নিয়ে। আশায় বুক বেঁধেছিলেন ট্রেনে চড়ে পর্যটন শহর কক্সবাজারে যাবেন তারা।

রামুতে ড. মিজানুর রহমানঃ অপরাধী ধরার নামে নিরীহ কাউকে হয়রানি করা যাবে না

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান রামুর বৌদ্ধ বিহারগুলোতে তাণ্ডবের ঘটনাকে পূর্ব পরিকল্পিত উল্লেখ করে বলেছেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা দেশ ও জাতির শত্রু।

রামুতে বিএনপির তদন্ত কমিটিঃ সহিংস ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতাই দায়ীঃ মওদুদ

রামু উপজেলা সদরের বৌদ্ধবিহার ও বাড়িঘরে সহিংসতা রোধে সরকারের চরম ব্যর্থতা রয়েছে। রামুর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলাকে তাদের প্রতি চরম অবমূল্যায়ন বলেই মনে করছেন—

বৌদ্ধ জনপদে হামলাঃ গ্রেপ্তার জামায়াত নেতার সাফাই গেয়ে আ. লীগ নেতাদের প্রত্যয়নপত্র

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বৌদ্ধপল্লীতে হামলার ঘটনার কিছুক্ষণ আগে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মীদের 'উসকানিমূলক' মিছিল নিয়ে যখন দেশব্যাপী তর্ক-বিতর্ক চলছে, তখনই হামলায় জড়িত থাকার দায়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার একজন জামায়াত নেতার সাফাই গেয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।

রামু হামলার পরিকল্পনাকারীরা শনাক্ত

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধমন্দিরে অগ্নিকাণ্ড, ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় পরিকল্পনা ও হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পেরেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ, ছবি, আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য মতে এদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

Friday, October 05, 2012

রামুতে অপরাধীরা বীরের মতো হুমকি দিয়ে যাচ্ছে!

২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর। ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এ ৫ দিন পরও ২৯ সেপ্টেম্বরের ভয়াল তাণ্ডব ভুলতে পারছেন না কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন।

পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় রামুর ঘটনা ভয়াবহ রূপ পায়ঃ বিএনপির তদন্তদল

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছে বিএনপির তদন্তদল। একই সঙ্গে এ ঘটনা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় ভয়াবহ রূপ নেয় বলেও দাবি তুলেছে তারা।

রামুর ঘটনাস্থলে বিএনপির তদন্ত কমিটিঃ সহিংস ঘটনার জন্য প্রশাসনের ব্যর্থতাই দায়ী

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবিহার ও তাদের বাড়িঘরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা রোধে প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। প্রশাসন যদি যথাযত দায়িত্ববান হতো তাহলে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো যেত- এমনটি মনে করেন বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি।

দেশের সর্ববৃহৎ বুদ্ধ মূর্তিতেও ফাটল! ঐতিহ্য নষ্ট হলো শাবলের আঘাতে

আগ্রার তাজমহল করতে ২২ হাজার লোকের লেগেছিল ২০ বছর। কক্সবাজারের রামুতেও তৈরি হচ্ছিল তেমনি এক শিল্পকর্ম। তবে সম্রাট শাহজাহানের মতো অতটা বিত্তশালী নন এ শিল্পকর্ম তৈরির উদ্যোক্তারা।

মন্দিরে মিলেছে গান পাউডার ককটেল

কক্সবাজারের রামুতে স্মরণকালের জঘন্যতম ঘটনা সংঘটিত করতে গান পাউডার, পেট্রোল ও ককটেলের মতো বিস্টেম্ফারক ব্যবহার করেছে দুষ্কৃতকারীরা।

উখিয়া-টেকনাফে বিরোধী নেতারা আত্মগোপনে

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার এড়াতে জামায়াত ও বিএনপি নেতারা এখন গা-ঢাকা দিয়েছেন।

রামুর সহিংসতায় প্রশাসনই দায়ী, অভিযোগ বিএনপি তদন্ত দলের

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবিহার ও বাড়িঘরে সহিংসতা রোধে প্রশাসনের চরম ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটি।

রামুতে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

কক্সবাজারের রামু ও উখিয়া এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন হয়েছে।

Thursday, October 04, 2012

উখিয়ায় বৌদ্ধবিহারে হামলাঃ মিছিলটির নেতৃত্বে ছিল আ.লীগ, আসামি হলেন বিএনপি নেতারা

কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরে বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধবসতিতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি যেমন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিল থেকে শুরু হয়েছিল, তেমনি উখিয়ার কোর্টবাজারেও সহিংসতার শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের মিছিল থেকেই।

পোড়া চাল নিয়ে বৃদ্ধা অনঙ্গ বালার আহাজারি

রামুর মেরংলোয়া বড়ূয়া পাড়ার ৬০ বছরের বৃদ্ধা অনঙ্গ বালা বড়ূয়া। বাড়িঘর আসবাবপত্র, ব্যবহারের পোশাক সবই পুড়ে গেছে এ বিধবার।

হামলাকারীদের তালিকা পুলিশের হাতেঃ ফেঁসে যাচ্ছেন এমপি কাজল

সম্প্রীতির শহর রামুতে সংঘটিত স্মরণকালের জঘন্যতম ঘটনার নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ডদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা।

রামুর ঘটনায় বিপুল টাকার লেনদেন!

দেশের সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির ইতিহাসে গত শনিবার কক্সবাজারের রামুতে সংঘটিত ভয়াল ঘটনাটির নেপথ্যে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

কে ওদের অভয় দেবে?

ভর দুপুরে আশ্বিনের রোদহীন আকাশটাকে মনে হলো পুড়ে ছাই হওয়া বৌদ্ধপল্লির বেদনার ছবি। কক্সবাজারের ছোট্ট উপজেলা রামুর সদরও ছিল অস্বাভাবিক রকমের নীরব।

বৌদ্ধ জনপদে হামলাঃ প্রশাসনের ওপর ঝরছে মানুষের ক্ষোভ

ভয়াল শনিবার রাতের কয়েক দিন পর রামুর মানুষ এখন প্রশ্ন করছে একে অন্যকে, কেন এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটল তাদের শান্তি-সম্প্রীতির জনপদে?

বৌদ্ধ জনপদে হামলাঃ বৌদ্ধদের কাছে গিয়ে এখন হামলাকারীদের মায়াকান্না!

কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরে গত শনিবার রাতে যে সমাবেশ ও মিছিলের পর বৌদ্ধপল্লীতে ভয়াবহ হামলা হয়, সেই মিছিল-সমাবেশের হোতাদের পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার কথা শোনা যাচ্ছে।

Wednesday, October 03, 2012

বৌদ্ধদের ওপর সহিংসতাঃ অদৃশ্য শক্তিই বুদ্ধকে বাঁচিয়ে রেখেছে

‘৪০০ থেকে ৫০০ লোক শাবল-খুঁন্তি নিয়ে আধা ঘণ্টা ধরে এই মূর্তিতে আঘাত করেছে। কিন্তু দুটি অংশে ফাটল ছাড়া ১০০ ফুট লম্বা এশিয়ার বৃহৎ এই মূর্তির কিছুই হয়নি। অদৃশ্য শক্তিই বুদ্ধকে বাঁচিয়ে রেখেছে। অদৃশ্য শক্তির কাছে অপশক্তির পরাজয় হয়েছে।’

Tuesday, October 02, 2012

বৌদ্ধপল্লিতে হামলাঃ সন্দেহে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা

কক্সবাজারের রামু ও উখিয়ার বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হাত রয়েছে বলে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সন্দেহ করছেন। তাঁদের ধারণা, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে মুসলমানদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তার প্রতিশোধ নিতেই বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলা চালানো হয়।

হামলাকারীরা আসে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে

কক্সবাজারের রামুতে শনি ও রবিবার ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ঘটনাটিকে 'পরিকল্পিত' বলে জানতে পেরেছে এলাকাবাসী ও প্রশাসন। হামলাকারীদের বেশির ভাগ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগেই প্রস্তুতি নিয়ে দলে দলে ও ট্রাকে করে মিছিল নিয়ে এসেই উপজেলা সদরের বড়ুয়াপাড়ায় হামলে পড়ে।

Monday, October 01, 2012

কক্সবাজার শান্ত, ১১১ দুষ্ক‍ৃতকারী আটক

বৌদ্ধ বিহার, মন্দির ও বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের পরদিন সোমবার কক্সবাজারের রামু, টেকনাফ, উখিয়া এবং চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে উখিয়ায় রোববার রাত থেকে ১৪৪ ধারা আরোপ করা হয়েছে।

রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধ বসতিতে হামলা অগ্নিসংযোগ, সেনা মোতায়েন

কক্সবাজারের রামু, উখিয়া ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বসতি, মন্দির ও বিহারে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত থেকে গতকাল পর্যন্ত এ হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

রামু, টেকনাফ, উখিয়া, পটিয়ায় ১৯ বৌদ্ধবিহার ও ৪৫ বাড়িতে আগুনঃ বৌদ্ধপল্লিতে হামলা, বৃদ্ধার মৃত্যু

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় গতকাল রোববার রাতে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের পাঁচটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে দুষ্কৃতকারীরা। এতে দগ্ধ হয়ে বুচি শর্মা (৭০) নামের এক বৃদ্ধা মারা গেছেন।

বৌদ্ধ মন্দির ও বাড়িতে আগুন

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা শনিবার রাতে মিছিল করে ১১টি বৌদ্ধ মন্দির ও ১৫টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে। বড়ূয়া পরিবারের ৩০টি বসতবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।

হঠাৎ হামলা আগুনঃ রামু উখিয়া পটিয়া টেকনাফে বৌদ্ধ ও হিন্দুরা অসহায়

কক্সবাজারের রামু ও উখিয়ায় গত শনিবার রাতে হঠাৎ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর এবং বৌদ্ধমন্দিরে ব্যাপক হামলা শুরু হয়। হামলাকারীরা সংঘবদ্ধভাবে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ১৬টি বৌদ্ধমন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

রামুর পর উখিয়া, টেকনাফ, পটিয়াতে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরঃ আহত ২৫


কক্সবাজারের রামুর পর এবার উখিয়া ও টেকনাফের ২টি বৌদ্ধ মন্দির এবং বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালিয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া চট্টগ্রামের পটিয়াতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

Sunday, September 30, 2012

কক্সবাজারবাসীর ভালবাসায় সিক্ত হলেন বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোঃ জয়নুল বারী

২৯সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে কক্সবাজার জেলা নাগরিক সংবর্ধনা পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজিত বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের সকল রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী,

Saturday, September 29, 2012

নারীশিক্ষায় পিছিয়ে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ!

কক্সবাজার জেলার নারীদের উচ্চশিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ। আর ওই কলেজটি নানা সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত।

কক্সবাজারে সাগরের ঢেউ অতিক্রমের নেশায় মত্ত সার্ফাররা

বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ অতিক্রম করে জয়ের নেশায় মেতে উঠেছে সার্ফাররা। সার্ফিং বোট হাতে নিয়ে এক-একজন সার্ফার নেমে পড়ে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে।

কক্সবাজার সৈকতে পর্যটক নেই

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে হঠাৎ করে পর্যটকের উপস্থিতি কমে গেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন গতকাল শুক্রবার সৈকতে শতাধিক পর্যটকের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

Friday, September 28, 2012

লেখাপড়া না হওয়ায় স্কুলে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

রামু উপজেলার গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকটে বিঘি্নত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা। এমন বিদ্যালয়ও রয়েছে যেখানে সাড়ে ৩শ' থেকে ৫শ'র বেশি শিক্ষার্থীকে পাঠদান করছেন মাত্র দু'তিন শিক্ষক।

মহেশখালীতে বনের হরিণকে গুলি করে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মাংস বিক্রি করতে শিকারিরা বনের এক হরিণকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চকরিয়ায় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন

কক্সবাজারের চকরিয়া প্রি-ক্যাডেট গ্রামার স্কুলের খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

টেকনাফ থানায় হামলা, গুলি, পরিদর্শকসহ আহত ৫০

টেকনাফে বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদকে থানায় নেয়ায় তার সমর্থকরা হামলা করে সেখানে। এ সময় পরিদর্শক (তদন্ত)সহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

Thursday, September 27, 2012

কক্সবাজারে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত হয়েছে। দিনব্যাপী র‌্যালি, আলোচনা সভা, সৈকত পরিচ্ছন্নতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

Wednesday, September 26, 2012

চরম শিক্ষক সংকটে কক্সবাজার সরকারি কলেজ!

পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারের উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কক্সবাজার সরকারি কলেজ। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানামুখি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম।

কক্সবাজারে পিকআপ চাপায় স্কুলছাত্রী নিহত

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলায় ডুলাহাজারা এলাকায় একটি পিকআপের চাপায় মর্জিয়ারা খাতুন (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রী মারা গেছে।

Monday, September 24, 2012

কক্সবাজারে সড়ক সংস্কারের দাবিতে দুই ঘণ্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ

কক্সবাজারের রামু উপজেলার সড়কগুলো সংস্কার ও নদী ভাঙনরোধের দাবিতে দুই ঘণ্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

Saturday, September 22, 2012

কুতুবদিয়া-পেকুয়ায় কামারদের দুর্দিন

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া-পেকুয়ায় কয়েক যুগ আগে হাজার হাজার কামারের বসবাস ছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় অভাব-অনটনে কামার সম্প্রদায় পুরনো পেশা ছেড়ে দিয়েছে।

উখিয়ায় বনবিভাগের বনভূমি দখল

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের ওয়ালাপালং বনবিটের সরকারি বনভূমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। সংশিল্গষ্ট বনবিভাগের নাকের ডগায় ফিল্মি স্টাইলে সরকারি বনভূমি দখলের ঘটনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

টেকনাফে বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে বিষপ্রয়োগে হত্যা

কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নে ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক কিশোরকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে। তার নাম আজিজ সিকান্দর মোহাম্মদ সোহেল (১৩)।

পেকুয়ার ২০ হাজার মানুষ ফের পানিবন্দি

আবারও পানির নিচে তলিয়ে গেছে পেকুয়ার বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এ নিয়ে গত ২ মাসে ৭ বার প্লাবিত হয়েছে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ও প্রতিবেশী উজানটিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলসহ বিপুল এলাকা।

Friday, September 21, 2012

কক্সবাজারে এলপি গ্যাসঃ ৬৮২ টাকায় কিনে ১৭৫০ টাকায় বিক্রি

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) প্রতি সিলিন্ডার এলপি গ্যাস ৬৮২ টাকায় কিনে ১৭৫০ টাকায় বিক্রি করছে কক্সবাজারের ডিলাররা।

পেকুয়ায় প্রধান শিক্ষক নেই ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬টি বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে প্রধান শিক্ষক বিহীন ওইসব বিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমেও ব্যাঘাত ঘটছে।

Wednesday, September 19, 2012

সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে আটক ২৯

কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে পৃথক অভিযান চালিয়ে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে ২৯ জনকে আটক করেছে র‌্যাব ও বিজিবি।

দেশের সবচেয়ে বড়ো বুদ্ধমূর্তি রামুতেঃ নির্মাণ কাজ চলছে, ১৮ জানুয়ারি উদ্বোধন

কক্সবাজারের রামুতে দেশের সবচেয়ে বড়ো 'সিংহশয্যা বুদ্ধমূর্তি'র নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রায় ১০০ ফুট লম্বা এ মূর্তিটি মায়ানমারের ইয়াঙ্গুনের ধাম্বাদূত বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত সিংহশয্যা গৌতম বুদ্ধমূর্তির আদলে বানানো হচ্ছে।

কক্সবাজারে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপঃ আক্রান্তদের বেশির ভাগ শিশু

জেলার বিভিন্ন স্থানে আশংকাজনক হারে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া। গতকাল সোমবার কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক শেভরন, ডক্টরস চেম্বার, ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতাল,

কক্সবাজারে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক খুন

কক্সবাজারের পেকুয়া বাজার এলাকায় গত সোমবার রাতে হারাধন দাশ (৫৫) নামে এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তাঁর চেম্বারে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

Tuesday, September 18, 2012

কক্সবাজারে বন্যাদুর্গত পাঁচশ’ পরিবারকে উচ্ছেদ করলো বনবিভগি

কক্সবাজারের চকরিয়া ফাঁসিয়াখালী দক্ষিণ ঘুনিয়ায় বনবিভাগ গুড়িয়ে দিল বন্যায় বিপর্যস্থ দুর্গতদের শেষ আশ্রয় স্থল। পাঁচ শতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ আশ্রয় নেয়া বাসস্থান হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

Monday, September 17, 2012

কক্সবাজারে আগুন গুজবে ৩০ ছাত্রী আহত

কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরের উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে আগুনের গুজবে সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে প্রায় ৩০ ছাত্রী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।

Sunday, September 16, 2012

বন ও প্রকৃতি রক্ষায় বিশ্বসেরা'ওয়াংগারি মাথাই' পুরস্কার পাচ্ছেন টেকনাফের খুরশিদা

বন ও প্রকৃতি রক্ষায় অবদানের জন্য বিশ্বসেরা মহিলা হিসেবে 'ওয়াংগারি মাথাই' পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন টেকনাফের মহিলা মেম্বার খুরশিদা বেগম। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ইতালির রাজধানী রোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

বনাঞ্চল দখলে নিয়ে বাড়ি করছে সরকারদলীয়রা

কক্সবাজারের চকরিয়া ও রামুর বনাঞ্চল দখলে নিচ্ছে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। বনভূমি দখল করে তারা বাড়িঘর নির্মাণ করছেন। বিস্তারিত খবর পাঠিয়েছেন প্রতিনিধিরা :

ব্রিজ রক্ষায় উদ্যোগঃ রামুতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করলেন পাচঁ শতাধিক গ্রামবাসী

কক্সবাজারের রামু উপজেলার দুর্গম এলাকা কচ্ছপিয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রিজ রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ করে দিলেন ৫ শতাধিক সাধারণ মানুষ।

এক লাখ গাছ কেটে বন দখলঃ চকরিয়ার আ. লীগ নেতা গিয়াসসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক লাখ গাছ কেটে সংরক্ষিত বন দখলের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ৩০ নেতার নাম উল্লেখসহ মোট ৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মহেশখালীতে 'চর জাল' দিয়ে মাছ নিধন

মহেশখালীর সমুদ্র উপকূল থেকে নিষিদ্ধ চর জাল, বেহুন্দি জাল এবং কুম জাল দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ছোট চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অপরিণত পোনা মাছ অতিমাত্রায় আহরণের ফলে এ অঞ্চলের সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত।

মহেশখালীতে পাহাড় কেটে সড়কের সংস্কারকাজ চলছে!

পরিবেশ আইন অমান্য করে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে ভাঙা সড়কের সংস্কারকাজ চলছে।

চকরিয়ায় বনভূমি দখল করে ঘরবাড়ি তৈরির হিড়িক

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকায় সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে ঘরবাড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার যোগসাজশে লোকজন সরকারি জমি দখল করলেও কেউ বাধা দিচ্ছে না।

কক্সবাজারে ৫০০ একর ফসলি জমি পানির নিচে

কক্সবাজার সদর উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন চৌফলদণ্ডীতে জোয়ারের পানিতে ৫০০ একর ধানিজমি এখন পানির নিচে। জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে ফসলি জমি।

কক্সবাজারে বরজে মড়ক বাড়ছে পানের দাম

কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে বরজে মড়ক দেখা দেওয়ায় পানের সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে পানের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতি বিড়া (৮০টি) পান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায়। যা তিন মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকায়।

নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার কৃষিপণ্য পেকুয়ায় হিমাগার নেই!

পেকুয়া উপজেলায় হিমাগার না থাকায় প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার কৃষিপণ্য পচে নষ্ট হচ্ছে। এতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। পেকুয়ায় প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে কৃষকরা আমন-বোরোর পাশাপাশি নানা প্রজাতির সবজির চাষ করে আসছেন।

মহেশখালী দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় আদম পাচার

মহেশখালী দিয়ে সাগর পথে মালয়েশিয়ায় দেদার আদম পাচার করে চলেছে পাচারকারীরা। এরই মধ্যে মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টকে নিরাপদ পাচারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে একটি সিন্ডিকেট।

ফের ডাকঘরমুখী হচ্ছে সাধারণ মানুষ

মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের যুগে কেউ আর চিঠি লেখে না। চিঠিপত্রের তেমন আদান-প্রদান না থাকায় গ্রামের ডাকঘরগুলো ঝিমিয়ে পড়েছিল। ডাক পিয়ন বা পোস্টমাস্টারদেরও তেমন কাজ ছিল না; কিন্তু গ্রামের সেই পোস্ট অফিসগুলো এখন ফের সক্রিয়।

ইয়াবা ঠেকাতে কক্সবাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চেকপোস্ট

দেশে ইয়াবার একমাত্র প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের টেকনাফে সার্কেল অফিস এবং কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজু ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

উখিয়ায় ফসলি জমিতে বসতবাড়ি

উখিয়ার ফসলি জমিতে আবাসস্থল তৈরি হিড়িক পড়েছে। যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো তৈরির ফলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি। সরকার ফসলি জমিতে অবকাঠামো তৈরির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে উপজেলা প্রশাসন পর্যায়ে নীতিমালা আরোপ করলেও ওই নির্দেশ এখানে কার্যকর হচ্ছে না।

এসি ল্যান্ডশূন্য মহেশখালী ভূমি অফিস

দীর্ঘদিন সহকারী কমিশনার ভূমির (এসি ল্যান্ড) পদ শূন্য থাকায় মহেশখালী উপজেলার হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। শত শত ফাইল জড়ো হয়ে পড়ে আছে ভূমি অফিসে।

জোড়াতালি দিয়ে চলছে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের সংস্কার

কক্সবাজার-টেকনাফ ৭৯ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে জোড়াতালি দিয়ে। খানা-খন্দকে ভরা এ সড়কের বিভিন্ন স্থান সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা ব্যবহারের অনুপযোগী ভাঙা ইট দিয়ে ভরাট করলেও সংস্কারের নামে প্রহসন করা হচ্ছে বলে যানবাহন মালিক- শ্রমিকদের অভিযোগ।

পেকুয়ায় সিন্ডিকেট করে মাদক ব্যবসা

পেকুয়ার বিভিন্ন স্পটে প্রকাশ্যে মাদকের রমরমা বাণিজ্য চলছে। পেকুয়া উপজেলায় এ ব্যবসার সঙ্গে দু'শতাধিক ব্যক্তি কয়েকটি সিন্ডিকেট করে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে।

চকরিয়ায় খুচরা বিক্রেতার বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে এক খুচরা বিক্রেতার বিরুদ্ধে চোরাই পথে সার পাচারের অভিযোগ উঠেছে।

কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সৈকত পরিচ্ছন্নতা দিবস পালিত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পরিচ্ছন্নতা ও পর্যটকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে পালিত হলো ‘আন্তর্জাতিক সৈকত পরিচ্ছন্নতা দিবস’।

Thursday, September 13, 2012

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আমেরিকার দুই মন্ত্রী

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণে করেছেন আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতরের দুই উপ-সহকারী মন্ত্রী (ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি)। তারা বুধবার বিকালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় কুতুপালং শরণার্থী শিবির ঘুরে দেখেন।

Wednesday, September 12, 2012

টেকনাফ সৈকতের ঝাউবাগানে নতুন রোহিঙ্গা বস্তি!

মিয়ানমারের অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা নতুন বস্তি তৈরি করেছেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সমুদ্র সৈকতের ঝাউবাগানে। টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের তুলাতুলী এলাকার মোহনায় তৈরি করা হয়েছে এ নতুন বস্তি।

কক্সবাজারে ভেজাল বিরোধী অভিযানে ব্যবসায়ীদের হামলার চেষ্টা

কক্সবাজার শহরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধিন একটি ভ্রাম্যমাণ দল ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো সময় তাদের ওপর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হামলার চেষ্টা চালিয়েছে।

Thursday, September 06, 2012

১৪ কেজি ওজনের কোরাল শুঁটকির দাম ৩০ হাজার টাকাঃ ১২ কেজি শৈল মাছের শুঁটকি ৩২ হাজার

পর্যটন মওসুম শুরুর সাথে সাথে সৈকত নগরী কক্সবাজারের শুঁটকির দোকানগুলো সেজেছে বিশেষ সাজে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করেছেন নানান পদের শুটকি। এসব শুঁটকির মধ্যে বড় আকারের দুটি মাছ এখন সবার নজর কাড়ছে।

Saturday, August 25, 2012

কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে বিড়ম্বনাঃ সৈকতের ঝাউবাগান দখল করে কয়েক হাজার ঝুপড়িঘর

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের পাশে সৃজিত ঝাউবাগান দখল করে কয়েক হাজার ঝুপড়িঘর গড়ে উঠেছে। এতে ঝাউগাছ উজাড়ের পাশাপাশি ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা নিরাপদ ভ্রমণে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। শ্রীহানি ঘটছে সৈকতের।

Thursday, August 23, 2012

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়

ঈদের ছুটিতে পৃথিবীর দীর্ঘতম বেলাভূমির দর্শন এবং সাগরের নীল জলরাশির অপরূপ সৌন্দর্যকে বা উপভোগ করতে না চায়। তাই ঈদের টানা ছুটি উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।

Tuesday, August 21, 2012

ডাকছে সাগরের ঢেউ, পাহাড়ি ঝরনা

ঈদের টানা কয়েক দিনের ছুটিটা কোথায় কাটাবেন ভাবছেন? খুব বেশি চিন্তা না করে চলে যেতে পারেন কক্সবাজারে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি পাহাড়-অরণ্য আর নদী-ঝরনা সেখানে হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতির কোলে।

Friday, July 06, 2012

ইয়াবা নির্ভর উখিয়ার শতাধিক পরিবারের জীবিকা!

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নাফ নদী ও টেকনাফ স্থলবন্দর এবং আরকান সড়ক দিয়ে পানির মতো আসতে শুরু করেছে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা।

ইয়াবা নির্ভর উখিয়ার শতাধিক পরিবারের জীবিকা!

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নাফ নদী ও টেকনাফ স্থলবন্দর এবং আরকান সড়ক দিয়ে পানির মতো আসতে শুরু করেছে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা।
আর এতে চরমভাবে বিপর্যস্থ উখিয়ার বালুখালী এলাকার যুবক-যুবতী ও ছাত্রসমাজ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার মাসোহারা গ্রহণের মধ্যদিয়ে এ এলাকার শতাধিক লোক ইয়াবা বেচাকেনা ও পাচার করছে। তাদের জীবিকাও এখন ইয়াবাকে ঘিরেই।
ফলে নেশার ভয়ংকর থাবার কবলে গোটা উখিয়া। সব অপকর্মের মূলমন্ত্র মাদককে রোধ করা না গেলে এ এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সামাজিক মূল্যবোধের উত্তরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একটি চক্র এ এলাকায় ইয়াবা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চক্রটি বছরে কক্সবাজার থেকে প্রায় ৮শ কোটি টাকা ইয়াবা বাণিজ্য করে আসছে।

উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং-এ গড়ে উঠেছে ইয়াবা, হেরোইনসহ মাদকদ্রব্যের রমরমা ব্যবসা। অতিলাভের আশায় কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা প্রতিনিয়ত এ ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছে।

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত থেকে শুরু করে গ্রাম ও কক্সবাজার শহরের অলিগলিতে ফ্রিস্টাইলে বিক্রি হচ্ছে এসব মাদকদ্রব্য। উখিয়া সীমান্ত দিয়ে আসা ইয়াবা চোরাচালানী চক্রের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রও জড়িত বলে জানা গেছে। 

সূত্র জানায়, দুর্নীতিপরায়ন পুলিশসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আতাত করে ইয়াবা আমদানি করে মাফিয়াচক্র। ফলে সীমান্তের নিরহ জনগণের এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে না।

উখিয়া সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। তবে মাদক প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন।”

এদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিজ্ঞ ও সুশীল সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মনে করেন প্রশাসন ইচ্ছা করলেই এটি বন্ধ করা সম্ভব।

জানা গেছে, বিলাসবহুল গাড়িতে করে সুন্দরীরা পর্যটক সেজে ইয়াবার চালান দেশের অন্যান্য স্থানে অনায়াসে নিয়ে যায়। বিষয়টি জনপ্রতিনিধি, পুলিশ অবহিত থাকলেও তা প্রতিরোধে এগিয়ে আসে না। 

তবে এ অঞ্চলের বিজিবি ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাঝেমধ্যে দু’একটা ইয়াবা চালানসহ বিক্রেতাদের আটক করলেও মূলচক্রের কোনো সন্ধান মেলেনা। মূলচক্র থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বলেন, “যে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধ করার জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সব সময় প্রস্তুত। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য সংবাদের অপেক্ষায় তারা।”

সরেজমিনঃ রামুতে পাহাড়ি ঢল, হাজারো মানুষ নিঃস্ব

'আমি পাহাড়ি ঢল দেখিনি, দেখেছি সুনামি। সেই রাতে সাগর থেকে নয়, পাহাড় থেকেই এসেছিল সুনামি! এই সুনামি রামু উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। নিঃস্ব করে দিয়েছে হাজার হাজার মানুষের সুখের সংসার।'
গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে এভাবে ২৬ জুন রাতের আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের বিবরণ দিচ্ছিলেন রাজারকুল ইউপি মেম্বার শাহাবুদ্দিন।
বন্যার পানি এখনো সরে না যাওয়ায় চকরিয়ার তিন গ্রামের মানুষ এভাবে দিন কাটাচ্ছেন। ছবিটি কৈয়ারবিল এলাকার। ছবি : কালের কণ্ঠ, বন্যায় হেলে পড়েছে বসতঘর। রশি দিয়ে টেনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার চেষ্টা এক মহিলার। ছবিটি রামুর রাজারকুল এলাকা থেকে তোলা। ছবিঃ রাশেদ মজিদ
রামু উপজেলাজুড়ে এখন পাহাড়ি ঢলের ধ্বংসস্তূপ। রাজারকুলের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদুল হকের পুত্র আকতার কামাল গতকাল ঘরের দুটি টেলিভিশন এবং একটি ফ্যান মেরামত করতে যাচ্ছিলেন রামু সদর স্টেশনে।
তিনি জানান, তার ঘরের আলমিরায় রক্ষিত দলিল-দস্তাবেজস

চকরিয়ায় তিন গ্রামের বাসিন্দারা এখনো পানিবন্দি

মানবিক বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের তিন গ্রাম ছোট ভেওলা, ভরান্যারচর ও হামিদুল্লাহ সিকদারপাড়ায়। এখনো পানিবন্দি তিন গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। বন্যার ১০দিন অতিবাহিত হলেও পানি নেমে যায়নি। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরমে। ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতাও পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন দুর্গতরা।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার জাকির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তিন গ্রামের এই দুর্বিষহ অবস্থার কথা এখনো আমাকে কেউ জানায়নি। তবে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
সনাক চকরিয়ার সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল শাহাব উদ্দিন বলেন, 'জরুরিভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা না হলে তিন গ্রামে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ।'
কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, 'পানি নিষ্কাশনের জন্য সামান্য পরিমাণ জায়গা কাটতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে গত বছর ওই নালা সংস্কার করতে আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হলেও জমি মালিকের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।' ছোট ভেওলার কৃষক আবুল খায়ের বলেন, 'খুব সহসা বন্যার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা না হলে এলাকার উচ্চ ফলনশীল ৫শ একর জমিতে চাষ হবে না। এতে এলাকার কৃষিনির্ভর পরিবারগুলোর চরম খাদ্যসংকটে পড়বে।'

কুতুবদিয়ার ৫০ গ্রাম প্লাবিত, শিশুর মৃত্যুঃ পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ

সামুদ্রিক জোয়ারের পানিতে গতকাল বুধবার কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আষাঢ়ী পূর্ণিমার কারণে
পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন-চার ফুট বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এর ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার মানুষ। পানিতে ডুবে একটি শিশু মারা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দ্বীপের ছয়টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। দ্বীপের দক্ষিণে অমজাখালী গ্রামের এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে দুটি ঘর। বড়ঘোপ ইউনিয়নের জোয়ারের পানিতে এক কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে চর ধুরুং ও ফয়জনির বাপের পাড়া, কাইছারপাড়া কুইলারটেশসহ ১৭টি গ্রাম; দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে বাতিঘরপাড়া এলাকায় পাঁচটি গ্রাম, লেমশিখালী ইউনিয়নে সতরউদ্দিন, পেয়ারাকাটা, নয়াকাটা, দরবার ঘাট এলাকায় বাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে পরান সিকদারপাড়া, মহাজনপাড়া, এলাদাদ মিয়াপাড়া, মতির বাপের পাড়া, মলনচরসহ আটটি গ্রাম এবং আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কুমিরারছড়া জেলেপাড়া, আনিচের ডেইল, পূর্ব তাবলরচর, পশ্চিম তাবলরচর, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকা, হায়দার বাপের পাড়া, কাহারপাড়া, কাজীরপাড়াসহ ১২টি গ্রামে জোয়ারে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে এসব গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার পাঁচ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এসব গ্রামে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত ১০টি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া, গতকাল সকালে জোয়ারের পানির তোড়ে দ্বীপের দক্ষিণ অমজাখালী গ্রামে আবু তালেবের ছেলে আবদুল মান্নান মধু (৬) পানির তোড়ে ভেসে যায়। বিকেলে পানি নেমে গেলে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফিরোজ আহমেদ জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য পাউবোর বেড়িবাঁধের স্লুইস গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। জোয়ারের লোনা পানিতে প্লাবিত এলাকার ঘরবাড়ির লোকজনকে নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য স্থানীয় প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রামুতে দুই নেত্রীকে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অশালীন উক্তিঃ শিক্ষকদের বিক্ষোভ, বিপাকে প্রশাসন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে নিয়ে 'অশালীন উক্তি' করেছেন কক্সবাজারের রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসলাম খান।
গতকাল বুধবার রামু উপজেলার কলেজ, হাই স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের এক সমন্বয় সভায় ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অশালীন উক্তি করেন। এ ঘটনায় উপস্থিত উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের সমন্বয় সভা। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে রামু উপজেলা প্রশাসন। আসলাম খান মাত্র তিন সপ্তাহ আগে রামুতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন।
রামু উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসলাম খান রাঙামাটি জেলার নুইন্যাছড়ি উপজেলা থেকে গত ১৭ জুন রামু উপজেলায় বদলি হয়ে যোগদান করেন। এর আগে তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রামুতে যোগদানের পর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক আচরণ এবং অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে চলেছেন। চকরিয়া উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মদ্যপানসহ আরো নানাবিধ অভিযোগের কারণে তাঁকে নুইন্যাছড়ি উপজেলায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল।
রামু ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল রামু উপজেলার কলেজ, হাই স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের এক সমন্বয় সভা আহ্বান করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ওই সভায় শিক্ষা কর্মকর্তা আসলাম খান আকস্মিক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতাকে নিয়ে আপত্তিকর উক্তি করলে শিক্ষকরা প্রতিবাদ জানান। পরে শিক্ষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে শিক্ষা কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন।

টেকনাফে ৪৩ রোহিঙ্গা আটক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে বৃহস্পতিবার ৪৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড।
টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

আজ ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট এলাকা দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশ করার সময় কোস্টগার্ডের সদস্যরা দুটি ডিঙি নৌকাসহ ১৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে।

একই সময়ে শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশকালে একটি নৌকাসহ ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে বিজিবি। এ ছাড়া শাহপরীর দ্বীপের ঘোলাপাড়া এলাকা থেকে চারজন, সাবরাং ৪ নম্বর সুইস গেট এলাকা থেকে তিনজনকে আটক করে তারা। সকাল নয়টার দিকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকা দিয়ে পাঁচজন ও উনচি প্রাং এলাকা থেকে আরো চারজনসহ বিজিবি মোট ২৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৪২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান ও কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের লে. বদরুদ্দোজা বলেন, “বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল ও নিরাপত্তা-বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গারা এখনো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকায় তারা আমাদের হাতে ধরা পড়ছে। আজ ৪৩ জন রোহিঙ্গা আমাদের হাতে আটক হয়েছে। আজ কোনো একসময় তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো (পুশ ব্যাক) হবে।”

মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার ঘটনার পর ১১ জুন থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হাজার ৪৯ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে আটক করেন বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা।

কক্সবাজারে পর্যটন ভাতার দাবিতে সরকারি কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি

কক্সবাজারে পর্যটন ভাতার দাবিতে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি কর্মচারী সমিতির নেতারা। মঙ্গলবার সকালে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপি উল্লেখ করা হয়, দেশের পর্যটন রাজধানী হিসেবে খ্যাত কক্সবাজার জেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটে সবচে বেশি। এ জেলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন যাত্রার মান অত্যন্ত ব্যয় বহুল। গত বছর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে কক্সবাজার জেলাকে ব্যয় বহুল জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

সমিতির নেতারা জানান, ইতোপুর্বে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীদের ৩০ ভাগ হারে পাহাড়ী ভাতা দিয়ে আসছে সরকার।

এর আলোকে কক্সবাজারে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন যাত্রার কথা বিবেচনা করে পর্যটন ভাতা দেয়ার দাবি জানানো হয়। এসময় সমিতির সভাপতি মো. সাজেদ আলী, সাধারণ সম্পাদ এডি গোলাম মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

আরো ১২ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক

মিয়ানমারের দাঙ্গার পর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার সময় টেকনাফ থেকে আটক আরো ১২ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পুশব্যাক করেছে কোস্টগার্ড।
বুধবার ভোরে শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া নাফনদী সীমান্ত পয়েন্ট থেকে তাদেরস্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে মিয়ানমারে ৪২ জনকে পুশব্যাক করা হয়।

কোস্টগার্ড সূত্র জানায়, রাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া নাফনদী সীমান্ত পয়েন্টে মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করার সময় ওই ১২ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজারের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলাপাড়া পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ১৯ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরে দুপুরে জালিয়াপাড়া থেকে একজন রোহিঙ্গাকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শাহপরীর দ্বীপ লোকালয় থেকে আরো চার রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। পরে তারা আটক রোহিঙ্গাদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন।

আটককৃত ওই ২৪ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি ক্যাম্পে হেফাজতে রেখে বিকেল ৫টায় শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি ৪২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্ণেল জাহিদ হাসান।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে হোয়াইক্যং ঝিমংখালী পয়েন্ট থেকে চার জন ও ঊনচি প্রাং পয়েন্ট থেকে দু’জনকে আটক করা হয়। তাদেরকে মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

কক্সবাজারে সাগরের ভাঙ্গনে ৩ শতাধিক পরিবার উদ্বাস্তু

কক্সবাজারে বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের পাশাপাশি সাগরের ভাঙ্গনে উদ্বাস্তু হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার মানুষ। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়া এবং বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বসতবাড়ি হারিয়েছে কুতুবদিয়া দ্বীপের তিন শতাধিক পরিবার।
বন্যা কিংবা পাহাড় ধ্বসের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ নয় স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নিঃস্ব হচ্ছে কুতুবদিয়া দ্বীপের জেলে পাহাড় মানুষ। ইতোমধ্যে সাগরের থাবায় বসতভিটা হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে জেলে পাড়ার তিন শতাধিক হিন্দু পরিবার।

নিশ্চিহ্ন হয়েছে পাড়ার বিভিন্ন মন্দির ও শ্মশান। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে মানচিত্র থেকে জেলে পাড়ার অস্থিত্ব মুছে গিয়ে সাগরে পরিণত হবে। জলবায়ূ পরিবর্তন না বুঝলেও এখানকার মানুষ বুঝে গেছে সাগর ক্রমশ গ্রাস করছে তাদের বসতভিটা।

এলাকাবাসী জানান, কক্সবাজারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুতুবদিয়া ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে সাগর গর্ভে। ইতোমধ্যে বসতভিটা সাগরে রূপ নেয়ায় উদ্বাস্তু হয়েছে হাজারো পরিবার। উঁচু এবং টেকসই বেড়িবাঁধ দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না দ্বীপটি। পূর্ণিমার জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে সাগর ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও পরিস্থিতিটি উদ্বেগজনক। ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর এখানকার হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করছেন। সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধ্বসে মৃত্যু হয়েছে এসব উদ্বাস্তুদের অনেকেই।

Tuesday, July 03, 2012

মহেশখালীর সোনাদিয়া সৈকতঃ এক মাস পরপর পাচার হয় ১০ টন শামুক

কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া থেকে নির্বিঘ্নে শামুক পাচার চলছেই। এ সৈকত থেকে এক মাস পরপর পাচার হয় ১০ টন শামুক! এতে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করলেও সৌন্দর্য হারাচ্ছে সোনাদিয়া সৈকত।
জানা যায়, বন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে শামুক পাচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ওই প্রভাবশালী চক্র। দিনদুপুরে পাচারকাজ চললেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সোনাদিয়ার বেলাভূমিজুড়ে রয়েছে সাদা শামুক, যা দেখে পর্যটকরা বিমোহিত হন। বেলাভূমিতে রোদের আলোয় ঝিকমিক করা শামুকে এক ধরনের সুখ অনুভব করেন পর্যটকরা। কিন্তু গত দু'বছর ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বন বিভাগের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবাধে শামুক পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষকে ব্যবহার করে নামমাত্র মূল্যে তারা সংগ্রহ করছে বস্তাভর্তি শামুক।
সোনদিয়া সৈকত থেকে শামুক সংগ্রহ করতে দেখা গেল সিরাজ মিয়া (৩০), বুড়ি বেগম (৩৬) ও আনোয়ার হোসেনসহ (৫৫) অনেককে। তারা জানান, বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবেই তারা শামুক সংগ্রহের কাজে জড়িত রয়েছেন। প্রতিদিন সকাল থেকেই তারা শামুক সংগ্রহ করেন। ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা শামুক তারা বিক্রি করেন ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। কারা এ শামুক সংগ্রহ করে জিজ্ঞেস করা হলে তারা এর কোনো উত্তর দেননি।
সূত্র জানায়, মূলত স্থানীয় প্রভাবশালী ওই মহলটিই সংগ্রহকারীদের থেকে বস্তাভর্তি শামুক কিনে নেয়। তারা প্রতি বস্তা শামুক ৪০-৫০ টাকায় কিনলেও তা বিক্রি করে ১৪০-১৫০ টাকায়। চক্রটি সাগরপথে ট্রলারে করে এক মাস পরপর ১০ টন শামুক চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল গফর নাগু সমকালকে বলেন, 'আয়ের অন্য কোনো উৎস না থাকায় বেশ কিছু পরিবার সৈকতের শামুক বিক্রি করে সংসার চালায়।' অন্যদিকে গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর দাবি করেন, শামুক পাচারের সঙ্গে বন বিভাগের কেউ জড়িত নেই।
একই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইউএনও এটিএম কাউছার হোসেন বলেন, 'বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি বলেছেন, বর্তমান সরকার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।


সে লক্ষ্যে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অর্থায়নে উখিয়ার আড়াই লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার জন্য ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ১৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও গণরায় দিয়ে ক্ষমতায় আনার সুযোগ সৃষ্টি করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেল্গক্সের মাঠ প্রাঙ্গণে ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথাগুলো বলেন। উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. কাজল কান্তি বড়ূয়া। বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজালাল চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আদিল উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হোছাইন খান, রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, ডা. এসএম আবু সাঈদ, অধ্যক্ষ শাহ আলম প্রমুখ।

রামুকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন

রামু উপজেলায় অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণকে মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা ও রামু উপজেলাকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে


প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাবাসী। গতকাল সোমবার সকালে চৌমুহনী চত্বরে রামুকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত 'রামু উপজেলাবাসী'র মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি শেষে ইউএনওর মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ওই দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল।
মাস্টার মোহাম্মদ আলমের সভাপতিত্বে অধ্যাপক নীলোৎপল বড়ূয়া, সোয়েব সাঈদ, মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমদ, বৌদ্ধ ভিক্ষু প্রজ্ঞানন্দ, বশিরুল ইসলাম, এসএম জাফর, নুরুল ইসলাম সেলিম, নীতিশ বড়ূয়া, ছৈয়দ করিম, আমান উল্লাহ, পুলক বড়ূয়া, মোহাম্মদ ফেরদৌস, মানসী বড়ূয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কুতুবদিয়ার আজম সড়কের তাবলের চর পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন

কুতুবদিয়ায় বর্ষণ ও সামুদ্রিক জোয়ারের স্রোতে দ্বীপবাসীর বাসীর যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম আজম সড়কের আলী আকবর ডেইলের তাবলেরচর পয়েন্টে ভেঙে সাগরগর্বে তলিয়ে গেছে।

দ্বীপের আজম সড়কের আলী আকবর ডেইল শান্তি বাজার হতে তাবলরচর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৫ টি পয়েন্টে সড়ক ভেঙে খাল হয়ে গেছে। বর্তমানে কতিবিদিয়া দ্বীপের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত তাবলরচর গ্রামের ১০ হাজার মানুষ উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আজম সড়কের তাবলেরচর পয়েন্টে ভেঙে খাল হয়ে যাওয়ায় পথচারীসহ ওই গ্রামের বাসিন্দারা নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। তাবলরচর বায়ুবিদ্যুৎ এলাকায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকায় জোয়ারের পানি সরাসরি আজম সড়কে আঘাত করে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে আজম সড়কটি ভেঙ্গে যায়। স্কুল ,কলেজ, মাদরাসায় পড়ূয়া শিক্ষার্থীদের এ ভাঙ্গন সড়ক দিয়ে যাতাযাতের ক্ষেত্রে চরম দুভর্োগ পোহাতে হচ্ছে।
দ্বীপের তাবলরচর গ্রামের বাসিন্দা ও কুতুবদিয়া কলেজের শিক্ষার্থী শাহেনা বেগম,মর্জিনা,রেখা আকতার,রোজিনা আকতার জানান, আজম সড়কটি ভাঙা থাকায় উপজেলা সদরে অবস্থিত কলেজে যেতে পারছি না।
এদিকে গত শুক্রবার কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হাছিনা আকতার বিউটি ও ইউএনও ফিরোজ আহমেদ তাবলরচর গ্রামের আজম সড়কের ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
এ ছাড়া আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে ১২ কিলোমিটার, বড়ঘোপ ইউনিয়নে ১৫ কিলোমিটার, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে ১০ কিলোমিটার , লেমশীখালী ইউনিয়নে ১৫ কিলোমিটার, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে ১২ কিলোমিটার, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে ১৬ কিলোমিটারসহ ৮০ কিলোমিটার সড়ক ও রাস্তা গুলো প্রবল বৃষ্টির পল্গাবিনে ভেঙ্গে গেছে। এ খবর নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যানরা। বর্তমানে কুতুবদিয়া দ্বীপে ৬ ইউনিয়নের ভাঙ্গন রাস্তা দিয়ে গাড়ি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এ সব রাস্তায় খানা-খন্দক হওয়ায় স্বাভাবিক চলাচলে মারাত্মক দুভর্োগে পড়েছে পথচারীরা।

চকরিয়ায় ত্রাণ বরাদ্দের দাবিতে মেয়রের সংবাদ সম্মেলন

বন্যায় চকরিয়া পৌর এলাকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ ও ৯নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধের কয়েকটি পয়েন্টে বিশাল অংশ ভেঙে যাওয়ায় চকরিয়া পৌর শহর অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
জরুরি ভিত্তিতে এসব বাঁধ পুনর্নির্মাণ করা না হলে চলতি বর্ষায় আবার বন্যা হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কসহ পৌর শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার। শনিবার মেয়র বাসায় সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বন্যায় পৌর এলাকার বেড়িবাঁধ, কোচপাড়া বেড়িবাঁধ ভেঙে পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। তৎক্ষাণিক ভাবে পৌর মেয়রের উদ্যোগে ৫টি লঙ্গরখানা খুলে ১০ হাজার মানুষের খাবার ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মাঝে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এ ছাড়া পৌর তহবিল থেকে ১৫০ বস্তা চিড়া, ৫০ বস্তা চিনি বিতরণ করা হয়। সরকারীভাবে ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ বস্তা চিড়া ও ৩ টন চাউল। যা পৌর এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের জন্য অতি নগণ্য। ইতিমধ্যে পৌর এলাকায় এক মহিলা ও এক যুবকসহ ২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন এনামুল হক বাবু ,নুরুল আমিন, লক্ষণ দাশ, ছৈয়দ আলম, নাজেম উদ্দিন, বশিরুল আইয়ুব প্রমুখ।

রামুতে অবৈধভাবে বালু তুলছে প্রভাবশালীরা

রামু উপজেলার ২টি বালুমহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। উচ্চ আদালতের রায় এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে এ বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখা হয়েছে।
রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধোয়াপালং এবং ধেছুয়াপালং এলাকায় ২টি বালুমহাল রয়েছে। প্রায় ২৮.৩৮ একর এ ২টি বালুমহাল সরকারিভাবে ইজারা প্রদান করা হয়। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় গত ১২ জুন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক স্মারকসূত্রে এ সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে করা আপিল মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বালু মহাল ২টি থেকে বালু উত্তোলন আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে। কিন্তু এর পর গত ১৫ জুন থেকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বালুমহাল ২টি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। অর্ধশতাধিক শ্রমিক বালুমহাল ২টি থেকে বালু উত্তোলন করে রাস্তার পাশে মজুদ করছে। একই সঙ্গে ট্রাকভর্তি করে বিক্রি করছে প্রকাশ্যে। কর্মরত কয়েক শ্রমিক জানিয়েছেন, স্থানীয় আবদুল মাবুদ, জহির উদ্দিন, আবদুস সালাম বাদল, আবদুল গফুর এ বালু মহালের ইজারা নিয়েছেন এবং তাদের শ্রমিক হিসেব বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন বালু মহাল থেকে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ ট্রাক বালু উত্তোলন করা হয়। ১২ থেকে ১৩ শত টাকা প্রতি ট্রাক বালু বিক্রি করা হচ্ছে।
গত ১৭ মে হাইকোর্টের রিট মামলার আদেশ মতে, বালু মহাল ওই এলাকার মৃত অছিয়র রহমানের ছেলে নুর আহমদ সওদাগরকে দখল হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। এ নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রামু উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ সেলিম ও ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সলিমউল্লাহ নুর আহমদ সওদাগরকে বালুমহাল ২টির দখল হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল মামলা করা হয়। পরে আপিল মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বালুমহাল ২টি থেকে নুর আহমদ সওদাগরকে বালু উত্তোলন আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, বালু মহাল ২টি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ অবৈধভারে বালু উত্তোলন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন্যাঃ কক্সবাজারে ৩০০ কোটি টাকা ক্ষতি

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ।
গেল সপ্তাহজুড়ে প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ধস, জলাবদ্ধতায় জেলার টেকনাফ, উখিয়া, রামু, পেকুয়া, চকরিয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ৭২ ইউনিয়নের মানুষ, পশু, ফসলি জমি, চিংড়িঘের, লবণচাষ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধ, কারখানা, বন, বিদ্যুৎ, মৎস্য খামার, নলকূপ ও পানের বরজসহ ৬০ প্রকারের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জয়নুল বারী জানান, দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে যতটুকু সম্ভব ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক বিবরণ তুলে আনা হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, 'অনেক এলাকায় এখনো বন্যার পানি রয়েছে। দুর্গতদের জন্য ৩০ লাখ নগদ টাকা এবং ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।'

Saturday, June 30, 2012

কক্সবাজারে আরো ৩ জনের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ১২

কক্সবাজার জেলায় আরো তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় বন্যা, পাহাড় ধস ও বজ্রপাতে এ পর্যন্ত ৫১ জনের প্রাণহানির খবর পওয়া গেছে।
এদিকে রামুতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ১২ জনের সন্ধান এখনো মিলেনি।

কক্সবাজারে বন্যার পানি নেমে গেলেও তার ধ্বংসলীলার চিহ্ন রেখে গেছে। ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ, রাস্তা, কালভার্টসহ মানুষের ঘর-বাড়ি। বাঁকখালী নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে শত শত মৃত গবাদিপশু। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে চারদিকে চলছে বানভাসি মানুষের হাহাকার।

Friday, June 29, 2012

কক্সবাজারে আরো ৯ লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর সংখ্যা ৪৮

কক্সবাজারে  টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া আরো নয় জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে কক্সবাজারে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮ জনে।

বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। এক সপ্তাহ ধরে পানিতে ডুবে থাকা বসত-বাড়িগুলো এখন অধিকাংশই ভেঙে বসবাস অনুপযোগী হয়ে গেছে। তাই ঘরে ফেরা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে মধ্যে রয়েছে এলাকার বন্যাকবলিত মানুষ।
কেউ কেউ বাড়িতে ফিরতে শুরু করলেও তাদের অধিকাংশে’ই দিন কাটছে অনাহারে অর্ধাহারে। তাই কোথাও ত্রাণ বিতরণের খবর পেলেই ছুটে যাচ্ছে সবাই।

ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারিভাবে যে বরাদ্দ দুর্গত এলাকার প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

এদিকে উঁচু এলাকা থেকে বন্যার পানি সরে গিয়ে জেলার নিচু এলাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া গত বুধবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন বদরখালী, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা,ঢেমুশিয়া, কক্সবাজার সদরের চৌফলদণ্ডীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

বন্যাকবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে এখনো অবস্থান করছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনো অনেক রাস্তা-ঘাট ডুবে রয়েছে।

এদিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁর কাছে বিধ্বস্ত একটি ব্রিজের দু’পাশে মাটি ও ইট দিয়ে সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সতর্কতামূলকভাবে এই ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের তত্ত্বাবধানে পল্টুন দিয়ে ওই স্থানে বেইলি ব্রিজ স্থাপনের কাজ চলছে।

অপরদিকে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন বন্যা দুর্গতদের জন্য পাঁচশ’ মেট্টিকটন চাল এবং নগদ ৩০ লাখ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এ বরাদ্দ দুর্গত এলাকার প্রয়োজনের তুলনায়  খুবই কম।

কক্সবাজারে পানি কমলেও অন্তহীন দুর্ভোগে মানুষ

কক্সবাজারে বন্যার পানি নেমে গেলেও তার ধ্বংসলীলার চিহ্ন রেখে গেছে। ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ, রাস্তা, কালভার্টসহ মানুষের ঘর-বাড়ি।

বাঁকখালী নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে শত শত মৃত গবাদিপশু। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাবে চারদিকে চলছে বনভাসি মানুষের হাহাকার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল, রাজারকুল দক্ষিণ মিঠাছড়ি, কাউয়ারখোপ, রশিদনগর, খুনিয়াপালং, চাকমারকুল, জোয়ারিয়ানালা, গর্জনীয়া, কচ্ছপিয়া, ঈদগড় ইউনিয়নের প্রায় পাঁচশতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। তবে পানি নেমে গেলেও রয়ে গেছে অন্তহীন দুর্ভোগ।

রামু উপজেলার রাজারকুল এলাকার হাসমত আলী (৬৩) বাংলানিউজকে জানান, ৪/৫ ফুট পানিতে তলিয়ে ছিল পুরো এলাকা। এর ওপর পানির প্রচণ্ড স্র্রোত। ঘরের চাউনিতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে। সে সময় তার মতো এলাকার শত শত পরিবার আশ্রয় নিয়েছিলেন ঘরের ছাউনি, আশ্রয় কেন্দ্রে ও উঁচু কোনো জায়গায়। একদিন পানিবন্দি থাকার পর যখন পানি নেমে গেলো তখন দেখি চারদিকে শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন।

পাহাড়ি ঢলের পানি ও পললে তলিয়ে গেছে রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলার চাঁন্দের পাড়া পর্যন্ত বাঁকখালী নদীর দু`তীরের শতাধিক একর বীজতলা ও সবজি ক্ষেত। ফলে ওইসব এলাকায় চলছে কৃষকের হাহাকার। পানিতে মারা পড়েছে শতাধিক পোল্ট্রি ফার্মের কয়েক হাজার মুরগী। নদীতে ভাসছে মৃত গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগী। মাছের ঘের ও পুকুর একাকার হয়ে গেছে পানির সঙ্গে।

রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল, রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, কাউয়ারখোপ, রশিদনগর, খুনিয়া পালং, চাকমারকুল, জোয়ারিয়ানালা, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ও ঈদগড় ইউনিয়নের ৯৯টি ওয়ার্ডের সহস্রাধিক গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্রোতের তোড়ে এসব এলাকার শত শত গ্রামীণ সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। যার কারণে মানুষকে এখন হেঁটেই পৌঁছতে হচ্ছে গন্তব্যে। এসব সড়কের প্রায় এক ডজন ছোট-বড় কালভার্ট পানির তোড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বিলীন হওয়া সড়কে উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি। বাঁকখালী নদীর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ভূতপাড়ায় দু`টি, হাইটুপী, তেমুহনী, অফিসেরচর আতিক্কাবিবির ঘাট, অফিসেরচর ডাকবাংলো এলাকা, রাজারকুল, চাকমারকুল মিস্ত্রিপাড়া, নয়াপাড়া, চরপাড়াসহ অন্তত ১৫টি স্থানে বাঁধ ও সড়ক ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।

জানা যায়, রাস্তা ও কালভার্ট বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে চলাচল বন্ধ রয়েছে রামু চৌমুহনী-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক, রামু-মরিচ্যা আরাকান সড়ক, রশিদনগর-ধলিরছড়া সড়ক, চেইন্দা-রাজারকুল সড়ক, ঈদগাঁহ-ঈদগড়, তেচ্ছিপুল-লম্বরীপাড়া সড়কসহ রামুর ছোট-বড় শতাধিক সড়কে।

দুর্গত এলাকার মানুষ জানিয়েছে, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি অনেক এলাকায়। ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ চিড়া, গুড়, বিস্কিট, মুড়ি দিলেও তা খুবই অপ্রতুল। দুর্গত এলাকায় চলছে মানুষের হাহাকার।

জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোশতাক আহমদ বাংলানিউজকে জানান, এ রকম ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি রামুতে এই প্রথম। বর্তমানে বন্যাকবলিত প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বাংলানিউজকে জানান, স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিল। এখনও বেশিরভাগ মানুষ পানিবন্দি। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের রাস্ত-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, মৎস্য ও পোল্ট্রি খামার, অসংখ্য বসতঘর বন্যায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করলেও বর্তমানে সবখানেই খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

এদিকে, চকরিয়ায় দু`লক্ষাধিক মানুষ সড়ক ও বেড়িবাঁধের ওপর মানবেতর বসবাস করছে। চকরিয়া-বাঁশখালী আঞ্চলিক সড়কের চকরিয়া অংশে প্রায় ৩০ হাজার বানভাসি মানুষ গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি, মালামাল নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন।

পেকুয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম মিয়াজী বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৯৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা, ৬৫ হাজার লোক ও ১৫ হাজার পরিবারের বসতবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বাংলানিউজকে জানান, পেকুয়া উপকূল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত সরকারিভাবে ৫৯ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

পাহাড়কে বেআব্রু করায় এই দুর্যোগ

'একসময় সাগর ও নদীর তীর ছিল ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা, নিরাপদ ছিল পাহাড়। সাগর উন্মত্ত হলে, নদীর তীর ভাঙলে মানুষ আশ্রয় নিত পাহাড়ে।

পাহাড়ই ছিল এখানকার সাইক্লোন শেল্টার। কিন্তু এখন সবই যেন উল্টাপাল্টা। পাহাড় এখন সবচেয়ে অনিরাপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথায় যাবে মানুষ?' সাগরপারের বাসিন্দা কঙ্বাজারের প্রবীণ শিক্ষাবিদ মোসতাক আহমদ গত কয়েক দিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রসঙ্গে দীর্ঘশ্বাস ফেলে কালের কণ্ঠকে বলেন এ কথা।
মোসতাক আহমদ বলেন, "সামুদ্রিক ঝড়-ঝঞ্ঝা এ জীবনে কম দেখিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অসহায় মানুষ সব সময় আশ্রয় নিয়েছে পাহাড়ে। কিন্তু এমন কী যে হলো_এই পাহাড়েই কিনা এখন নেমে এসেছে দুর্যোগ। 'পাহাড়ে বন্যা'_এ কথা বলতেও লজ্জা করছে। পাহাড়ের আব্রু বলতে যা বোঝায় সেই গাছগাছালি মানুষই ধ্বংস করেছে। উলঙ্গ হয়ে গেছে পাহাড়গুলো। এ কারণে দুর্যোগ নেমে এসেছে।"
কঙ্বাজার-বান্দরবানের সীমানাসংলগ্ন এলাকা কঙ্বাজারের রামু, উখিয়া, চকরিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকা গত দুই দিন পাহাড়ি ঢলে লণ্ডভণ্ড হয়েছে। অনেক পাহাড় ধসে গেছে। ঢলের পানিতে এসব এলাকার শত শত মাটির ঘর মিশে গেছে মাটির সঙ্গে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী গ্রামের একই পরিবারের সাতজন মঙ্গলবার প্রাণ হারিয়েছে এ রকম একটি মাটির ঘর ধসে পড়ায়। পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত বাঙালিদের পাশাপাশি আদিবাসীরাও এখন আতঙ্ক ও চিন্তায় পড়েছে আকস্মিক এই পাহাড়ি দুর্যোগ নিয়ে। বাইশারী মধ্যম চাকপাড়ার বাসিন্দা উসালা চাক (৫০) বলেন, 'পাহাড়ে বর্ষণ হয় বটে, সেই বর্ষণের পানি তৎক্ষণাৎ নেমে যায়। কিন্তু এবার পানিতে ডুবে গেছে পাহাড়ি এলাকা। এ এলাকায় শতাধিক চাক ও মুরুং উপজাতির ঘর মঙ্গলবারের বর্ষণজনিত দুর্যোগে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।' লামার ফাইতং এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, একদম নীরবেই পাহাড়ে এই দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। এ রকম সাধারণত হয় না। এই দুর্যোগে পাহাড়ের রাবার বাগান থেকে শুরু করে উপজাতিদের জুম চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কঙ্বাজারের রামু উপজেলার ঈদগড়ের হাসনাকাটা গ্রামের ৯৫ বছর বয়সী ফরিদুল আলম বলেন, 'বন্যা হয় নিচু এলাকায়, এখন সেই বন্যা পাহাড়ে আঘাত করায় হতবাক হয়েছি। আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনছি পরিবেশ নষ্ট করে।'
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোকতার আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একটি দেশে ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের তা নেই। তদুপরি আমাদের পাহাড়গুলোতে বন না থাকায় সামান্য বর্ষণেই মাটি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। ফলে নতুন নতুন দুর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে।'

কক্সবাজারে আরও ৪ লাশ উদ্ধারঃ মৃতের সংখ্যা ৪৮

কক্সবাজার জেলায় আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় চলমান দুর্যোগে ৪৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদিকে রামুতে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ১২ জনের সন্ধান এখনও মিলেনি।

শুক্রবার দুপুর ২টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুটাখালীতে পানিতে ভেসে যাওয়া ২ শিশুর লাশ পাওয়া যায়।
শুক্রবার চকরিয়া উপজেলায় এক নারীর ও রামু উপজেলার মিঠাছড়িতে এক শিশুর লাশ পাওয়া যায়। ফলে কক্সবাজারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এ পর্যন্ত কক্সবাজারে পাহাড় ধসে মারা গেছেন ২৯ জন, বজ্রপাতে ৬ জন, দেয়াল চাপায় ৩ জন ও পানিতে ডুবে মারা গেছেন ১০ জন।

এর মধ্যে পাহাড় ধসে রামু উপজেলায় ৪ জন, চকরিয়ায় ১০ জন, পেকুয়ায় ২ জন, মহেশখালীতে ৩ জন ও উখিয়া উপজেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বজ্রপাতে চকরিয়া উপজেলায় ৩ জন, পেকুয়ায় ২ জন ও মহেশখালীতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দেয়াল চাপায় কক্সবাজার সদরে ২ জন ও মহেশখালীতে ১ জনের এবং পানিতে ডুবে কক্সবাজার সদরে ৩ জন, চকরিয়ায় ১ জন, রামুতে ৪ জন ও কুতুবদিয়ায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী বাংলানিউজকে মোট ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।

কক্সবাজারে বন্যার পানি কমলেও বাড়ছে দুর্ভোগ

কক্সবাজার জেলায় সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনের দুর্ভোগ  কমছে না। বিশুদ্ধ পানিসহ পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে প্লাবিত মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।

এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৯ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখ টাকা, ৪২ বস্তা চিড়া ও ৫০০ কেজি গুড় ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ইতোমধ্যে কক্সবাজার থেকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন কোনো সংকেত দেওয়া হয়নি।

বুধবার সকাল থেকে কক্সবাজারের বৃষ্টিপাত কমে গেছে। বুধবার পুরোদিন বিরতি দিয়ে হালকা বৃষ্টি হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে, কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলার প্লাবিত এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, টানা ৫ দিনের বৃষ্টিতে জেলার ৫২টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি জানান, এর মধ্যে ২১টি ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এসব ইউনিয়নে জরুরি ভিত্তিতে ৩৯ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখ টাকা, ৪২ বস্তা চিড়া ও ৫০০ কেজি গুড় ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার সদর, পেকুয়া, চকরিয়া, কুতুবদিয়া, রামু, মহেশখালী, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার প্লাবিত হয়। প্লাবিত এলাকার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। প্লাবিত এলাকার সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলার প্রধান নদী বাঁকখালী, মাতাহুরীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ফরিদ কলেজ সংলগ্ন সেতুতে ফাটলের কারণে এখনো কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া অন্য কয়েকটি সড়কেও যানচলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, বন্যায় রামু উপজেলার ৯৯টি ওয়ার্ড পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো.জয়নুল বারী, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জসীম উদ্দিন, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবী চন্দসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার রামুর বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন । বন্যাকবলিত এলাকায় হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু খাদ্য ও পানি সংকটে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।

এবিষয়ে কাউয়াখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক বাংলানিউজকে জানান, কাউয়াখোপ এলাকায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বেশিরভাগ মানুষ ঘরের চালে (ছাদে) আশ্রয় নেন। সরকারিভাবে ব্যবস্থা না থাকায় তারা নিজ উদ্যোগে স্পিডবোট ভাড়া করে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
বর্তমানে এ ইউনিয়নের প্রতিটি ঘরে ঘরে খাদ্য ও পানি সংকট চলছে। সরকারিভাবে ৮ বস্তা চাল-ডাল ও ৩ বস্তা চিড়া বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার সংকট খুব প্রকট। এ সংকট মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

উখিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে ওই এলাকায় ২৫টির বেশি চিংড়ি ঘের তলিয়ে গিয়ে লাখ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাহমুদুল হক চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষকে সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় দিয়ে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য তালিকা তৈরি করতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলায় বন্যায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চকরিয় পৌর শহরের ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে পৌর বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও পৌর শহর ৭/৮ ফুট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। মাতামুহুরী নদীর দুই তীরের কয়েক শ ঘরবাড়ি, সহস্রাধিক গরু, ছাগল ও অসংখ্য হাসমুরগি পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গেছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চকরিয়া, মহেশখালী সড়ক, চিরিংগা-পেকুয়া সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ঢলের পানি উপচে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

চকরিয়া পৌরসভা ও উপজেলার কয়েকটি এলাকায় পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাফর আলমের উদ্যোগে লঙ্গরখানা খুলে মানুষকে খাবার দেওয়া হচ্ছে।

চকরিয়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক বাংলানিউজকে জানান, চকরিয়ায় প্রায় ৪০ হাজার একর চিংড়ি ঘেরের ৫ শতাধিক চিংড়ি ঘের ও সহস্রাধিক পুকুর পাড় উপচে শতকোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। চকরিয়া বিমানবন্দরে সেনাক্যাম্পে ঢলের পানি ঢুকে তাদের স্থাপনাগুলো ৩ ফুট পানির নিচে রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ থেকে ৫ হাজার কেজি চিড়া, ২ হাজার কেজি গুড় ও ৮ টন চাল বানভাসীদের মধ্যে বিতরণ করেছেন।

পেকুয়ায় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

পেকুয়ার মগনামার চেয়ারম্যান শহিদুল মোস্তফা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রায় ৫ চেইন বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে পুরো মগনামা ইউনিয়নে জোয়ার-ভাটা চলছে।

উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ওই এলাকায় এখন বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই খাজা আলামীন বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে ৭ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধস, বজ্রপাতে কক্সবাজারের ৪৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছে, অসংখ্য গবাদিপশু।

Thursday, June 28, 2012

বর্ষণ ও জোয়ারে প্লাবিত কুতুবদিয়া ক্রসড্যাম স্লুইস গেটের দাবি

১৯৯১ থেকে গত ২২ বছর বেড়িবাঁধের কোনো সংস্কার না হওয়ায় ওই ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে বিক্ষুব্ধ সাগরের জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ভাসছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া।

পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে এ উপজেলার প্রাণকেন্দ্রসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আর গৃহহারা হয়েছে বেড়িবাঁধের আশপাশের হাজার হাজার মানুষ। পানিবন্দি হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আউশ চাষের নতুন রোপা ও বীজতলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘর-বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, মন্দির, মসজিদ ও পুকুরের মাছ। দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতিসহ হাজার হাজার মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউল করিম বলেন, পানি সরানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে জলাবদ্ধতা সহজে কাটবে না।
কৈয়ারবিলের পশ্চিমে বেড়িবাঁধের বাইরে পড়া হাজারো ভূমিহীন পরিবার জোয়ার ও বৃষ্টির অথৈ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ভঙ্গুর বেড়িবাঁধ, জলাবদ্ধতায় বসতঘর নষ্ট, আউশ ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য ইউএনওকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন বলে চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর জানান। দক্ষিণ ধূরুংয়ের অলিপাড়া, মদন্যা পাড়া, বাতিঘর পাড়া ও পশ্চিম আলী ফকির ডেইল এলাকার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে বহু ঘর-বাড়ি, ফসলের বীজতলা নষ্টসহ জলাবদ্ধতার কথা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল-আজাদ। উত্তর ধূরুংয়ের নজুবাপের পাড়া ও ফয়জানির পাড়া এলাকার ভাঙা বাঁধ দিয়ে সাগরের পানি এবং ভারি বর্ষণে কাঁচা ঘর-বাড়ি নষ্টসহ জলাবদ্ধতার বর্ণনা দিয়েছেন চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহ। আলী আকবর ডেইলের কুমিরা ছড়া, তাবালেরচর ও তেলিপাড়া এলাকায় ঘর-বাড়ি নষ্ট, বেড়িবাঁধের ভঙ্গুর দশা ও জলাবদ্ধতার চিত্র তুলে ধরেন চেয়ারম্যান ফিরোজ খান চৌধুরী। বড়ঘোপের দক্ষিণ অমজাখালী এলাকায় অনবরত জোয়ারের পানি ঢুকছে, পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার কারণে উপজেলা প্রশাসনিক ভবন ও উত্তর বড়ঘোপের বিস্তীর্ণ এলাকার ঘর-বাড়িতে পানি ওঠার কথা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান শাকের উল্লাহ। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য দ্বীপ থেকে বইরের সঙ্গে যোগাযোগ কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে জরুরি খাদ্যসহ অন্যান্য মালামালের দাম বৃদ্ধি ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে ভোক্তাসাধারণ জানিয়েছেন।
দক্ষিণ ধূরুং ও লেমশীখালী ইউপি চেয়ারম্যান ক্রসড্যাম স্লুইস গেটে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে বলে দাবি করেন। জরুরি বাঁধসহ ক্ষতির শিকার লোকজনের পুনর্বাসনের দাবি করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ। প্রত্যন্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে পানি সরানোর প্রচেষ্টাসহ জরুরি বেড়িবাঁধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা জানিয়েছেন ইউএনও মো. ফিরোজ আহমেদ। খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে বর্ষার জন্য উত্তর ধূরুংসহ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জরুরি বাঁধের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান কুতুবদিয়া বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আ.শ.ম. শাহরিয়ার চৌধুরী।

কক্সবাজারে পাহাড় ধস ও বজ্রপাতে আরও ২০ জনের প্রাণহানি

টানা বৃষ্টিপাতের মধ্যে পাহাড় ধস, দেয়াল চাপা ও বজ্রপাতে কক্সবাজারে আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও প্রায় ১২ জন।

জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের প্রাপ্ত তথ্যমতে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাহাড় ধসে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় সাতজন, রামু উপজেলায় সাতজন, বজ্রপাতের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলায় দুইজন, পেকুয়া উপজেলায় দুইজন, কুতুবদিয়া উপজেলায় একজন ও বাড়ির দেয়াল চাপায় কক্সবাজার সদরে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার দিনে পাহাড় ধসে মহেশখালী উপজেলায় মারা গেছেন চারজন, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলে একজন, চকরিয়া উপজেলায় একজন এবং পেকুয়া উপজেলায় মারা গেছেন একজন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী মঙ্গলবার দিনে ও রাতে মোট ২৭ জনের লাশ উদ্ধারের ব্যাপারে নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণের কারণে জেলায় পাহাড় ধস, বজ্রপাত, বাড়ির দেয়াল চাপায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সোনাঘোনা পাড়ায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের চারজনসহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাত তিনটার দিকে রামু উপজেলার কাউয়ারকোপ ইউনিয়নের মধ্যম পাহাড়পাড়ায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই দুই এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়া বজ্রপাতের ঘটনায় কুতুবদিয়া উপজেলায় বড়ঘোপ ইউনিয়নের লাল ফকিরপাড়ার খুকি আখতার (১৫) নামের এক কিশোরী নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে চকরিয়া উপজেলায় দুইজন, পেকুয়া উপজেলায় দুইজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলেও এদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার রাত ১২টায় বাড়ির দেয়াল চাপায় কক্সবাজার সদরে ঈদগাঁও ইউনিয়নের দরগারপাড়া এলাকার আনোয়ারা বেগম (৫০) নামের এক নারী নিহত হয়েছে। আনোয়ারা বেগম ওই এলাকার মোহাম্মদ ইসলাম স্ত্রী।

অপরদিকে, রামু উপজেলার গর্জনীয়ার গর্জই খালে পারাপারের সময় নৌকা ডুবে ১২ নিখোঁজ রয়েছেন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় সাগর এখনো উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত বলবৎ রাখতে বলা হয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৩৭ মিলিমিটার।

অব্যাহত ভারি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক, চকরিয়া-মহেশখালী সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দুযোর্গ কবলিত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়ক ও জনপদ বিভাগ, সেনাবাহিনী যৌথভাবে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও ব্রিজ সংস্কার শুরু করেছে।

কক্সবাজারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০

কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। বন্যায় পাহাড় ধস, দেয়ালচাপা, বজ্রপাত ও ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে এ পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম।

পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ডুবে গেছে জেলার ছয়টি উপজেলার ২০ হাজার বসতবাড়ি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ। ঢলের পানির তোড়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও নাছির ব্রিজ ধসে যাওয়ায় মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে কক্সবাজারের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, পাহাড় ধসে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পাতাবাড়িতে একই পরিবারের চারজনসহ সাতজন, রতনা পালং এলাকায় তিনজন, মহেশখালীতে চারজন ও চকরিয়ায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বসতবাড়ির দেয়ালচাপা পড়ে কক্সবাজার সদরের দুইজন, রামুর কাউয়ারখোপের তিনজন, মহেশখালীতে একজন ও পেকুয়ায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

বজ্রপাতে কক্সবাজার সদরে তিনজন, চকরিয়ায় একজন, পেকুয়ায় একজন ও কুতুবদিয়ায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়া পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে রামুতে চারজন ও চকরিয়ায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জয়নুল বারী জানান, দুর্ঘটনাস্থলগুলো খুব দুর্গম এবং বন্যা কবলিত হওয়ায় এখনো উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ৩৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ দিকে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া গ্রাম ও উখিয়ায় ১৮ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চকরিয়া, রামু ও সদর উপজেলায়। পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া পৌর এলাকাসহ ১৫ ইউনিয়নই বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। প্রধান সড়কসহ পৌর এলাকার অনেক দোকান পানিতে ডুবে গেছে। সদর উপজেলার বিসিক শিল্প এলাকাসহ ১০টি ইউনিয়ন বন্যায় ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। রামু পৌর শহরসহ অনেক এলাকা বন্যায় ডুবে গেছে। এসব এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

মৃত্যুঝুঁকি জেনেও পাহাড়ে বাস

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। মঙ্গলবার পাহাড়ধসে এক শিশুসহ চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় পাহাড়ে বসবাসরত লোকজনের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করলেও তারা অন্যত্র সরছে না।

এদিকে পাহাড় থেকে সরে গিয়ে নিরাপদ স্থানে (ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে) আশ্রয় নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে সাড়া মিলছে না। এতে আবারও পাহাড়ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালের পর থেকে পাহাড়ের পাদদেশে জায়গা দখল করে লোকজন বসতবাড়ি নির্মাণ শুরু করে। ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ স্থান হিসেবে উপকূলীয় মাতারবাড়ী, ধলঘাট ও কুতুবদিয়ার লোকজন উপজেলার ২৮টি পাহাড়ের পাদদেশে বসতি স্থাপন করে। পাহাড়গুলো ছোট মহেশখালী, বড় মহেশখালী, শাপলাপুর, কালারমারছড়া ও হোয়ানক ইউনিয়নে অবস্থিত। এসব এলাকায় বন বিভাগের ১৮ হাজার ২৮৬ একর বনভূমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার একরই বেদখল। দখল হওয়া জায়গায় ২০ হাজার পরিবারের আনুমানিক ৫০ হাজার মানুষ বাস করছে।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোহামঞ্চদ নাজেম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার পাহাড়ধসে চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত লোকজনের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু হতদরিদ্র এসব লোকজনের অন্যত্র জায়গা কিনে ঘর তৈরির সামর্থ্য নেই। এ কারণে পাহাড়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়েও বাস করছে তারা। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে প্রবল বৃষ্টিতে মহেশখালীতে পাহাড়ধসে একই পরিবারের চারজনসহ ছয়জন প্রাণ হারায়।
কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকার বাসিন্দা আমান উল্লাহ, আবুল কালাম ও রবিউল হাসান বলেন, ‘পাহাড় থেকে সরে অন্যত্র গিয়ে বসতবাড়ি করার মতো কোনো সম্বল আমাদের নেই। এ কারণে জীবনের ঝুঁকি জেনেও সরতে পারছি না।’
কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, পাহাড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাসরত পরিবারগুলোকে অন্যত্র সরে যেতে বলা হলেও তারা সরছে না। ভারী বৃষ্টি হলে আবারও পাহাড়ধসে বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম কাউসার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মাইকিং করার পর কিছু লোক ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। তবে অধিকাংশই এ আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না।

Wednesday, June 27, 2012

কক্সবাজারে পাহাড়ধস ও বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু

কক্সবাজারের অব্যাহত বৃষ্টির কারণে ২৬জুন মঙ্গলবার বজ্রপাত, পাহাড়ি ঢল ও ধসের ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মহেশখালী উপজেলায় ৪ জন, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলে ১ জন, চকরিয়া উপজেলায় ১ জন এবং পেকুয়া উপজেলায় ১ জন নিহত হয়েছেন।

প্রবল বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসে ও পানিতে ডুবে মঙ্গলবার কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরো ৫ জন।
দ্বীপের কালারমারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝাপুয়ায় পাহাড় ধসে একটি বাড়ি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান সখিনা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় তার স্বামী শফিউল আলম (৫৩) আহত হয়েছেন। একই সময় উত্তর ঝাপুয়া গ্রামে পাহাড় ধসে ২টি ঘর চাপা পড়ে সাদ্দাম হোসেন (২৪) নামে এক তরুণ ও কিশোরী রাফি আকতার (১২) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪ জন। দ্বীপের শাপলাপুর ইউনিয়নের জে.এম.ঘাট এলাকায় পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ভেসে মারা গেছেন আবদুল মজিদ (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি একজন মৃগী রোগী ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এবিষয়ে মহেশখালী থানার পরিদর্শক (ওসি) রণজিত কুমার বড়ুয়া ৪ জন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। একিকে, বিকেল ৩টায় পেকুয়া উপজেলার সাবজীবন পাড়ার মৃত মোহাম্মদ সব্বিরের ছেলে মুবিনুল হক (৩২) বজ্রপাতে মারা গেছেন। এতে আহত হয়েছেন আবদুল আজিজ (২০) নামে আরও একজন।

পেকুয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মনিরুজ্জামান হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার একই সময়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে কাউয়ার পাড়া এলাকার মনজুর আলম (৪০) নামে এক ব্যক্তির বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। খুরুশকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম জানান, মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে, চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ৩নং ব্লকের খালকাচা পাড়ায় বজ্রপাতে একজন নিহত ও অপর একজন আহত হয়েছেন। বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিক আহমদ জানান, নিহত আলী আকবর (২৫) বদরখালী ইউনিয়নের ৩নং ব্লকের খাল কাঁচাপাড়ার ছাবের আহমদের ছেলে। আহত আলী আজগরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলার ৬ উপজেলার ৭৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রায় একশ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। জেলার ৩টি প্রধান নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

প্রবল বর্ষণে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামঃ পরিস্থিতি চরম অবনতি

রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। গতকাল সকাল থেকে চট্টগ্রামে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে পণ্য ওঠানামা ছিল বন্ধ।

বিকেলে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ গত রাতে ঢাকা ও সিলেটের সঙ্গে চট্টগ্রামের ট্রেন যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যায়। পুরো শহরই কার্যত বিচ্ছিন্ন। পাহাড় ধসে ও দেওয়াল চাপায় মারা গেছেন অন্তত ১১জন।
নগরের বাকুলিয়া, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গতকাল বিকেল থেকে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর এসব এলাকা পানির সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। শহরের দুই-তৃতীয়াংশ তলিয়ে যাওয়ায় নগরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় রিকশাই ছিল একমাত্র ভরসা।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে রেকর্ড ৩৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সারা দিনে নগরের প্রধান প্রধান সড়ক, উপসড়ক, অলিগলি ডুবে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ে। নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চান্দগাঁও, খতিবেরহাট, বাকলিয়া, চাক্তাই, আছদগঞ্জ, আগ্রাবাদ, ট্রাঙ্ক রোড, সিডিএ আবাসিক এলাকা, মোগলটুলী, হালিশহর, এক্সেস রোড, ডিসি রোড, ষোলশহর, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, নালাপাড়া, মুরাদপুর, প্রবর্তক, কাপাসগোলা, বাদুড়তলাসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।

চকবাজারের নাসির কলোনিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাসায় হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে আছে বাসিন্দারা। এই বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকা খ্যাত নগরের আসকার দীঘিরপাড়, জামালখান, লালখান বাজারেও পানি উঠেছে। জামালখানের বাসিন্দা সৌমেন দত্ত জানান, ভারী বর্ষণের কারণে নালা ডুবে গিয়ে তাঁদের বাসায় পানি ঢোকে। এতে বাসার আসবাব নষ্ট হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার থেকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। গতকাল ভোর ছয়টা থেকে টানা বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠতে শুরু করে।

চট্টগ্রাম বন্দর: চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, বৃষ্টির কারণে বহির্ণোঙরে ১৩টি জাহাজ থেকে মালামাল খালাস হয়নি। বহির্ণোঙর থেকে বন্দর জেটিতে গতকাল আটটি জাহাজ ভেড়ার কথা ছিল, কিন্তু ভিড়েছে মাত্র চারটি। একটি জাহাজ বন্দর জেটি ছেড়ে গেছে। কনটেইনার জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে।

শাহ আমানত বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার রবিউল হোসেন বলেন, ‘রানওয়েতে পানি উঠে যাওয়ায় বিকেল সাড়ে চারটা থেকে বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় রানওয়ের বাতি থেকে পর্যাপ্ত আলো পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর পানি নেমে গেলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তাতেও স্বাভাবিক হয়ে আসতে অন্তত ছয়-সাত ঘণ্টা তো লাগবেই।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও ভাটিয়ারী এলাকায় রেললাইন তলিয়ে যায়। ফলে কুমিরা ও ভাটিয়ারীর মাঝামাঝি জায়গায় ৩৪ নম্বর সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গতকাল সন্ধ্যার পর ঢাকাগামী তূর্ণা ও ঢাকা মেইল ও সিলেটগামী উদয়নের যাত্রা বাতিল করা হয়। একইভাবে ঢাকা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম স্টেশনে ভিড়তে পারেনি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান হায়দার বলেন, ‘বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও ভাটিয়ারি স্টেশনের মাঝামাঝি ৩৪ নম্বর রেল সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমরা সন্ধ্যার পর সব ধরনের ট্রেন চলাচল বাতিল করেছি।’

পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী রইসউদ্দিন সরকার বলেন, ‘প্রবল বর্ষণে সাব-স্টেশন ও বিতরণকেন্দ্রগুলোর যন্ত্রপাতি পানিতে তলিয়ে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছি। আরও কিছু এলাকায় ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

Tuesday, June 26, 2012

কক্সবাজারের ৫০ গ্রাম পানিবন্দি, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলার উপকূলবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার অনন্ত ৫০টি গ্রামের মানুষ।

রামু উপজেলার খুনিয়া পলাং এলাকায় একটি ব্রিজ বিধ্বস্ত হয়ে কক্সবাজার-টেকনাফের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিএম মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২১৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার রাতভর থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হলেও রোববার ভোর থেকে মুষলধারে বর্ষণ হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, মৌসুমী বায়ু প্রবল থাকায় সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত অব্যাহত রাখা হয়েছে। দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস, যা অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে। এবারের জুন-জুলাই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেও তিনি জানান।

টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান শফিক মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ভারী বৃষ্টিপাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কেরুনতলী, উলুবনিয়া, লম্বাবিল, মহেশখালীয়া পাড়া, হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, হোয়াব্রাং, পানখালী, লেচুয়া প্রাং, ক্যাং পাড়া, রঙ্গিখালী, আলীখালী, লেদা, জাদিমোরা, বাহারছরা ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা, কচ্চপিয়া, জাহাজপুরা, শীলখালী, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরী পাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের নাফনদী সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

বৃষ্টির কারণে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ব্রিজ ভেঙে গেছে। এর কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিকল্পভাবে কোটবাজার হয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

প্রশাসন এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার হারবাং, কৈয়ারবিল, বরইতলী, কাকারা, ফাঁসিয়াখালী, লইক্ষ্যারচর, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, পিএমখালী, ঝিলংজা, রামু উপজেলার চাকমারকুল, ফতেকার কুল, রাজারকুল, কাউয়ারখোপ ও কচ্ছপিয়া এলাকার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। মাতামুহুরী, বাঁকখালী, ঈদগাঁওসহ জেলার প্রধান প্রধান নদী ও খালের পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একই সঙ্গে বিভিন্ন উপকূল ভাঙনের কবলে রয়েছে।

পরিকল্পনার অভাবঃ বর্ষার শুরুতেই ভাঙছে মেরিন ড্রাইভ

ভাঙছেই মেরিন ড্রাইভ। বর্ষার শুরুতে তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক। বেশ কিছুদিন ধরে মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়।

বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার অভাবে এ অবস্থার কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এমনকি জিইও (বালুভর্তি বস্তা ফেলার ব্যবস্থা) দিয়েও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। এরই মধ্যে মেরিন ড্রাইভের অসংখ্য কালভার্ট দিয়ে পাহাড়ের পানি সাগরে ধাবিত হচেছ। অপর দিকে জোয়ারের তোড়ে প্রচন্ড ঢেউ এসে সরাসরি আঘাত করছে সড়কের এসব স্থানে। এতে সড়কের ভাঙন বাড়ছে। ফলে ভেঙে যাওয়া সড়ক রক্ষাণাবেক্ষণ করতে দিনরাত চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)।
জানা যায়, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, বনজ সম্পদ সংরক্ষণ এবং সামুদ্রিক জ্বলোচ্ছাস থেকে রক্ষার জন্য মেরিন ড্রাইভ সড়কের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যেমন গুরুত্ববহন করে তেমনি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চলতি বর্ষা শুরু হতেই মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি নামক স্থান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার জায়গায় অসংখ্য ভাঙন । যার ফলে সাগরের তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে মেরিন ড্রাইভ সড়কটির অস্থিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বছরও বর্ষার সময় এ সড়কটি বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।

সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর রিয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, সড়কটি সাগরের ঢেউ হতে রক্ষা করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে জিইও পদ্ধতি ব্যবহার করে ভাঙন ঠেকানোর জন্য সেনাসদস্যরা রাতদিন কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, গত বছর মেরিন ড্রাইভ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ছয় কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু গত অর্থ বছর ও চলতি অর্থ বছরে কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এরপরও সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভাঙন রোধ করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। তা না পেলে মেরিন ড্রাইভ রক্ষা করা কঠিন হতো। এদিকে সময়মতো টাকা না পেলে মেরিন ড্রাইভের কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ করাও সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মাণে নকশা ভুল ছিল বলে প্রতিবছর সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে এ সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব রিসার্চ, টেষ্টিং এন্ড কনসালটেশনের (বিআরটিসি) কারিগরি সম্ভাব্যতা যাচাই-বাচাই যথাযথ ছিল না বলেও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় ১১৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি) মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটির কাজ শুরু করে। ১৯৯৪ সালের জুলাইয়ে এটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে প্রকল্পটির আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এরপর প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা ব্যয় ধার্য করে প্রকল্পটি ফের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান না থাকায় ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পকে তিন ভাগে ভাগ করে তিন পর্বে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে প্রকল্পটি যখন হাতে নেওয়া হয় তখন জিনিসপত্রের দাম ছিল কম। এখন নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পের খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রকল্প এবং এর আশপাশে যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা ধারণা করেন, দ্রুত ও নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিলে দ্বিতীয় পর্বের কাজও এত দিনে অর্ধেকের বেশি শেষ হয়ে যেত। তাঁরা আরো মনে করেন, সরকার চাইলেই প্রকল্পটির জন্য বৈদেশিক সাহায্য নিয়ে তা দ্রুত সম্পন্ন করতে পারে।

এছাড়াও কক্সবাজার হতে ইনানীর মোহাম্মদ শফির বিল পর্যন্ত সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু ভাঙনের কবল থেকে এটি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছেনা। প্রতিবছর বর্ষায় এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।

মহেশখালী কুতুবদিয়ার বিস্তীর্ন অঞ্চল পানির নিচে

গত তিন দিনে আষাঢ়ের ধারাবাহিক বৃষ্টিপাত ও সমুদ্রে অমাবস্যার জোয়ারের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়ার নিম্নাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

অব্যাহত বৃষ্টি ও বেড়ি বাঁধের ভাঙ্গনের কারণে মহেশখালীর ধলঘাটায় অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চেয়াম্যান আহছান উল্লাহ বাচ্চু। কুতুবদিয়াতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মহেশখালীর কালারমার ছড়ার বাসিন্দা সৈয়দুল কাদের বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, মহেশখালী  ধলঘাটায় অমাবশ্যার জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রায় সহস্রাধিক বসতবাড়িতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। ভেসে গেছে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের চিংড়ি পোনা।

গত ২৪ জুন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, ঝড়ো বৃষ্টি ও অমাবশ্যার জোয়ারে মহেশখালীর ধলঘাটায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রায় সহস্রাধিক বসতবাড়ি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। পাশাপাশি প্রায় ২০ টি চিংড়ি ঘের জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের চিংড়ি পোনা ভেসে গেছে বলে জানা গেছে।

ধলঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু বাংলানিউজকে জানান, ঝড়ো হাওয়ার কারণে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে সরাইতলা ও নয়াঘোনা এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সরাইতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় এক হাজারেরও বেশি বসতবাড়ি এখন পানির নিচে।

ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় অনেক বাসিন্দা এখন সাইক্লোন শেল্টার সেল্টারে অবস্থান নিয়েছে। সদ্য নির্মিত বেড়িবাঁধে দেওয়া ব্লকগুলো উপড়ে গেছে। মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ায় ইতিমধ্যে ধলঘাট ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছে।

সুতরিয়া ইউপি সদস্য  আনসার উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, এই ওয়ার্ডের সাইক্লোন সেল্টারগুলো চরম ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মানুষ আশ্রয় নিতে পারছে না।

চিংড়ি মৌসুমের শুরুতে ঘের গুলোতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় চাষীরাও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি ও ঝড়ো হাওয়ায় এই ওয়ার্ডের প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া মহেশখালীর পৌরসভা, কুতুবজোম, তেলীপাড়াসহ দুটি প্রধান সড়কে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিদুৎ বিতরণেও সমস্যা হয় বলে স্থানীয় বিদুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে কুতুবদিয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন ও বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ না থাকায় দ্বীপের নিম্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। ৬টি ইউনিয়নের ১৭টি জায়গায় বেড়িবাধ ভাঙ্গা থাকায় সমুদ্রের জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে।

কুতুবদিয়ার কৈয়াবিল এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান আজমগীর মাতব্বর সাংবাদিকদের জানান, এমন অবস্থায় তার এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে পরাণ সিকদার পাড়া, মহাজন পাড়া, ঘিলাছড়ি, বিন্দাপাড়া, মফজল ডিলার পাড়ায় বাসিন্দা ৫শ’ পরিবারের ৫ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এসব এলাকার তিন হাজারের মত লোক বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাছাড়া আলীআকবর ডেইল তবলার চর, কুমিরার ছড়ি, জাইল্যা পাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় ফসলি জমিতে লোনা পনি ঢুকে পড়েছে। তাছাড়া আনিছের ডেইল, পূর্ব তবলার চরের ব্যাপক এলাকা তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একইভাবে লেমশিখালী, পেয়ারাকাটা, বড়ঘোপের আজম কলোনি, দক্ষিণ আজমখালী, উত্তর দ্রুং, ফয়জনের বাপের পাড়াসহ দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রোববার রাত সাড়ে ৯ টায় মহেশখালীর ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহছান উল্লাহ বাচ্চু বাংলানিউজকে জানান, তার এলাকায় ব্যাপক ভাবে সমুদ্রের পানি ঢুকে পড়ায় এক প্রকার মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম কাউছার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তারা ক্ষয়ক্ষতির যথাযথ তথ্য বিস্তারিতভাবে  জানতে না পারায় সাহায্যের কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

মিয়ানমার সীমান্তে ৮ দিন ধরে বাণিজ্য বন্ধ

টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য এবং ট্রানজিট ৮ দিন ধরে অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে। গত ১৭ জুন ৯০ টন হিমায়িত রুই মাছ নিয়ে একটি ট্রলার স্থলবন্দরে আসে।

এরপর থেকে আর কোনো পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসেনি। মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতের পরবর্তী পরিস্থিতি এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। এতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, ১৯৯৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টেকনাফ-মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য চালু করা হয়। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী আমদানি রফতানি বাণিজ্য চলতে থাকে। এবারই প্রথমবারের মতো কোনো কারণে অনেকদিন ধরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিন টেকনাফ স্থলবন্দর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরের জেটিতে একটি মাত্র ট্রলার নোঙর অবস্থায় রয়েছে।

ব্যবসায়ী এম আবছার সোহেলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স শফি অ্যান্ড ব্রাদার্সের মাধ্যমে গত ১৭ জুন ৯০ টন হিমায়িত রুই মাছ নিয়ে একটি ট্রলার স্থলবন্দরে আসে। মাছভর্তি ট্রলারটি পণ্য খালাস করা হলেও সাগর উত্তাল থাকায় মিয়ানমারে আর ফিরে যেতে পারেনি।

এদিকে, ৮ দিন ধরে অঘোষিতভাবে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা কাজের অভাবে বেকার জীবন-যাপন করছেন।

টেকনাফ স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্র ও কায়ুকখালীয়া খালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিয়ন্ত্রণাধীন একদিনের ট্রানজিট ঘাট দিয়ে ৮ জুনের দাঙ্গার পর থেকে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা আটকে পড়া ব্যবসায়ীরা স্বদেশে ফিরে যেতে স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্রে ভিড় করছেন।

টেকনাফ স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্রের কর্মকর্তা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমার সরকার অঘোষিতভাবে নৌপথ বন্ধ রাখায় এখনও বাংলাদেশি ৪ নাগরিক আব্দুল জলিল, আবু বক্কর, রিয়াজ উদ্দিন ও জসিম উদ্দিন মিয়ানমারে আটকা পড়ে আছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নাসাকাবাহিনী ও মিয়ানমার অভিবাসন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে একটি ট্রলারে করে  রোববার ২৬ জনকে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফের ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার পর থেকে ৮ দিন ধরে টেকনাফ-মিয়ানমারে একদিনের ট্রানজিট বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বাংলানিউজকে বলেন, “৮ দিন ধরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।” আমদানি ও রফতানিকারকদের দৈনিক কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

ইউনাইটেড ল্যান্ডপোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল মোহাইমেন বাংলানিউজকে বলেন, “মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতের কারণে দু’দেশের সীমান্ত বাণিজ্য অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে।”

টেকনাফ শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তা কাজী আবুল হোসাইন বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমারের জাতিগত দাঙ্গার কারণে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দৈনিক ৩০ লাখ টাকা করে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

টেকনাফে বেড়িবাঁধে ভাঙন, পানিবন্দী শতাধিক পরিবার

সামুদ্রিক জোয়ারের তোড়ে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ ও নাজির পাড়ার প্রায় এক কিলোমিটা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে জোয়ারের পানি ঢুকে জালিয়াপাড়া, কোনারপাড়া, মিস্ত্রিপাড়াসহ বেশ কয়েকটি প্লাবিত হয়েছে।

পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েকশ’পরিবার। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও অমাবস্যার জোয়ারে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে পানি বেড়ে যায়। এতে উপকূলীয় এলাকায় পানি ঢুকে এলাকার রাস্তা ঘাট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মকতব, চিংড়ি ঘের, ফসলি জমি, বসত বাড়ি প্লাবিত হয়। এমনকি  উপকূলীয় এলাকাবাসীকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হচেছ।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গোপসাগর ও নাফনদী বেড়িবাঁধের কিছু এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যেকোনো মুহূর্তে শাহপরীরদ্বীপ বঙ্গোপসাগরে বিলীন হয়ে যেতে পাড়ে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

কর্মশালায় ইসি সচিবঃ রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না

‘অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের কোনো অবস্থাতেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এ ব্যাপারে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

গত রোববার কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়নসংক্রান্ত দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব মোহামঞ্চদ সাদিক এসব কথা বলেন। মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছিল। এখন সেই তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছে। এই তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন ১০ মার্চ থেকে সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণের কাজ শুরু করে। অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাপ্রধান অঞ্চল হিসেবে কক্সবাজার, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলাকে বিশেষ অঞ্চল ঘোষণা দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের এ কাজ চলছে। আগামী ১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাঁদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া যেসব ভোটারের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশন আয়োজিত কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব ও এসইএমবির জাতীয় প্রকল্প পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এন আই খান, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আখতারুজ্জামান সিদ্দিকী প্রমুখ। কর্মশালায় জেলার সাতটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, নির্বাচন কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।