Friday, August 12, 2011

পুলিশের ঈদ চাঁদাবাজি by আবু হেনা রাসেল ও এস এম আজাদ

ঢাকার মিরপুর ১ নম্বরের শপিং কমপ্লেক্সে সামনে ফুটপাতের কাছে গত শনিবার মোটরসাইকেলে করে এসে দাঁড়ালেন শাহ আলী থানার এসআই তরিকুল ইসলাম। ফুটপাতের এক দোকানদারকে লক্ষ্য করে তিনি বললেন, 'তাড়াতাড়ি সরা। দুই দিন তো মালপানি দিস না।' দোকানি বললেন, 'স্যার, যে বৃষ্টি, দোকানই তো সাজাইতে পারি না! আপনাগো কী দিমু?' পরে নিজের দোকান গুটানোর সময় সিদ্দিক মিয়া নামের ওই হকার বললেন, "ভাই, পুলিশকে প্রতিদিন ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা করে দিতে হয়। একে বলে 'পুলিশের কাবজাব'। টাকা না দিলে ওরা আমগো ধইরা মাজারের পাশে নিয়া আটকাইয়া রাইখা টাকা আদায় করে।"
নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের বিপরীত দিকের গ্লোব শপিং কমপ্লেক্সে সামনে ফুটপাতের গেঞ্জি বিক্রেতা সেলিম বললেন, 'ঈদের সময় বেচাকেনা না অইলেও ট্যাকা বাড়াইয়া দিতে অইতাছে। ওগো ঠিকমতো ট্যাকা না দিলেই বিপদ। কিছুই কওয়ার নাই। কিছু কইলেই রোজার দিনে ইফতারির বদলে লাথি আর লাঠি জুটব কপালে। ঘাড় ধইরা উঠাইয়া দিব।'
সরকারি রাস্তার ওপর ৪০ ইঞ্চি ও ৫২ ইঞ্চি প্রশস্ত দুটি চৌকি-দোকানের জন্য সেলিমকে এখন প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় ৫০০ টাকা করে। পুলিশের হয়ে এই টাকা তুলছে 'লাইনম্যান' রফিক ও আকবর।
রমজানের আগে চাঁদা ছিল ২০০ টাকা, ঈদ উপলক্ষে ৩০০ টাকা বেড়েছে।
গত সোমবার বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য সংগ্রহের সময় কালের কণ্ঠকে সেলিম বললেন, 'ভাই, আমি সামান্য হকার। উল্টা-পাল্টা কিছু লেইখেন না। আমি কারো বিরুদ্ধে বলতে চাই না।'
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেশাদার চাঁদাবাজদের পাশাপাশি পুলিশের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রাজধানীর ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। শুধু চাঁদাবাজিই নয়, ঈদকে সামনে রেখে নিউমার্কেটের এসব ফুটপাতও ব্যবসায়ীদের কাছে রীতিমতো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। হকার-ব্যবসায়ীদের কাছে এটার নাম 'পজিশন বাণিজ্য'। ৪০ ইঞ্চি ফুটপাতের পজিশন শুধু চলতি মাসের জন্য বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। ঈদের কারণে দৈনিক চাঁদার হারও তারা বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, ফুটপাতে ব্যবসা করতে গেলে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা, ছাত্রনেতা, পেশাদার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজসহ অনেককেই টাকা দিতে হয়। আর পুলিশকে টাকা না দিয়ে দোকান বসানোর তো প্রশ্নই ওঠে না।
নিউমার্কেটের আটটি ফুটপাত-মার্কেটসহ রাজধানীর প্রধান প্রধান ফুটপাত-বাজারগুলো ঘুরে পুলিশের চাঁদাবাজির ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। জানা গেল, মিরপুর রোডের নেওয়াজ পাম্পের সামনে থেকে নিউমার্কেট ফুট ওভারব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে পুলিশের হয়ে টাকা ওঠায় লাইনম্যান রফিক ও আকবর। রফিক নিজেকে হকার্স লীগের নেতা বলেও পরিচয় দেয়।
বাংলাদেশ জাতীয় হকার্স ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক কামাল সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হকাররা এখন চলে গেছে পুলিশের লাইনম্যানের নিয়ন্ত্রণে। এরা মূলত পুলিশের দালাল। ওদের ভয়ে হকাররা প্রতিবাদও করতে পারে না।'
রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি হকার বসে নিউমার্কেট ও গুলিস্তান এলাকায়। ছিন্নমূল হকার্স সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গুলিস্তান এলাকায় হকারের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। নিউমার্কেট এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার। এর পরই হকারের সংখ্যাধিক্য সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী, তারপর ফার্মগেট-কারওয়ান বাজার এলাকায়।
পুরানা পল্টনের ৬২/২ নম্বর ভবনের সামনের ফুটপাতের টুপি বিক্রেতা আবুল বাশার বললেন, 'এত দিন ৩০ ট্যাকা কইরা দিয়া আসতাছি। হুনলাম আজ থাইক্যা ২০ ট্যাকা বাড়াইয়া ৫০ করছে। অহনো দেই নাই। তয় দিতে অইব।' তিনি আরো জানান, দৈনিক বাংলা মোড় থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত পুরো ফুটপাতে পুলিশের হয়ে চাঁদা আদায় করে লাইনম্যান নূর মিয়া ওরফে কাইল্যা নূর, শাহজালাল, কামরুল ও গোলাপ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, বায়তুল মোকাররমের মোড় থেকে গুলিস্তানের সব ফুটপাতেই দোকানপ্রতি এখন প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয় পুলিশকে। কিছুদিন আগেও এ হার ছিল ৩০ টাকা। গুলিস্তানের ২২টি ফুটপাতই নিয়ন্ত্রণ করছে আবদুস সালাম নামে পুলিশের এক লাইনম্যান। সালাম নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে থাকে। তবে জানা গেছে, গত সরকারের আমলেও সালাম ওই এলাকায় লাইনম্যান হিসেবে কাজ করেছে।
বায়তুল মোকাররমের পশ্চিম পাশ হয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ফুটপাতে পুলিশের হয়ে চাঁদা তোলে লাইনম্যান কোটন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আশপাশে আকতার হোসেন এবং আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে দোকানপ্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা নেয় লাইনম্যান আবুল হোসেন। ভাষানী হকি স্টেডিয়ামের সামনে ও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ২ নম্বর গেটে দীর্ঘদিন ধরেই পুরনো এবং চোরাই ইলেকট্রনিঙ্ পণ্যের ফুটপাত-বাজার চলছে। এই এলাকায় টাকা তুলছে পল্টন থানার লাইনম্যান আলী। সে নিজেকে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দেয়। তার সহযোগীরা হচ্ছে জুনিয়র লাইনম্যান সোহেল, পায়েল, আনোয়ার ও কবির। বায়তুল মোকাররম মসজিদের ২ নম্বর গেট এলাকার লাইনম্যানগিরি করে পটল আর মসজিদের সামনে কাদির। রমনা ভবনের পাশে ফুটপাত থেকে দোকানপ্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলছে লাইনম্যান রানা। পাশের রাস্তা দখল করে গড়ে উঠেছে ফল বাজার। দোকানদাররা জানান, থানার জন্য চাঁদার টাকা ওঠায় লাইনম্যানরা। আর প্রতিদিন টহল পুলিশ নিজেরাই এসে নিয়ে যায় দোকানপ্রতি ২০ টাকা করে। পুলিশের ভাষায় এটা চাঁদা না, 'চা খরচা'।
বঙ্গবন্ধু হকার্স মার্কেটের পাশে ফুটপাতের দোকানগুলোতে চাঁদা আদায় করছে লাইনম্যান দুলাল ও মনির, গোলাপশাহ মাজার থেকে ঢাকা ট্রেড সেন্টার পর্যন্ত দেড় শ টাকা করে চাঁদা তুলছে লাইনম্যান বিমল বাবু। জাতীয় গ্রন্থাগারের পাশে বাবুল ও শহীদ, সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আশপাশে জজ মিয়া, জিপিওর সামনে কবির, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পেছন দিকে সালাম, হিন্দু বাবুল ও বিমল বাবু, গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে স্বেচ্ছাবেক লীগ নেতা পরিচয়ধারী বাবুল এবং জুতাপট্টিতে মঙ্গল নামে আরেক যুবলীগ নেতা পুলিশের হয়ে টাকা তোলে। গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারের পাশে আহাদ, পুলিশ বঙ্ জুতাপট্টিতে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সেক্রেটারি রাহাত এবং ট্রেড সেন্টারের পাশ থেকে নিউ রাজধানী পর্যন্ত ৫৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির পুলিশের লাইনম্যান। তাদেরকে চৌকিপ্রতি প্রতিদিন ১০০ ও সপ্তাহে আলাদাভাবে ২০০ টাকা করে দিতে হয় ব্যবসায়ীদের। মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনে থেকে গুলিস্তান আন্ডারপাস পর্যন্ত টাকা তোলে লাইনম্যান হারুন, গুলিস্তান গার্ডেনের সামনে আল মুনসুর থেকে হল মার্কেট পর্যন্ত বড় মিয়া এবং উল্টো পাশের ফুটপাত দেখে হাসান ও সুলতান। কাজী বসিরউদ্দিন নাট্যমঞ্চের পেছনে টাকা ওঠায় রিপন।
এদিকে ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটের সামনে থেকে গ্লোব শপিং সেন্টার পর্যন্ত হকার্স লীগ নেতা রফিক, ৫২ নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা ইসমাইল, হোসেন ও আকবর দোকানপ্রতি ৫০ থেকে ২৫০ টাকা করে চাঁদা তুলছে। প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের সামনে থেকে সানমুন টেইলার্সের কোনা পর্যন্ত ৫২ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানের নামে লাইনম্যান বাচ্চু; গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় বাংলাদেশ হকার্স সমিতির সভাপতি হোসেন মোল্লা ও ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আমির হোসেন এবং নিউমার্কেট ৪ নম্বর গেট থেকে ২ নম্বর গেট পর্যন্ত চাঁদা তোলে নিউমার্কেট থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাত্তার মোল্লা। জানা গেছে, নিউমার্কেটের দুটি ফুটপাত ঢাকা সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা নেন ৫২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুখলেছুর রহমান ও ৫২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মামলাও করেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এ দুটি ফুটপাতে তাঁরা দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন ২৮০টি। এখন দুই ফুটপাতে পজিশন বিক্রি করে ও টাকা তোলে লাইনম্যান সাত্তার মোল্লা। রাফিন প্লাজার সামনে স্থানীয় যুবলীগের মাইনুল ইসলাম, আনন্দ বেকারির পাশ থেকে নিউমার্কেট কাঁচাবাজার পর্যন্ত আবদুল জলিল, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের ফুটপাতে মনির, ঢাকা কলেজের সামনের ফুটপাতে বিভিন্ন দোকান থেকে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে চাঁদা আদায় করে কয়েকজন। পুলিশও নিয়মিত ১০ টাকা করে নিয়ে যায়।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় শহীদ ফারুক সড়কসহ আশপাশে চাঁদা তুলছে লাইনম্যান মান্নান, মনির, সোনা মিয়া, অনু ও তোরাব আলী। প্রতিদিন লাইম্যানরা এই টাকা বুঝিয়ে দেয় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই হোসেনের হাতে।
এ ছাড়া মতিঝিলের জনতা ব্যাংক ভবনসংলগ্ন ফুটপাতে বড় হারুন, লিটন ও চুইলা বাবু, ফার্মগেট এলাকায় চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে যুবলীগ নেতা শাহআলম ও বিএনপি নেতা দুলাল আর ফুটপাতে টাকা তোলে লাইনম্যান হায়দার, বরিশাইল্লা হারুন, চুন্নু, আলমগীর, ঘড়ি সাইদ, সাইদ, মোবারক, শামসু, তোয়ালে কামাল, তৌহিদ, কাজল ও মোফাজ্জল। কারওয়ান বাজার এফডিসিসংলগ্ন রেলক্রসিং এলাকায় কমিউনিটি পুলিশ নেতা সিরাজ ও জিআরপির কনস্টেবল নুরু টাকা তোলে। পুলিশের হয়ে পুরো কারওয়ান বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আনোয়ার হোসেন, এল রহমান এবং সাহেব আলী নামের তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি। চেয়ারম্যানবাড়ী থেকে কাকলী ব্রিজ পর্যন্ত আবদুল ও মাসুম, মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে বাদল, খলিল ও আকরাম আর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় জিআরপির এসআই নজরুল নিজেই হকারদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন।
বাংলাদেশ হকার্স লীগের সভাপতি এম এ কাশেম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই চাঁদাবাজরা আসলে পুলিশের লাইনম্যান ও দালাল। পুলিশ নিজেরা চাঁদা তুলতে পারে না বলে এদের ব্যবহার করছে। এসব বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে জানিয়েও প্রতিকার মিলছে না। কারণ, এই চক্রে সব সময়ই সরকারি দলের নেতারা জড়িত থাকেন।'
ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে গুলিস্তানের সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের দায়িত্বরত টিএসআই শাহাবুদ্দিন বলেন, 'এখানে ফুটপাতে দোকান বসতে দেওয়া হয় না। চাঁদা কারা নেয় তা ভালো করে খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। বক্স পুলিশ এসবের সঙ্গে জড়িত না।'
চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আবদুস সালামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ভাই পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, 'এই এলাকায় সালাম একা চাঁদা নেয় না। মূলত সে প্রশাসনের দিকটা দেখে।'
পল্টন থানার ওসি শহীদুল হক ফুটপাত থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, 'থানা পুলিশের মাঠপর্যায়ের কেউ কেউ এ কাজ করতে পারে, তবে তিনি বা তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে জানেন না। আসলে পুলিশ নয়, রাজনৈতিক দলের নেতারাই নিয়ন্ত্রণ করে ফুটপাত। বিভিন্ন সংগঠনের নামে চাঁদা তোলা হয়। ফুটপাত হকারমুক্ত করতে গিয়ে গত বছর পুলিশের ওপর হামলা হয়েছিল। মানবিক কারণে হকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।'
অথচ মিরপুর এক নম্বরের ফুটপাতের কয়েকজন হকার জানান, এই এলাকায় পুলিশ নিজেরাই সরাসরি মাঠে নেমেছে। শাহআলী থানার সিভিল টিমের এসআই বাবু কৃষ্ণ সাহা ও লতিফ কাঁচাবাজার, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটসহ আশপাশের প্রতিটি দোকান থেকে মাসে চার হাজার টাকা ওঠান। সঙ্গে থাকে সাঈদ নামে তাঁদের লাইনম্যান। কো-অপারেটিভ মার্কেটে তৈরি পোশাক বিক্রেতা শামছু ও মিজান জানান, প্রতিদিন দোকানপ্রতি থানা পুলিশকে দিতে হয় ১৫০ টাকা। কালু মিয়া নামে শাহআলী থানার ওসির এক লাইনম্যান কাঁচাবাজার থেকে প্রতি মাসের জন্য ছয় হাজার করে টাকা তোলে। গাবতলী টার্মিনাল ও দারুস সালামে পেট্রোল ইন্সপেক্টর (পিআই) তৈয়বুর রহমান নিজেই টাকা তোলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দিয়াবাড়ী এলাকায় পুলিশের লাইনম্যান কালাম টাকা ওঠায় দারুস সালাম থানার ওসি আবদুল মালেক ও অপারেশন অফিসার আবদুস সালামের নামে। ব্যবসায়ীরা এই অভিযোগ করলেও কালের কণ্ঠের কাছে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে হকাররা গড়ে তুলেছে ফুটপাত মার্কেট। স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি লেডিস মার্কেট নামে পরিচিত। এখানকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শাহজাহানপুর পুলিশ ফাঁড়ি ও মতিঝিল থানা তাঁদের কাছ থেকে লাইনম্যানদের মাধ্যমে প্রতিদিনই টাকা নেয়। সাইফুল ও ফল বেপারি নামে পরিচিত এক লাইনম্যান এসব চাঁদা তুলে থাকে।
এই অভিযোগের ব্যাপারে মতিঝিল থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, 'শুক্রবারে রাস্তায় বসে হকাররা। আর অন্য দিন ফুটপাতে। পুলিশের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ বহু আগে থেকেই শুনে আসছি। এর কোনো ভিত্তি আছে বলে মনে করি না।'

No comments:

Post a Comment