Tuesday, December 28, 2010

দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষায় জিয়ার পথ অনুসরণ করতে হবে __খালেদা জিয়া

বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে দেশীয় সংস্কৃতিকে বাঁচাতে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ অনুসরণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি বলেন, জিয়া যেমন গুণী শিল্পীদের খুঁজে বের করে দেশীয় সংস্কৃতির একটি মজবুত ভিত গড়েছিলেন, তেমনিভাবে জাসাসকে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে গুণী শিল্পী খুঁজে বের করে দেশীয় সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে।
দেশীয় সংস্কৃতির ওপর বিদেশি আগ্রাসন চলছে মন্তব্য করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালেদা জিয়া আরো বলেন, এ আগ্রাসন থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা ব্যাপক হারে বাড়াতে হবে। বিদেশি সংস্কৃতির ব্যক্তিরা এ দেশে এলে তাদের সামনে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, 'সংগীত আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত হতে প্রেরণা জুগিয়েছিল। এ প্রত্যয় নিয়েই শহীদ জিয়াউর রহমান বেশকিছু শিল্পীকে খুঁজে এনে প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সময় এসেছে, এখন জিয়াউর রহমান প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করতে হবে।'
এর আগে খালেদা জিয়া অনুষ্ঠানস্থলে পেঁৗছালে জাসাস ও বিএনপি নেতা-কর্মীরা করতালি-স্লোগান ও গানের মধ্য দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। কোরআন তিলাওয়াতের পর শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। আলোচনা শেষে সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন জাসাসের বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্পীরা।
জাসাস সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক গীতিকার গাজী মাযহারুল আনোয়ার, সিনিয়র সহসভাপতি চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খানসহ জাসাসের মহানগর ও কেন্দ্রীয় নেতারা আলোচনায় অংশ নেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল হালিম, ড. ওসমান ফারুক, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছেঃ আবার বাড়ছে পাইকারি দর

পাইকারি বাজারে কমার পর রাজধানীর খুচরা বাজারেও কমেছে পেঁয়াজের দাম। খুচরা বাজারে সর্বনিম্ন ৪০ টাকা বেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ। তবে গত শনিবারের তুলনায় গতকাল পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে খুচরা বাজারে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকা দরে।


গতকাল কারওয়ান বাজার ও বঙ্গবাজার-সংলগ্ন আনন্দবাজারে নতুন পেঁয়াজ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে কারওয়ান বাজারে গতকাল বড় আকারের পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজারে পুরনো দেশীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, এর দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে।
খুচরা বাজারে কমলেও পাইকারি বাজারে আবার কিছুটা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের আড়ত শ্যামবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৪০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তা কমে এসেছিল কেজিপ্রতি ২৬ টাকায়। কিন্তু শনিবার তা আবার ৩৪-৩৫ টাকায় উঠে যায়। গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৯ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আনন্দবাজারের ১২৯ নম্বর দোকানের বিক্রেতা শামীম আহমেদ জানান, তিনি ৫৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে এনেছিলেন। কিন্তু বাজার কমে যাওয়ায় তিনি ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি বলেন, 'কেজিতে ১৫ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। আমরা ভাবতেও পারিনি দাম এত বাড়বে, আবার কমে যাবে।'
শ্যামবাজারের ঢাকা বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা আবদুর রহিম কালের কণ্ঠকে জানান, আড়তে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। তিনি বলেন, 'কাঁচামালের দামের কোনো ঠিক নেই। এই বাড়ে, আবার কমে যায়। তবে কয়েক দিনের মধ্যে দাম আবার কমবে। কারণ বাড়তি দামের আশায় কৃষক এখন আবার ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তোলা শুরু করবে।'
গত ২০ ডিসেম্বর অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি দুদিনে ২০ টাকা বেড়ে যায়। ৩৫ টাকা কেজির দেশীয় পেঁয়াজ কয়েক দিনে ৫৫ টাকা ও ৫৫ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশের বর্তমানে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ১৬ লাখ টন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর সোয়া লাখ থেকে দেড় লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়ে থাকে। এতে উৎপাদিত হয় প্রায় ৯ লাখ টন পিঁয়াজ। বাকি চাহিদা আমদানি করেই মেটাতে হয়। আমদানির সিংহভাগ হয় ভারত থেকে।