Thursday, February 03, 2011

বিবেকের কড়া নেড়ে গেল কিশোরী হেনা

মা আকলিমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। হেঁটে মেয়ের লাশের পাশেও যেতে পারছেন না। বাবা দরবেশ খাঁ মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন। বিড়বিড় করে বলছেন, ‘আমার মেয়েটি এভাবে মেরে ফেললো, কেউ প্রতিবাদ করলো না। আল্লাহ, তুমি পাষণ্ডদের শাস্তি দিয়ো।’ সমাজপতিদের দোররার আঘাতে তাঁদের কিশোরী মেয়ে হেনা আক্তার মারা গেছে সোমবার রাতে। গতকাল বুধবার বিকেল চারটায় মেয়ের লাশ বাড়ি এসেছে।
কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার-প্রতিবেশীরা। দরিদ্র দরবেশ খাঁর বাড়িতে কাল যেন মানুষের ঠাঁই ধরে না। শত শত মানুষ ছুটে এসেছে। হেনার পরিবারের সদস্যদের কান্নার ঢেউ গিয়ে লেগেছে তাদের অনেকের মনে। চোখ ভিজে গেছে তাদের। হেনার করুণ মৃত্যু ক্ষুব্ধ করেছে অনেককে, নাড়া দিয়েছে বিবেকে। দোষীদের শাস্তি চেয়েছে তারা।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা গ্রামে ফতোয়াবাজেরা ধর্ষণের শিকার ১৪ বছরের কিশোরী হেনাকে ৭০-৮০টি দোররা মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যায়। গ্রামের অনেকের সামনেই ঘটেছে এই দোররা মারার ঘটনা, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। ধর্ষক মাহাবুবের স্ত্রীর বড় বোন জাহানারা হেনাকে দোররা মেরেছেন।
হেনাদের প্রতিবেশী হোসনে আরা বলেন, ‘সালিসে আমরা উপস্থিত ছিলাম। সেখানে মাওলানারা প্রথম হেনাকে মাটিতে গেড়ে পাথর মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অন্য সালিসদারদের অনুরোধে পাথর মারার পরিবর্তে তাকে দোররা মারার রায় দেওয়া হয়। আমরা উপস্থিত থেকে শুধু চোখের পানি ফেলেছি। কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি।’
আরেক প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সালিসে কথা বলার কোনো সুযোগ পাইনি। দাঁড়িয়ে থেকে আক্ষেপ করেছি। গরিব লোক বলে তাদের সঙ্গে এটা করা সম্ভব হয়েছে।’
বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানববন্ধন: তবে হেনার মৃত্যু আবার বিবেকবোধে তাড়িত করেছে অনেককে। তারা ধর্ষক মাহাবুব ও ফতোয়াবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শরীয়তপুরে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। বেলা ১১টায় পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট, আমরাই পারি নারীর বিরুদ্ধে সব নির্যাতন বন্ধ করতে, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও স্থানীয় বেসরকারি সংগঠন এসডিএস জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। বিক্ষোভ শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন রওশন আরা, অমল দাস, আসমত আলী খান, আহসান উল্লাহ ইসমাইলী প্রমুখ।
দুপুর ১২টায় প্রথম আলো বন্ধুসভা শরীয়তপুর সরকারি কলেজ সড়কে মানববন্ধন করে।
লাশ দাফন: শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ গতকাল দুপুর ১২টায় হেনার মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। বিকেল পাঁচটায় চামটা গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. সানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার এ কে এম শহিদুর রহমান জানাজায় অংশ নেন।
চারজন রিমান্ডে, অন্যরা অধরা: মঙ্গলবার রাত ১০টায় নিহত হেনার বাবা বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় ১৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে বিচারিক হাকিম আবদুল মান্নান আসামি শিল্পী বেগমের তিন দিন, মসজিদের ইমাম মফিজ উদ্দিনের দুই দিন, জয়নাল মীরমালত ও আলাবক্স করাতীর এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রধান আসামি ধর্ষক মাহাবুব ও অন্য ফতোয়াবাজদের পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা কেউ রেহাই পাবে না। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় সোর্স লাগানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি আমাদের হতভম্ব করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক সমন্বয় করছি।’
প্রলোভন: নিহত হেনার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনা ধামাচাপা দিতে হেনার পরিবারকে সাত লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন হেনা হত্যা মামলার আসামি চামটা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইদ্রিস ফকির। হেনার ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমরা হতদরিদ্র মানুষ। এর সুযোগ নিয়ে টাকা দিয়ে মাহাবুব ও ফতোয়াবাজদের নেতা ইদ্রিস মেম্বার মীমাংসা করতে চায়। মামলা না চালানোর শর্তে তারা আমাদের সাত লাখ টাকা দিতে চায়।’ তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ইদ্রিস মেম্বারের এক আত্মীয়ের বাড়িতে সভা করে টাকা দিয়ে মীমাংসা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বোন চলে গেছে, টাকা দিয়ে কী হবে? আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
হেনার বাবা দরবেশ খাঁ বলেন, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণ করার পর কোনো বিচার পেলাম না। উল্টো মেয়েকে বিচারের মুখোমুখি হয়ে জীবন দিতে হলো। এমন সমাজে বসবাস করতেও কষ্ট লাগছে। আমি কোনো টাকাপয়সা চাই না, মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’
চামটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন রাঢ়ী বলেন, নৃশংস এই ঘটনায় এলাকার মানুষ হতবাক হয়ে গেছে। সবাই অভিযুুক্তদের শাস্তি দাবি করছে। তিনি বলেন, ‘একটি চক্র হেনার পরিবারকে টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে শুনেছি।’
পূর্বাপর হেনা: হেনা পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছে। অর্থকষ্টের কারণে ২০০৮ সালে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। রোববার রাত আটটার দিকে প্রাকৃতিক কাজে ঘরের বাইরে গেলে হেনাকে প্রতিবেশী মাহাবুব (৪০) ধর্ষণ করেন। হেনার চিৎকারে দুই পরিবারের লোকজন বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে মাহাবুবের স্ত্রী শিল্পী বেগম ও দেবর নিপু ঘটনার জন্য হেনাকে দোষারোপ করে মারধর করেন। সোমবার বিকেলে সালিস বৈঠকে মাহাবুবের পাশাপাশি হেনাকেও ১০০ দোররা মারার রায় দেন সমাজপতিরা। ৭০-৮০টি দোররা মারার পর হেনা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিলে সে মারা যায়।
গ্রামের আবুল হাশেম মীর বলেন, হেনার বাবা সহজ-সরল গরিব কৃষক। অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে সংসার চালান। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংসার। ছোট মেয়ে হেনা শান্ত স্বভাবের ছিল। এমন একটি অসহায় পরিবারের সঙ্গে এই নির্মমতা এলাকার মানুষের মনে নাড়া দিয়েছে।’
হেনাদের বাড়িতে দুটি ছোট টিনের ঘর। একটিতে হেনার চাচা থাকেন। আরেকটি ঘরে থাকে হেনারা। গতকাল টিনের সে ঘরটি ঘিরে ছিল এলাকার কয়েক শ মানুষ। স্বজনেরা ঘর আর আঙিনায় বসে বিলাপ করছে।
মুন্সিগঞ্জেও মানববন্ধন: মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সিগঞ্জে প্রথম আলো বন্ধুসভার উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে। দুপুর দুইটার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বন্ধুসভার কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান রওশন, বন্ধুসভার সভাপতি খালেদা খানম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মতিউল ইসলাম, বন্ধুসভার উপদেষ্টা তানভীর হাসানসহ বন্ধুসভার সদস্যরা অংশ নেন।

কেমন আছেন রিতা-মিতা

বাড়িটা এখনো ভূতের বাড়ি বলে পরিচিত। সেই বাড়িতে থাকেন রহস্যময় দুই বোন। মনে আছে তাঁদের কথা? মনে পড়ে যাওয়ারই কথা। যদিও মাঝে পাঁচ বছর কেটে গেছে। কেমন আছেন সেই দুই বোন রিতা-মিতা? তাঁদের কথা জানতে প্রথমে যোগাযোগ করা হয় আইনজীবী এলিনা খানের সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী হিসেবে বর্তমানে কর্মরত। ২০০৫ সালের ৭ জুলাই দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর মিরপুরের সেই বাড়ি থেকে দুই বোনকে প্রথমে বের করে আনেন তিনি।
এলিনা খানই জানান, দুই বছর হলো তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ নেই। তবে আগের বাড়িতেই আছেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এলিনা খান ও তাঁর দুই সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হলাম রিতা-মিতার বাড়ির সামনে। এলিনা খান দেখিয়ে দিলেন কোন দোকান থেকে তাঁরা প্রতি মাসে ভাড়া পান। উডল্যান্ড ফার্নিচারের সেই দোকানের স্বত্বাধিকারীকে দোকানে না পেয়ে টেলিফোনে কথা হয়। দোকানের স্বত্বাধিকারী পনু বললেন, ‘প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দোকানভাড়া নিয়ে যান রিতা। মিতা কখনো আসেন না। মাঝেমধ্যে সকাল ছয়টা-আটটার দিকে হাঁটতে বের হন দুই বোন। মেয়েকে সকালে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখি তাঁদের। পাউরুটি, দুধই তাঁরা এখন খেয়ে থাকেন। আমার মনে হয়েছে, মিতা বেশ অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসা দরকার।’ মিরপুরের সেই বাড়ির সামনে চিকিৎসক আইনুন নাহার রিতার একটি সাইনবোর্ড লাগানো। বাড়ির গেটে আর্বজনার স্তূপ। ভেতর থেকে বড় তালা ঝোলানো। পাশের নির্মাণাধীন বাড়ির দারোয়ান বললেন, ‘আমি বের হতে দেখি না। বড় বোন বের হয়। তাও সপ্তাহে একদিন। তখন শুধু তরল দুধের প্যাকেট আর পাউরুটি কিনতে দেখি। রাতে ১১টার পরে বের হয়।’ এলিনা খান বললেন, ‘এটি খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়। প্রথম দিকে যখন ওরা মানসিকভাবে বেশি অসুস্থ ছিল, তখন দুধ, পাউরুটি খেয়ে থাকত। সুস্থ হওয়ার পর স্বাভাবিক সব খাবারই খেয়েছে।’ গেটে ধাক্কা দিয়ে ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিত্যক্ত বাড়ির মতো লাগছে। ঝোপঝাড়, চারপাশে আর্বজনা, পোকামাকড়ের বসতি যেন। দেয়াল টপকে গেলেন সঙ্গে থাকা আলোকচিত্রী। অনবরত জানালায় শব্দ করে, ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া আসছিল না ভেতর থেকে। সব চেষ্টা যখন ব্যর্থ, হঠাৎ ঘরের মধ্য থেকে বের হলেন একজন। এলিনা খান ও তাঁর সহকর্মী মাহমুদাকে দেখেই বারান্দার গ্রিলের ওপাশ থেকে রিতা রাগে গজগজ করতে থাকেন। রিতা বলেন, ‘আল্লাহর গজব নাজিল হবে। শান্তিতে থাকতে দিতে চাও না। আবার সম্পত্তির লোভে আসছ?’ বলেই ভেতরে ঢুকে যান। পরে আর বের হননি দুই বোনের কেউই। পরে এলিনা খান বললেন, ‘আমাকে দেখলে ভাবেন, বোধহয় বাসা থেকে বের করে নিয়ে যাব। আইনুন নাহার রিতা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন। আর মিতা বুয়েট থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে বিদেশে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেন। তাঁদের বাবা মারা যাওয়ার পর সম্পত্তি নিয়ে নানা ধরনের ঝামেলা হয়। সেখান থেকেই সমস্যাটার শুরু হয়। তাঁদের মা প্রায় ১০ বছর স্বাভাবিক জীবন যাপন করেননি। জানা যায়, তিনিও সিজোফ্রেনিয়ার রোগী ছিলেন। রিতা-মিতাও সেই রোগে আক্রান্ত। তাঁরা অপুষ্টি আর নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অনেক চেষ্টা করে বের করে এনেছিলাম। ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার বের করি। অনেক নাটক করতে হয়। তাঁদের আরেক বোন আছেন, যাঁর সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। তাঁদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া যেকোনো কাজে মনটাকে ব্যস্ত রাখলে হয়তো তাঁরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। সবচেয়ে বেশি ভয় লাগে, তাঁরা যদি খুব অসুস্থ হন কিংবা মৃতপ্রায় অবস্থা হলেও তো কেউ জানবে না।’
২০০৫ সালে যখন নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত, তখন তাঁদের প্রথমে ঢাকার ধানমন্ডি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে নিয়ে যাওয়া হয় সেন্ট্রাল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক সেহেরীন এফ সিদ্দিকা, খাজা নাজিমুদ্দিন ও মোহিত কামাল দুই বোনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। বর্তমানে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেহেরীন এফ সিদ্দিকার সঙ্গে কথা হয় তাঁদের নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা তিন চিকিৎসক মিলেই ওদের চিকিৎসা দিয়েছিলাম। ওদের মেয়েলি কিছু রোগ ছিল। তার চিকিৎসা দিয়েছিলাম। সেরেও ছিল। ফলোআপের জন্য পরেও এসেছিল বেশ কয়েকবার।’ রিতার চিকিৎসক বন্ধুদের কাছে খোঁজখবর করেছিলাম। পরে তাঁরাও আর কিছু বলতে পারেনি।

মেয়েটির জন্য কারও মায়া হলো না!

৪ বছরের কিশোরী হেনা ৭০-৮০টি দোররার আঘাতের পর মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। তার আগে ছোট্ট এই মেয়েটি সয়েছে ধর্ষণের ভয়ংকর শারীরিক-মানসিক যন্ত্রণা। মৃত্যু তাকে হয়তো সব যন্ত্রণা আর এই কুৎসিত সমাজ থেকে মুক্তি দিয়েছে।

হেনার ফুফাতো বোনসহ আত্মীয়রা জানান, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা গ্রামের দরিদ্র কৃষক দরবেশ খাঁর মেয়ে হেনা। গত রোববার দিবাগত রাতে মেয়েটি প্রাকৃতিক কাজে ঘরের বাইরে যায়। এ সময় তার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই মাহাবুব (৪০) তার মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে পাশে তার পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। মেয়েটির চিৎকারে প্রথমে মাহাবুবের স্ত্রী ও ভাই বেরিয়ে আসেন। কিন্তু তাঁরা মেয়েটিকে উল্টো মারধর করেন। একপর্যায়ে হেনার বাবা-মা, ভাই-বোনসহ বাড়ির লোকজন বের হয় এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে। হেনাদের ঘর থেকে মাহাবুবের ঘরের দূরত্ব ২০-২৫ গজ হবে বলে জানিয়েছে স্বজনেরা।
নড়িয়া থানা ও এলাকার সূত্র জানায়, ঘটনা জানাজানি হলে পরের দিন সোমবার চামটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইদ্রিস ফকিরের নেতৃত্বে সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিসে উপস্থিত হন চামটা আবুল বাশার মাদ্রাসার শিক্ষক সাইফুল ও গ্রামের মসজিদের ইমাম মফিজ উদ্দিন। ইদ্রিস ফকির, লতিফ মীরমালত, আক্কাস, ইয়াসিন ও জয়নাল মীরমালতের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের বিচারক বোর্ড গঠন করা হয়। তাঁরা ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে ধর্ষণকারী ও ধর্ষণের শিকার কিশোরী উভয়কেই দোররা মারার রায় দেন। মাহাবুবকে ২০০ দোররা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আর কিশোরী হেনাকে ১০০ দোররা মারার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু ধর্ষকের শাস্তি অর্ধেক কমিয়ে তাৎক্ষণিক সালিসকারীরা তাঁকে ১০০ দোররা মারেন। হেনাকে ৭০-৮০টি দোররা মারার পর সে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে হেনা মারা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে জানান, সোমবার রাতে জরুরি বিভাগে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরই হেনা মারা যায়।
সালিসকারীরা হেনার মৃতদেহ গ্রামে নিয়ে তড়িঘড়ি দাফনের উদ্যোগ নেন। খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইউপি সদস্য ইদ্রিস ফকির, ধর্ষক মাহাবুব ও সালিসকারীরা পালিয়ে যান। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধর্ষক মাহাবুবের স্ত্রী, জয়নাল মীরমালত, আলাবক্স করাতি ও ইমাম মফিজ উদ্দিনকে আটক করে। শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার শহিদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
হেনার বাবা দরবেশ খাঁ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি গরিব হওয়ায় প্রভাবশালীরা আমার মেয়ের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। এভাবে দোররা মেরে মেয়েটিকে মেরে ফেলা হবে, কখনো ভাবিনি। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’
মাহাবুবের স্ত্রী দাবি করেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে অসামাজিক কাজ করায় গ্রামের মানুষ হেনাকে আটক করে মারধর করে। তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে মারধর করেছেন।
চামটা ইউপির চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন রাঢ়ী বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ভাবতেই লজ্জা লাগছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’
পুলিশের হাতে আটক সালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকা আলাবক্স করাতি বলেন, ‘দোররা মারার ফতোয়া আমরা দিইনি। প্রভাবশালী সালিসকারীদের চাপের মুখে এর প্রতিবাদ করতে পারিনি। মেয়েটির এমন পরিণতি হবে বুঝতে পারলে প্রতিবাদ করতাম।’
আটক হওয়া ইমাম মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘দোররা মারার রায় ঘোষণা করেছেন বিচারকেরা। উপস্থিত অন্যরা তা বাস্তবায়ন করেছেন। তবে সালিসকারীরা আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন। আমরা বলেছি, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই শাস্তি পেতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন গতকাল রাতে জানান, ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের ফকির গতকাল রাত নয়টার দিকে জানান, হেনার মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া চারজনসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
পুলিশ সুপার এ কে এম শহিদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।

নিয়ম না মেনে পুরোনো জাহাজ আসছে, ভাঙাও চলছে

ট্টগ্রামে ভাঙার জন্য আরও চারটি পুরোনো জাহাজ আমদানি করা হয়েছে। এ নিয়ে গত এক মাসে ভাঙার জন্য ৩০টি জাহাজ আনা হলো। উচ্চ আদালতের নির্দেশ আর আন্তর্জাতিক বর্জ্য চলাচলবিষয়ক সনদ অমান্য করে এই জাহাজগুলো আনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতিও নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভাঙার জন্য পুরোনো জাহাজ (স্ক্র্যাপ) আমদানির আগে রপ্তানিকারক দেশ থেকে বর্জ্যমুক্ত সনদ (প্রি-ক্লিনিং সার্টিফিকেট) নিতে হবে। থাকতে হবে পরিবেশ ছাড়পত্র। আদালতের এ নির্দেশনা থাকলেও বেশির ভাগ আমদানিকারক তা অমান্য করে চলেছেন।
গত ১৮ জানুয়ারি ম্যাক করপোরেশনের আমদানি করা এমভি প্রণাম নামের একটি পুরোনো জাহাজ কাটার সময় বর্জ্যের কারণে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণে চারজন শ্রমিক নিহত হন। আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে জাহাজভাঙা শিল্পে পরিবেশসম্মতভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নির্দেশের পর এখন পর্যন্ত একটি জাহাজভাঙা ইয়ার্ডও নিয়ম মেনে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেনি।
এদিকে বিভিন্ন দেশের ৪৮টি পরিবেশবাদী ও শ্রমিক অধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের বেশির ভাগ বর্জ্যযুক্ত জাহাজ নিজেদের দেশে বর্জ্যমুক্ত না করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এতে বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করে তারা উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে পুরোনো জাহাজ আমদানির ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
আন্তরাষ্ট্রীয় বর্জ্য চলাচলবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ (ভেসেল কনভেনশন) অনুযায়ী পুরোনো জাহাজ একটি বর্জ্য। রপ্তানিকারক দেশকে বর্জ্যমুক্ত করে আমদানিকারক দেশে পাঠানোর শর্তযুক্ত এই কনভেনশন তৈরি হয় ১৯৮৯ সালে। বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করলেও এটি মেনে চলে না। মানে না রপ্তানিকারক দেশগুলোও।
মন্ত্রীর জিনতত্ত্ব: গত ২৯ জানুয়ারি পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামে জাহাজভাঙা শিল্পের পক্ষে বক্তব্য দেন। চট্টগ্রাম চেম্বার আয়োজিত ‘পরিবেশ রক্ষায় শিল্পপতিদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূলত জাহাজভাঙা শিল্প নিয়ে আলোচনা হয়। হাছান মাহমুদ সেখানে বলেন, ‘আমি জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য অনেক কিছু করেছি। কিন্তু এই শিল্পের ওপর খারাপ জিনের আছর পড়েছে। এই জিন হাইকোর্টের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করে। এই জিনের সঙ্গে বিদেশিদের যোগাযোগ রয়েছে। তারা বাংলাদেশে লোহার ব্যবসা করতে চাইছে।’
এদিকে জাহাজভাঙা ইয়ার্ডের পক্ষে পরিবেশ প্রতিমন্ত্রীর প্রকাশ্য অবস্থানের পর পরিবেশ অধিদপ্তর দ্রুততার সঙ্গে ছাড়পত্র দেওয়া শুরু করেছে। এ মাসে মোট ৪৪টি ইয়ার্ডকে পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। এর আগে অক্টোবরে ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ফলে এখন জাহাজভাঙার পরিবেশ ছাড়পত্র পাওয়া ইয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়াল ৬০টি। সীতাকুণ্ডের জাহাজভাঙা ইয়ার্ডের সংখ্যা মোট ১৩৫। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলের শেষ দিকে এই সংখ্যা ছিল ৬০-৬৫।
জানা গেছে, জাহাজভাঙা ইয়ার্ডগুলোতে শ্রমিকের মৃত্যু ও নিয়ম না মানার বিষয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গত সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় হাছান মাহমুদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কীভাবে শর্ত সাপেক্ষে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। উত্তরে মন্ত্রী বলেছেন, ছাড়পত্র পাওয়া ৪৪টি ইয়ার্ডের বেশির ভাগই ৭৫ শতাংশ শর্ত মেনে কাজ করছে।
১২ বা ১৩ ফেব্রুয়ারি সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিবেশ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় কমিটির একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রামে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তারা জাহাজভাঙা ইয়ার্ডগুলো পরিদর্শন করবে।
এ ব্যাপারে সাবের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজভাঙা ইয়ার্ডগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ও পরিবেশ-সংক্রান্ত নিয়মকানুন না মানার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। ঢাকায় বসে পরিস্থিতি সম্পর্কে মূল্যায়ন না করে তাঁরা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে চান বলে জানান।
আদালতের নির্দেশ অমান্য: ২০০৯ সালের অক্টোবরে ১৬টি জাহাজভাঙা ইয়ার্ডকে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ আদালত থেকে বলা হয়, পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী ছাড়পত্র নিতে হবে। শর্ত সাপেক্ষে ছাড়পত্রের কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর ওই নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে ১৬টির ছাড়পত্র বহাল রাখার পাশাপাশি নতুন করে আরও ছাড়পত্র দেয়।
চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, বহির্নোঙরে গত সোমবারও ভাঙার জন্য আনা চারটি জাহাজ অপেক্ষা করছিল। এ নিয়ে গত তিন মাসে ভাঙার জন্য আমদানি হয়েছে ৩০টি জাহাজ। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জাফর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত অক্টোবরের পর ২৬টি জাহাজ আমদানির ছাড়পত্র দিয়েছি। অন্য চারটি জাহাজ কীভাবে এল, আমরা জানি না।’
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ৫ ও ১৭ মার্চ হাইকোর্টের রায়ে সব পুরোনো জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও রপ্তানিকারক দেশের ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এই আদেশ না মেনে জাহাজ আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করে। এরপর রেকর্ডসংখ্যক ১৭২টি জাহাজ আসে। বিষয়টি বেলার পক্ষ থেকে জানানো হলে হাইকোর্ট গত বছরের ১১ মে আরেক আদেশে আবারও সব ধরনের জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও রপ্তানিকারক দেশের ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমদানিকারকদের পৃথক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এসব জাহাজ একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সরেজমিন পরিদর্শনের পর ভিড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এই নির্দেশনা মেনে কাজ করেছি। তবে কোনো জাহাজ কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। অনুমোদন ছাড়া জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণে চার শ্রমিক নিহত হওয়ায় আমরা ম্যাক করপোরেশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’
এ প্রসঙ্গে জাহাজভাঙার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যসোসিয়েশনের (বিএসবিএ) সাবেক সহসভাপতি কামাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে বলে আমি কোনো জাহাজ আমদানি করিনি। এখন আমদানি করা জাহাজ ভাঙতে গিয়ে অনেকে হত্যা মামলার আসামি হচ্ছেন।’