Saturday, June 02, 2012

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশঃ কক্সবাজারে স্থাপনা নির্মাণে ডিসির অনুমোদন লাগবে

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ জেলার ৩৩টি স্থানের জমি ক্রয়-বিক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অনুমোদন লাগবে।

নির্দেশ অমান্য করে কেউ জমি কেনাবেচা এবং বহুতল ভবনসহ স্থাপনা তৈরি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান এক স্মারকে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসকের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) কে এম আলমগীর কবির। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কক্সবাজার টাউন অ্যান্ড সি-বিচ আপ টু টেকনাফ’ শিরোনামে গৃহীত কক্সবাজারের মহাপরিকল্পনাভুক্ত এলাকার পরিকল্পিত উন্নয়ন এবং ওই এলাকার জমি ক্রয়-বিক্রয় ও যত্রতত্রে অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে ওই সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ মোতাবেক কক্সবাজার জেলার সমগ্র এলাকা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে। তাই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া মহাপরিকল্পনাভুক্ত এলাকায় আর অপরিকল্পিত উন্নয়ন করা যাবে না।
মহাপরিকল্পনাভুক্ত এলাকাগুলো হচ্ছে: কক্সবাজার শহর, ইনানী, সেন্ট মার্টিন ও শাহ পরীর দ্বীপ, টেকনাফ পৌরসভা, সাবরাং, উত্তর নীলা, শিলখালী, বড়ডেইল ও লেঙ্গুরবিল, মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা, সোনাদিয়া, হামিদারদিয়া, পুটিবিলা ও ঠাকুরতলা, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা, খুরুশকুল, পাটালিমাছুয়াখালী, খুরুলিয়া, তোতকখালী ও ভারুয়াখালী, রামু উপজেলার চাইন্দা, জঙ্গল খুনিয়াপালং, পেচারদিয়া, ধোয়াপালং, গোয়ালিয়াপালং, জালিয়াপালং ও মরিচ্যাপালং এবং উখিয়া উপজেলার উখিয়াঘাট ও পালংখালী।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত এক পত্রে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর ‘প্রিপারেশন অব ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান অব কক্সবাজার টাউন অ্যান্ড সি-বিচ আপ টু টেকনাফ’ শীর্ষক প্রকল্প এলাকায় অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে ইমারত নির্মাণ আইন বিধিমালার আওতায় একটি ইমারত নির্মাণ (বিসি) কমিটি গঠন করে দেন।
কমিটির সভাপতি হচ্ছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক। সদস্য রাখা হয়েছে কক্সবাজার সহকারী কমিশনার (ভূমি), কক্সবাজার পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ, টেকনাফ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী, মহেশখালী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের সিনিয়র প্ল্যানার, বন বিভাগের প্রতিনিধি ও কক্সবাজার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।
এনডিসি কে এম আলমগীর কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ওই পত্রটি গত ৩০ মে জেলা প্রশাসনের হস্তগত হয়েছে। এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট সব পৌরসভা ও ইউনিয়নের কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এই উদ্যোগ কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত, পাহাড় নদী খাল দখলদারের কবল থেকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন পরিবেশবাদী সংগঠন ‘কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের’ সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী। তিনি জানান, সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি সংরক্ষিত বন উজাড় করে বসতবাড়ি নির্মাণ এবং ফসলি জমি ক্রয় করে নানা রকমের অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ হবে।

কাঁকড়া রফতানি করে আয় দুইশ’ কোটি টাকা

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে উত্পাদিত দুইশ’ কোটি টাকার কাঁকড়া রফতানি করে সরকারের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন কাঁকড়া চাষীরা।

চিংড়ি চাষের মতো কাঁকড়া চাষীদের সুদমুক্ত ঋণসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হলে কাঁকড়া চাষাবাদ সম্প্রসারিত হয়ে আরও দ্বিগুণ কাঁকড়া বিদেশে রফতানি করতে পারবে বলে কাঁকড়া চাষী ও ব্যবসায়ীদের অভিমত।
সরেজমিন উখিয়ার পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী, টেকনাফের হোয়াইক্যং, উলুবনিয়া, ঝিমনখালী, মৌলভীবাজার, হ্নীলা, উনচিপ্রাংসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে— চিংড়ি চাষের পাশাপাশি প্রায় ৫শ’ একর জমিতে কাঁকড়া চাষ হচ্ছে। উখিয়ার বালুখালী গ্রামের কাঁকড়া ঘের মালিক আহমুদুর রহমান জানান, তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত। প্রতিবছর ১ একর জমিতে কাঁকড়া চাষ করেন। যাবতীয় ব্যয়ভার পুষিয়ে লক্ষাধিক টাকা মুনাফা হয়। এভাবে আরও অনেকে চিংড়ি চাষ ছেড়ে দিয়ে কাঁকড়া চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। তারা জানান, চিংড়ি চাষাবাদে বিনিয়োগের পরিমাণ বেশি, পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়। চিংড়ি চাষাবাদ অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় এ পেশা ছেড়ে দিয়ে কাঁকড়া চাষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। পালংখালীর কাঁকড়া ব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম জানান, তিনি ২ একর জমি বর্গা নিয়ে কাঁকড়া চাষ করেছেন। শ্রমিকের মজুরিসহ আনুষঙ্গিক খরচের টাকা বাদ দিয়ে প্রতিবছর তার দু’লক্ষাধিক টাকা আয় হয়। টেকনাফ উপজেলার উলুবুনিয়া গ্রামের কাঁকড়া ব্যবসায়ী আবদুস শুক্কুর, সিরাজুল মোস্তফা, কমল বড়ুয়া, জাফর আলম জানান, উখিয়া-টেকনাফে বর্তমানে ২৫টি গ্রামে ৫শ’ একর জমিতে কাঁকড়ার চাষ ও উন্নয়ন হচ্ছে। কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর এ খাত থেকে তারা সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব দিলেও তারা কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। কাঁকড়া রফতানি করে উখিয়া-টেকনাফ থেকে প্রায় ২শ’ কোটি টাকা জাতীয় অর্থনীতিতে জোগান দিয়ে থাকে। কাঁকড়া চাষী মাহমুদুর রহমান ২০-২৫ বছর ধরে কাঁকড়া চাষ করে আসছি। এক একর কাঁকড়া চাষে দু’দিনে চল্লিশ কেজি মুরগির মাংস দিতে হয়। প্রতি মাসে খাবার বাবদ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। কাঁকড়া সংগ্রহকারী লিটন বড়ুয়া ও শিবু বড়ুয়া জানান, মাছ চাষের মতো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাঁকড়ার একক চাষ করা হলে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে এবং বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কাঁকড়া রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে কাঁকড়া সংগ্রহ করে পরবর্তীতে ওই কাঁকড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করে তা বিদেশে রফতানি করে থাকে। কাঁকড়া রফতানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও চিংড়ি চাষাবাদের ওপর সরকারের যে সুদৃষ্টি রয়েছে, কাঁকড়া চাষাবাদে তা নেই। যার ফলে কাঁকড়া চাষাবাদ সম্প্রসারিত হচ্ছে না।
কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা জানান, ৫টি গ্রেডে কাঁকড়া বিক্রি করা হয়। ১ম গ্রেড ৬শ’ থেকে ১ হাজার, ২য় গ্রেড সাড়ে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’, ৩য় গ্রেড সাড়ে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৪শ, ৪র্থ গ্রেড ১শ’ থেকে ১২০, ৫ম গ্রেড ৬০ থেকে ১শ’। আরকান রফতানিযোগ্য কাঁকড়া সরবরাহকারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বাবুল বলেন, উখিয়া-টেকনাফ থেকে প্রতিবছর ২ কোটি টাকার কাঁকড়া মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে সরকার প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। কাঁকড়া চাষের উন্নয়ন সম্প্রসারণের পাশাপাশি কাঁকড়া চাষীদের সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হলে রফতানি করা কাঁকড়ার ২০ শতাংশ উখিয়া-টেকনাফে উত্পাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সেন্ট মার্টিনে অবাধে চলছে পাথর আহরণ

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে অবাধে পাথর আহরণ করায় জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরও একটি চক্র এভাবে পাথর আহরণ করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি চক্র শ্রমিক নিয়োগ করে প্রথমে আহরণ করে চূর্ণবিচূর্ণ করে। পরে ব্যবসায়ীরা এগুলো তাদের কাছ থেকে কিনে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, হোটেল, কটেজ, বসতবাড়ি, রাস্তা, সীমানাপ্রাচীর ও দোকানঘর নির্মাণে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সরকার কয়েক বছর আগে এই দ্বীপ থেকে পাথর আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের টেকনাফ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অধিদপ্তর ১৯৯৫ সালে দ্বীপের সাড়ে সাত বর্গকিলোমিটার এলাকার ভূখণ্ডকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে শামুক, ঝিনুক, পাথর ও প্রবাল-শৈবাল আহরণ ও বিক্রি সমপূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মী আবদুল আজিজ ও জয়নাল আবেদীন জানান, দ্বীপের দক্ষিণপাড়া, পূর্বপাড়া (আশ্রয়ণকেন্দ্র), পূর্ব কোনারপাড়া, গলাছিরা, পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে অবাধে পাথর আহরণ করা হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গত ২৯ মে সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকের সৈকত থেকে কয়েকজন শ্রমিক পাথর আহরণ করছে। দ্বীপের মাঝরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, পূর্বপাড়ায় যত্রতত্র ফসলি জমি থেকেও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর আহরণ করা হচ্ছে। পশ্চিমপাড়া আশ্রয়কেন্দ্র-সংলগ্ন ফসলি জমি থেকে পাথর তুলছিলেন ২০-২৫ জন মানুষ। এঁদের মধ্যে আবদুল মতলব, মো. হারুন রশিদ ও আজারা খাতুন জানান, হোটেল মালিকের কাছে বিক্রির জন্য তাঁরা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে পাথর তুলছেন। প্রতি টন পাথরের টুকরার জন্য তাঁরা ৩০ টাকা করে পান। স্থানীয় আবু জাফর, মৌলভী আবদুর রহমান, আলাউদ্দিন খানসহ কয়েকজন তাঁদের দিয়ে পাথর আহরণ করান।
আবু জাফর, মৌলভী আবদুর রহমান ও আলাউদ্দিন খান শ্রমিক নিয়োগ করে পাথর আহরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁরা জানান, তাঁরা শ্রমিকদের কাছ থেকে পাথর কেনেন। মাঝরপাড়ায় দেখা গেছে, ফসলি জমিতে ৩০ জন নারী ও পুরুষ মাটির নিচ থেকে পাথর আহরণ করছেন। প্রথমে তাঁরা পাথরের ওপরের ও চতুর্দিকের মাটি সরিয়ে গর্ত খোঁড়েন। পরে লোহার রড দিয়ে পাথরের একটি স্থানে সাত-আট ইঞ্চি দীর্ঘ ও সরু একটি ছিদ্র করেন। এরপর ম্যাচের কাঠি থেকে সংগ্রহ করা বারুদ ওই ছিদ্রে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে কেরোসিন ভেজানো সুতার এক মাথা বারুদের মধ্যে রেখে অন্য মাথায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সুতা পুড়ে আগুন পাথরের ভেতর রাখা বারুদে স্পর্শ করা মাত্রই বিকট শব্দে পাথর ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
পরিবেশ অধিদপ্তর টেকনাফ কার্যালয়ের জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা সাহিদ আল শাহীন জানান, ব্যাপকভাবে পাথর উত্তোলন করায় দ্বীপটি হুমকির মুখে পড়েছে। কিছুতেই পাথর উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না। সেন্ট মার্টিন ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অধিকাংশ সময় খবর পেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী জানান, পরিবেশ আইন অমান্য করে পাথর আহরণের খবর পাওয়া গেছে। এসব বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে উপকূলীয় ও জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক মো. জাফর ছিদ্দিক জানান, জেলা সদর থেকে এসব তদারকি করা কোনোভাবে সম্ভব হচ্ছে না। তাই দ্বীপে একটি স্থায়ী কার্যালয় করার পরিকল্পনা চলছে।

রামুতে বাচ্চা হাতির মৃত্যু

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ঘিলাতলী বনবিট এলাকায় একটি বাচ্চা হাতি মারা গেছে।

হাতিটির বয়স পাঁচ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে ঘিলাতলী বনবিট কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন সরেজমিন পরিদর্শন করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, বিট কর্মকর্তা ফোর্স নিয়ে ছাগল খাইয়া আগা এলাকায় টহলে যায়। এ সময় মৃত প্রাণীর দুর্গন্ধ পেলে তারা পুরো এলাকা ঘুরে দেখে। এক পর্যায়ে ওই এলাকার একটি ঝিরির মধ্যে চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা মৃত একটি বাচ্চা হাতি দেখতে পায়।

তবে বিট অফিসার ইসমাইল হোসেন ধারণা করছেন পাহাড়ের চূড়া থেকে নিচে পড়ে বাচ্চাটি মারা গিয়ে থাকতে পারে। 

বাকখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে তিনি হাতিটির বিষয়ে ময়না তদন্ত ও জিডি করাসহ সবকিছুর প্রস্তুতি নেন।

শনিবার তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানান।

মেঘালয়ে কালো মেঘ

বাড়িটির নাম মেঘালয়। কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ায় অবস্থিত বাড়িটির চারপাশ জুড়ে কান্নার রোল।এ যেন মেঘালয়ে জমে থাকা কালো মেঘ থেকে টিপ টিপ করে ঝরে পড়ছে শোকার্ত বৃষ্টি।

বাড়ির মালিক ইত্তেজা হোসেন(৬০) ও তার স্ত্রী শেফায়েতুল আলম রেনু (৫০) সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছেন। শুক্রবার সকাল ৭টায় ডুলাহাজারার মালুমঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি চেয়ার কোচ নিভিয়ে দেয় আরো পাঁচ জনের জীবন প্রদীপ।
ফেনীতে থাকা একমাত্র পুত্র আশিকের নবপরিনিতা বধুকে বাড়ী ফেরাতে গিয়ে তারা ফিরলেন লাশ হয়ে। আর বিকেল হতেই শোকার্ত মানুষের ঢল নামে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন জেলা ষ্টেডিয়ামে।এক সময় কানায় কানায় পূর্ন হয়ে যায় ষ্টেডিয়ামের মাঠ। একেক করে আনা হয় সাতটি মরদেহ।তারপর অনুষ্টিত হয় জানাযা। আজ থেকে ৩১ বছর আগে ১৯৮১ সালে এই ষ্টেডিয়ামের মাঠেই ইত্তেজা হোসেন আর শেফায়েতুল আলম রেনুর বিবাহ অনুষ্টান সম্পন্ন হয়েছিল, সেই ষ্টেডিয়াম প্রাঙ্গনেই অনুষ্টিত হলো তাদের নামাজে জানাযা। যে ষ্টেডিয়াম প্রাঙ্গনে তারা চিরদিনের জন্যে একে অপরের হয়েছিলেন সেখানেই তাদের জানানো হলো চির বিদায়। প্রকৃতিতে তখন বৃষ্টি নেমেছে। হয়ত প্রকৃতিও বুঝে শোকের ভাষা। প্রকৃতির আকাশে যে মেঘ জমেছে তা হয়ত সরে যাবে।কিন্তু মেঘালয়ে যে কালো মেঘ জমেছে তা কি সরানো সম্ভব?সম্ভব কি নিরাপদ সড়ক বিনির্মান আর নিশ্চিত গন্তব্যে পৌছানোর গ্যারান্টি? এর উত্তর কে দেবে!