Friday, July 06, 2012

ইয়াবা নির্ভর উখিয়ার শতাধিক পরিবারের জীবিকা!

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নাফ নদী ও টেকনাফ স্থলবন্দর এবং আরকান সড়ক দিয়ে পানির মতো আসতে শুরু করেছে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা।
আর এতে চরমভাবে বিপর্যস্থ উখিয়ার বালুখালী এলাকার যুবক-যুবতী ও ছাত্রসমাজ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার মাসোহারা গ্রহণের মধ্যদিয়ে এ এলাকার শতাধিক লোক ইয়াবা বেচাকেনা ও পাচার করছে। তাদের জীবিকাও এখন ইয়াবাকে ঘিরেই।
ফলে নেশার ভয়ংকর থাবার কবলে গোটা উখিয়া। সব অপকর্মের মূলমন্ত্র মাদককে রোধ করা না গেলে এ এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সামাজিক মূল্যবোধের উত্তরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একটি চক্র এ এলাকায় ইয়াবা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চক্রটি বছরে কক্সবাজার থেকে প্রায় ৮শ কোটি টাকা ইয়াবা বাণিজ্য করে আসছে।

উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং-এ গড়ে উঠেছে ইয়াবা, হেরোইনসহ মাদকদ্রব্যের রমরমা ব্যবসা। অতিলাভের আশায় কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা প্রতিনিয়ত এ ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছে।

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত থেকে শুরু করে গ্রাম ও কক্সবাজার শহরের অলিগলিতে ফ্রিস্টাইলে বিক্রি হচ্ছে এসব মাদকদ্রব্য। উখিয়া সীমান্ত দিয়ে আসা ইয়াবা চোরাচালানী চক্রের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রও জড়িত বলে জানা গেছে।  

সূত্র জানায়, দুর্নীতিপরায়ন পুলিশসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আতাত করে ইয়াবা আমদানি করে মাফিয়াচক্র। ফলে সীমান্তের নিরহ জনগণের এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে না।

উখিয়া সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। তবে মাদক প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন।”

এদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিজ্ঞ ও সুশীল সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মনে করেন প্রশাসন ইচ্ছা করলেই এটি বন্ধ করা সম্ভব।

জানা গেছে, বিলাসবহুল গাড়িতে করে সুন্দরীরা পর্যটক সেজে ইয়াবার চালান দেশের অন্যান্য স্থানে অনায়াসে নিয়ে যায়। বিষয়টি জনপ্রতিনিধি, পুলিশ অবহিত থাকলেও তা প্রতিরোধে এগিয়ে আসে না।  

তবে এ অঞ্চলের বিজিবি ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাঝেমধ্যে দু’একটা ইয়াবা চালানসহ বিক্রেতাদের আটক করলেও মূলচক্রের কোনো সন্ধান মেলেনা। মূলচক্র থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বলেন, “যে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধ করার জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সব সময় প্রস্তুত। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য সংবাদের অপেক্ষায় তারা।”

No comments:

Post a Comment