Wednesday, January 05, 2011

সভা-সমাবেশে বাধা দিলে হরতাল: খালেদা জিয়া

ভা-সমাবেশ করতে বাধা দিলে হরতাল ডাকার হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার রাতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের এক অনুষ্ঠানে তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

খালেদা বলেন, "আমরা সভা-সমাবেশের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে চাই। কিন্তু সরকার এসব কর্মসূচিতে পদে পদে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে। সরকারকে বলতে চাই- এভাবে কর্মসূচিতে বাধা দিলে হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়া ছাড়া আমাদের কোনো গত্যন্তর থাকবে না।''

রাতে গুলশানের কার্যালয়ে যুবদলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে 'অঙ্গীকার' শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। গত ২৭ অক্টোবর যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। বর্তমান সরকারকে 'ফ্যাসিস্ট ও একদলীয়' আখ্যায়িত করে খালেদা বলেন, তারা (সরকার) গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই গণতান্ত্রিক কর্মসূচি করতে বাধা দেয়।

বিরোধী দলীয় নেতা সরকারের 'নতজানু' পররাষ্ট্র নীতির সমালোচনা করে বলেন, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের হাজার হাজার একর জমি দখল করে নিচ্ছে। ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। প্রতিবাদ করতে চায় না। তিনি পরীক্ষিত নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে যুবদলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করাও নিদের্শ দেন। কমিটিতে যারা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন না, তাদের বাদ দিয়ে যারা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে তাদেরকে কমিটিতে নিতে বলেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, "যুবদলের কমিটি দুর্বল হলে সেই কমিটি আমি রাখব না। এটা কেবল যুবদলই নয়, মূলদলসহ ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের ক্ষেত্রেও তাই হবে। যারা কমিটিতে কাজ করছেন না, তাদের বাদ দিতে হবে।'' এ সময় যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য রাখেন।

অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নিরব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোরতাজুল করিম বাদরু, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল, মহানগর নেতা হামিদুর রহমান হামিদ, এস এম জাহাঙ্গীর, মামুন হাসান, রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিমানের লোকসান ৮০ কোটি টাকা

ত বছর জাতীয় পাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৮০ কোটি টাকারও বেশি লোকসান হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে বিমানের চেয়ারম্যান গত বছর সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন যে বিমান মুনাফা করবে।

দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের করা অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান পরিচালনায় চারটি উড়োজাহাজ ইজারা নিতে ১০২ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করা হয়েছে। তবে প্রতিবেদনটি এখনো জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। মঙ্গলবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে স্বীকার করেন, অডিট প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান ধরা পড়েছে।

বিমানের পরিচালনা পর্ষদ ওই অডিট প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি। জাকিউল ইসলাম তার কার্যালয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "হ্যাঁ, আমরা এ বছর ৮০ কোটি টাকারও বেশি লোকসান দিয়েছি।" অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়, ২ হাজার ৯৪৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ৯১০ টাকা আয়ের বিপরীতে বিমানের ব্যয়ের পরিমাণ ৩ হাজার ২৩ কোটি ৭৬ লাখ ৩ হাজার ৮২৪ টাকা।

তিনি বলেন, "উড়োজাহাজ ইজারা নিতেই খরচ হয়েছে ১০২ কোটি টাকা। গত দুই বছর যাত্রীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। কিন্তু আমরা মুনাফা করেছি। "গত দুই বছর মূলত আমাদের উড়োজাহাজ দিয়ে ব্যবসা চালিয়েছি। তাই বিমানকে অনেক ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। যার দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু বিমান ঠিকই মুনাফা করেছে।"

২০০৯ সালে বিমান ১৫ কোটি টাকা মুনাফা করে। ২০০৮ সালে এর মুনাফার পরিমাণ ছিল ৫ কোটি টাকা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই লোকসানের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে স্বায়ত্বশাসিত বিমান র্কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, "এর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনেক সংবাদে বিমান লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে জানানো হয়।"

এতে আরো বলা হয়, বিমানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির কাছে সরকারের বিভিন্ন পাওনা ইক্যুইটিতে রূপান্তরিত করা হয় এবং মূল ঋণ ও সুদ পরিশোধের দায় থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পাওনা ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পাওনা ৫৩৭ কোটি ৭০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা রয়েছে।

"অন্যথায় লোকসানের পরিমাণ আরো বেশি হতো" বলা হয় ওই চিঠিতে। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ সম্পর্কে বলেন, "আমরা মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি এবং এর জবাব পাঠাবো।" গত বছর বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছিলেন যে ২০১০ সালে বিমান মুনাফা করবে। এ বিষয়ে জাকিউল ইসলাম বলেন, "আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলাম।"

বখাটেকে সাজা: ছাত্রীর চাচাতো ভাইকে হত্যা

ওগাঁয় বখাটেকে সাজা দেওয়ার তিনদিন পর উত্ত্যক্তের শিকার ছাত্রীর চাচাতো ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জেলার বদলগাছী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের ওই বখাটের আত্মীয়রা সোমবার একই গ্রামের বাবুল আক্তারকে (৪২) পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার বখাটের বাবাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বদলগাছী থানার ওসি আব্দুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে সাজাপ্রাপ্ত বখাটের বাবা আব্দুস ছাত্তার (৬২) ও তাদের পক্ষের বান্নীসার গ্রামের তাইজুল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওসি জানান, সামছুল আলমের মেয়ে বদলগাছী কলেজের øাতক (পাস) প্রথমবর্ষের ছাত্রীকে একই গ্রামের ছাত্তারের ছেলে ফজলে রাব্বী রিপন ওরফে ধলা (২৪) উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাড়ি গিয়ে উত্ত্যক্ত করলে রিপনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয় ছাত্রীটির আত্মীয় স্বজন।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত রিপনকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রিপন বর্তমানে কারাগারে আছেন। ছাত্রীটির বাবা সামছুল আলম জানান, ঘটনার পর থেকেই রিপনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাদের হুমকি দিয়ে আসছিলো।

তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় আধাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম তাদের মদদ দিচ্ছেন। তিনি বিষয়টি জানিয়ে চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। সামছুল আলম জানান, এতে ছাত্তার ও তার আত্মীয় স্বজন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা রোববার সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বৈঠক করে মারধর করার ঘোষণা দেয়।

তিনি জানান, সোমবার দুপুরে তার ভাইপো বাবুল আকতার ও বোন রেখা বেগমকে (৩৮) সেনপাড়া ইটভাটার সামনে পেয়ে তারা মারধর করে। আহত অবস্থায় দুজনকে প্রথমে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে বাবুলের অবস্থার অবনতি ঘটলে সন্ধ্যায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ১১টার দিকে বাবুলের মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, বাবুলের বাবা আব্দুল লতিফ বাদি হয়ে বদলগাছী থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। থানায় বসে লতিফ অভিযোগ করেন, পুলিশ মামলা গ্রহণের সময় ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলমের নাম বাদ দিয়েছে। তবে বদলগাছী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহেদুজ্জামান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, বাদি ইচ্ছা করলেই চেয়ারম্যানকে আসামি করতে পারেন।