Sunday, December 12, 2010

সিইপিজেডের সামনে আবারও বিক্ষোভ, নিহত ৩

ট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় আজ রোববার পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন বলে উপপুলিশ কমিশনার (সদর) মো. মইনুল ইসলাম জানিয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম আরিফুল হক (২৫)। তিনি একজন রিকশাচালক। তবে ওই এলাকা থেকে অজ্ঞাত আরও দুই জনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তাঁদের বয়স আনুমানিক ২২ ও ২৬ বছর। এ ঘটনায় পুলিশ মোট সাড়ে ৫০০ গুলি এবং ৯৫টি টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
বিকেল সাড়ে চারটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ খান, সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাক এস এম আবদুর রশীদ, স্থানীয় সাংসদ এম আবদুল লতিফ ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সন্ধ্যায় বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে আজকের জন্য সিইপিজেডের সব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজকের সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশের ৪১ জন সদস্য রয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শ্রমিকেরা বিক্ষোভের সময় ৩০টি গাড়ি ভাঙচুর এবং দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশের দাবি, এর মধ্যে পুলিশেরও আটটি গাড়ি রয়েছে। এদিকে শ্রমিকেরা ইপিজেডের আটটি কারখানা, ইপিজেডের বাইরের দুটি বিপণিবিতান এবং আশপাশের দোকানপাট ভাঙচুর করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার শেল ও গুলি ছোড়ে। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে আগ্রাবাদ থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজন পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন। তাঁরা শ্রমিকদের বোঝালে তাঁরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভাঙচুরের প্রতিবাদে পথসভা করেন।
জানা গেছে, ইয়াংওয়ান গ্রুপের শ্রমিকেরা আজ সকাল আটটায় কাজে যোগ দিতে আসেন। এ সময় তাঁদের সিইপিজেডের ভেতর ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এতে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে সিইপিজেডের কয়েকটি ফটক ও ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
এ সময় পুলিশ শ্রমিকদের বাধা দিলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে সকাল ১০টার দিকে ইপিজেডের ভেতরে কারখানাগুলো একে একে ছুটি ঘোষণা করলে ওই শ্রমিকেরা এসে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে যোগ দেন।
এ সময় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিন সাংবাদিকও রয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ইপিজেড এলাকায় ৪০০ পুলিশ ও র‍্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
===========================

দুর্নীতির ব্যারোমিটার

দুর্নীতিতে সর্বোচ্চ স্থানটি ছিল বাংলাদেশের। এখন আর বাংলাদেশ সেই অবস্থানে নেই। অনেকটাই উত্তরণ ঘটেছে। এর পরও যা আছে, তাকেও সহনীয় পর্যায় বলার সুযোগ নেই। তবে ইউরোপ-আমেরিকায়ও যেখানে দুর্নীতির চিত্র দিন দিন স্ফীত হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হওয়াটা অবশ্যই গর্বের বিষয়। এ উন্নয়নের গতি মন্থর হওয়ার পরও তেমনি বলতে হবে।

বাংলাদেশের দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিক চিত্র কিন্তু আগের মতোই রয়ে গেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) জরিপে অংশগ্রহণকারী জবাবদাতাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ যখন বলে, বাংলাদেশে দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে পুলিশে; তখন মনে হতেই পারে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নেতিবাচক অবস্থার জন্য এরাই সবচেয়ে বেশি দায়ী। সুতরাং দেশ থেকে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে হলে অবশ্যই পুলিশ বিভাগের প্রতি অধিক নজর দিতে হবে। টিআইবির প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও এটুকু বিশ্বাস করা যায়, সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতিমুক্ত করতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না। এমনিতেও টিআইবির প্রতিবেদনের আগে থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। তবে তাদের সঙ্গে জনপ্রশাসনকে বাদ দেওয়া যায় না। তাই শুধু পুলিশই নয়, জনপ্রশাসনকেও ঢেলে সাজাতে হবে। তবে আশার কথা হলো, সরকারের দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপের প্রতি জনগণের আস্থা এখনো ইতিবাচকই রয়েছে। ৬০ শতাংশ মানুষ এ প্রসঙ্গে এখনো সরকারের কার্যক্রমকে সমর্থন করে। তারা মনে করে, সরকার দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথাযথ। সরকারের প্রতি আস্থা থাকাটা দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সারা বিশ্বে রাজনৈতিক দলগুলোকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ৭৯ শতাংশ জবাবদাতা। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জবাবদাতাদের জবাব পুলিশে সর্বাধিক, দ্বিতীয় জনপ্রশাসন আর তৃতীয় স্থানে রাজনৈতিক দলের নাম এসেছে। এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এগিয়ে গেছে বিশ্বের অপরাপর দেশের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে। জনগণের এ আস্থা বাংলাদেশের জন্য শুধু ইতিবাচকই নয়, দেশটির সরকারি দলের রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণে সাফল্যেরও পরিচায়ক।
এ ক্ষেত্রে বিশ্ব জনমত যাচাইয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশে জাতীয় সংসদের প্রতি মানুষের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশে বিরোধী দলের জাতীয় সংসদের অধিবেশন বর্জনের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে এটাও যে দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়ার একটি কারণ। এতে সরকারের জবাবদিহিতার ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে পড়েছে। আর প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির হাত প্রসারিত হচ্ছে সময় থেকে সময়ে। তাই বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি কমিয়ে আনতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হতে হবে। ক্ষমতাকে দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনীয় মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর এ জন্য সংসদে আসা প্রয়োজন।
জরিপ মাধ্যমে দুর্নীতির জন্য দায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার ক্ষেত্রে সমাধানের কথাও বেরিয়ে এসেছে। জবাবদাতারা তাঁদের অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে সরকারি নেতৃত্বের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়েছেন। গণমাধ্যম গণসচেতনতা তৈরিতে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারে কিন্তু দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারকেই মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে সরকারের নির্বাহী শাখাগুলোকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারাটা খুবই জরুরি। এ মুহূর্তে পুলিশ, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতি আরো বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন।

জলপথে চাঁদাবাজি

লে কুমির, ডাঙায় বাঘ_বাংলায় এমন একটা কথা চালু আছে। চাঁদাবাজরা এখন সর্বত্র বিরাজমান। সড়কপথে যে চাঁদাবাজি হয় সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। মালামাল পরিবহনে, কী যাত্রী পরিবহনে_যানবাহনকে পথে পথে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিয়ে পথ চলা যায় না। কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, জলপথও চাঁদাবাজমুক্ত নয়। সেখানেও ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে নির্যাতনের শিকার হতে হয় নৌযানের চালক ও মাঝিদের। ৩০০ কিলোমিটার জলপথে বছরে অন্তত ৯০ কোটি টাকার চাঁদা আদায় করা হয় বলে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কিলোমিটার জলপথ চাঁদাবাজ-মাস্তানরা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এদের প্রধান টার্গেট জ্বালানি ও নির্মাণসামগ্রী পরিবহনে ব্যবহৃত দেশি লাগসই প্রযুক্তির ইস্পাত নির্মিত নৌযান। কয়লা, পাথর, বালি, সিমেন্টবাহী শত শত নৌযান থেকে এরা নানা অজুহাতে চাঁদা তোলে। টাকা না দিলে মাঝি-মাল্লাদের নির্যাতন করা হয়। একেকটি মালবাহী নৌযানকে সীমান্ত থেকে ঢাকায় পেঁৗছাতে গড়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। সে হিসাবে একটি নৌযান বছরে ২৫-৩০টি ট্রিপ দিতে গিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা চাঁদা দেয়। পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে পরিবহন ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, এ রুটের প্রায় তিন হাজার নৌযান থেকে বছরে আদায় করা হচ্ছে কমপক্ষে ৯০ কোটি টাকা। নৌযান মালিক ও শ্রমিকরা দীর্ঘদিন থেকেই নৌপথে অরাজকতা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন। নৌপথ অবরোধও করা হয়েছে। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের তৎকালীন উপমহাপরিদর্শকের (অপরাধ) নির্দেশে ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে নৌপথে অপরাধ দমনে নৌপুলিশ ইউনিট গঠন, নৌথানা স্থাপন, শক্তিশালী নৌযান, জ্বালানির পরিমাণ ও লোকবল বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা সুপারিশ করা হয়। দুই বছর পার হয়ে গেলেও এর কোনো সুপারিশ কার্যকর করা হয়নি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবারও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নৌযান মালিক ও নৌপরিবহন শ্রমিক সমিতির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যাঁদের ওপর অর্পিত, তাঁরা সে দায়িত্ব কতটুকু পালন করছেন_সে প্রশ্নটা এখানে অবশ্যই মুখ্য। পরিবহন খাতের চাঁদাবাজি অনেকটা বৈধতা পেয়েই গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে তাঁদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ এ খাত থেকে সরকার প্রতিবছর ১০০ কোটি টাকার রাজস্ব পাচ্ছে। কাজেই সরকারের স্বার্থেই জলপথ চাঁদাবাজমুক্ত করা জরুরি।

স্ত্রীর মর্যাদা আর অনাগত সন্তানের অধিকার পেলেন না পলি

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সুরাইয়া বেগম পলি। প্রথমবারের মতো মা হচ্ছেন তিনি। কিন্তু এ নিয়ে পলির আনন্দ নেই। আছে উৎকণ্ঠা! নির্যাতনকারী স্বামী অন্তঃসত্ত্বা পলিকে তালাক দিয়েছে। এখন প্রতারক স্বামীর বিচার আর অনাগত সন্তানের অধিকারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন পলি। মামলা করে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয়ে তিনি। পলির অভিযোগ, স্বামী ইরফান হোসেন বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে অতিষ্ঠ করে তোলে তাঁর জীবন। একপর্যায়ে বিয়ের দুই মাসের মাথায় অন্তঃসত্ত্বা পলিকে তালাক দেয় ইরফান। কাফরুল থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে আদালতে মামলা করেও সুরাহা পাচ্ছেন না পলি।

এ নির্যাতিত নারী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমার ওপর অত্যাচারের বিচার চাই। আমার অধিকার চাই। স্ত্রীর সম্মান যদি আমাকে না দেবে, তবে কেন বিয়ে করল? আমার সন্তানের কী হবে। নির্যাতন করে কেন আমাকে রাস্তায় ঠেলে দিল?'
জানা গেছে, ইরফানের সঙ্গে পলির মোবাইল ফোনে পরিচয় আর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইরফান সাভারে একটি স্টুডিওতে ছবি তোলে। মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনের ৭ নম্বর রোডের ১০/১১ নম্বর বাসা তার। বাবার নাম নাজিমউদ্দিন। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের উত্তর মতলবে। পলির বাবা
ফজলে আলম মারা গেছেন। চলতি বছরের ১১ জুন পলির ভাইরা ইরফানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেন। গত ২২ আগস্ট ইরফান পলিকে তালাক দেয়।
পলি জানান, গত ১০ আগস্ট সাভারের নিউ ডিপ ক্লিনিক তাঁকে গর্ভবতী বলে ঘোষণা করে। তিনি এখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ের সময় দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে ইরফান। প্রথমে তাকে দেড় লাখ টাকার ফার্নিচার দেওয়া হয়। পরে চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেয়ে ইরফান পলির ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করে দেড় শ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও নেয়। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পলি মিরপুরে তাঁর বোনের বাসায় আশ্রয় নেন। তিনি ইরফানের বিরুদ্ধে সাভার ও মিরপুর থানায় দুটি জিডি করেন। ১০ অক্টোবর কাফরুল থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। কাফরুলের জনকল্যাণ সমিতিতে পলি অভিযোগ করলে এক বিচার-সালিস বসে। গত ৯ অক্টোবর ওই সালিসে ইরফান হাজির হয়নি। এরপর গত ২৫ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় ইরফানের বাবা ও মাকেও আসামি করা হয়। তাঁরা দুজন ইতিমধ্যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন ।
পলি আরো জানান, তিনি জানতেন না ইরফান তাঁকে তালাক দিয়েছে। স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনারের কার্যালয়ে বিচার দিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে তাঁকে তালাক দেওয়া হয়েছে। তালাকের নোটিশে ইরফান উল্লেখ করে, বনিবনা হয় না, স্বামীর অবাধ্য, পরকীয়া সম্পর্ক, শরিয়তবিরোধী চলাফেরা ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন।
আদালতের নির্দেশে পলির দায়ের করা মামলার তদন্ত করছেন কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মূল আসামি ছাড়া চারজনই জামিন নিয়ে এসেছে। মূল আসামিকে ধরতে ৯ বার বাসায় রেইড দিয়েছি আমরা। বাদীকে বলা হয়েছে, আসামির অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দিতে। কিন্তু বাদী আমাদের সহায়তা করে না।'