Thursday, December 23, 2010

দেশে দারিদ্র্য নিয়ে খুব ব্যবসা চলছে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী

মাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ বলছেন, দেশে ভাত না খেয়ে থাকে—এমন কোন লোক নেই। তারপরও দারিদ্র্য নিয়ে ব্যবসা চলছে। দেশে দরিদ্র লোকের সংখ্যা সত্যিই বাড়ছে, না কমছে—সে প্রশ্ন আজ দেখা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘প্রান্তিক মানুষের খাদ্য ও কাজ: প্রেক্ষিত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ১১টি বেসরকারি সংগঠনের প্লাটফর্ম প্রান্তিক মানুষের সংহতি সেমিনারের আয়োজন করে।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, দেশে যত ভিক্ষুক আছে, তাদের মাত্র দুই থেকে তিন শতাংশ প্রয়োজনে ভিক্ষা করে। বাকিরা ব্যবসায়িক কারণে ভিক্ষা করে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ২৫ লাখ মানুষকে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এর আর্থিক পরিমাণ ৮৭০ কোটি টাকা।
মন্ত্রী বলেন, ‘আইলা ও সিডর বিক্রি করে আমরা আর কত দিন খাব? এ ঘটনায় কত বিদেশি ফান্ড এসেছে, কয়টি এনজিও অর্থ পেয়েছে, কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাত্ হয়েছে, সেটি কেউ বিবেচনা করছে না।’ বেসরকারি সংগঠনগুলোকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাংসদ হাসানুল হক ইনু বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য সম্পূর্ণ দূর করা সম্ভব নয়। এটি কোনো রকমে প্রান্তিক মানুষকে টিকিয়ে রাখে।
সাংসদ ইসরাফিল আলম বলেন, প্রান্তিক মানুষের খাদ্য সমস্যা দূর করতে হলে খাদ্য উত্পাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থার সমস্যাগুলোকে দূর করতে হবে।
একশনএইডের পরিচালক ফারাহ কবির বলেন, দারিদ্র্য নিরসনের স্থায়ী সমাধান হিসেবে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে প্রান্তিক মানুষের সংহতির আহ্বায়ক মহসিন আলী বলেন, দেশের প্রায় ৪০শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। ২৫ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। দেশের পরিবারগুলো খাবার কিনতে তাদের আয়ের ৬২ শতাংশ ব্যয় করে, ৫৮ শতাংশ পরিবার পর্যাপ্ত খাবার পায় না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অতিদরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা থাকলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সিপিডির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভিজিডি কর্মসূচির অধীনে প্রকৃত দরিদ্র নয়—এমন ২৭ শতাংশ মানুষ উপকার পেয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সরকারের তদারকি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীর হাতে সার্জেন্ট লাঞ্ছিত

ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে মোটরসাইকেল চালানোয় বাধা দেওয়ায় পুলিশ সার্জেন্ট মশিউর রহমানকে লাঞ্ছিত করেছেন ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরের জাকির হোসেন রোডের এমইএস কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে তিন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে খুলশি থানায় মামলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, মোহাম্মদ ফিরোজ ওরফে ময়লা ফিরোজ একজন সহযোগীকে নিয়ে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। সার্জেন্ট মশিউর রহমান তাঁকে গাড়ি থামানোর সংকেত দেন। ফিরোজ গাড়ি থামিয়ে বলেন, ‘দেখছেন না, এটা গোপালগঞ্জের রেজিস্ট্রেশন করা গাড়ি? আপনি কেন গাড়ি থামাতে বললেন...।’ এ সময় সার্জেন্ট মশিউর গাড়ির কাগজপত্র চাইলে ফিরোজ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং মুঠোফোনে তাঁর সহযোগীদের ঘটনাস্থলে চলে আসতে বলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ফিরোজ সার্জেন্ট মশিউরকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর ফিরোজ ও তাঁর সহযোগীরা হামলা চালান। এতে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি আহত হন। তবে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি।
খুলশি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পাশের ভূঁইয়া গলির দিকে পালিয়ে যায়। পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ভূঁইয়া গলি থেকে ‘গোপালগঞ্জ হ-১১-০৪৬৮’ নম্বরের মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে ফিরোজ মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করে আসছিলেন।
সার্জেন্ট মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইন ভঙ্গ করে ময়লা ফিরোজ মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। আমি সংকেত দিলে তিনি গাড়ি থামিয়ে আমার সঙ্গে তীব্র বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেন। মুহূর্তের মধ্যে সাত-আটজন সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে এসে গাড়িটি নিয়ে ভূঁইয়া গলির দিকে চলে যান। এ ঘটনায় ফিরোজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, ময়লা ফিরোজ ছাত্রলীগ নামধারী দুর্ধর্ষ এক সন্ত্রাসীর দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত। ছাত্রলীগের ওই ক্যাডার নগরের নাসিরাবাদ ও খুলশিসহ আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ আছে।
এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ফিরোজ নামের ছাত্রলীগের কোনো কর্মী বা সমর্থক নেই। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে ও গোপালগঞ্জের পরিচয় দিয়ে কেউ সন্ত্রাস করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

পৌরসভা নির্বাচনঃ বিএনপির একক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত by রফিকুল ইসলাম মন্টু

পৌরসভা নির্বাচনে জয়লাভের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামলেও প্রার্থী মনোনয়নে চারদলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে সমন্বয় নেই প্রধান বিরোধী দল বিএনপির। স্থানীয়ভাবে সমঝোতার মাধ্যমে শরিকদের সমর্থন আদায়ের সুযোগ রাখা হলেও এখন পর্যন্ত প্রার্থী মনোনয়নে সমন্বয় হয়নি। ফলে বিএনপি ও জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী নিজেদের মতো করে প্রার্থী দিচ্ছে। অন্যদিকে সারা দেশে অন্তত শতাধিক পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই এ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটগত প্রার্থী না দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুনির্দিষ্টভাবে এ নির্বাচনের বিষয়ে শরিকদের সঙ্গে কোনো বৈঠক করেননি। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি করে দিয়েছেন তিনি। এ কমিটির অধীনে কেন্দ্রীয় নেতারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করছেন।
জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চারদলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া।
ওই বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হলেও পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে বিশেষ কোনো আলোচনা হয়নি। জোটের শরিক দলগুলোর কোনো কোনো নেতা বৈঠকে খালেদা জিয়ার কাছে পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জোটগতভাবে এ নির্বাচন না করার পক্ষে মনোভাব ব্যক্ত করেন। পরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেন খালেদা জিয়া।
আরো জানা যায়, এরই মধ্যে ২৫০ পৌরসভায় বিএনপি দলীয়ভাবে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। জোটগতভাবে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না থাকায় জোটের অন্য শরিক জামায়াতে ইসলামীও নিজের মতো করে প্রায় ১০০ পৌরসভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। জামায়াত ছাড়া অন্য কোনো দলের আলাদা প্রার্থী নেই।
বিএনপির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কমিটির প্রধান এম কে আনোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়ে শরিক দলের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সমর্থন আদায়ের জন্য দলীয় প্রার্থীদের বলা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। চেয়ারপারসন আমাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। এ কমিটির অধীনে বিভাগীয় কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি সব পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, 'পৌরসভা নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে কোনো সমস্যা হয়ে থাকলে তা মাঠেই সমাধান করার নির্দেশ রয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জোটগতভাবে কোনো প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না। দলগতভাবে সবাই প্রার্থী মনোনয়ন করবে। এরপর সমঝোতার মাধ্যমে একজন প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে। আমার জানা মতে, কোথাও বিশেষ কোনো সমস্যা হয়নি। তা ছাড়া এ নির্বাচন এখনো অনেকটা নির্দলীয় মেজাজেই আছে।'
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মাঠপর্যায়ে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের অঞ্চল ভাগ করে দিয়েছে বিএনপি। ঢাকা বিভাগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, বরিশালে মির্জা আব্বাস, চট্টগ্রাম-১ অঞ্চলে এম মোরশেদ খান, চট্টগ্রাম-২ অঞ্চলে ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন, খুলনা বিভাগে নজরুল ইসলাম খান, সিলেটে শমসের মবিন চৌধুরী ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিভাগীয় কমিটিগুলোর কাজ সমন্বয় করছেন দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। আঞ্চলিক কমিটি থেকে প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে তা চেয়ারপারসনের কাছে জমা দেবেন মহাসচিব। আজ বৃহস্পতিবার চেয়ারপারসন চীন থেকে ফিরলে প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তাঁর কাছে দেওয়া হবে।
বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা জানান, নির্বাচন বিধি অনুযায়ী এ নির্বাচন জোটগতভাবে করার সুযোগ নেই। সে কারণে বিএনপি জোটগতভাবে এ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়নি। ফলে এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে তেমন কোনো কাজ নেই। স্থানীয়ভাবে শরিক ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার সুযোগ রাখা হয়েছে। নির্বাচনী বিধি বিবেচনায় রেখে পৌর নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ জোটগতভাবে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিলে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে এ বিষয়ে আপত্তি জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিএনপির প্রতিনিধিদল সব পর্যায়ে নির্বাচনী বিধি যথাযথভাবে পালনের ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানায়।
মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জোটের শরিকদের মধ্যে শুধু জামায়াতে ইসলামী এককভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছে। প্রায় ১০০ পৌরসভায় চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের একক প্রার্থী রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন করলেও অন্তত শতাধিক পৌরসভায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, জামালপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, বরিশাল, চাঁদপুরসহ কয়েকটি জেলা উল্লেখযোগ্য। এর ফলে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও জামায়াতের প্রার্থীদের সঙ্গে সমঝোতায় আসা যাবে কি না, সেটাই পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক সিনিয়র নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন, 'বিষয়টি স্থানীয়ভাবেই সমাধান করা হবে। এ সমস্যা সমাধানে দলীয় সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেক স্থানে আলোচনা হচ্ছে। সব স্থানেই যে সমাধান হবে, তা নয়। কোনো কোনো পৌরসভায় কিছুটা সমস্যা থেকেও যেতে পারে।'
খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, 'খুলনা ও যশোর এলাকার প্রার্থী বাছাই হয়েছে, তালিকাও কেন্দ্রে পেঁৗছানো হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় সমস্যা রয়েছে। কোথাও কোথাও দলের সিদ্ধান্তের বাইরেও প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অবশ্যই সমস্যার সমাধান হবে। তার পরও দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ প্রার্থী হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
জোটের শরিক বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, 'পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আমার এলাকা ভোলায় বিএনপির সঙ্গে কোনো সমস্যা নেই। ভোলা সদরের একটি পৌরসভায় বিএনপির একজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।'

র‌্যাবের ‘কলঙ্ক’ ক্রসফায়ার by কামরুল হাসান

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় গেলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা হবে। কিন্তু ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ঘটনা চলছেই। চলতি বছরের ১১ মাসে শুধু র‌্যাবের হেফাজতে নিহত হয়েছে ৬৯ জন। ছয় বছরে এই সংখ্যা ৬৯৩। একই সময় পুলিশের হেফাজতে মৃতের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রমতে, ‘ক্রসফায়ারের’ মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের এ পদ্ধতিতে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের সম্মতি আছে।

দেশে-বিদেশে ক্রসফায়ারের সমালোচনা অনেক দিন ধরেই চলছে। সর্বশেষ ভিন্নধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস ক্রসফায়ার সম্পর্কে কিছু তথ্য ফাঁস করে, যার ভিত্তিতে মঙ্গলবার প্রভাবশালী ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই তথ্যে বলা হয়, সন্ত্রাস দমনে গঠিত র‌্যাবের সদস্যরা ব্রিটিশ সরকারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শুধু র‌্যাবকে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কারণ তারা মনে করে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।
একটি বার্তায় বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি র‌্যাব সম্পর্কে বলেন, এখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে র‌্যাবেরই কোনো একদিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) মতো সংস্থা হিসেবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মীদের মতে, র‌্যাবের পক্ষে অনেক ভালো কাজ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু সমালোচনা সত্ত্বেও তারা একের পর এক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েই যাচ্ছে। ফলে ক্রসফায়ার হয়ে উঠেছে র‌্যাবের ‘কলঙ্ক’।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যদি কেউ অপরাধমূলক কাজ করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য বলে আসছি। কোনো সভ্য জগতে, সভ্য আইনব্যবস্থায় এ রকম চলতে পারে না। আমাদের রাষ্ট্র ও সংবিধানকাঠামোতেও এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ক্রসফায়ারজনিত মৃত্যু ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হলেও সরকারের তদন্তে এসব ঘটনাকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে যত ঘটনার তদন্ত হয়েছে, সব ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে, কোনো আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়নি।
জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহ্বুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সব সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে। সরকারও এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কেউ সমর্থন করে না।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, র‌্যাব বা পুলিশ বিচারবহির্ভূত কোনো কাজ করতে পারে না। তারা যা করছে, সবই আইনের মধ্যেই করছে, আইনের বাইরে কোনো কিছু ঘটছে না। যেমন পুলিশ কারও ওপর ইচ্ছে করে গুলি ছুড়ছে না। আবার গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে থাকলে বিধি অনুযায়ী তদন্ত হচ্ছে।
সর্বশেষ ১৯ ডিসেম্বর রাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ঢাকার হাজারীবাগের আলম ওরফে টাক্কু আলম (৩০) ও টাঙ্গাইলের গোপালপুরের মামুনুর রহমান (২৫)। আলম সন্ত্রাসী ও মামুনকে অস্ত্র ব্যবসায়ী বলে র‌্যাব দাবি করেছে। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর ভাষানটেক এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শহীদ ওরফে জামাই শহীদ (২৬) নামের এক সন্ত্রাসী নিহত হন। শহীদ সাভার এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় পণ্য সরবরাহ করতেন। ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর মালিবাগে নিহত হন হোন্ডা বাবু।
র‌্যাবের যাত্রা: বিশেষ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৪ সালের ২১ মার্চ পুলিশের অভিজাত বাহিনী হিসেবে পরিচিত র‌্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। তবে ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয় ২৬ জুন থেকে। ওই সময় র‌্যাবের দেখাদেখি পুলিশও ক্রসফায়ারে নেমে পড়ে।
র‌্যাবের আইন ও জনসংযোগ শাখার পরিচালক এম সোহায়েল জানান, র‌্যাব গঠনের পর ছয় বছরে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৬৯৩ জন। এ বছরের ১১ মাসে মৃতের সংখ্যা ৬৯। র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে নিহত হন ৮১ জন। তাঁর মতে, ছয় বছরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে র‌্যাবের ১৬ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
মানবাধিকার সংগঠন হটলাইন বাংলাদেশের সমন্বয়ক রোজলিন কস্তা জানান, ক্রসফায়ার শুরুর পর ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ৯০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ৮১১ জন নিহত হন। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ক্রসফায়ারে নিহত হন ৫৪৭ জন। অন্যরা বর্তমান সরকারের আমলে মারা যান। তিনি জানান, র‌্যাবের হাতে ৭২২ ও পুলিশের হাতে প্রায় এক হাজার ২০০ লোক নিহত হন।
উদ্বেগ: মানবাধিকার সংগঠনগুলো বরাবরই ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছে। ক্রসফায়ারে মৃত্যু নিয়ে চারদলীয় জোট সরকারকেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল। বর্তমান আমলেও এ নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনা হচ্ছে।
কিন্তু উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন দূতাবাসের কেব্ল থেকে দেখা যায়, দূতাবাসের মার্কিন কর্মকর্তারা র‌্যাব রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি ঢাকায় তৎকালীন ভারতের হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি উত্থাপন করেন। তখন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সমর্থন করেন ভারতীয় হাইকমিশনার।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ক্রসফায়ারে মৃত্যু বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল। সরকারের ভেতরের একটি মহল এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও এসব মৃত্যু বন্ধ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের ক্ষমতা নেওয়ার পর রাজনৈতিক মদদ পেয়ে অপরাধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে। ওই সময় সরকারের নীতিনির্ধারকেরা ক্রসফায়ারের ব্যাপারে নমনীয় মনোভাব দেখাতে শুরু করেন। এর পরই শুরু হয় ক্রসফায়ার।
কৌশল পরিবর্তন: র‌্যাব গঠনের পর দেখা গেছে, ক্রসফায়ারের প্রতিটি ঘটনার পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে ঘটনার যে বিবরণ দেওয়া হতো, তা ছিল প্রায় একই। শুধু নাম-ঠিকানা বদল করা হতো। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠায় কৌশল পাল্টে যায়। ক্রসফায়ারের বদলে বলা হয় ‘এনকাউন্টার’ ও ‘বন্দুকযুদ্ধ’। অভিযোগ আছে, কৌশল পাল্টানোর পর অনেককে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আর খোঁজ মেলে না। এ তালিকায় আলোচিত দুজন হলেন কাউন্সিলর চৌধুরী আলম ও লিয়াকত হোসেন। পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁরা র‌্যাবের গুপ্তহত্যার শিকার। এক বছর আগে পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসপিরা গুপ্তহত্যার অভিযোগ তুলে তা বন্ধ করার দাবি জানান। তবে র‌্যাবের কর্মকর্তারা তা কখনো স্বীকার করেননি।
নিরীহ মানুষও শিকার: ক্রসফায়ারের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের সব সময় সন্ত্রাসী বলা হলেও অনেক নিরীহ মানুষও এর শিকার হয়েছেন। রামপুরার কায়সার মাহমুদ বাপ্পী, খিলগাঁওয়ের সুমনের মতো অনেক ঘটনার তদন্তে নেমেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এম সোহায়েল প্রথম আলোকে বলেন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে অযথাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কিন্তু ক্রসফায়ারের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত ও বিচার হচ্ছে। তিনি বলেন, মানবাধিকারের ব্যাপারে র‌্যাবকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তারা র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী যখন র‌্যাবের ওপর হামলা চালায়, তখনই র‌্যাব পাল্টা গুলি চালায়। এটাকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলা যায় না। র‌্যাব বিচাবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না।’
বিশিষ্ট আইনবিদ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ্দীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্র যখন বেআইনি পথ ধরে, তখন ধরে নেওয়া হয় এটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে এসব কাজকে ভালো মনে করা হলেও যেসব দেশ এসব করেছে, পরে তাদের চরম মূল্য দিতে হয়েছে। এটা বন্ধ করা না হলে বাংলাদেশকেও এভাবে মূল্য দিতে হবে।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক আইজিপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এএসএম শাহজাহান বলেন, ক্রসফায়ারের মতো ব্যবস্থা কোনো সুরাহা দেবে না। এটা কোনো সমাধানই না। এটা অবশ্যই হত্যা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এসবে উৎসাহিত করা উচিত নয়। তাঁর মতে, প্রতিটি ক্রসফায়ারের যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।

 যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) জড়িয়ে ভিন্নধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে, সে সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করতে অপারগতা জানিয়েছে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ও ব্রিটিশ হাইকমিশন। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দুই দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফাঁস হওয়া সরকারি কোনো তথ্য সম্পর্কে মন্তব্য করাটা তাদের নীতি নয়।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র প্রথম আলোকে ই-মেইলে বলেন, সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশের কয়েকটি ঘটনা সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গোপন বার্তা হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। বস্তুত গোপনীয় ওই বার্তাগুলো ছিল ব্যক্তিগত কূটনৈতিক আলোচনা। খুব স্বাভাবিক নিয়মে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে পাঠানো ওই বার্তাগুলো যেমন খোলামেলা হয়ে থাকে, তেমনি বার্তায় দেওয়া তথ্যগুলোও থাকে অসম্পূর্ণ। ওই সব বার্তা যেমন মার্কিন নীতির বহিঃপ্রকাশ নয়, তেমনি চূড়ান্ত নীতি প্রণয়নে কোনো ভূমিকা রাখে না। তার পরও কেব্লগুলোতে যে আলোচনা হয়েছে, তা ছিল ব্যক্তিগত পর্যায়ের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দেশে ও বিদেশে দায়িত্বশীল, জবাবদিহিমূলক ও মুক্ত শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করেন; কিন্তু যা চলছে সেটি ওবামার সেই লক্ষ্যের পরিপন্থী, বেপরোয়া ও বিপজ্জনক।
উইকিলিকসে যে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে, সে সম্পর্কে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।
তবে র‌্যাবের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্পর্কে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ন্যায়সংগতভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামর্থ্য বাড়ানোর অংশ হিসেবে আমরা সহায়তা করে থাকি। র‌্যাব আইনের বিধিনিষেধ মেনেই দায়িত্ব পালন করবে, তা বিবেচনায় রেখেই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মৌলিক মানবাধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ, জবানবন্দি গ্রহণের দক্ষতা, তদন্ত প্রক্রিয়া পরিচালনায় দক্ষতা, অপরাধবিষয়ক মৌলিক জ্ঞানসহ আইনি ও মানবাধিকার বিষয়ে র‌্যাবের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ওই সহযোগিতার অংশ।’
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকেই আমরা র‌্যাবকে মানবাধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। মানবাধিকার সমুন্নত রাখাসহ ব্রিটিশ আইন ও মূল্যবোধ অনুসরণ করেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকি।’