Friday, May 25, 2012

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনঃ বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বলেছে- নিখোঁজ, নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যু, খেয়ালখুশি মতো গ্রেফতার ও আটক রাখার জন্য দায়ী নিরাপত্তা বাহিনী।

তারা মানবাধিকারের বড় সমস্যা। বিচার বিভাগকে অতিমাত্রায় রাজনীতিকরণ করা হয়েছে । এতে সমস্যা বেড়েছে। বিরোধী দলের সদস্যদের ন্যায় বিচার পাওয়ার পথকে সঙ্কুচিত করা হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করেছে সরকার। এক্ষেত্রে সেলফ সেন্সর চলছেই। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা সাংবাদিকদের হয়রানি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক মানবাধিকার বিষয়ক রিপোর্টে এসব কথা বলা হয়েছে।
ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস জানায়, বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন সময় সকাল সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টা) যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের বাৎসরিক মানবাধিকার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

২০১১ সালের ওপর করা ওই রিপোর্টে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে বলা হয়েছে, সরকার সমাবেশ করার স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ সহিংসতা সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি মারাত্মক এক সমস্যা। শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও বড় একটি সমস্যা। শ্রমিকদের অধিকার সীমিত করা, শিশু শ্রম, কর্মক্ষেত্রে অনিরাপত্তা রয়েই গেছে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষমা মারাত্মক এক সমস্যা। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য সাধারণ ক্ষমার অধীনে কাজ করেন। এক্ষেত্রে র‌্যাব’র কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে সরকার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারি দুর্নীতি ও তার সঙ্গে সম্পৃক্ত সাধারণ ক্ষমা অব্যাহত রয়েছে।

নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে বলা হয়, পুরো বছরে যেসব নিখোঁজ ও অপহরণের ঘটনারঅভিযোগ আছে তা ঘটিয়েছে বেশির ভাগই নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। ২০১১ সাল জুড়ে তা বেড়ে যায়। কিন্তু এর সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি। কতগুলো অপহরণ ঘটেছে রাজনৈতিক উদ্দেশে। কিছু অপহরণ ঘটেছে টাকার জন্য। আবার কিছু অপহরণ ঘটেছে স্থানীয় শত্রুতা থেকে। মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা অধিকার-এর মতে, নিরাপত্তা বাহিনী জড়িত এমন অভিযোগ আছে ৩০টি নিখোঁজের ঘটনায়। ২০১০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৯। র‌্যাব বলছে, যেসব নিখোঁজের ঘটনায় তাদেরকে দায়ী করা হচ্ছে, সেসব ঘটনা র‌্যাব বা পুলিশ সেজে অন্যরা ঘটিয়েছে। অধিকার উদাহরণ দিয়ে বলেছে, ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব ঢাকা শহরের উত্তর শাহজাহানপুর থেকে একজন ইমাম ও বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন এবং রফিকুলের জামাই পুলিশে গিয়ে অভিযোগ করেছেন যে- র‌্যাব অফিসাররা আটক করেছে রফিকুলকে। তাকে জোর করে একটি কাভার্ড ভ্যানে তুলে নিয়েছে। এ সময় র‌্যাব সদস্যদের কেউ কেউ ছিলেন সাধারণ পোশাকে। কিন্তু র‌্যাব এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বছর শেষে রফিকুল কোথায় তা অজ্ঞাতই রয়ে যায়। ওদিকে ২০১০ সালের জুনে র‌্যাব সদস্যরা ঢাকা সিটি কমিশনার চৌধুরী আলমকে আটক করে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু ২০১১ সাল শেষ হয়ে গেলেও জানা যায়নি চৌধুরী আলম কোথায় আছেন।

বিচার বিভাগ সম্পর্কে ওই রিপোর্টে অতিমাত্রায় দলীয়করণের কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, আইনে আছে বিচারবিভাগ স্বাধীন। কিন্তু সংবিধানের দীর্ঘদিনের একটি অস্থায়ী বিধানের কারণে নির্বাহীরা নিম্ন আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত। তারা বিচার বিভাগের নিয়োগ দেন। আইনের মাধ্যমে ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারবিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা হয়েছে। বছরজুড়েই তা অব্যাহত ছিল। বিচারবিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা সত্ত্বেও উচ্চ আদালতে নিয়োগ দিয়েছে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর অনেক মামলায় তারা বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেন। এতে সমস্যা বেড়েছে। বিরোধী দলের সদস্যদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সঙ্কুচিত করা হয়েছে।

রাজনৈতিক অধিকারের প্রতি সম্মান: মানবাধিকার রিপোর্টে ২০১১ সালের বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিশদ বর্ণনা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সংবিধানে জনগণের ভোটে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তনে অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। গত বছর ৩০ জুন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার সংবিধানে একটি সংশোধনী আনে। ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান সরকারের অধীনেই ২০১৩ সালের নির্বাচন হওয়ার কথা। ওই সংশোধনীতে স্বাধীন ইলেকশন কমিশন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এর বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এখনও ভঙ্গুর। যেকোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে। গত বছরজুড়ে সরকার ও বিরোধী দলের মুখোমুখি অবস্থানে আগামী নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে তা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের শীর্ষ বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে বলে রিপোর্টে উলেস্নখ করা হয়েছে।

বিরোধী দলের জাতীয় সংসদ বর্জনের বিষয়ে রিপোর্টে বলা হয়, বিরোধীরা স্পিকার নিরপেক্ষ নয় বলে বারবার অভিযোগ করছে। তারা সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলোর কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে অংশ নিলেও সংসদ অধিবেশন নিয়মিত হচ্ছেন না।

সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গ: সরকারি কার্যক্রমের অনিয়ম-দুর্নীতি বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকার রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী আইন ও বিধিবিধান থাকলেও সরকার তার যথাযথ প্রয়োগ করে না। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখানে দুর্নীতি করলেও শাস্তি হয় না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) ‘দন্তহীন বাঘ’ আখ্যা দিয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শাসক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যেসব মামলা হয়েছিল কোনো আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশের বলে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অথচ খালেদা জিয়া কিংবা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা খুব কম মামলাই প্রত্যাহার করা হয়েছে।

চকরিয়া-পেকুয়া মহাসড়কে গণডাকাতি, ব্যবসায়ী নিহত

কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়া সড়কে গণ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয় হন আরো ১০ যাত্রী।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বহদ্দার হাট থেকে এস আলম পরিবহণের একটি বাস পেকুয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। রাত ১০টার দিকে বাসটি চকরিয়া-পেকুয়া সড়কের মচইন্যাকাটা এলাকায় পৌঁছলে ডাকাতরা ড্রাইভারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গাড়ি থামাতে বলে। একপর্যায়ে গণডাকাতি শুরু হয়।

ডাকাতরা যাত্রীদের মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় জিনিসপত্র লুট করে নেয়। ওই সময় প্রতিবাদ করলে পেকুয়া বাজারের সবুজ দাশ নামে এক ব্যবসায়ী ডাকাতের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এসময় গাড়ির হেলপার, চালকসহ ১০ যাত্রী ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়। আহতদের চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ, নির্জন ও পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় ডাকাতরা ওই স্থানটি ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। আর চকরিয়া-পেকুয়ার সীমান্ত এলাকা হওয়ায় দুই থানার টানাটানিতে পুলিশ টহলও কমে গেছে।

উখিয়ায় অভাবের তাড়ণায় কিশোরীর আত্মহত্যা

কক্সবাজারের উখিয়ায় অভাবের তাড়নায় কহিনুর আক্তার (১৪) বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। সে থাইংখালী গৌজ গোনা গ্রামের দিন মজুর বাবুল মিয়ার কন্যা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দিন মজুর বাবুলের দুই ছেলে দুই মেয়েসহ ছয় সদস্যের সংসারে চরম অভাব অনটন ছিল। গত কয়েকদিন ধরে নিহত কহিনুর আক্তার পেটের ব্যাথা সহ নানা রোগে বিনা চিকিৎসায় ঘরে গড়াগড়ি খায়। একদিকে ঘরে অভাব অন্যদিকে বিনা চিকিৎসার যন্ত্রণা সইতে না পেরে মঙ্গলবার সকালে পানের বরজের জন্য আনা কীঠনাশক পান করে। পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করালে বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তার মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য বুধবার বিকাল তিনটায় পূর্ব হলদিয়া গ্রামের দরিদ্র বৃদ্ধা হাবিবুর রহমানও (৭৪) চিকিৎসার টাকা যোগার করতে না পেরে বাড়িতে থাকা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন।

কঠোর সাধনার পর মন্দিরে প্রত্যাবর্তন করছেন শীলানন্দ স্থবির

বাংলাদেশী বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় গুরু ও ধুতাঙ্গ সাধক আর্য্যশ্রাবক শ্রীমৎ শীলানন্দ স্থবির (ধুতাঙ্গভান্তে) গহীন জঙ্গলে খোলা আকাশের নীচে প্রায় সাড়ে ৩ বৎসর যাবৎ কঠোর ধ্যান সাধনা শেষ করে মন্দিরে প্রত্যাবর্তন করছেন।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, তিনি আগামী ৬ জুন পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার উল্টাছড়ির মাইচছড়িতে নির্মিত আর্য্যপুরষ শীলানন্দ ধমোদয় বিহারে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রত্যাবর্তন করবেন। তাঁর এই মহাপ্রত্যাবর্তনের খবর ছড়িয়ে পড়লে লাখো ভক্তের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত তাঁকে দেখতে এবং আশীর্বাদ নিতে ভিড় জমাচ্ছেন। উল্লেখ্য, তিনি ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী হতে এখনো পর্যন্ত কঠোর সাধনায় ব্রত আছেন। তিনি আগামী ২০১২ সালের ৬ জুন কুঠিরে কঠোর সাধনা শেষ করে মন্দিরে প্রবেশ করবেন। এক সময় গহীন জঙ্গলের একটি কুঠিরে তাঁকে নিবিষ্ট ধ্যানে মগ্ন দেখে সবাই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। সেই সময় থেকে ‘ধুতাঙ্গ ভান্তে’’ নামে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। তিনি যখন ধ্যান মগ্ন থাকতেন, কখনও আহার, পানি কিছুই খেতেন না, এমনকি টয়লেটেও যেতেন না এবং ঘুমাতেন না। কোন আধ্যাত্মিক শক্তি না থাকলে তা কখনো সম্ভব নয়। তিনি এখন ‘‘ধুতাঙ্গ ভান্তে’’ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, তিনি রাঙ্গুনিয়ার সোনাইছড়ি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ৪ ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর মায়ের নাম নিলুপ্রভা বডুয়া ও বাবার নাম মৃত হেমরঞ্জন বডুয়া। ছোট বেলায় শ্রামন হয়েছিলেন। তাঁর গৃহী নাম ছিল- বিকাশ বডুয়া। ধুতাঙ্গ ভান্তের ভক্ত খাগড়াছড়ির সুব্রত বডুয়া ও বিন্দু বড়–য়া এ প্রতিবেদককে জানান, পরমপূজ্য ভান্তে দীর্ঘদিন ধরে একটি কুঠিরে কঠোর ধ্যান সাধনায় নিবিষ্ট ছিলেন। ধুতাঙ্গ ভান্তে ৬ জুন মন্দিরে প্রত্যাবর্তন করবেন, এই জন্য পুরো খাগড়াছড়ির বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইন সম্প্রসারণে বাজেট বরাদ্দের দাবীতে মানববন্ধন

২৪ মে ২০১২ তারিখ সকাল ১০ টায় কক্সবাজার শহরের দশটি সংগঠন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কক্সবাজার-দোহাজারী রেল লাইন সম্প্রসারণের জন্য বাজেট বরাদ্দের দাবিতে এক মাবনববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে।

বাপা কক্সবাজার, কোস্ট ট্রাস্ট, গ্রীন কক্সবাজার, শব্দায়ন আবৃত্তি একাডেমী, পাল্স বাংলাদেশ, এক্সপাউরুল সহায় ফাউন্ডেশন, এপেক্স ক্লাব, ডিসিআরডিস, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি প্রভৃতি দশটি সংগঠনের উদ্যোগে কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দের দাবিতে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত বছর ৩ রা এপ্রিল ২০১১ তারিখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার জেলা সদরের ঝিলংজা কৃষি অফিস সংলগ্ন এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এবং একই দিনে বিকাল ৪টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার শহরের বিমান বন্দর সংলগ্ন জেলে-পার্ক ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য রাখেন। মানব বন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের সেই জনসভায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার রেল পথ সম্প্রসারণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে গত অর্থ বছরে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় নি এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্ধ হয় নি।

বক্তারা বলেন, নতুন রেল মন্ত্রী রেল পরিবহনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। বক্তারা বলেন, সংবাদ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে সরকার রেল যোগাযোগ উন্নয়নের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবেন বলে ঘোষণা দিচ্ছেন এবং আমরা আশা করছি এ অর্থ বছরে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারণের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করা হবে। এতে সারাদেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটক ও কক্সবাজারবাসীর সরাসরি ঢাকা-কক্সবাজার যাতায়াতের রেলপথ তৈরির কাজ ত্বরান্বিত ও সুগম হবে।

মানব বন্ধনে বক্তারা বলেন, সারাদেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটক, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশাজীবী ও কক্সবাজারবাসীর পক্ষ থেকে আমরা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারণ কার্যক্রমটি বর্তমান সরকারের রেল উন্নয়ন ভাবনা ও পরিকল্পনায় দেখতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গত বছর ভিত্তিপ্রস্তরকৃত ও প্রতিশ্রুত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারণ কার্যক্রমটি রেলমন্ত্রীর রেল উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়নের জন্য বাজেট বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।

মানব বন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কক্সবাজার শাখার আহবায়ক মোহাম্মদ ইদ্রিস, কোস্ট ট্রাস্ট-এর কক্সবাজার অঞ্চলের টিম লিডার মকবুল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ শাহজাহান, বিশিষ্ট ব্যাংকার এম নাজের সিদ্দিকী, শব্দায়ন আবৃত্তি একাডেমীর সভাপতি জসিমউদ্দিন বকুল, পাল্স বাংলাদেশ-এর নির্বাহী প্রধান সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম, জাসদের যুব নেতা মিজানুর রহমান বাহাদুর, ডিসিএরডিসি-র নির্বাহী প্রধান নুরুল আমিন সিকদার, সিটি প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক আজাদ

মানব বন্ধন ও সমাবেশ শেষে দশ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারের জন্য রেল বাজেট বরাদ্দের দাবি জানিয়ে রেল মন্ত্রীর বরাবরে দেয়া একটি স্মারকলিপি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের হাতে হস্তান্তর করেন।

দ্রোহ ও প্রেমের কবি নজরুলের জন্মবার্ষিকী আজ

‘মহাবিদ্রোহী রণক্লান্ত/আমি সেই দিন হব শান্ত,/ যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না-/অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না’ বলেছিলেন সাম্য, দ্রোহ ও প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ তাঁর ১১৩তম জন্মজয়ন্তী। এ বছর তাঁর কালজয়ী কবিতা ‘বিদ্রোহী’র প্রকাশনার ৯০ বছর পূর্তি হচ্ছে। এ বিষয়টি জন্মজয়ন্তীতে যোগ করেছে বিশেষ মাত্রা।
বরাবরের মতোই সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি উদ্যাপিত হবে। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতি স্মরণ করবে জাতীয় কবিকে।
কাজী নজরুল বাংলা ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ (১৮৯৯ সালের ২৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যেমন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শোষণের শৃঙ্খল ভাঙার আহ্বান জানিয়ে কবিতা ও গান লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন প্রেম-সাম্যের গান ও কবিতা। তাঁর কবিতা ও গান আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামেও অনুপ্রেরণা জুুগিয়েছে। তাঁর লেখা ‘চল চল চল’ বাংলাদেশের রণসংগীত। গান ও কবিতার মতো তাঁর রচিত গল্প, নাটক, উপন্যাসও বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস হয়ে আছে।
বাংলায় সর্বোচ্চসংখ্যক তিন সহস্রাধিক গানের স্রষ্টা কাজী নজরুল ইসলাম। নিজস্ব ধারার সংগীত রচনা করেছেন তিনি। প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্ভাসিত কবি মানুষের সংকীর্ণতা, দীনতা, মূঢ়তা, নিচতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করেছেন।
‘দুখু মিয়া’ বাংলার দামাল ছেলের প্রতীক। তিনি বিদ্রোহী, তিনি সংগ্রামী, তিনি প্রেমিক, তিনিই শান্তির বর্তাবাহক। কবি নজরুল তাঁর প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে এ দেশের মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত করেছেন, জাগ্রত করেছেন জাতীয়তাবোধ। কবির কলম শাসকের অস্ত্রের চেয়ে বেশি শক্তিমান ছিল।
স্বাধীনতার পর সৃষ্টিশীল এই মহান কবির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি ও তাঁর পরিবারকে কলকাতা থেকে ঢাকায় এনে স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করেন। তাঁকে এ দেশের জাতীয় কবির মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। বাংলা ১৩৮৩ সালের ১২ই ভাদ্র কবি মৃত্যুবরণ করেন। ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই’ তাঁর গানের কথা স্মরণে রেখে তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়। আজ তাঁর সেই অন্তিম শয্যা ছেয়ে যাবে অগণিত অনুরাগীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ফুলে ফুলে।
কাজী নজরুল ইসলামের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান তাঁর বাণীতে বলেন, ‘সাম্য ও মানবতার কবি নজরুল বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও সৃজনশীল কর্ম আমাদের অন্তহীন অনুপ্রেরণার উৎস। কবির ক্ষুরধার অগ্নিঝরা লেখনী শোষিত-নির্যাতিত ও বঞ্চিত ব্যক্তিদের অধিকার আদায়ে আমাদের সোচ্চার করে, শিক্ষা দেয় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক অবিস্মরণীয় নাম। কালজয়ী প্রতিভার অধিকারী নজরুল ছিলেন সাম্য, মানবতা, তারুণ্য ও দ্রোহের কবি। তিনি ছিলেন বাংলা গানের বুলবুল।’
বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া বলেন, ‘জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের অবিসংবাদিত প্রাণপুরুষ। লেখনীর মাধ্যমে তিনি জুলুম-অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’

জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি
নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় কবির মাজারে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ আয়োজনের পাশাপাশি রাজধানীতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন নজরুলজয়ন্তী পালন করবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালা আজ সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আইন ও বিচার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়বিষয়ক মন্ত্রী সালমান খুরশিদ। তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এতে নজরুলবিষয়ক স্মারক বক্তৃতা দেবেন নজরুল গবেষক ও অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
বিকেলে দুই দিনের নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠান শুরু হবে শিল্পকলা একাডেমীতে। এতে রয়েছে গান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও নাটক মঞ্চায়ন। এ ছাড়া দুই দিনই শিল্পকলা একাডেমী লবিতে নজরুল ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে নজরুলসংক্রান্ত পুস্তক প্রদর্শনীর আয়োজন রাখা হয়েছে।
নজরুলজয়ন্তীতে দুই দিনব্যাপী বর্ণিল অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে ছায়ানট। নৃত্য-গীত, কবিতাপাঠ ও বক্তৃতা দিয়ে সাজানো হয়েছে এসব অনুষ্ঠান।
প্রতিবছরের মতো এবারও চ্যানেল আই নিজম্ব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নজরুল মেলা। মেলার খোলা মঞ্চ থেকে পরিবেশিত হবে নবীন-প্রবীণ শিল্পীদের পরিবেশনায় নজরুলসংগীত, নৃত্যনাট্য, শিশুনৃত্য ইত্যাদি। থাকবে নজরুলের কবিতা থেকে চিত্রশিল্পীদের চিত্রাঙ্কন।
তিন দিনব্যাপী নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে নজরুল একাডেমী। আজ এর শেষ দিন। আজ বিকেলে মগবাজারে একাডেমী প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকবে একাডেমীর শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নমূলক অনুষ্ঠান ও উন্মুক্ত নজরুল মঞ্চ। এতে অভ্যাগত ব্যক্তিরা নজরুলবিষয়ক পাঠ কিংবা পরিবেশনা উপস্থাপন করবেন। প্রায় শতবর্ষ আগের কবি নজরুলের সঞ্চৃতি নিয়ে এ বছর ত্রিশালের চারটি স্থানে পালিত হবে নজরুলজয়ন্তী উৎসব। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠান শুরুর এক দিন আগেই জমে উঠেছে নজরুল মেলা। এ বছর কবির সঞ্চৃতিবিজরিত দরিরামপুর নজরুল মঞ্চে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হাটবাজারগুলোতে প্রকাশ্যে পরিবেশদূষণকারী নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ বিক্রি ও ব্যবহার করা হচ্ছে। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মিয়ানমার থেকে এসব পলিথিন ব্যাগ এনে মজুদ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০২ সালের ৮ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি, বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুদ ও বিতরণ নিষিদ্ধ করে।
উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ বাজার, নয়াপাড়া বাজার, সাবরাং বাজার, পুরাতন বাসস্টেশন বাজার, হ্নীলা বাজার, হোয়াইক্যং বাজার, সেন্ট মার্টিন বাজারসহ সব কটি বাজারেই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ প্রকাশ্যে বিক্রি ও ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলার অন্তত ২৩টি সীমান্ত এলাকা দিয়ে এসব পলিথিন ব্যাগ পাচার হয়ে দেশে আসছে বলে জানা গেছে।
বাসস্টেশন বাজারের ব্যবসায়ী সৈয়দ আলম জানান, বাজারে চটের ব্যাগ পাওয়া গেলেও সেগুলোর দাম বেশি থাকায় পলিথিন ব্যাগের চাহিদা বেড়ে গেছে। মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন টেকনাফের বাজারে পলিথিন ব্যাগ আসছে। অধিকাংশ সময় পলিথিন ছাড়া ক্রেতারা মাল কিনতে চান না। এ কারণে তাঁরা পলিথিন রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়মিত অভিযান না চালানোয় পলিথিনের ব্যবহার বাড়ছে বলে তিনি মনে করেন।
এ প্রসঙ্গে ৪২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান প্রথম আলোকে জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচারকালে দুই লাখ ১৩ হাজার ৭৮৯টি পলিথিন ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে।
টেকনাফ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইদ আল শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ করতে উপজেলার হাটবাজারে আবারও অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ ন ম নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, টেকনাফের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মিয়ানমারের পলিথিন ব্যাগ এনে মজুদ করছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

টেকনাফের বাহারছড়ায় নির্মাণাধীন পর্যটন রিসোর্ট ভাঙচুর

টেকনাফের বাহার ছড়ায় নির্মাণাধীন পর্যটন রিসোর্টের ওয়াল ভাঙচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। ২২ মে রাতে টেকনাফ উপজেলার সমুদ্র উপকূলবর্তী ইউনিয়ন

বাহারছড়ার বড় ডেইল-নোয়াখালী পাড়ায় শতাধিক সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী অভিযান চালিয়ে একটি নির্মাণাধীন ফাইভ স্টার হোটেলের বাউন্ডারী ওয়াল গুড়িয়ে দিয়েছে।
শুধু তাই নয়  দেয়াল ভাঙচুরের আগে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তিন কর্মচারীকে অপহরণ করে। পরে রাত একটায় স্থান ছাড়ার শর্তে ছেড়ে দেয়া হয়।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০০৯ সালে বাহারছড়ার বড় ডেইল মৌজায় পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ করতে ১৪ কানি নিষ্কণ্টক জায়গা কিনে নেয় চট্টগ্রামের বেলাল আহমদ গং। পরে এর আমমোক্তার দেখা শোনার দায়িত্ব নেন উখিয়া-টেকনাফের  খোরশেদ আলম রাজা।
ধনাঢ্য খোরশেদ রাজাকে বিপাকে ফেলতে স্থানীয় দুই-তিনটি চাঁদাবাজ চক্র উখিয়া-টেকনাফের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ইন্ধনে খোরশেদ রাজাকে জিম্মি করে তিন দফায় লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে। এছাড়া ৪৮ শতক জায়গাও ছেড়ে দেন।

তবুও মন গলেনি দুর্বত্তদের। অধিক চাঁদার দাবিতে চক্রটি জনৈক দিদারকে সামনে এনে ভুয়া দলিলের দোহাই দিয়ে ২২ মে রাতের আঁধারে শতাধিক চিহ্নিত সন্ত্রাসী জড়ো করে পুরো সীমানা ওয়াল ও কর্মচারী শেডে ভাঙচুর চালায়।

এর আগে সন্ত্রাসীরা তিন কর্মচারী আবদুল্লাহ, শাহ আলম ও আবু তাহেরকে অপহরণ করে। পরে অপহৃত তিন কর্মচারীকে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার চুক্তিতে ছেড়ে দেয়।

স্থানীয় সাবেক মেম্বার ফজলুল করিম জানান, আগে প্রশস্ত আট ফুট রাস্তা থাকলেও খোরশেদ রাজা নিজে জায়গা ছেড়ে ১৮ ফুটে রূপান্তর করেছে। এ অন্যায় মেনে নেয়া যায় না। আরেক সাবেক মেম্বার কবির আহমদ জানান, সন্ত্রাসীরা এভাবে চাঁদাবাজি ও ভাঙচুর চালালে বাইরের বিনিয়োগকারীরা এলাকা ছেড়ে পালাবে।