Wednesday, April 30, 2014

নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

ফরিদপুর ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসনের এমপি নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মুনতারিন (৩৩)। গতকাল রাতে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পরে তার লাশ ইউনাইটেড হাসপাতালের মরচুয়ারিতে রাখা হয়। হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল রাতে নিক্সন চৌধুরীর গুলশানের বাসা থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন মুনতারিন। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে রাত ৯টা ২৮ মিনিটে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। ইউনাইটেড হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখার ডিউটি ম্যানেজার সাব্বির জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কিন্তু কীভাবে তিনি আহত হয়েছিলেন এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী মুনতারিন বাসভবন থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েন। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। হাসপাতালের মৃত্যু সনদেও উপর থেকে পড়ে গিয়ে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে তাদের বাসা বলে জানা গেছে। বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ১৪/এ নম্বর বাসায় তাদের ওঠার কথা ছিল। নতুন বাসায় স্থানান্তরের জন্য কিছু মালামালও নিয়ে রেখেছেন। বনানী থানার ডিউটি অফিসার জুলফিকার আলী জানান, নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনেছি। কিন্তু এটি বনানী থাকা এলাকার মধ্যে নয়। তাদের বাসা গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে। জানতে চাইলে গুলশান থানা পুলিশ এ বিষয়ে তাদের কাছে কোন তথ্য নেই বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

রাজধানীতে ট্রেন-বাস সংঘর্ষে সাংবাদিকের স্ত্রীসহ নিহত ৩ : আহত ২০

রাজধানীর কমলাপুরের টিটিপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুরগামী একটি ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে অজ্ঞাত দুই যুবক ও হাসপাতালে নেয়ার পর নাজমুস সাবা নাজু (২২) নামে এক জনকণ্ঠের এক সাংবাদিকের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন সাংবাদিকের স্ত্রী নাজমুস সাবা নাজু (২২)। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২০ জন। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুরের দিকে একটি ট্রেন যাচ্ছিল। কমলাপুরের পাশেই টিটিপড়া ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড না থাকায় বলাকা পরিবহনের একটি বাস রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সময় মতো নিরাপত্তা ব্যারিকেট না দেয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে অনেকেই বলেছেন, বাসটি উল্টো পথ দিয়ে রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কামরুল আহসান বলেন, রাত সোয়া ১০টার দিকে একটি যাত্রীবাহী বাস রেললাইনের উপরে উঠে পড়েছিল। নারায়নগঞ্জ থেকে কমলাপুরগামী ট্রেনটি টিটিপাড়া ক্রসিংয়ে বাসটিকে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বাসের যাত্রীরা হতাহত হন। এঘটনায় রেলওয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রী নিহত নাজুর স্বামী দৈনিক জনকণ্ঠের সহ-সম্পাদক ওবায়দুর রহমান জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী দু'জনে সন্ধ্যায় মানিকনগর স্ত্রীর বড় বোন মোস্তারীর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মগবাজারের বাসায় ফেরার জন্য বলাকা পরিবহনের বাসটিতে ওঠেন। ওবায়দুর জানান, তার স্ত্রী নাজু বাসের সামনের সিটে বসেছিলেন। তিনি এক সিট পেছনে বসেছিলেন। টিটিপাড়া রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় হঠাৎ একটি ট্রেন চলে আসে। তিনি জানান, ট্রেন আসার আগে সিগনাল বাতি জ্বললেও ব্যারিকেড দেয়া ছিল না। বাসটি দ্রুত রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে হঠাৎ বিকট শব্দে বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওবায়দুর বলেন, তার স্ত্রীকে তিনি চোখের সামনে ছিটকে নিচে পড়তে দেখেছেন। তবে তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও বাম হাতে আঘাত পেয়েছেন। নিহত নাজুর স্বজনেরা জানান, গত বছর ১৩ মার্চ ওবায়দুরের সঙ্গে নাজুর বিয়ে হয়। নাজুম দিনাজপুর সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুরের খোলাহাটিতে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ট্রেন-বাস সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত অন্তত নয় জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া বাকিদের যাত্রাবাড়ীর ইসলামীয় হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতরা হলেন, ডলি আক্তার (২৪), শাহনুর (৪০), আল-আমীন (১৮), ইকবাল (৪০), মাহফুজ (২৪), মাহমুদ (২০), কালা ব্যাপারী (৫০), লিটন ব্যাপরী (৩৫)। আহত আল-আমীনের মা কুরফু বেগম বলেন, স্বামী শুকুর আলী ও ছেলে আল-আমীনসহ তারা তিন জন নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে বসে কমলাপুর আসছিলেন। কমলাপুর থেকে তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুর যাবার কথা ছিল। তিনি বলেন, হঠাৎ একটা বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেল। এতে তার ছেলে ছিটকে রাস্তায় পড়ে। এতে তার বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত ডলির বড় বোন শামসুন্নাহার জানান, ডলি প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা। লক্ষ্মীপুরের পিটিআইতে ট্রেনিং করছিল। ছুটি নিয়ে সে ঢাকার কচুক্ষেতের বাসায় আসছিল। সায়েদাবাদে বাস থেকে নেমে হয়তো সে বলাকা বাসে উঠেছিল। তারা মোবাইলে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসেছেন। রেলওয়ে থানার ওসি আবদুল মজিদ জানান, ঘটনাস্থলে নিহত দুইজনের লাশ রেলওয়ে থানা মর্গে রাখা হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা গেছেন। নিহতদের পরিচয় উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

দক্ষিণাঞ্চলে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ সফলভাবে শেষ করার পর দ্বিতীয়টির কাজ শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আমাদের অনেক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ আছে, বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সেখানেই আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।' তিনি বলেন, 'পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় লাগে বলে এখন থেকেই আমাদের এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।'

গত জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবালয়ে আজ বুধবার সকালে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্যে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১৯৬২ সালে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অনেক বড় বড় দেশের দ্বন্দ্ব মোকাবিলা করে কয়েক দশক পর আমাদের এ কাজ বাস্তবায়নে হাত দিতে হয়েছে।'

শীতলক্ষ্যায় একে একে মিলল ছয় লাশ

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে আজ বুধবার পর পর ছয়টি লাশের সন্ধান মিলেছে। এঁদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ একই সময়ে অপহৃত চারজনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। গত রোববার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন কাউন্সিলর নজরুল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দনকুমার সরকারসহ সাতজন। আজ শীতলক্ষ্যা নদীতে ছয়টি লাশ ভেসে উঠে। এঁদের মধ্যে চারজনকে শনাক্ত করেছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।

যে চারজনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তাঁর গাড়িতে থাকা তাজুল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান স্বপন এবং আইনজীবী চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিম। তবে এখনো খোঁজ মেলেনি নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দনকুমার সরকারের।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোরশেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নজরুলের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবদুস সালাম, স্বপনের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই রিপন, ইব্রাহিমের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবু বকর এবং তাজুলের ভাই আনিস তাঁর লাশটি শনাক্ত করেন।

এর আগে আজ বুধবার দুপুরে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রথমে তিনটি লাশ ভেসে ওঠে। পরে আরও তিনটি লাশের সন্ধান মেলে সেখানে। বন্দর থানার ওসি এর আগে জানিয়েছিলেন, স্থানীয় লোকজন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে তিনটি লাশ ভেসে ওঠার খবর পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে। লাশগুলো পচে গন্ধ বের হচ্ছে। পরে আরও তিনটি লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।

আ.লীগ ও দোসরেরা গুম-খুন করছেঃ খালেদা জিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই হত্যা-সন্ত্রাস-গুম-খুন বন্ধ হবে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরেরা এ কাজ করছে। তাই সরকার এসব বন্ধ করতে পারবে না।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।

খালেদা আবারও সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আলোচনার দ্বার এখনো খোলা। আলোচনা করে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আহ্বান করছি। জনপ্রিয়তা থাকলে নির্বাচন করে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিন।' তিনি অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

বক্তব্যে ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুবলীগের নেতার সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেন খালেদা। তিনি বলেন, 'জঙ্গি পালিয়ে গেল, কানেকশন পাওয়া গেল যুবলীগ নেতার। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সঙ্গে সম্পর্ক জঙ্গি-গুম-খুনের।'

ফুঁসে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অপহূত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের মৃতদেহসহ পাঁচটি লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে আজ বুধবার বিকেল থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় মানুষ। বিক্ষুব্ধ লোকজন নেমে আসেন রাস্তায়। তাঁদের অবরোধে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কে আগুন জ্বালিয়ে চলছে বিক্ষোভ। এতে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। নজরুলের সমর্থকেরা সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করছেন। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকাও অবরোধ করেছেন তাঁরা।

দুপুরে খবর মেলে, বন্দর উপজেলার গলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে তিনটি লাশ ভেসে উঠেছে। পুলিশ গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে। লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তিন দিন আগে অপহূত নজরুলের ভাই আবদুস সালাম। আর সেখানে গিয়েই শনাক্ত করেন ভাই নজরুল ইসলামের মরদেহ।

এরপর আরও দুটি লাশের সন্ধান মেলে। নারায়ণগঞ্জে গত রোববার অপহূত সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের লাশের সন্ধান মিলেছে এ পর্যন্ত। পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে চারজনের। নজরুল ছাড়া বাকি তিনজন হলেন নজরুলের সঙ্গে গাড়িতে থাকা তাজুল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান স্বপন এবং আইনজীবী চন্দনকুমার সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিম। তবে এখনো খোঁজ মেলেনি নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দনকুমার সরকারের। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোরশেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, স্বপনের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই রিপন, ইব্রাহিমের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবু বকর এবং তাজুলের ভাই আনিস তাঁর লাশটি শনাক্ত করেন।

শীতলক্ষ্যায় একে একে মিলল পাঁচ লাশ

নারায়ণগঞ্জে অপহূত সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের লাশ আজ বুধবার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে চারজনকে শনাক্ত করেছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। যে চারজনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তাঁর গাড়িতে থাকা তাজুল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান স্বপন এবং আইনজীবী চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিম। তবে এখনো খোঁজ মেলেনি নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দনকুমার সরকারের।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোরশেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নজরুলের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবদুস সালাম, স্বপনের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই রিপন, ইব্রাহিমের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবু বকর এবং তাজুলের ভাই আনিস তাঁর লাশটি শনাক্ত করেন। এর আগে আজ বুধবার দুপুরে বন্দর উপজেলার গলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রথমে তিনটি লাশ ভেসে ওঠে। পরে আরও দুটি লাশের সন্ধান মেলে সেখানে।

বন্দর থানার ওসি এর আগে জানিয়েছিলেন, স্থানীয় লোকজন গলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে তিনটি লাশ ভেসে ওঠার খবর পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে। লাশগুলো পচে গন্ধ বের হচ্ছে। পরে আরও দুটি লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার দায়ে ফজল করিম (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বুধবার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মো. রেজাউল করিম এ রায় দেন। আসামির প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে এক লাখ টাকা তুলে ছয় মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তের পরিবারকে দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আসামি ফজল করিম চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম বড়ঘোনা গ্রামের মোজাহের মিয়ার ছেলে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকে স্বামী ফজল যৌতুকের জন্য স্ত্রী বিলকিস আক্তারকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। ২০১০ সালের ২১ জুন আসামি ফজল দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নির্যাতনের একপর্যায়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিলকিসকে মাথায় আঘাত করেন। এতে বিলকিস মারা যান। হত্যার পর স্বামী বিলকিসের মুখে বিষ ঢেলে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি চন্দন তালুকদার প্রথম আলোকে জানান, ওই ঘটনার পর নিহত বিলকিসের বাবা বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। কিন্তু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মাথায় আঘাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। এর পর ওই বছরের ২ আগস্ট মেয়েটির মা জান্নাত খাতুন বাদী হয়ে ফজল করিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হত্যা মামলা করেন। আদালত পুলিশকে এ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ বিলকিসের স্বামীকে একমাত্র আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ২২ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত মামলার অভিযোগ গঠন করেন ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১০ জন সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন দুজন।

সংখ্যালঘুদের মোদিকে ভয় পাওয়ার কারণ আছে: অমর্ত্য সেন

ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেদ্র মোদিকে ভয় পাওয়ার কারণ আছে। গতকাল মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এ কথা বলেন। লোকসভা নির্বাচনে আজ বুধবার অমর্ত্য সেন পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরে তাঁর ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ২০০১ সালের পর তিনি এবারই ভোট দিচ্ছেন।

|নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন বলেন, এই নির্বাচনে মূল বিষয় ধর্মনিরপেক্ষতা। এটা সত্য, একটি আদালত মোদিকে অব্যাহতি দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে এখনো অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর ক্ষমতায় আসা নিয়ে সংখ্যালঘুদের ভীত হওয়ার কারণ আছে। যদিও ভালো অবস্থানে থাকা অনেক মুসলমান এভাবে ভাবে না। অনেকে ইতিমধ্যে তাঁর দলে যোগ দিয়েছে। নির্বাচনে ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেন, 'এবারের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি এতে অংশ নিতে চাই। আমি খুবই আনন্দিত যে, কোনো ধরনের সাংবিধানিক নিয়ম লঙ্ঘন ছাড়াই আমি এবার ভোট দিতে পারছি।'

গত বছরের জুলাই মাসে মোদির বিপক্ষে শক্তিশালী অবস্থান নেন অমর্ত্য সেন। এ সময় একটি টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছিলেন, তিনি মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান না। কারণ, তিনি ধর্মনিরপেক্ষ নন। তিনি বলেন, 'ভারতের একজন নাগরিক হিসেবে আমি মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই না। তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় যথাযথ পদক্ষেপ নেননি।' নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, মোদি আরও ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে পারতেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের নিরাপত্তায় আরও পদক্ষেপ নিতে পারতেন।

কাউন্সিলর নজরুলের লাশ শীতলক্ষ্যায়

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা তিনটি লাশের একটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অপহূত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের। তাঁর ভাই আবদুস সালাম লাশটি নজরুলের বলে শনাক্ত করেন। এর আগে আজ বুধবার দুপুরে বন্দর উপজেলার গলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে তিনটি লাশ ভেসে ওঠে। অপর লাশ দুটির পরিচয় মেলেনি।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোরশেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে জানান, স্থানীয় লোকজন গলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে তিনটি লাশ ভেসে ওঠার খবর পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে। লাশগুলো পচে গন্ধ বের হচ্ছে।

বন্দর থানার ওসি আরও জানান, নারায়ণগঞ্জের লিঙ্করোডে গত রোববার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন অপহূত হন। উদ্ধার করা তিনটি লাশের মধ্যে একটি কাউন্সিলর নজরুলের বলে তাঁর ভাই শনাক্ত করেছেন।

যুবলীগ নেতার নির্দেশে ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাই!-র‌্যাব সদর দপ্তরে ছিনতাইকারী কামালের তথ্য

ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জেএমবির তিন সদস্যের একজন হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসানকে ছিনতাই করা হয়েছে ভালুকা থানার যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কামালের নির্দেশে। এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী কামাল হোসেন ওরফে সবুজ আজ বুধবার র‌্যাবের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

নিষিদ্ধঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের তিন জঙ্গিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন সময় টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ থেকে আটজনকে আটক করেছে র‌্যাব। তাঁদের উপস্থিতিতে আজ রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিনতাইকারী দলটির দলনেতা কামাল হোসেন ওরফে সুবজ এসব তথ্য জানান। আটক হওয়া অন্যরা হলেন মো. সোহেল রানা (২৮), মোরশেদ আলম (২২), আনোয়ার হোসেন (৪০), মো. বাছির উদ্দিন (২০), মো. ইউসুফ আলী (২০), মো. ইলিয়াস উদ্দিন (৩৪) ও আবু বকর সিদ্দিক (২৭)।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশাল ও ভালুকার মাঝামাঝি সাইনবোর্ড এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে এবং এক পুলিশকে হত্যা করে জেএমবির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। ছিনিয়ে নেওয়া তিন জঙ্গি হলেন জেএমবির মজলিসে শুরা সদস্য সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন (৩৮), হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসান (৩৫) ও জাহিদুল ইসলাম ওরফে মিজান ওরফে বোমা মিজান (৩৫)। এঁদের মধ্যে সালাহউদ্দিন ও হাফেজ মাহমুদ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ও বোমা মিজান যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি। ঘটনার দিন বিকেল নাগাদ ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গি নেতা হাফেজ মাহমুদকে টাঙ্গাইলের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রাতে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হন তিনি।

আজকের ব্রিফিংয়ে কামাল বলেন, ভালুকা থানার যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কামালের নির্দেশে তাঁরা ছিনতাই করেছেন। তাঁদের দায়িত্ব ছিল হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়ার। বাকি দুজনের দায়িত্বে ছিল অন্য গ্রুপ। তাদের গ্রুপে নয়জন ছিল। এই কাজের জন্য তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কামাল উদ্দিন আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সকাল আটটায় স্পটে যান তাঁরা। আগে থেকে যুবলীগের নেতা তাঁদের নির্দেশনা দেন। তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁরা অপারেশনে যান। রাকিবকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন কামাল উদ্দিন। একই সঙ্গে তিনি ভালুকা পাঁচগাঁও গ্রামের জাগরণ টিউটোরিয়াল হোম কোচিং সেন্টারের মালিক বলেও জানান। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এ টি এম হাবিবুর রহমান জানান, আটক হওয়া মো. ইলিয়াস উদ্দিন ও আবু বকর সিদ্দিক আদম ব্যবসায়ী। তাঁরা বাকি ছয়জনকে অর্থের বিনিময়ে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছিলেন।

নারায়ণগঞ্জে সাতজন অপহরণ- ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম ও তাঁর চার সহযোগীকে উদ্ধারের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কাউন্সিলরের সমর্থকেরা। আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার ও তাঁর গাড়িচালকের সন্ধানের দাবিতে আজ বেলা সোয়া ১১টা থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রেখেছেন আইনজীবীরা। বিচ্ছিন্ন অবরোধের ঘটনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, মহাসড়ক অবরোধ করার পর সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় ও সাইনবোর্ড এলাকায় অবরোধকারীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। নজরুল ইসলাম অপহরণের ঘটনায় আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অবরোধের কারণে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
অপহূত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম অভিযোগ করেন, অপহরণের তিন দিন পার হয়ে গেলেও তাঁর স্বামী ও তাঁর চার সহযোগীকে পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। অভিযুক্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন জানান, মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

Tuesday, April 29, 2014

অপহরণ চলছেই- প্রধানমন্ত্রী কি দেশের ‘এসওএস’ বার্তা শুনছেন?

অপহরণ এখন প্রতিদিনের নয়, প্রায় প্রতি ঘণ্টার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অপহূত হওয়ার পর নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যাগণনা চলছে, কিন্তু প্রতিকার মিলছে না। অপহূত ব্যক্তিদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, কিন্তু কারা প্রতিদিন অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েও 'অদৃশ্য' থেকে যাচ্ছে, তার উত্তর মিলছে না। এই ভয়াবহ বাস্তবতার মধ্যে সরকার-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বিকার।
গত রোববার নারায়ণগঞ্জে দিনদুপুরে কাউন্সিলরসহ পাঁচজন অপহরণের সংবাদ বাসি হতে না হতেই গতকাল সোমবার ভোরে কালিয়াকৈরে অপহূত হলেন দুই ভাই। রোববার ভোরে টেকনাফে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছেন দুই ব্যক্তি। বছরের শুরু থেকে গড়ে প্রতিদিন একটি করে অপহরণের ঘটনা ঘটলেও সরকারের আচরণে উদ্বেগের লক্ষণ নেই।
আলোচিত অপহরণের মধ্যে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে প্রায় সব শ্রেণী ও পেশার নাগরিক রয়েছেন। সম্প্রতি পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী অপহূত হলে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তোড়জোড়ের মধ্যে তাঁকে ফেরত পাওয়া যায়। প্রশ্ন ওঠে, অন্যান্য অপহরণের ব্যাপারে সরকার দৃঢ়তা দেখাল না কেন? এ প্রেক্ষাপটেই নারায়ণগঞ্জের পাঁচ অপহূতের পরিবার তাদের স্বজনদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। প্রধানমন্ত্রীকেই যদি এ ধরনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হতে হয়, তাহলে পুলিশ-প্রশাসনের কাজ কী, তা জানতে হবে।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে ২৬৮ জন অপহূত হন। এর মধ্যে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ৪৩ জনের। অপহরণের পর ছেড়ে দেওয়া হয় ২৪ জনকে। পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয় ১৪ জনকে। কিন্তু ১৮৭ জনের কোনো খোঁজই নেই। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অপহরণ ও ক্রসফায়ারের সংখ্যা কমে আসে। এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ওই বছর এই সংখ্যা গত বিএনপি আমলের পর্যায়ে উঠে বেড়ে হয় ২২৯। ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অপহরণের মামলা হয়েছে তিন হাজার ৩৯১টি। এর মধ্যে ২০১০ সালে ৮৭০টি, ২০১১ সালে
৭৯২টি, ২০১২ সালে ৮৫০টি ও ২০১৩ সালে ৮৭৯টি অপহরণের ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে অপহরণের ঘটনা ঘটে ১৯৬টি।
বেশ কিছু অপহরণের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক সময় পেশাদার অপরাধীরা অপরাধ সংঘটনে পুলিশ ও র‌্যাবের নাম ও পোশাক ব্যবহার করে থাকে। এ পরিস্থিতিতে জনগণ উদ্বিগ্ন না হয়ে পারে না। আইন, বিচার ও প্রশাসনের প্রতি আস্থা ধরে রাখা, জনগণের মধ্যে নিরাপত্তার আশ্বাস বজায় রাখা এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে সরকারকে সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে।
আলাদা আলাদা অপহরণের ঘটনায় নয়, বরং অপহরণের দক্ষযজ্ঞ স্থায়ীভাবে বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর জোরালো উদ্যোগ আশা করি। আজকের মুহূর্তে এটাই দেশের শীর্ষ অভিভাবকের কাছে জাতির এসওএস (আমাদের প্রাণ বাঁচাও) বার্তা।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ- জবাবদিহির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

সাধারণত কোনো দুর্ঘটনার দায় সরকার নিতে চায় না। কিন্তু সাগর উপকূলে ফেরিডুবির ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চাং হং-উন তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতায় ধীরগতি ও ফেরিডুবি রোধে ব্যর্থতার দায় মাথা পেতে নিয়ে পদত্যাগ করেছেন। যদিও ইউরোপ-আমেরিকায় এ ধরনের পদত্যাগের উদাহরণ প্রচুর, কিন্তু বাংলাদেশে এ রকম ঘটনা বিরল। পদত্যাগের সময় তিনি বলেন, 'ফেরিডুবির পর ১০ দিনেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে, কিন্তু যাঁরা এখনো তাঁদের হারানো স্বজনদের খুঁজে পাননি, তাঁদের কান্নায় আমি রাতে ঘুমাতে পারি না।' কতটা গণতন্ত্রমনা হলে একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে পারেন, তা ভাবলে অবাক হতে হয়। তাঁর পদত্যাগ জবাবদিহির একটি নতুন সোপান রচনা করল।
ওই ফেরি দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়, আরও শতাধিক নিখোঁজ। এ ঘটনায় ফেরির পাইলট ও আরও ১৪ জন ক্রু গ্রেপ্তার হন। তাঁদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। আরও বেশি যাত্রী আটানোর জন্য ওই ফেরির মূল কাঠামো পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে ফেরির ভারসাম্য সরে গিয়েছিল ও এ কারণে এতে যাতায়াত অনিরাপদ হয়ে উঠেছিল বলে ধারণা করা হয়। সে ক্ষেত্রে একে সাদামাটা দুর্ঘটনা বলা চলে না, এটি ছিল মানুষের সৃষ্ট মর্মান্তিক ঘটনা।
প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়াই হলো মূল কথা। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার যদি তাদের নির্বাচকদের চাহিদা পূরণ করতে না পারে, যদি সরকারের ব্যর্থতার জন্য দেশের মানুষের জীবনে দুর্ভোগ নামে, তাহলে তার দায় পড়ে সরকারের ওপরই।
প্রতিবেশী ভারতেও রেল দুর্ঘটনার দায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। অথচ বাংলাদেশে কোনো মন্ত্রী বা আমলাকে দুর্ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে দেখা যায় না। এমনকি তারা ব্যর্থতার দায়ও স্বীকার করতে চান না। গত বছর রানা প্লাজা ধসের পর যদি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ব্যর্থতার দায় মাথা পেতে নিতেন, তাহলে মন্ত্রীবিশেষ বা সরকারের ভাবমূর্তি খাটো হতো না, বরং জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় পাওয়া যেত। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা থেকে আমাদের রাষ্ট্রপরিচালকদের অনেক কিছু শিক্ষণীয় আছে।

দখলের জন্য লুটপাট!-রেলওয়ের রজ্জুপথটি বিক্রি করা যাবে না

দখল ও লুটপাটের জন্য কতটা পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়া যায়, তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ রেলওয়ের একমাত্র রজ্জুপথ বিক্রির প্রস্তাব থেকে। ১৯৬৪ সালে স্থাপিত এই রজ্জু রেলপথ বাংলাদেশ রেলওয়ের এক ঐতিহ্যের অংশ। দুর্বৃত্ত চক্র এই পথকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে অনেকটা সফলও হয়েছে। এ কারণে রেলওয়ে থেকেই এখন পথটি বিক্রি করে দেওয়ার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রস্তাব উঠেছে।
অন্যান্য পথে পাথর আনা সহজ হওয়ায় এই পথ এখন আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। রেলওয়ের ঐতিহ্য হিসেবে এই রজ্জুপথ একটি সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবেই রয়ে গেছে। কিন্তু প্রভাবশালী চক্র এই রজ্জুপথের সংরক্ষিত বাংকার থেকে গত দুই বছরে অন্তত ৫০ কোটি টাকার পাথর তুলে নিয়ে গেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কেন তা ঠেকাতে পারল না, নাকি তাদের যোগসাজশে কাজটি হয়েছে, সেটা সত্যিই এক বড় প্রশ্ন।
সংরক্ষিত এই বাংকারগুলো থেকে পাথর তুলে নেওয়ার ফলে রজ্জুপথই বিপন্ন হয়ে পড়েছে। পাথর তোলার ফলে বিভিন্ন স্থানে ১০ থেকে ১৫ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে রজ্জুপথ বিভিন্ন স্থানে উপড়ে গেছে। লুটপাটের এই প্রাথমিক পর্ব শেষ হওয়ার পর পুরো জায়গাটি বিক্রি করে লুটপাটের দ্বিতীয় পর্ব সারার উদ্যোগ চলছে।
সংরক্ষিত স্থাপনায় লুটপাট ঠেকাতে ব্যর্থ বা লুটপাটের সহযোগী রেলওয়ের কর্তৃপক্ষই এই রজ্জুপথ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিলেটের প্রধান পরিদর্শক সাইদুর রহমানের দাবি, যেহেতু এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, সেহেতু এটি তিনি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছেন। রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, সম্পত্তি রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার পর এই কর্মকর্তার চাকরি থাকে কীভাবে?
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে সরকারি দলের এক নেতার নেতৃত্বে পাথর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। রেলওয়ের কারা এই লুটপাটে সহায়তা করেছেন, তার তদন্ত ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আর রেলওয়ের ঐতিহ্যবাহী এই রজ্জুপথকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে রেলওয়ে ও সরকারের উচ্চমহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

‘আমাকে জেলে দিন, না হলে আত্মহত্যা করবো’

'আমাকে জেলে দিন, তানা হলে আমি আত্মহত্যা করবো। আমি আর পারছি না। আমাকে কেউ দেখতে পারে না। স্ত্রী, সন্তান, ভাই বোন, পাড়া প্রতিবেশী সবাই আমাকে ঘৃণার চোখে দেখে। আমি সবার কাছে ভালো হতে চাই।'

কথাগুলো চারঘাট মডেল থানা পুলিশকে লক্ষ্য করে বলছিলেন চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মৃত-মুনছুর রহমানের ছেলে হেরোইনসেবী বাবু মিয়া (৩০)। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে চারঘাট মডেল থানায় হাজির হয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের কাছে এ সব কথা বলছিলেন তিনি।

বাবু বলেন, বন্ধুর পাল্লায় পড়ে ৪ বছর আগে শখের বসে হেরোইন সেবন শুরু করি। ধীরে ধীরে হেরোইন আমাকে গ্রাস করে ফেলে। আমি অতি গরীব ঘরের সন্তান। প্রতিদিন হেরোইনের টাকা যোগাড় করা আমার পক্ষে ছিল খুবই কঠিন। তাই হেরোইনের টাকা যোগাড় করতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিবারের থালা বাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে হেরোইন সেবন করতে থাকি। এতে করে আমার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। কেউ আমাকে ভালো চোখে দেখে না। আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে একটি সন্তান পঞ্চম শ্রেণিতে লেখা পড়া করছে, অন্যটি ছোট। আমার দু'টি সন্তানের জন্য আমাকে ভালো হতে সুযোগ দিন। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন হেরোইনসেবী বাবু।

পরে বিকেলে চারঘাট মডেল থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম হেরোইনসেবী বাবুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনের কাছে হাজির করলে হেরোইন সেবনের অপরাধে বাবুকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন তিনি।

এছাড়া হেরোইনের হাত থেকে বাঁচাতে একই দিন আপন ছোট ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেন বড় ভাই। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চারঘাট মডেল থানা পুলিশের হাতে হেরোইনসেবী ছোট ভাই মাসরেফুলকে তুলে দেন বড় ভাই সোজা উল্লাহ। উপজেলার ধর্মহাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, উপজেলার ধর্মহাটা গ্রামের মাওলা বক্সের ছোট ছেলে মাসরেফুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে হেরোইন সেবন করে আসছিল। পরিবারের লোকজন তাকে কোনভাবেই এ পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারছিলো না। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে মাসরেফুল ইসলামকে ধরে এনে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এসময় থানা পুলিশ হেরোইনসেবী মাসরেফুল ইসলামকে ভ্রাম্যমাণ আদালাতে হাজির করলে ভ্রাম্যমাণ আদালাতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন হেরোইন সেবনের অপরাধে মাসুরেফুলকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।

ছাত্রলীগ-কর্মীর পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন, নেতার রগ কর্তন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুপিয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মীর গোড়ালি থেকে দুই পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অপর একজনের হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান ও শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঝামাঝি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ ও পুলিশ দাবি করেছে, শিবিরের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছেন।

হামলার শিকার সালেহ মো. টগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক। তিনি ফোকলোর বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আর ছাত্রলীগের কর্মী আবদুল্লাহেল মাসুদ ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ঘটনার পরপরই তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁদের অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

ঘটনার বিবরণ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ সকাল আটটার দিকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে মাদার বখশ হল থেকে বের হন টগর ও মাসুদ। তাঁদের বহনকারী রিকশাটি শহীদ জিয়াউর রহমান হল ও শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঝামাঝি পৌঁছলে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাঁদের রিকশা লক্ষ্য করে দুটি ককটেল ফাটায়। এ সময় টগর ও মাসুদ পালানোর চেষ্টা করলে হামলাকারীরা মাসুদকে ধরে সেখানে থাকা একটি দোকানের পেছনে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। হামলাকারীরা মাসুদের ডান পায়ের গোড়ালি থেকে পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন করে দেয়। একই সময়ে টগরকে রাস্তার একপাশে ফেলে কুপিয়ে জখম করে। তাঁর হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। আশপাশের লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় টগর ও মাসুদকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিত্সাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর হামলার স্থানে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। পুলিশ জায়গা দুটি ঘিরে রেখেছে।

শিবিরকে দায়ী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদ আল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরবিরোধী কর্মকাণ্ডে এ দুজন সব সময়ই সামনে থেকেছে। কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি তাঁদের (আহত) দুজনের নাম উল্লেখ করে আমাকে হুমকি দিয়েছিল। তারাই এ হামলা চালিয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত।'

নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, 'শিবির ছাড়া হাত-পায়ের রগ আর কে কাটতে পারে? জামায়াত-শিবিরই এ হামলা চালিয়েছে।' ওসি জানান, হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তাত্ক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের প্রধান বি কে দাম প্রথম আলোকে বলেন, 'মাসুদের ডান পা গোড়ালি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে ছিল। ডান হাতের কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। ডান হাতেও জখম রয়েছে। দুই হাতেরই রগ কেটে গেছে। টগরের দুই হাত ও দুই পায়ে কুপিয়ে রগ কেটে দেওয়া হয়েছে।' বি কে দাম আরও বলেন, মাসুদের অবস্থা খুবই সংকটজনক। তাঁকে চার ব্যাগ রক্ত দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। টগরের অবস্থা মাসুদের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও আশঙ্কামুক্ত নয়। তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
দলীয় নেতা-কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদ আল হোসেন। সমাবেশ থেকে হামলাকারী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়। একই দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক।

প্রেমিককে বাঁচাতে প্রেমিকার জীবনদান

প্রেমের জন্য কত কিছুই না করে মানুষ। ২৩ বছর বয়সী স্থপতি সোফিয়া রজার প্রেমের ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। আগুন থেকে প্রেমিক অস্কার সিলভার (২৮) জীবন বাঁচাতে আত্মদান করেছেন তিনি।  আজ রোববার ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছরের আগস্টে পূর্ব লন্ডনে দুঃখজনক এ ঘটনাটি ঘটে। আদালতের শুনানি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অস্কারও একজন স্থপতি। তিনি ও সোফিয়া দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন। বিয়ে করে সংসার করার স্বপ্ন ছিল তাঁদের।
আদালতের বিবরণ থেকে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালবেলা ফ্ল্যাটের ভেতরে ঘুমাচ্ছিলেন অস্কার। আর চেলসা থেকে একটি জন্মদিনের পার্টি সেরে বাসায় ফেরেন সোফিয়া। ক্যাব থেকে নেমেই তিনি দেখেন, তাঁরা যে ব্লকে থাকেন, সেখান থেকে আগুন ও ধোঁয়া বের হচ্ছে। তিনি জলদি তাঁর প্রেমিককে ফোন করে ফ্ল্যাট থেকে বাইরে বের হয়ে আসতে বলেন। এরপর নিজেই ভবনের ভেতরে ছুটে যান প্রেমিককে উদ্ধার করতে। অপরদিকে আগুন ও ধোঁয়ার কারণে ফ্ল্যাট থেকে বের হতে পারছিলেন না অস্কার ও অন্য প্রতিবেশীরা। বাধ্য হয়ে তাঁরা ফ্ল্যাটের পেছনের দিকে বারান্দায় আশ্রয় নেন।
পরে ঘটনাস্থলে আসেন উদ্ধারকর্মীরা। তাঁরা ভবনের পঞ্চম তলায় সোফিয়ার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁকে উদ্ধার করে ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাত্ক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিকিত্সকেরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। বারান্দা থেকে এ দৃশ্য দেখেন অস্কার।  সোফিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যান উদ্ধারকর্মীরা। তাঁকে বাঁচানোর সব চেষ্টাই চলে। ভবন থেকে বেরিয়ে প্রিয় মানুষের খোঁজে অস্কার ছোটেন হাসপাতালে। কিন্তু সোফিয়া আর জাগেননি।

আরও জার্মান বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশের উন্নয়নে অতীতের মতো জার্মান সরকার, জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সাক্ষাত্কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আরও বেশি জার্মান বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে জার্মান সাংসদ ডাগমার জি ভোর্লের নেতৃত্বে দেশটির পাঁচ সদস্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাত্ করে। শেখ হাসিনা সাক্ষাত্কালে বলেন, তাঁর সরকার দেশের নাগরিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের চলমান যাত্রায় অতীতের মতো জার্মান সরকার, জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সহায়তা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'আমার লক্ষ্য দারিদ্র, ক্ষুধা ও নিরক্ষতামুক্ত বাংলাদেশ। যেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের স্থান থাকবে না। সে লক্ষ্য পূরণের জন্য আমার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।' ২০০৮ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বিশ্বমন্দা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করে তাঁর সরকারের এগিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাত্কালে বলেছেন, তার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ব্যাপক বিস্তারের ফলে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২৬ শতাংশে নেমে আসার কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।

সাক্ষাত্কালে ডাগমার জি ভোর্ল বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির দীর্ঘদিনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন, সে লক্ষ্য পূরণে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ পূরণে জার্মানি সহায়তা করবে। সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের উল্লেখ করার মতো সাফল্যের প্রশংসাও করেন জার্মান প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের জনগণের অগ্রগতির প্রশংসাও করে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সরকারের নেওয়া উদ্যোগ বাস্তবায়নে জার্মান সরকারের সহায়তার কথাও স্মরণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানির কার্লসরুই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানের কথা স্মরণ করে বলেন, তাঁর সঙ্গে জার্মানের একটি আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। এ সময় অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান শিকদার, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গরমের তৃষ্ণায়-সৌন্দর্যে চাই ডাবের পানি

ডাবের উপকারিতার কথা কম-বেশি সবারই জানা। ডাবের পানি স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি ত্বকের জন্যেও। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ডাবের পানি হচ্ছে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক—এটা সর্ব সাধারণেরও ধারণা। ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে, পানিশূন্যতা পূরণে এবং শক্তির উত্স হিসেবে কচি ডাবের পানি ভীষণ জনপ্রিয়। বলা হয়, একটি ডাবের পানিতে চারটি কলার সমান পটাশিয়াম আছে।

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ডাবের পানি খাবার স্যালাইনের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। ডায়রিয়া বা বমির পর পানিশূন্যতা দূর করতে ডাবের পানির ব্যবহার প্রচলিত। একটি সাধারণ কচি ডাবে আকার ভেদে ২০০ থেকে এক হাজার মিলিলিটার পানি থাকতে পারে। এর ৯৫ শতাংশই পানি। আর সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও অন্যান্য লবণের পরিমাপ স্থানভেদে একেক রকম। তবে সাধারণভাবে এক লিটার ডাবের পানিতে পটাশিয়াম আছে ৩৫ থেকে ৮২ মিলিমোল, সোডিয়াম শূন্য দশমিক ৭ থেকে শূন্য দশমিক ৯ মিলিমোল ও শর্করা ১ দশমিক ২ থেকে ২ দশমিক ৮ মিলিমোল। আর এক লিটার স্যালাইনে পটাশিয়ামের পরিমাণ ২০, সোডিয়াম ৭৫ ও শর্করা ৭৫ মিলিমোল।

গবেষকেরা দাবি করেন, যাঁরা শরীরচর্চা করেন এবং প্রচুর ঘাম ঝরান, তাঁরা এক চিমটি লবণ মিশিয়ে ডাবের পানি খেলে স্পোর্টস ড্রিংকের তুলনায় অনেক বেশি উপকার পান। সাধারণ কর্মজীবী মানুষের জন্যও ডাবের পানি প্রয়োজনীয়। মাংসপেশির খিঁচুনিও দূর করতে পারে এটি। অনেক সময় সুন্দর ত্বকের জন্য ফল ও ফলের জুসকে ভালো বলে মনে করা হয়। তেলজাতীয় ও অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়। গবেষকেরা দাবি করেন, ভালো ত্বকের জন্য কমলার জুসকে সেরা উপাদান বলা হলেও সুন্দর ত্বক পেতে ডাবের পানির উপকারিতাও কম নয়।

অতিরিক্ত গরম, রোদের তাপ ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে। চেহারায় ফুটে ওঠে বয়সের ছাপ। এ অবস্থায় ডাবের পানি আপনাকে দেবে সতেজতা। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার সময় চোখ বন্ধ রাখতে হবে। ডাবের পানিতে মুখ ধোয়ার পর মুখে হালকা আঠালো ভাব থাকে। এ জন্য ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পাঁচ থেকে ১০ মিনিট পর স্বাভাবিক পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। যাঁদের ত্বক খুব তৈলাক্ত, তাঁরা শুধু ডাবের পানিতে মুখ ধুলে হবে না, ভালো ফেস-ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে তারপর ডাবের পানি দিতে হবে। কারণ, তৈলাক্ত ত্বকের লোমকূপগুলোতে ময়লা জমে বেশি।

উপকূলীয় জেলায় ১৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে- ফায়েল খায়ের অর্থায়নে ২৪টি কেন্দ্র নির্মাণের পর হস্তান্তর করা হয়েছে

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বের জনহিতৈষী ব্যক্তির (ফায়েল খায়ের) দেওয়া আর্থিক সহায়তায় আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশে ১৮০টি বিদ্যালয় ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক বা আইডিবি। এর মধ্যে ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুল নির্মাণের কাজ শেষ করে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করাও হয়েছে। বাকি ১৫৬টি আগামী বছরের মধ্যে নির্মিত হবে। বাংলাদেশ সফররত আইডিবি গ্রুপের সভাপতি (প্রেসিডেন্ট) আহমেদ মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। গতকাল সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইডিবি ভবনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আইডিবি জানিয়েছে, ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতের পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনহিতৈষী ব্যক্তি বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের সাহায্যের জন্য ১৩ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দেন। সেই অর্থে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে একটি প্রকল্প হাতে নেয় আইডিবি। প্রকল্পটির নামকরণ করা হয় 'জনহিতৈষী ব্যক্তির বা ফায়েল খায়ের কর্মসূচি'। এই কর্মসূচির আওতায় ১১ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে ১৮০টি বিদ্যালয় ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও দুই কোটি ডলার সিডরে আক্রান্তদের পুনর্বাসন কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইডিবির সভাপতি জানান, প্রতিটি বিদ্যালয় ও আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাভাবিক সময়ে ২৪০ জন শিক্ষার্থী পাঠদান কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। আর দুর্যোগকালীন মুহূর্তে সেখানে পাঁচ শতাধিক গবাদি পশু ও দুই হাজারের বেশি দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইডিবির সঙ্গে জঙ্গি অর্থায়নের সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির সভাপতি বলেন, 'আইডিবি নৈতিক ব্যাংকিং করে। জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ মোটেই সত্য নয়।' এ সময় পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবারের সফরের আলোচ্যসূচিতে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কর্মসূচি সমন্বয়ক মোহাম্মদ সালেম ও কর্মসূচি পরিচালক সুফি মোশতাক আহমেদ।
হস্তান্তর: প্রথম আলোর শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গত রোববার দুপুরে আইডিবির সভাপতি ও তাঁর সফরসঙ্গীরা প্রথমে খুলনার কয়রা উপজেলার চাল্লির চক এলসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছান ও সেখানে ফিতা কেটে ভবন উদ্বোধন করেন। এরপর হেলিকপ্টারযোগে বাগেরহাটের শরণখোলায় রায়েন্দা মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন ও সেখানে নির্মিত ফায়েল খায়ের ভবন ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন। সেখানে দুই কোটি ডলারের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির আওতায় পাঁচজন গ্রহীতাকে এক লাখ ৪৭ হাজার টাকার ঋণ বিতরণ করেন।
প্রকল্পের উপদেষ্টা জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আইডিবির সভাপতির সফরসঙ্গী হন। বাগেরহাটের শরণখোলায় তিনটি, মংলায় দুটি, খুলনার দাকোপায় ছয়টি, কয়রায় আটটি ও সাতক্ষীরার শামনগরে পাঁচটি নিয়ে মোট ২৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।