Sunday, December 19, 2010

'ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাকরি দিতে হবে'

ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার সরকারের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, "স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা দেখালে চলবে না। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চাকরি দিতে হবে।" তিনি বলেন, "বিএনপি ক্ষমতায় এসেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের চাকরি দিয়েছিল। কিন্তু এই সরকারের আমলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চাকরি পাচ্ছে না।"

বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রোববার আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় কামাল আরো বলেন, "পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েও [ঘুরেও] ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চাকুরি পাচ্ছে না। নেতারা টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না। তারা শুধু টাকা খায়।"

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার মাথা নেড়ে তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এরপরও কামাল মজুমদার বক্তব্য চালিয়ে গেলে রোটন উঠে এসে তাকে থামিয়ে দেন।

অনেক জামায়াত নেতা লেবাস পাল্টে বর্তমানে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এই সহ-সভাপতি।

তিনি বলেন, "প্রশাসনের সব জায়গা থেকে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের সরিয়ে দিতে হবে। তারা বিদ্যুৎ ও পানির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে।" অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে বলেন, "ওয়েট অ্যান্ড সি। সবই দেখতে পাবেন।"

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ (উত্তর) আয়োজিত সভায় স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংসদ ফজলে নূর তাপস, একেএম রহমতউল্লাহ, আসলামুল হক, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের (উত্তর) সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাসভীরুল হক অনু, বর্তমান সভাপতি রবিউল ইসলাম সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক রানা বক্তব্য দেন।

কক্সবাজার ও মাগুরার পাঁচ পৌরসভার নির্বাচনে বাধা নেই

ক্সবাজারের চারটি পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করতে হাইকোর্টের আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ রোববার আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি এস কে সিনহা এ আদেশ দেন। একই আদালত মাগুরা পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করার আদেশও স্থগিত করেছেন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজারের চারটি পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করতে হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়। চেম্বার বিচারপতি আজ হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন। ফলে কক্সবাজারের এই চার পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা নেই।
প্রসঙ্গত, ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, চকরিয়া ও মহেশখালী পৌরসভার নির্বাচনের কার্যক্রম এক মাসের জন্য স্থগিত করেন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৮ জানুয়ারি এ চার পৌরসভায় ভোট গ্রহণের দিন ধার্য আছে। কক্সবাজার সদরের ভোটার কার্তিকচন্দ্র দাস নির্বাচন স্থগিত করার জন্য একটি রিট আবেদন করেছিলেন।
সরকারপক্ষের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মাগুরা পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করতে হাইকোর্টের আদেশ চেম্বার বিচারপতি স্থগিত করেছেন। তাই নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই।
প্রসঙ্গত, ১৪ ডিসেম্বর মাগুরা পৌরসভার নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ওই পৌর এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে এক রিট করেন মুক্তার হোসেন।

 শেয়ারবাজারে ধসঃ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর

শেয়ারবাজারের সাধারণ মূল্যসূচকের পতন এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় বিক্ষুব্ধ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তাঁরা ডিএসইর সামনের সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বলে জানা গেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিনিয়োগকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন।
তাঁদের ছোড়া ইটের আঘাতে দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটোসাংবাদিক খোরশেদ আলম আহত হন। বিনিয়োগকারীরা শাপলা চত্বরের কাছে একটি বাসও ভাঙচুর করেন। এদিকে আজ রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে সাধারণ মূল্যসূচক প্রায় ৩০০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়। এ সময় আতঙ্কগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা এসইসির বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ইত্তেফাক মোড় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএসইর সামনে বিপুলসংখ্যক র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেছেন, ‘দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, আমাদের আরও এগোতে হবে। সমাজের সব দায়িত্ব শুধু নির্বাচিত প্রতিনিধির ওপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকলে চলবে না। সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের সূচকে প্রথম শ্রেণীতে উঠতে হলে স্বচ্ছ নির্বাচন ও জনগণের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাসহ সরকারের জনমুখী কর্মপদ্ধতি ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে।
এ জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
আজ শনিবার সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের দশম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের গ্লে¬াবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এস এম শাহজাহান, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মহাসচিব আইরিন খান প্রমুখ। ‘আত্মশক্তিতে বলীয়ান ব্যক্তি কখনো দরিদ্র থাকতে পারে না’ এই বিশ্বাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ১০ হাজারেরও বেশি উজ্জীবক উপস্থিত ছিলেন।
এ এস এম শাহজাহান বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমাদের সততা, ত্যাগ ও ঐক্যের বড় অভাব। অথচ এগুলোর গুণেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সেই স্বাধীনতার স্বপ্ন এখন জাতির জন্য বড় প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’
আইরিন খান বলেন, উজ্জীবকরা প্রতিদিন তাঁদের সমাজ ও পরিবেশে একটু একটু করে কাজ করে সমাজটাকে বদলে দিচ্ছেন। সব উজ্জীবক দেশবাসীর হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করলে দেশ আরও সমৃদ্ধ হবে।
উজ্জীবকদের দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে তাঁদের উদ্দেশে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আপনাদের যা কিছু আছে তা নিয়েই লড়াই করছেন ক্ষুধা, অশিক্ষা, দুর্নীতি আর মানুষের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে। আপনারা উন্নয়নকে আন্দোলনে পরিণত করেছেন, আপনাদের তাই জাতির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
উজ্জীবক পুনর্মিলনের আহ্বায়ক ফাহমিদা নবী বলেন, ‘আমরা দেশ গড়তে যে অনেক কিছুই করতে পারি তা নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে দেখিয়েছি।’
অনুষ্ঠানে নিজ খরচে সারা দেশ থেকে আসা উজ্জীবকদের বেশ কয়েকজন তাঁদের এলাকার উজ্জীবকদের সফল কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। এরপর উজ্জীবকেরা দেশাত্মবোধক সংগীত, নৃত্য এবং জারিগান পরিবেশন করেন।

সুনামগঞ্জে দুই নৌকার সংঘর্ষ, নিহত ৩৫

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীতে যাত্রীবাহী ও বালুবাহী নৌকার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে ১০ জন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশু ও ২৬ জন মহিলা। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সোনারবাগ ইউনিয়নে আলীপুর এলাকায় সুরমা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, "যাত্রীবাহী নৌকাটিতে ৫০ জনের মত যাত্রী ছিলো। কুয়াশা ঢাকা নদীতে সংঘর্ষের পর দুটি নৌকাই ডুবে যায়। পুরুষ যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজে নেমে পড়ে। তবে কুয়াশা ও ঠাণ্ডার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যহত হচ্ছে।" তিনি রাত ১১ টার দিকে জানান, পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলের পথে রয়েছে।

সোনারবাগ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বাবলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "তিনি নিজে ৩৫টি লাশ গুনেছেন।" যাত্রীবাহী নৌকাটি সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জের ইটনা যাচ্ছিল। নিহতদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা ও মিঠামইন উপজেলায় বলে জানান তিনি।

নিহতদের মধ্যে রয়েছে- রফিকুল (৮), নিমা বেগম (৭), হুসনা (৩২), সাব্বির (৭), সাদিকুল (৪), আকাশ (১২), তাসলিমা (১২), কাঁকান (১০), তৌহিদা (৮), সিঁথি (৬), মিতি (১) ও আনুফা (২৮)। তাৎক্ষণিকভাবে বাকিদের নাম জানা যায়নি।