Friday, July 06, 2012

ইয়াবা নির্ভর উখিয়ার শতাধিক পরিবারের জীবিকা!

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নাফ নদী ও টেকনাফ স্থলবন্দর এবং আরকান সড়ক দিয়ে পানির মতো আসতে শুরু করেছে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা।

ইয়াবা নির্ভর উখিয়ার শতাধিক পরিবারের জীবিকা!

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নাফ নদী ও টেকনাফ স্থলবন্দর এবং আরকান সড়ক দিয়ে পানির মতো আসতে শুরু করেছে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ইয়াবা।
আর এতে চরমভাবে বিপর্যস্থ উখিয়ার বালুখালী এলাকার যুবক-যুবতী ও ছাত্রসমাজ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার মাসোহারা গ্রহণের মধ্যদিয়ে এ এলাকার শতাধিক লোক ইয়াবা বেচাকেনা ও পাচার করছে। তাদের জীবিকাও এখন ইয়াবাকে ঘিরেই।
ফলে নেশার ভয়ংকর থাবার কবলে গোটা উখিয়া। সব অপকর্মের মূলমন্ত্র মাদককে রোধ করা না গেলে এ এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সামাজিক মূল্যবোধের উত্তরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একটি চক্র এ এলাকায় ইয়াবা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চক্রটি বছরে কক্সবাজার থেকে প্রায় ৮শ কোটি টাকা ইয়াবা বাণিজ্য করে আসছে।

উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং-এ গড়ে উঠেছে ইয়াবা, হেরোইনসহ মাদকদ্রব্যের রমরমা ব্যবসা। অতিলাভের আশায় কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা প্রতিনিয়ত এ ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছে।

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত থেকে শুরু করে গ্রাম ও কক্সবাজার শহরের অলিগলিতে ফ্রিস্টাইলে বিক্রি হচ্ছে এসব মাদকদ্রব্য। উখিয়া সীমান্ত দিয়ে আসা ইয়াবা চোরাচালানী চক্রের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রও জড়িত বলে জানা গেছে। 

সূত্র জানায়, দুর্নীতিপরায়ন পুলিশসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আতাত করে ইয়াবা আমদানি করে মাফিয়াচক্র। ফলে সীমান্তের নিরহ জনগণের এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে না।

উখিয়া সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি। তবে মাদক প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন।”

এদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিজ্ঞ ও সুশীল সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মনে করেন প্রশাসন ইচ্ছা করলেই এটি বন্ধ করা সম্ভব।

জানা গেছে, বিলাসবহুল গাড়িতে করে সুন্দরীরা পর্যটক সেজে ইয়াবার চালান দেশের অন্যান্য স্থানে অনায়াসে নিয়ে যায়। বিষয়টি জনপ্রতিনিধি, পুলিশ অবহিত থাকলেও তা প্রতিরোধে এগিয়ে আসে না। 

তবে এ অঞ্চলের বিজিবি ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাঝেমধ্যে দু’একটা ইয়াবা চালানসহ বিক্রেতাদের আটক করলেও মূলচক্রের কোনো সন্ধান মেলেনা। মূলচক্র থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বলেন, “যে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধ করার জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সব সময় প্রস্তুত। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য সংবাদের অপেক্ষায় তারা।”

সরেজমিনঃ রামুতে পাহাড়ি ঢল, হাজারো মানুষ নিঃস্ব

'আমি পাহাড়ি ঢল দেখিনি, দেখেছি সুনামি। সেই রাতে সাগর থেকে নয়, পাহাড় থেকেই এসেছিল সুনামি! এই সুনামি রামু উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। নিঃস্ব করে দিয়েছে হাজার হাজার মানুষের সুখের সংসার।'
গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে এভাবে ২৬ জুন রাতের আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের বিবরণ দিচ্ছিলেন রাজারকুল ইউপি মেম্বার শাহাবুদ্দিন।
বন্যার পানি এখনো সরে না যাওয়ায় চকরিয়ার তিন গ্রামের মানুষ এভাবে দিন কাটাচ্ছেন। ছবিটি কৈয়ারবিল এলাকার। ছবি : কালের কণ্ঠ, বন্যায় হেলে পড়েছে বসতঘর। রশি দিয়ে টেনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার চেষ্টা এক মহিলার। ছবিটি রামুর রাজারকুল এলাকা থেকে তোলা। ছবিঃ রাশেদ মজিদ
রামু উপজেলাজুড়ে এখন পাহাড়ি ঢলের ধ্বংসস্তূপ। রাজারকুলের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদুল হকের পুত্র আকতার কামাল গতকাল ঘরের দুটি টেলিভিশন এবং একটি ফ্যান মেরামত করতে যাচ্ছিলেন রামু সদর স্টেশনে।
তিনি জানান, তার ঘরের আলমিরায় রক্ষিত দলিল-দস্তাবেজস

চকরিয়ায় তিন গ্রামের বাসিন্দারা এখনো পানিবন্দি

মানবিক বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের তিন গ্রাম ছোট ভেওলা, ভরান্যারচর ও হামিদুল্লাহ সিকদারপাড়ায়। এখনো পানিবন্দি তিন গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। বন্যার ১০দিন অতিবাহিত হলেও পানি নেমে যায়নি। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরমে। ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতাও পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন দুর্গতরা।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার জাকির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তিন গ্রামের এই দুর্বিষহ অবস্থার কথা এখনো আমাকে কেউ জানায়নি। তবে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
সনাক চকরিয়ার সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল শাহাব উদ্দিন বলেন, 'জরুরিভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা না হলে তিন গ্রামে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ।'
কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, 'পানি নিষ্কাশনের জন্য সামান্য পরিমাণ জায়গা কাটতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে গত বছর ওই নালা সংস্কার করতে আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হলেও জমি মালিকের বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।' ছোট ভেওলার কৃষক আবুল খায়ের বলেন, 'খুব সহসা বন্যার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা না হলে এলাকার উচ্চ ফলনশীল ৫শ একর জমিতে চাষ হবে না। এতে এলাকার কৃষিনির্ভর পরিবারগুলোর চরম খাদ্যসংকটে পড়বে।'

কুতুবদিয়ার ৫০ গ্রাম প্লাবিত, শিশুর মৃত্যুঃ পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ

সামুদ্রিক জোয়ারের পানিতে গতকাল বুধবার কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আষাঢ়ী পূর্ণিমার কারণে
পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন-চার ফুট বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এর ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার মানুষ। পানিতে ডুবে একটি শিশু মারা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দ্বীপের ছয়টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। দ্বীপের দক্ষিণে অমজাখালী গ্রামের এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে দুটি ঘর। বড়ঘোপ ইউনিয়নের জোয়ারের পানিতে এক কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে চর ধুরুং ও ফয়জনির বাপের পাড়া, কাইছারপাড়া কুইলারটেশসহ ১৭টি গ্রাম; দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে বাতিঘরপাড়া এলাকায় পাঁচটি গ্রাম, লেমশিখালী ইউনিয়নে সতরউদ্দিন, পেয়ারাকাটা, নয়াকাটা, দরবার ঘাট এলাকায় বাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে পরান সিকদারপাড়া, মহাজনপাড়া, এলাদাদ মিয়াপাড়া, মতির বাপের পাড়া, মলনচরসহ আটটি গ্রাম এবং আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কুমিরারছড়া জেলেপাড়া, আনিচের ডেইল, পূর্ব তাবলরচর, পশ্চিম তাবলরচর, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকা, হায়দার বাপের পাড়া, কাহারপাড়া, কাজীরপাড়াসহ ১২টি গ্রামে জোয়ারে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে এসব গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার পাঁচ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এসব গ্রামে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত ১০টি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া, গতকাল সকালে জোয়ারের পানির তোড়ে দ্বীপের দক্ষিণ অমজাখালী গ্রামে আবু তালেবের ছেলে আবদুল মান্নান মধু (৬) পানির তোড়ে ভেসে যায়। বিকেলে পানি নেমে গেলে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফিরোজ আহমেদ জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য পাউবোর বেড়িবাঁধের স্লুইস গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। জোয়ারের লোনা পানিতে প্লাবিত এলাকার ঘরবাড়ির লোকজনকে নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য স্থানীয় প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রামুতে দুই নেত্রীকে নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অশালীন উক্তিঃ শিক্ষকদের বিক্ষোভ, বিপাকে প্রশাসন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে নিয়ে 'অশালীন উক্তি' করেছেন কক্সবাজারের রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসলাম খান।
গতকাল বুধবার রামু উপজেলার কলেজ, হাই স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের এক সমন্বয় সভায় ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অশালীন উক্তি করেন। এ ঘটনায় উপস্থিত উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের সমন্বয় সভা। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে রামু উপজেলা প্রশাসন। আসলাম খান মাত্র তিন সপ্তাহ আগে রামুতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন।
রামু উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসলাম খান রাঙামাটি জেলার নুইন্যাছড়ি উপজেলা থেকে গত ১৭ জুন রামু উপজেলায় বদলি হয়ে যোগদান করেন। এর আগে তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রামুতে যোগদানের পর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক আচরণ এবং অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে চলেছেন। চকরিয়া উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মদ্যপানসহ আরো নানাবিধ অভিযোগের কারণে তাঁকে নুইন্যাছড়ি উপজেলায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল।
রামু ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল রামু উপজেলার কলেজ, হাই স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের এক সমন্বয় সভা আহ্বান করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ওই সভায় শিক্ষা কর্মকর্তা আসলাম খান আকস্মিক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতাকে নিয়ে আপত্তিকর উক্তি করলে শিক্ষকরা প্রতিবাদ জানান। পরে শিক্ষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে শিক্ষা কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন।

টেকনাফে ৪৩ রোহিঙ্গা আটক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে বৃহস্পতিবার ৪৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড।
টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। তারা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

আজ ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট এলাকা দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশ করার সময় কোস্টগার্ডের সদস্যরা দুটি ডিঙি নৌকাসহ ১৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে।

একই সময়ে শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশকালে একটি নৌকাসহ ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে বিজিবি। এ ছাড়া শাহপরীর দ্বীপের ঘোলাপাড়া এলাকা থেকে চারজন, সাবরাং ৪ নম্বর সুইস গেট এলাকা থেকে তিনজনকে আটক করে তারা। সকাল নয়টার দিকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকা দিয়ে পাঁচজন ও উনচি প্রাং এলাকা থেকে আরো চারজনসহ বিজিবি মোট ২৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৪২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান ও কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের লে. বদরুদ্দোজা বলেন, “বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল ও নিরাপত্তা-বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গারা এখনো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকায় তারা আমাদের হাতে ধরা পড়ছে। আজ ৪৩ জন রোহিঙ্গা আমাদের হাতে আটক হয়েছে। আজ কোনো একসময় তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো (পুশ ব্যাক) হবে।”

মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার ঘটনার পর ১১ জুন থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হাজার ৪৯ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে আটক করেন বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা।

কক্সবাজারে পর্যটন ভাতার দাবিতে সরকারি কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি

কক্সবাজারে পর্যটন ভাতার দাবিতে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি কর্মচারী সমিতির নেতারা। মঙ্গলবার সকালে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপি উল্লেখ করা হয়, দেশের পর্যটন রাজধানী হিসেবে খ্যাত কক্সবাজার জেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটে সবচে বেশি। এ জেলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন যাত্রার মান অত্যন্ত ব্যয় বহুল। গত বছর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে কক্সবাজার জেলাকে ব্যয় বহুল জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

সমিতির নেতারা জানান, ইতোপুর্বে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীদের ৩০ ভাগ হারে পাহাড়ী ভাতা দিয়ে আসছে সরকার।

এর আলোকে কক্সবাজারে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন যাত্রার কথা বিবেচনা করে পর্যটন ভাতা দেয়ার দাবি জানানো হয়। এসময় সমিতির সভাপতি মো. সাজেদ আলী, সাধারণ সম্পাদ এডি গোলাম মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

আরো ১২ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক

মিয়ানমারের দাঙ্গার পর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার সময় টেকনাফ থেকে আটক আরো ১২ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে পুশব্যাক করেছে কোস্টগার্ড।
বুধবার ভোরে শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া নাফনদী সীমান্ত পয়েন্ট থেকে তাদেরস্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে মিয়ানমারে ৪২ জনকে পুশব্যাক করা হয়।

কোস্টগার্ড সূত্র জানায়, রাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া নাফনদী সীমান্ত পয়েন্টে মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করার সময় ওই ১২ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজারের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলাপাড়া পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ১৯ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরে দুপুরে জালিয়াপাড়া থেকে একজন রোহিঙ্গাকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শাহপরীর দ্বীপ লোকালয় থেকে আরো চার রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। পরে তারা আটক রোহিঙ্গাদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন।

আটককৃত ওই ২৪ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি ক্যাম্পে হেফাজতে রেখে বিকেল ৫টায় শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি ৪২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্ণেল জাহিদ হাসান।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে হোয়াইক্যং ঝিমংখালী পয়েন্ট থেকে চার জন ও ঊনচি প্রাং পয়েন্ট থেকে দু’জনকে আটক করা হয়। তাদেরকে মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

কক্সবাজারে সাগরের ভাঙ্গনে ৩ শতাধিক পরিবার উদ্বাস্তু

কক্সবাজারে বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের পাশাপাশি সাগরের ভাঙ্গনে উদ্বাস্তু হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার মানুষ। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়া এবং বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বসতবাড়ি হারিয়েছে কুতুবদিয়া দ্বীপের তিন শতাধিক পরিবার।
বন্যা কিংবা পাহাড় ধ্বসের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ নয় স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নিঃস্ব হচ্ছে কুতুবদিয়া দ্বীপের জেলে পাহাড় মানুষ। ইতোমধ্যে সাগরের থাবায় বসতভিটা হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে জেলে পাড়ার তিন শতাধিক হিন্দু পরিবার।

নিশ্চিহ্ন হয়েছে পাড়ার বিভিন্ন মন্দির ও শ্মশান। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে মানচিত্র থেকে জেলে পাড়ার অস্থিত্ব মুছে গিয়ে সাগরে পরিণত হবে। জলবায়ূ পরিবর্তন না বুঝলেও এখানকার মানুষ বুঝে গেছে সাগর ক্রমশ গ্রাস করছে তাদের বসতভিটা।

এলাকাবাসী জানান, কক্সবাজারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুতুবদিয়া ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে সাগর গর্ভে। ইতোমধ্যে বসতভিটা সাগরে রূপ নেয়ায় উদ্বাস্তু হয়েছে হাজারো পরিবার। উঁচু এবং টেকসই বেড়িবাঁধ দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না দ্বীপটি। পূর্ণিমার জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে সাগর ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও পরিস্থিতিটি উদ্বেগজনক। ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর এখানকার হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করছেন। সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধ্বসে মৃত্যু হয়েছে এসব উদ্বাস্তুদের অনেকেই।