Monday, February 27, 2012

কক্সবাজার পৌরসভায় ১৫ প্রকল্পের গম নিয়ে নয়-ছয়

কক্সবাজার পৌরসভার গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের (টিআর) আওতায় ১৫টি প্রকল্পের ৩০.৫৪৯ মেট্রিক টন গম নিয়ে চলছে হরিলুট। জানুয়ারি মাসে এসব গম ময়দার মিল মালিকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এসব গম ১৫ দিন আগে তুলে নেওয়া হলেও প্রকল্পগুলোতে কোনো কাজ হয়নি।


জানা গেছে, আবুজর আল গিফারী কেজি স্কুলের রং করা ও কক্ষ মেরামতে দুই মেট্রিক টন, কেন্দ্রীয় মহা শ্মশানের পুকুর ঘাট নির্মাণে ১.৫০ মেট্রিক টন, বড় বাজার জামে মসজিদের সংস্কার কাজে ১.৫০ মেট্রিক টন, টেকপাড়া ব্যাডমিন্টন ক্লাব মাঠ সংস্কারে ১ মেট্রিক টন, বার্মিজ মার্কেট এনবিসি মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ ১ মেট্রিক টন, হাঙ্গরপাড়া ব্যাডমিন্টন মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয় ১ মেট্রিক টন, বাচা মিয়ার ঘোনায় টিউবওয়েল স্থাপন খাতে ৩ মেট্রিক টন, ঘোনারপাড়ায় কৃষ্ণনান্দধামের পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণে ৩.৫৪৯ মেট্রিক টন, বাহারছড়া জামে মসজিদের অজুখানা সংস্কার ৩ মেট্রিক টন, দক্ষিণ বাহারছড়া বায়তুশ সালাত মসজিদ সংস্কার ৩ মেট্রিক টন, লাইট হাউস ফাতেরঘোনা জামে মসজিদের সংস্কার ৩ মেট্রিক টন, পৌর কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় ২ মেট্রিক টন, ফল্লইন্যাকাটা সোনাবিবির বাড়ি হতে নাগুর বাড়ি পর্যন্ত ড্রেন ও স্ল্যাব নির্মাণে ২ মেট্রিক টন, এসএম পাড়া পশ্চিম মসজিদের মক্তব সংস্কারে ১ মেট্রিক টন ও পেশকারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় বাবদ ২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ৩০ জানুয়ারীর মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সরেজমিন দেখা গেছে সেখানে কোনো কাজ হয়নি। আবুজর আল গিফারী কেজি স্কুলের রং করা ও কক্ষ মেরামত করা হয়নি। পৌরসভার কাউন্সিলর মনছুর আলমের নামে ওই স্কুলে এর আগেও টিআর এর গম বরাদ্দ হলেও সেখানে কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে পৌরসভার কাউন্সিলর মনছুর আলম বলেন, 'বরাদ্দের গম বিক্রি করে স্কুলের নানা ধরনের কাজ করা হয়। আত্মসাতের বিষয়টি ঠিক নয়।' কেন্দ্রীয় মহা শ্মশানের পুকুর ঘাট নির্মাণ ও বড় বাজার জামে মসজিদের সংস্কার কাজ না করা প্রসঙ্গে পৌরসভার কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান বলেন, 'গম বিক্রি করে টাকা কমিটিকে জমা দেওয়া হয়েছে। তারা কি করেছে না করেছে তা আমি জানি না।'
পৌর কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় বাবদ বরাদ্দ হওয়া গম বিক্রি করে আগের ক্রয় করা আসবাবপত্রের টাকার সাথে সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌরসভার কর্মচারী খোরশেদ আলম। টিআর এর বরাদ্দের টাকায় বাচা মিয়ার ঘোনায় টিউবওয়েল স্থাপন না হওয়া প্রসংঙ্গে পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ বলেন, 'বরাদ্দ করা গম বিক্রি করে টিউবওয়েলের যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে। শীঘ্রই টিউবওয়েল স্থাপন করা হবে।'

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হচ্ছে

পর্যটন শহর কক্সবাজারের পরিকল্পিত উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় 'কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ' গঠন করছে সরকার। এ কর্তৃপক্ষ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ উন্নয়ন কাজ তদারক করবে। পাশাপাশি এ শহরের ভূমির পরিবর্তন ও পাহাড় কাটা বন্ধে নজরদারি চালানো, শহরের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের একক কর্তৃত্ব থাকবে কর্তৃপক্ষের হাতে।

কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এলাকার মধ্যে অনুমতি ছাড়া ইমারত নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, জলাধার খনন করা যাবে না। এ সম্পর্কিত একটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান সমকালকে বলেন, সুপরিকল্পিত নগরীতে পরিণত করতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। এটি গঠন হলে কক্সবাজারে উন্নয়ন কার্যক্রম বাড়বে। আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে কক্সবাজার।
সূত্র জানায়, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ব্যাপক পরিচিতি থাকলেও বিভিন্ন কারণে জায়গাটির তেমন উন্নয়ন হয়নি। সমুদ্র-তীরবর্তী সব জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। আবাসনের ক্ষেত্রে মানা হয়নি কোনো নীতিমালা। নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়। নষ্ট করা হচ্ছে সমুদ্রসৈকতের পরিবেশ। সব মিলিয়ে কক্সবাজার পর্যটন নগরী তার বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে পারছে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার শহরটিকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে।
খসড়া আইন অনুযায়ী একজন অতিরিক্ত সচিব মর্যাদার কর্মকর্তা হবেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। সার্বক্ষণিক তিনজন সদস্য থাকবেন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার। এ ছাড়া পর্যটন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও ভূগোল বিভাগের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, কক্সবাজার শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি বা সম্পাদক, সরকার মনোনীত স্থায়ীভাবে বসবাসরত দু'জন ব্যক্তি, নগর উন্নয়ন অধিদফতর ও স্থাপত্য অধিদফতরের একজন করে প্রতিনিধি কর্তৃপক্ষের সদস্য হবেন।
আইনানুযায়ী, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কক্সবাজারে গৃহায়ন ও আবাসন সুবিধা সম্প্র্রসারণের জন্য সীমিত পরিসরে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে। তারা নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় নৌ, বিমান, সড়ক যোগাযোগ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনারও উন্নয়ন করবে। চিহ্নিত করবে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকার অবস্থান। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য ভূমি জোনিং করার দায়িত্ব থাকবে এ কর্তৃপক্ষের ওপর। তারা প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ অনুসরণ করে ভূমি সংরক্ষণ করবে। নতুন কর্তৃপক্ষের হাতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের দায়িত্বও দেওয়া হবে।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সমন্বয় পরিষদের প্রাধান্য

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের
প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।


১৭টি পদের মধ্যে এ প্যানেল থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০জন নির্বাচিত হয়েছেন। ২টি সম্পাদকীয় পদসহ ৭জন নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে।

শনিবার সকাল সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এক টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৪৯২জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৪৫২ জন। ভোটগ্রহণ শেষে রাত ১১ টার দিকে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করেন সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট দিলীপ কুমার আচার্য্য।

সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন আহমদ ২২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার অপর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল আলা পেয়েছেন ২২২ ভোট। ২২৭ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের অ্যাডভোকেট ইকবালুর রশিদ আমিন সোহেল। তার অপর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পেয়েছেন ২২০ ভোট।

অপর ১৫টি পদের মধ্যে ৬টি সম্পাদকীয় ও ৯টি সদস্য পদ রয়েছে। ৬টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের ৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

এরমধ্যে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট জাফর আলম (তার প্রাপ্ত ভোট ২৩০) ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া (তার প্রাপ্ত ভোট ২২৪)। এ প্যানেল থেকে ৩শ ভোট পেয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) পদে নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ। ২৪৭ ভোট পেয়ে পাঠাগার সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন।

বিএনপি জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে ২৫৫ ভোট পেয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) পদে নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান। ২২৯ ভোট পেয়ে আপ্যায়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. আবু তাহের (২)।

প্রতিদ্বন্দ্বী অপর সম্পাদকীয় পদে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের সহ-সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) পদে অ্যাডভোকেট বাবুল চন্দ্র দাস পেয়েছেন ১৮১ ভোট।

আপ্যায়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট একে ফজলুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ২২৩ ভোট। আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আমির হোছাইন (২) পেয়েছেন ১৮৮ ভোট ও আবু তাহের (২) পেয়েছেন ১৯৭ ভোট। সহ-সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) পদে অ্যাডভোকেট হালিমুর রশিদ পেয়েছেন ১৪৪ ভোট। পাঠাগার সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম খোকন পেয়েছেন ১৯৪ ভোট।

সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেল থেকে ২৩২ ভোটে অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, ২২৪ ভোটে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইছহাক (১), ২৫২ ভোটে অ্যাডভোকেট রাহমত উল্লাহ, ২১৬ ভোটে অ্যাডভোকেট ওয়াহেদা রহমান জোনাকী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে ৩৩৪ ভোটে অ্যাডভোকেট ইয়াছমিন শওকত জাহান রোজি, ২৫১ ভোটে অ্যাডভোকেট সব্বির আহমদ, ২৩৮ ভোটে অ্যাডভোকেট ছাদেক উল্লাহ, ২২৯ ভোটে অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন ফারুকী ও ২৩৪ ভোটে  অ্যাডভোকেট নাজেম উদ্দিন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের অ্যাডভোকেট আবু ছৈয়দ পেয়েছেন ১৭৪ ভোট, অ্যাডভোকেট আবুল কাসেম (২) পেয়েছেন ১৮১ ভোট, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বখতিয়ার পেয়েছেন ২০৭ ভোট, অ্যাডভোকেট খাইরুল আমিন পেয়েছেন ১৯২ ভোট, অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন পেয়েছেন ১৩০ ভোট। আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের অ্যাডভোকেট একে ফিরোজ আহমদ পেয়েছেন ২০৩ ভোট, অ্যাডভোকেট তাওহিদুল আনোয়ার পেয়েছেন ২১৩ ভোট, অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন পেয়েছেন ১৭৭ ভোট ও অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ পেয়েছেন ১৬৩ ভোট।