Friday, December 31, 2010

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থানে

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্দোনেশিয়া ও মেক্সিকোকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ২০১০ সালের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে ছিল। চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও মেক্সিকোর পেছনে ছিল বাংলাদেশের নাম।

কিন্তু মাসভিত্তিক রপ্তানির হিসাবে সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ মেক্সিকোকে পেছনে ফেলে দেয়। ওই মাসে বাংলাদেশ ৩৫৮ ও মেক্সিকো ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করে। এরপর অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ অপর প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিমূল্যকে ছাড়িয়ে যায়। সে সময় বাংলাদেশের ৩৭৪ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানির বিপরীতে ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি ছিল ৩৬৫ মিলিয়ন ডলার।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে শুধু চীন ও ভিয়েতনাম অগ্রবর্তী অবস্থানে রয়েছে।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্যিক উইংয়ের পর্যালোচনা মোতাবেক ২০১০ সালের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশ প্রায় ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে, যা বিগত ২০০৯ সালের একই সময়ের রপ্তানির তুলনায় ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, একই সময়ে চীনের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ২১ দশমিক ১৫, ভিয়েতনামের ১৭ দশমিক ২৬, ইন্দোনেশিয়ার ১৬ দশমিক ১৭, মেক্সিকোর সাড়ে ৩ এবং ভারতের ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। তথ্য বিবরণী।

উত্তর লেখা ছিল প্রশ্নের পাশেই!

প্রশ্ন করা হয় উত্তর পাওয়ার আশায়। কিন্তু প্রশ্নের সঙ্গেই যদি উত্তর জানিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আর প্রশ্ন করা কেন? কেউ প্রত্যাশা না করলেও সে কাজটিই করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা গেছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ শুক্রবার সকালে প্রথম বর্ষের (সম্মান) ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের মোট চারটি সেট পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। এর মধ্যে ‘ডি’ সেটের ২৫ থেকে ৪১ নম্বর পর্যন্ত মোট ১৭টি প্রশ্নের সঙ্গে সম্ভাব্য চারটি উত্তর আছে। এর মধ্যে যেটি সঠিক উত্তর, সেটির পাশে একটি পৃথক কলামে সেটি লিখে দেওয়া আছে।
যেমন ৩৯ নম্বর প্রশ্নটি ছিল: O' Henry is one of the famous short story writers in- A. Australia, B. America, C. England, D. Spain. এই প্রশ্নের পাশেই আলাদা কলামে লেখা আছে B.
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, ‘ডি’ সেট পাওয়া পরীক্ষার্থীদের ওই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে কোনো বেগ পেতে হয়নি। কেননা, প্রশ্নগুলোর উত্তর পাশে লিখে দেওয়া আছে। এ জন্য যারা ‘ডি’ সেট পেয়েছেন, তাঁরা নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে উত্তরপত্র জমা দিয়ে দেন। এতে অন্য সেটের পরীক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এক ঘণ্টার পরীক্ষার শেষ দিকে বিষয়টি হলের পরিদর্শকদের নজরে আসে। তাত্ক্ষণিকভাবে তাঁরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরিদর্শকেরা পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে উত্তরপত্রের সঙ্গে প্রশ্নপত্রটিও জমা রেখে দেন।
উপাচার্য এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী ‘ডি’ সেটের প্রশ্নপত্রে ১৭টি প্রশ্নের সঙ্গে উত্তর ছাপা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি নিছক ভুল। আমরা তাত্ক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছি। এই ভুলের কারণে কোনো পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না কিংবা কেউ বেশি সুবিধাও পাবে না।’

ফিক্সিং বিতর্কে ক্ষমা চাইলেন ইয়াসির হামিদ

‘পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার বিষয়টি নতুন নয়। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই গড়াপেটা করে থাকেন ক্রিকেটাররা,’ স্পন্সরশিপ চুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে ইয়াসির হামিদের মুখ থেকে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে এমন কয়েকটি বিস্ফোরক কথা বের করেছিলেন লর্ডস টেস্টে স্পট কেলেঙ্কারি ফাঁস করা ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের এক সাংবাদিক। প্রায় চার মাস পর আজ শুক্রবার সকালে সেই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ইন্টিগ্রিটি কমিটির সামনে হামিদ বলেন, ‘আমাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু অপরিচিত কারও সঙ্গে ওসব বলা আমার উচিত হয়নি। এ ঘটনায় যেসব ক্রিকেটার দুঃখ পেয়েছেন, তাঁদের সবার কাছেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমি।’
পুরো ঘটনার ভিডিও থাকার পরও নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনকে প্রথমে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ইয়াসির। কিন্তু পরদিনই লন্ডনে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনে হাজির হয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন তিনি। সেখানে পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার দাবি করেন, আবিদ খান পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ৫০ হাজার পাউন্ডের স্পন্সরশিপ চুক্তির প্রস্তাব দেন। কথা বলার একপর্যায়ে দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় বলে ফেলেন তিনি। ইংল্যান্ডে সেই সফরের পর থেকেই পাকিস্তান দলের বাইরে আছেন ইয়াসির।—ক্রিকইনফো।

ফিক্সিং বিতর্কে ক্ষমা চাইলেন ইয়াসির হামিদ

‘পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার বিষয়টি নতুন নয়। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই গড়াপেটা করে থাকেন ক্রিকেটাররা,’ স্পন্সরশিপ চুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে ইয়াসির হামিদের মুখ থেকে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে এমন কয়েকটি বিস্ফোরক কথা বের করেছিলেন লর্ডস টেস্টে স্পট কেলেঙ্কারি ফাঁস করা ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের এক সাংবাদিক। প্রায় চার মাস পর আজ শুক্রবার সকালে সেই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ইন্টিগ্রিটি কমিটির সামনে হামিদ বলেন, ‘আমাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু অপরিচিত কারও সঙ্গে ওসব বলা আমার উচিত হয়নি। এ ঘটনায় যেসব ক্রিকেটার দুঃখ পেয়েছেন, তাঁদের সবার কাছেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমি।’
পুরো ঘটনার ভিডিও থাকার পরও নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনকে প্রথমে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ইয়াসির। কিন্তু পরদিনই লন্ডনে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনে হাজির হয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন তিনি। সেখানে পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার দাবি করেন, আবিদ খান পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ৫০ হাজার পাউন্ডের স্পন্সরশিপ চুক্তির প্রস্তাব দেন। কথা বলার একপর্যায়ে দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় বলে ফেলেন তিনি। ইংল্যান্ডে সেই সফরের পর থেকেই পাকিস্তান দলের বাইরে আছেন ইয়াসির।—ক্রিকইনফো।

চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ভবনে আগুন

ট্টগ্রাম নগরীর বন্দরটিলা এলাকায় অবস্থিত নৌবাহিনীর একটি ভবনে শুক্রবার আগুন লেগে কয়েক লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইপিজেড ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার এম এ মালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বন্দর থানাধীন বন্দরটিলা এলাকার ২ নম্বর নেভি গেইটের ভেতরে একটি দোতলা ভবনে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ওই আগুন লাগে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর দুটি ইউনিটের তিনটি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৩টার দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আনে।

নৌবাহিনীর দোতলা ভবনটিতে তাদের পুরাতন বিভিন্ন মালামাল রাখা হতো। নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দমকল কর্মকর্তা মালেক বলেন, "আগুনো তাদের পুরনো বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও অন্যান্য সরঞ্জাম পুড়ে গেছে বলে নৌ কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন। তার বলছেন, আগুনে প্রায় আট লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।"

র‌্যাবের 'ধরে নেওয়া' ব্যবসায়ী ৯ মাস 'নিখোঁজ'

র‌্যাবের 'ধরে' নেওয়া এক ব্যবসায়ী নয় মাস ধরে 'নিখোঁজ' বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। 'নিখোঁজ' ওই যুবকের নাম ইউসুফ আলী সুজন (৩১)। তিনি রাজধানীর কলাবাগানে বসবাস করতেন। সুজনকে জোস্না বেগম নামে এক তরুণীসহ র‌্যাব ধরে নেয় বলে জানান সুজনের ভাই মাহবুব। এই জোস্না সুজনদের বাড়ির এক ভাড়াটের বান্ধবী।

সুজনের ভাইয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ২৪ মার্চ জোস্নার ফোন পেয়ে ফার্মগেটে একটি রেস্তোরাঁর সামনে যান সুজন। সেখান থেকে তাকে 'ধরে নিয়ে যায়' র‌্যাব-২-এর সদস্যরা। মাহবুব জানান, সুজনকে র‌্যাব 'ধরে নিয়ে যাওয়ার' পর জোস্নাই প্রথম তাকে ঘটনাটি জানান।

তবে এ নিয়ে র‌্যাবের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন, তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। সুজনের ভাই মাহবুব গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, 'নিখোঁজ' হওয়ার পর থেকে এখনো সুজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

"র‌্যাবের এক কর্মকর্তা সুজনকে ধরে নিয়ে গেছেন", বলেন তিনি। গত ২৯ মার্চ শেরে বাংলা নগর থানায় এ বিষয়ে মামলা করেন মাহবুব। 'সুজন নিখোঁজ হওয়ার' ঘটনাটি এখন তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্তের কথা জানালেও ডিবি পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মাহবুবুর রহমান গত শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মামলার স্বার্থে তদন্ত প্রসঙ্গে এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।"

সুজনের পরিবারের অভিযোগ, র‌্যাব-২-এর সদস্যরা ওই সময় জোস্নাকেও তাদের হেফাজতে নেয়। পরে জোস্নাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আর খোঁজ মেলেনি সুজনের। সুজনকে 'ধরে নেওয়ার' দিনই জোস্নাকে সিরাজগঞ্জে নিজের বাড়িতে যেতে ছেড়ে দেন লেফটেন্যান্ট ফরহাদ। ছাড়া পাওয়ার একদিন পর বাড়ি যান জোস্না।

মাহবুবের মামলার পর জোস্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলায় জোস্নার স্বামী আনিসকেও আসামি করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জোস্না জানান, আনিসের ফোন পেয়ে তিনি ফার্মগেটে একটি রেস্তোরাঁর সামনে যান। সেখানে গিয়ে আনিসকে দেখতে পাননি তিনি।

"ওখানে গিয়ে দেখি, র‌্যাবের অফিসার ইকবালসহ একদল সদস্য সুজনকে তাদের গাড়িতে ওঠার জন্য টানাটানি করছে।" সে সময় তিনি সুজনকে ছেড়ে দিতে র‌্যাব সদস্যদের অনুরোধ করলে তারা তাকেও ধরে নিয়ে যান বলে জানান জোস্না।

তিনি বলেন, "সুজনকে নিয়ে র‌্যাব-২-এর অফিসে ফরহাদ স্যারের হাতে দেওয়া হয়।" পুলিশকে দেওয়া জোস্নার জবানবন্দির ভিডিও ফুটেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংগ্রহে রয়েছে। সুজন গ্রেপ্তার হওয়ার দিন নৌবাহিনী থেকে র‌্যাব-২ এ প্রেষণে যোগ দেওয়া লেফটেন্যান্ট ফরহাদ এবং দুজন ডিএডি'র সঙ্গে জোস্নার ঘনঘন টেলিফোন সংলাপ এবং সুজনকে ফার্মগেটে ডেকে নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

ওইদন (গত ২৪ মার্চ) বিকেল ৫টা এক মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ৫৩ মিনিট পর্যন্ত লেফটেন্যান্ট ফরহাদসহ র‌্যাবের তিন সদস্যের সঙ্গে ঘনঘন কথা হয় জোস্নার। সেদিন লেফটেন্যান্ট ফরহাদ, ডিএডি রফিক ও ডিএডি সামসু তাদের অফিসের মোবাইল নম্বর থেকে ঘনঘন যোগাযোগ করেন জোস্নার সঙ্গে। একই সময় জোস্না তার পুরনো মোবাইল ফোন থেকে যোগাযোগ করেন সুজনের মোবাইলে।

জোস্নার সঙ্গে লেফটেন্যান্ট ফরহাদ ও দুই ডিএডি'র ক'বার টেলিফোন সংলাপ হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্যও জানতে পেরেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ফরহাদ ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত জোস্নার সঙ্গে মোবাইল ফোনে ২৫ বার, ডিএডি সামসু ১৭ বার ও ডিএডি রফিক তিনবার কথা বলেছেন। সুজনকে 'ধরে নেওয়ার' অভিযোগ ওঠার পর লেফটেন্যান্ট ফরহাদকে র‌্যাব-২ থেকে নৌবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

'তাদের সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন' ___জিম্মিদের পরিবার

যেকোন কিছুর বিনিময়ে তাদের সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন- সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৬ বাংলাদেশির স্বজনদের এই একটিই আকুতি ছিনতাই হওয়া জাহাজের মালিকপক্ষের প্রতি। বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছিনতাই হওয়া জাহাজ এমভি জাহান মনি'র মালিকপক্ষ মতবিনিময় করে। এসময় এ আকুতি জানান জিম্মিদের কারও মা-বাবা, কারও ভাই-বোন বা চাচা।

জাহাজ ছিনতাই হওয়ার ২৬ দিন পর মালিকপক্ষ জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বসলেন। তবে এর আগে মালিকপক্ষ অনানুষ্ঠানিকভাবে নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। গত ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে ভারতীয় জলসীমায় ২৫ জন বাংলাদেশি নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলির স্ত্রীসহ বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মনি ছিনতাই হয়।

গত ১১ ডিসেম্বর জাহাজটিকে জলদস্যুরা সোমালীয় উপকূলে নিয়ে যায়। ১২ ডিসেম্বর জাহাজ মালিকপক্ষের সঙ্গে জলদস্যুরা যোগাযোগ করে এবং নাবিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেয়। এরপর থেকে জলদস্যুরা প্রায় নিয়মিত বিরতিতেই মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জাহাজে জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারের জন্য পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে ঢাকায় ও চট্টগ্রামে মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অশ্র"সজল পরিবেশ
বৈঠকের এক পর্যায়ে জিম্মি নাবিক শাহরিয়ার রাব্বীর মা বিলকিস রহমান কাঁদতে কাঁদতে সভাস্থলের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে তার সন্তানের মুক্তির জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করতে মালিকপক্ষের কাছে আহবান জানান। জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের অশ্র"সজল আকুতিতে সভাস্থলের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

এসময় শাহরিয়ারের ক্যান্সার আক্রান্ত বাবা জিয়াউর রহমান নিজের মৃত্যুর আগে তার সন্তানকে দেখে যাওয়ার আকুতি প্রকাশ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি মালিকপক্ষের কাছে তার সন্তানের মুক্তির সম্ভাব্য সময় জানতে চান। এছাড়া জাহাজের প্রধান প্রকৌশলির স্ত্রীর বড়ো ভাই, সেকেন্ড ক্যাডেট মাইনুদ্দিনের বাবা, নাবিক নাজিম উদ্দিনের চাচা জসিম উদ্দিন, নাবিক আবু নাছের আব্দুল্লাহ মজুমদারের পরিবারের সদস্যরা কান্নাভেজা কণ্ঠে তাদের স্বজনদের ফিরিয়ে আনার আকুতি জানান।

এর জবাবে জাহাজ মালিক প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক মেহেরুল করিম বলেন, "আমরা মুক্তিপণ দিতে রাজি, কিন্তু জলদস্যুরা মুক্তিপণের পরিমাণ নিয়ে ওঠানামা করছেন। এছাড়া মুক্তিপণ কাকে-কোথায়-কিভাবে দেব তা নিয়েও আমরা সন্দিহান।" জলদস্যু থেকে সদ্য মুক্ত জার্মান রাসায়নিকবাহী জাহাজ এমটি মারিয়া মার্গারিটের ছেড়ে দেওয়ার উদাহরণ দিয়ে মেহেরুল বলেন, "২৩০ দিন পর মুক্তিপণ নিয়ে এমটি মারিয়াকে ছাড়া হয়েছে। তাদের সব নাবিক সুস্থ আছেন।"

'জলদস্যুদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে"
মতবিনিময়ের সময় স্বজনদের অনেকেই কান্নায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তারা সবাই জলদস্যুদের দাবি করা মুক্তিপণের পরিমাণ এবং জলদস্যুদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চান।

ছিনতাই হওয়া জাহাজ মালিকের পক্ষ জানায়, জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে তারা জলদস্যুদের দাবি করা মুক্তিপণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানাননি। তাদের ভাষ্যমতে, আইনি বাধ্যবাধকতা এবং নাবিকদের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনা করে আমরা মুক্তিপণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে তারা এই মুহূর্তে কিছু বলছেন না।

তবে জিম্মি নাবিকরা ভালো আছেন এবং জলদস্যুরা তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছেন বলে জানায় মালিকপক্ষ। সভায় ব্রেভ রয়েল শিপিং ম্যানেজম্যান্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মেহেরুল করিম উপস্থিত পরিবারের সদস্যদের বলেন, "জলদস্যুদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে। ২৫ ডিসেম্বর সর্বশেষ কথা হয়েছে। ওইদিন জাহাজের ক্যাপ্টেন ফরিদের সঙ্গেও কথা হয়।"

"জাহাজের নাবিকরা সবাই সুস্থ এবং এখনো খাবার ও পানি রয়েছে বলে স্যাটেলাইট ফোনে ক্যাপ্টেন ফরিদ জানিয়েছেন।" ব্রেভ রয়েল শিপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য না হারানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, "জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে আমরা সব ধরণের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার স্বার্থে এখনই সব জানাতে চাই না।"

তিনি নাবিকদের পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানান। এসময় জিম্মি নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন হাবীবুর রহমান ও মালিকপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইংরেজি নববর্ষ: অতিরিক্ত সাত হাজার পুলিশ

ইংরেজি নববর্ষের রাতে উচ্ছৃঙ্খলতা দমনে রাজধানীতে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজির আহমেদ। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে নগরীর নিরাপত্তায় র‌্যাব ও মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সদস্য, নিয়মিত পুলিশের বাইরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সাত হাজার সদস্য মাঠে থাকবে।
বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি সদর দপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "প্রতিবছর কিছু লোক নববর্ষ উদযাপনের নামে নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যবিরোধী কাজে জড়িত হয়। মহিলাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়িচালানোর মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।" পুলিশ কমিশনার জানান, ৩১ ডিসেম্বর রাতে নগরীর সব বার বন্ধ থাকবে। হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ বা কোনো উৎসবস্থলে কোনো ধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।

নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার বা রাস্তায় কোনো জমায়েত করা যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসিন্দাদের রাত ৯টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে হবে। প্রয়োজনে পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। গুলশান বনানী ও বারিধারা এলাকায় যারা বসবাস করেন না, রাতে তাদের এসব এলাকায় প্রবেশ না করতেও পুলিশ অনুরোধ জানিয়েছে। তবে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাতায়াতকারীরা এর বাইরে থাকবে।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও গুলশান-বনানী এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কয়েকটি রাস্তা ব্যবহার করার জন্যে সবাইকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নববর্ষের রাতে পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মটরসাইকেল চালানো, কোনো ধরনের অশোভন আচরণ ও বেআইনি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার র‌্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইংরেজি নববর্ষের রাতে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজধানীতে আড়াই হাজার এবং সারা দেশে সাড়ে পাঁচ হাজার র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।

আহমাদিনেজাদের ঘোষণাঃ ইরান এখন পরমাণু শক্তিধর দেশ

রানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ এখন পরমাণু শক্তিধর। সে দেশের জ্বালানির চাহিদা পূরণে তাঁরা এ পরমাণু শক্তি অর্জন করেছেন। প্রেস টিভির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আহমাদিনেজাদের বরাত দিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো তেহরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে নানা রাজনৈতিক প্রচারণা চালিয়ে আসছে। তেহরানের ওপর অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই তেহরানকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। পশ্চিমা বিশ্বের সব তৎপরতা ব্যর্থ করে দিয়ে ইরান এখন পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে।

ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় কারাজ শহরে এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে আহমাদিনেজাদ এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সংঘাত নয়; বরং পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে সুরাহা হতে পারে।
আহমাদিনেজাদ বলেন, ‘আমাদের অধিকার অক্ষণ্ন রেখে এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে আমরা রাজি আছি। তবে তেহরানকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দেওয়া হবে। এ ধরনের অপতৎপরতার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, তেহরানের ওপর জাতিসংঘের অবরোধ আরোপের ঘটনা ‘অবৈধ’ ছিল। এ ধরনের অবরোধ ইরানের শক্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তেহরানের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করেছে।
পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ, পারমাণবিক বোমা তৈরির উদ্দেশ্যে বিতর্কিত এ পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে আসছে ইরান। তবে তেহরান বলছে, দেশের জ্বালানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে তারা ওই কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। এটা তাদের অধিকার। কোনো শর্তেই এ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াবে না তারা। হিন্দুস্তান টাইমস অনলাইন।

ঝিনাইদহে নির্বাচনী সংঘর্ষ, তিন যুবলীগ কর্মী নিহত

ঝিনাইদহ শহরে যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শহরের পবহাটি চৌরাস্তা মোড়ে এ সংঘর্ষ হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের বজলুর রহমান (৪০), পবহাটি এলাকার আলমগীর হোসেন ওরফে আলম (৩৫) ও পোড়াহাটি গ্রামের সোহান ওরফে সোহাগ (২৭)। তাঁরা যুবলীগের কর্মী বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রেজাউল করিম।

এসপি জানান, পৌরসভা নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই পবহাটি এলাকার যুবলীগের নেতা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মাসুদের বিরোধ চলছিল। আসন্ন পৌর নির্বাচনে মাসুদ ১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জাহিদুল ইসলামের পক্ষ নেন। অন্যদিকে জাহাঙ্গীর ওই ওয়ার্ডের আরেক প্রার্থী আকতার হোসেনকে সমর্থন করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় জাহিদুল ইসলামের পক্ষে যুবলীগের নেতা মাসুদ ও অপর কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আকতার হোসেনের পক্ষে যুবলীগের নেতা জাহাঙ্গীর তাঁদের লোকজন নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন। রাত আটটার দিকে দুই পক্ষের সমর্থকেরা শহরের পবহাটি চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছালে তাঁদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তাঁরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের তিনজন গুরুতর আহত হন।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জাহাঙ্গীরের বড় ভাই আলমগীর হোসেন ও বজলুর রহমানকে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁরা মারা যান। আহত সোহানকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হচ্ছিল। পথে তাঁর অবস্থা খারাপ হলে মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। বজলুর ও সোহান মাসুদ পক্ষের বলে জানা গেছে।
পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে। এ ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে এসপি জানান।

গহিন বনে যুবলীগ নেতার ইটভাটা by সুনীল বড়ুয়া

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গহিন বনে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে একটি ইটভাটা। এই ভাটার ইট তৈরি হচ্ছে পাহাড় কেটে। ইট পোড়াতে জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে বনেরই গাছ। এতে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ।
নাইক্ষ্যংছড়ি-চাকঢালা সড়কের বিছামারা এলাকায় পাহাড় আর সবুজ গাছপালার মাঝে ‘জেড আর সি’ নামের এই ইটভাটা গড়ে তুলেছেন উপজেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক জহির আহম্মদ।

এতে টিন দিয়ে বানানো হয়েছে চিমনি, যা পরিবেশসম্মত নয় এবং যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পূর্বে বিছামারা এলাকায় সড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে প্রায় আট একর জমির ওপর ইট তৈরি এবং পোড়ানোর কাজ চলছে। চারপাশে উঁচু পাহাড় আর সবুজ গাছপালার মধ্যে ভাটাটি করা হয়েছে। সড়কের উত্তরে ইট পোড়ানো এবং দক্ষিণে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু একটি পাহাড়ের এক-তৃতীয়াংশ কেটে সমান করে সেখানে ইট তৈরি করা হচ্ছে। সড়কের মাত্র ১০ গজ দূরে স্থাপিত ভাটার চুলায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে দেখা যায়। ইট বানানোর কাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক জানান, গত নভেম্বর থেকে ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে। এক দফায় পাঁচ লাখ ইট পোড়ানো হয়। তাই কাঁচা ইট তৈরির জন্য বিপুল পরিমাণ মাটির দরকার পড়ে। পাহাড় কাটা মাটি দিয়েই ইট তৈরি করা হয়েছে।
এ সময় কাজ তদারকি করছিলেন ভাটার মালিক জহির আহম্মদ। এই ইটভাটার যথাযথ অনুমোদন এবং বৈধ কাগজপত্র নেই বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা-আছাড়তলি সড়কের পাঁচ কিলোমিটার অংশে গত বছর ইট বিছানোর কাজ শুরু হয়। সরকারের ব্যয় কমাতে জেলা প্রশাসক গত বছর ওই ইটভাটায় ইট তৈরির অনুমতি দেন। ওই প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ ভাটায় পরিবেশবান্ধব জিগজাগ চিমনি করার পরিকল্পনা আছে। সে জন্য প্রায় দুই লাখ ইট লাগবে। বনের কাঠ প্রকাশ্যে পোড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, কয়লা দিয়ে এখানে পোষানো যাবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত একটি ইটভাটায় প্রায় ছয় দফায় ইট পোড়ানো যায়। প্রতিবারে চার-পাঁচ হাজার মণ কাঠ লাগে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, বিপুল পরিমাণ কাঠের জোগান দিতে আশপাশের বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে। ভাটার মালিক টাকার বিনিময়ে বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনকে পক্ষে নিয়ে এই অবৈধ ইটভাটা চালাচ্ছেন।
বন বিভাগের নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, টাকার বিনিময়ে ইটভাটার মালিকের পক্ষে কাজ করার বিষয়টি সত্য নয়। তিনি যোগ দেওয়ার আগে এসব (পাহাড় কাটা) হয়েছে। আর কাঠ পোড়ানো হয় বনকর্মীদের অগোচরে।
আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম সোহেল প্রথম আলোকে জানান, ওই ইটভাটা সম্পর্কে তিনি অবগত নন। কেউ অভিযোগও করেনি। এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নেবেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক মো. জাফর আলম বলেন, ‘নতুন নীতিমালা অনুযায়ী পার্বত্য এলাকায় ইটভাটা হতেই পারে না। ওই ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্রও নেই। পত্রপত্রিকায় অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে ওঠার খবর পেয়ে আমরা ইতিমধ্যে ইটভাটা বন্ধে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও ইউএনও বরাবর চিঠি দিয়েছি।’
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এলাকার উন্নয়নকাজের জন্য ইটের দরকার আছে। কিন্তু অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।
সড়কের উন্নয়নকাজের জন্য ইট তৈরির অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার মনে পড়ছে না। আর গত বছর অনুমতি দেওয়া হলেও এত দিনে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ভাটাটি বন্ধ করতে ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হবে।’

বিশ্বকাপ টিকিট বিক্রি ২ জানুয়ারি থেকে

বাংলাদেশে ক্রিকেট বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি ১ জানুয়ারি থেকে নয়, ২ জানুয়ারি রোববার থেকে শুরু হচ্ছে। বিশ্বকাপ স্থানীয় আয়োজক কমিটির মিডিয়া ম্যানেজার শিকদার নিজামুল হক বৃহস্পতিবার জানান, ১ জানুয়ারি ব্যাংক হলি ডে থাকায় এইদিন ব্যাংকের সব লেনদেন বন্ধ থাকবে।

তাই জনগণের সুবিধার জন্য ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচগুলির টিকেট ২ জানুয়ারি রোববার থেকে দেশের ৬৪টি জেলা শহরে একযোগে বিক্রি শুরু হবে।

সিটি ব্যাংকের ৫০টি ও অগ্রণী ব্যাংকের ৩০টি শাখার মাধ্যমে টিকেট বিক্রি কার্যক্রম চলবে। তবে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের টিকেট আপাতত বাজারে ছাড়া হচ্ছে না।