Tuesday, February 07, 2012

টেকনাফে লবণ উৎপাদন শুরু দাম বৃদ্ধিতে চাষিরা খুশি

বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় উপজেলা টেকনাফে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশা না থাকায় এবার উৎপাদনও ভালো হচ্ছে।
পাশাপাশি চলতি মওসুমে উৎপাদিত লবণের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।

লবণের দাম বৃদ্ধিকে পুঁজি করে অসাধু চোরাকারবারি সিন্ডিকেটগুলো পাশের রাষ্ট্র মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে লবণ আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে। বিভিন্ন সিন্ডিকেট চক্র ইতোমধ্যে মিয়ানমারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও চাষিদের দাদন দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লবণ চাষ পরিদর্শন করে জানা যায়, শাহপরী দ্বীপ, সাবরাং, নয়াপাড়া, টেকনাফ সদর, হ্নীলা, হোয়াইক্যংয়ের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদনের কাজ চলছে। উৎপাদনও হচ্ছে বাম্পার। এ সব লবণ ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
শাহপরী দ্বীপের চাষি আলী আহমদ জানান, তার নিজের ৮৫ কানি জমি রয়েছে। এসব জমিতে বর্গাচাষি দিয়ে লবণ উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি উৎপাদিত লবণ ক্রয় করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সরবরাহ করেন। এবারে চাষিরা উৎপাদিত লবণের উচ্চমূল্য পাওয়ায় মাঠের চাষিরা আনন্দিত। দিনরাত পরিশ্রম করে বেশি লবণ উৎপাদনের প্রতিযোগিতা চলছে।
ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় চলতি মওসুমে লবণের মূল্য বেড়ে যায়। বর্তমানে চাষিরা মণপ্রতি লবণের দাম পাচ্ছেন ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা, যা গত মওসুমের তুলনায় চার গুণ বেশি। গত মওসুমে পানির দরে লবণ বিক্রি হয়। প্রতিদিন টেকনাফ থেকে ট্রাকভর্তি করে বিপুল লবণ ঢাকা ও চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হয়।
লবণের দাম বৃদ্ধিতে অধিক মুনাফার লক্ষ্যে টেকনাফ সদর, সাবরাং ও লেদা এলাকার কয়েকটি চোরাকারবারি সিন্ডিকেট মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে লবণ আনার প্রস'তি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সীমানে- এসব চোরাকারবারির তৎপরতাও লক্ষ করা গেছে। স্থানীয় লবণচাষি, জমিমালিক ও ব্যবসায়ীরা লবণ চোরাচালান রোধে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কক্সবাজার ইট কংক্রিটের শহরঃ সৌন্দর্য্য বিমুখ হচ্ছে পর্যটকরা

পর্যটন জেলা কক্সবাজারে ইকো ট্যুরিজমের বিকাশ না ঘটায় পর্যটনের প্রসার ঘটছে না।
জেলার বিভিন্নস্থানের পর্যটন স্পটে ইকোট্যুরিজম গড়ে তোলার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সম্ভাবনা সরকার কাজে লাগালে এখানে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে। স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি সরকার আয় করতে পারবে বিপুল পরিমান রাজস্ব।

এদিকে ইট কংক্রিটের হিসেবে পরিণত হয়েছে পর্যটন শহর কক্সবাজার। ফলে পরিকল্পিত পর্যটন নগরায়নের প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে। ককসবাজারে ইকো ট্যুরিজমের প্রসারে বর্তমান মহাজোট সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নানা কারনে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। পর্যটন নগরী কক্সবাজার।

এখানে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত রয়েছে। খুব ভালো জায়গা হয়তো কম কিন্তু কক্সবাজার জেলাতেই কিছু জায়গা আছে যা দেশী বিদেশী পর্যটকদের শহুরে কান্তি ভুলিয়ে দিতে পারে।

এমন কিছু জায়গার খোঁজে পাওয়া যাবে তা হচ্ছে কক্সবাজার শহরের পার্শ্বে সমুদ্র সৈকত, কলাতলী, দরিয়া নগর, হিমছড়ি, পাথুরে বিচ ইনানী, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, নিঝুম দ্বীপ, ছিরা দিয়া, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া, আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কসহ আশপাশ মনোরম একাধিক এলাকা। যে স্থানে সমুদ্রের সংযোগ, তার তীরবর্তী এলাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে পর্যটকদের সব সময় ছুটে চলা।

কিন্তু এখানে পর্যটকদের জন্য তেমন কোন সুযোগ সুবিধা গড়ে উঠেনি। শুধু অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা ভবন গুলোকে মনে করা হচ্ছে পর্যটন। পর্যটনের অপার সম্ভাবনা থাকা সত্বেও এখানে সেভাবে গড়ে উঠেনি। শুধু দালান কোটা আর হোটেল রেস্তোরাকে কেন্দ্র করে ভাবা হচ্ছে পর্যটন। দিন দিন কক্সবাজার দালানকোটার ভারে ভারি হয়ে উঠছে গিঞ্জি নগরী কক্সবাজারে। বিদেশীদের জন্য গড়ে উঠেনি এক্সকুসিভ ট্যুরিষ্ট জোন। এর পরেও সমুদ্রের টানে এখানে ভ্রমনে আসছেন হাজারো দেশী-বিদেশী পর্যটক।

আমেরিকা থেকে আগত পিটার নামের এক বিদেশী পর্যটক জানান, দেশের বাইরে কোথাও ভ্রমনে যেতে চাইলে সবার আগে যে জায়গার কথা মাথায় আসে তা হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজার। ভ্রমন মানে একটু অবকাশের আশা। যেখানে সমুদ্রও থাকবে আর তার সাথে সৈকতের নির্জনতাও। এমন এক একটি সমুদ্র সৈকত  হচ্ছে ইনানী, হিমছড়ি, পেঁচারদ্বীপ, সোনাদিয়া, সেন্টমার্টিন কিংবা কুতুবদিয়া।

এখানে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘের সঙ্গে রোদের খেলা আর সাগরের ঢেউ পর্যটকদের নিয়ে যায় এক অদ্ভুত মায়াবী জগতে। পৃথিবীর অন্যান্য সমুদ্রতীরের সঙ্গে বাংলাদেশের তথা কক্সবাজারের সমুদ্রতীরের রয়েছে বিরাট পার্থক্য। সমুদ্র সবাইকে কাছে টানে। তাই আসে পর্যটক। কক্সবাজারের ইকো ট্যুরিজমের প্রসার ঘটলে বাড়বে বিদেশী পর্যটক। দালান কোটা সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে শৈল্পিকতাকে কাজে লাগালে সরকারের এখাতে বাড়বে আয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ প্রথা চালু রয়েছে। সে কারণে সে দেশ গুলোতে সারা বছরই যাচ্ছে পর্যটক।

জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী সংবাদ২৪.নেট’কে জানান, বর্তমান সরকারের স্বদিচছা রয়েছে কক্সবাজারে পরিবেশবান্ধব ইকোট্যুরিজম গড়ে তোলার। সংসদে পর্যটন নীতিমালাও পাশ হয়েছে।

শীঘ্রই কক্সবাজারকে পরিবেশ বান্ধব পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মাষ্টার প্ল্যানের আশার কথাও জানান তিনি।