Sunday, May 04, 2014

৩০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট: আইভী @মানবজমিন

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সেখানকার চলমান পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকে দোষারোপ করেন। চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই ঘটনার পরপরই যদি অভিযান চালানো হতো, তাহলে হয়তো মানুষগুলোকে জীবিত উদ্ধার করা যেত। যেটি ত্বকীর ক্ষেত্রেও হয়েছিল। আমরা বারবার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী 'খুঁজছি', 'দেখছি' ইত্যাদি বলে সময়ক্ষেপণ করল। আমি বলব, এখানে প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। প্রশাসনে যারা আছেন, তারা প্রভাবশালীদের কথায় ওঠাবসা করেন। বিগত ৩০ বছর নারায়ণগঞ্জে এটাই চলে আসছে। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রভাবশালী পরিবার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করেছেন।" গতকাল একটি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে আইভী এসব কথা বলেন। প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ এখানে তুলে ধরা হলো।
আইভী বলেন, "নারায়ণগঞ্জকে শান্তির শহর বলা যাবে না। অসম্ভব অশান্ত একটি শহরে পরিণত হয়েছে। খেয়াল করে দেখবেন, ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবর যখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়, তার পর থেকে ২০১২ সালটা মোটামুটি ভালো ছিল। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ২০১৩ সালের ৮ই মার্চ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হয়ে ওঠে। এর পর থেকে জেলায় শিশু হত্যা বেড়ে যায়। এ পর্যন্ত জেলায় ২০-২২ জন শিশু হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে। আমি মনে করি, ত্বকী হত্যার বিচার হলে এতগুলো শিশু হত্যার ঘটনা ঘটত না। নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হওয়ার পেছনে ত্বকী হত্যা একটি বড় কারণ। আরও অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে একটি কারণ মাদক। পুরো নারায়ণগঞ্জে মাদকের ছড়াছড়ি। প্রশাসনের নাকের ডগায় এখানে মাদক ব্যবসা চলছে।"তিনি বলেন, "গত সপ্তাহে সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য অত্যন্ত মর্মান্তিক। কোর্টে হাজিরা দিতে এসে, আইনের আশ্রয় নিতে এসে কেউ যদি অপহৃত হন এবং লাশ হয়ে ফিরে আসেন, এর চেয়ে মর্মান্তিক আর কী হতে পারে।" আইভী অভিযোগ করে বলেন, "একের পর এক হত্যাকা- ঘটছে, মানুষ গুম হচ্ছে কিন্তু প্রশাসন এর রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারছে না, আসামিদের ধরতে পারছে না। তাতে কি প্রমাণিত হয় না যে তারা ব্যর্থ? আমি বলব, পুরোপুরি না হলেও প্রশাসন ৮০ শতাংশ ব্যর্থ। আবার অনেক সময় প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেও প্রভাবশালীদের চাপে কিছু করতে পারে না। এখানে অনেক সৎ কর্মকর্তা এলেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি। বাধা দেওয়া হয়েছে।" নারায়ণগঞ্জের সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্য করে সিটি মেয়র বলেন, "আমি তাদের একটি কথাই বলতে চাই, ভীত হবেন না। অপরাধীরা যত ক্ষমতাবান হোক না কেন, একসময় তারা শাস্তি পাবেই। আর নারায়ণগঞ্জের মানুষ তো এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছেন, তারা মাঠে নেমে এসেছেন। এটাই আশার কথা। এই অবস্থায় আপনি নিজে কি নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, "আমি আমার জন্য নয়, আমি কর্মীদের ব্যাপারে শঙ্কিত। যারা আমার পক্ষে নির্বাচন করেছেন, তাদের বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। জেলে পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে বন্দর থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আমার কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার এবং তুলে নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে শুনেছি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমি স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এবং আমার দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান থাকবে, নারায়ণগঞ্জবাসীকে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেয়া হোক। ব্যক্তিগতভাবে আমি কারও বিরুদ্ধে নই। বৃহস্পতিবার আমাদের দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে কিছু হলেই আমি নাকি শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে কথা বলি। আমি তাঁকে অনুরোধ করব, তিনি যেন নারায়ণগঞ্জে এসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের কথা শোনেন, বুঝতে চেষ্টা করেন এখানে কী হচ্ছে।"তিনি বলেন, "গত এক-দেড় বছরে শামীম ওসমান যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তার ভিডিও ক্লিপগুলো যদি খতিয়ে দেখেন, তাহলেই দেখতে পারবেন, তিনি কী সব ভাষা ব্যবহার করেন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেছেন, মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে কটূক্তি করেছেন, হাসানুল হক ইনু সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, সদ্য¿য়াত বর্ষীয়ান সাংবাদিক এবিএম মূসা সাহেবকে যে গালাগাল করেছেন, তার তুলনায় আমি তো কিছুই না।" মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আইভীর সঙ্গে আছেন দাবি করে তিনি বলেন, "মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা আমার সঙ্গে না থাকলে আমি লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতে পারতাম না। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে বলে শামীম ওসমান যে অভিযোগ করেছেন, আমি সে ব্যাপারে তাকে চ্যালেঞ্জ করছি। তিনি একটি প্রমাণও দিতে পারবেন না। আর আমি জামায়াতের কাউকে তো চিনিই না। এখানে জামায়াত প্রতিষ্ঠিতও নয়। বরং তিনিই  জামায়াতকে প্রতিষ্ঠিত করছেন।"

সাইফুলের ফেরা নানা প্রশ্ন @মানবজমিন

অপহরণের ২৬ ঘণ্টা পর ফিরে এসেছেন ব্যবসায়ী সাইফুল। তার অপহরণের ঘটনাটিও ছিল সুপরিকল্পিত। নির্জন স্থানে একদিন রাখার পর শুক্রবার রাতে সাভারের নবীনগরে তাকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। বুধবার রাতে অপহরণের পর তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। এ বিষয়টি উল্লেখ করে থানায় ডায়েরি করেছিল অপহৃতের পরিবার। কিন্তু ফিরে এসে সাইফুল জানিয়েছেন, অপহরণের পর থেকে দীর্ঘ ২৬ ঘণ্টা তিনি অপহরণকারীদের কবলে থাকলেও তার কাছে কোন মুক্তিপণ চায়নি অপহরণকারীরা। এ বিষয়ে কোন কথাও বলেনি। এমনকি বন্দি থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে কোন বিষয়েই আলাপ করেনি অপহরণকারীরা। তিনি জানিয়েছেন, মুক্তিপণের জন্য কোন চাপ বা নির্যাতনও করেনি অপহরণকারীরা। ফেলে যাওয়ার সময় কোমরে লাথি দেয়া এবং কোন এক পর্যায়ে পায়ের তালুতে লাঠি দিয়ে কয়েকবার আঘাত করেছিল শুধু। এসব কারণে অপহরণকারীদের নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে জনমনে। নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সাইফুল জানিয়েছেন কেন এবং কারা তাকে অপহরণ করেছিল তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেননি।
ছাড়া পাওয়ার পর ব্যবসায়ী সাইফুল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মানবজমিন-এর কাছেও তিনি অপহরণ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তাকে ফিরিয়ে দেয়ার আগ মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, যখন বললো- চল, তখন আঁতকে উঠি। ভেতরে ভয় ঢুকে যায়। এর আগে পায়ের পাতায় ১০-১২টি বাড়ি দেয় আমাকে। সারাক্ষণ পিঠমোড়া করে হাত ও চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। এক পিস পাউরুটি আর একটু পানি ছাড়া ২৬ ঘণ্টায় কিছু খেতে দেয়নি। ক্ষুধা ও পানির পিপাসায় কাতর ছিলাম। গাড়িতে তুলে চোখ বাঁধা অবস্থায় কোমরে একটা লাথি দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়া হয় আমাকে। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি আমি সাভার স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে। তবে কেন এবং কারা তাকে অপহরণ করেছে তা বলতে পারেন নি তিনি।
সাইফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার এলাকার নুরজাহান নামে এক মহিলা তাকে ফোন করে এক হাজার টাকা ধার চান। ওই মহিলাকে এক হাজার টাকা দিয়ে তিনি সানারপাড় বাসস্ট্যান্ডে আসেন। স্ট্যান্ডে কোন রিকশা না থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে পায়ে হেঁটে মৌচাকের দিকে যেতে থাকেন। কিছুদূর যাওয়ার পর রাস্তার উত্তর পাশে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস  দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। গাড়িটির কাছাকাছি যেতেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছন থেকে ৩-৪ জন তাকে ধাক্কা দিয়ে বলে, এই সাইফুল গাড়িতে উঠ। অন্ধকারে কাউকে চেনা যায়নি। গাড়িতে ওঠার পর পরই আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। এবং  নাকের দিকে কিছু একটা লাগিয়ে দেয়। এরপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর নিজেকে আবিষ্কার করি একটি অন্ধকার রুমের ভেতর দেয়ালের সঙ্গে হেলান দেয়া অবস্থায়। চোখ বাঁধা। দুই হাত পেছন দিকে বাঁধা। প্রচ- ক্ষুধা অনুভব করলে অপহরণকারীদের একজন আমাকে এক পিস পাউরুটি ও একটু পানি খাইয়ে দেয়। অনেক সময় পর হঠাৎ আমার দুই পায়ের তালুতে লাঠি দিয়ে ১০-১২টি বাড়ি দেয়। আমি যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকি। ক্ষুধা ও পানির পিপাসায় কাতর হয়ে উঠি। কিন্তু কোন খাবার দেয়া হয়নি। পরে ২-৩ জন এসে বলে এই চল। তখন আমি আঁতকে উঠি। না জানি কি হয়। আমাকে কি মেরে ফেলবে? না ছেড়ে দিবে? নানা প্রশ্ন তখন আমার মনে। বার বার মনে পড়ছিল ৭ জনকে অপহরণ করার পর মেরে ফেলার ঘটনাটি। গাড়িতে ওঠানোর পর আমাকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারে। ২০-২৫ মিনিট গাড়ি চলার পর হঠাৎ আমার কোমরে একটা লাথি দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। তখনও আমার হাত ও চোখ বাঁধা ছিল। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি আমাকে সাভার স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন একটি হোটেলের সামনে ফেলে যায়। পরে বিসমিল্লাহ নামে ওই হোটেলের এক লোকের কাছ থেকে ফোন নিয়ে আমার স্ত্রীকে ফোন করি। আমার স্ত্রী আমার কাছে পৌঁছার আগেই র‌্যাব-সদস্যরা আমার কাছে পৌঁছায়। তারা আমাকে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সাদিয়া আফরিন সুলতানা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার পর সাইফুল আমাকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানায়। কিন্তু সে কোথায় তা বলতে পারেনি। তখন আমি তাকে বলি তুমি ফোনটা ওখানের একজন লোককে দাও। তখন ওই লোকের কাছ থেকে জানতে পারি সে সাভার স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন নবীনগর বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে আছে। তখন আমি বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ও র‌্যাব-১১কে জানাই। রাত সোয়া ১টার দিকে আমি নিজে সাভার নবীনগর র‌্যাব ৪-এর ক্যাম্পে গিয়ে উপস্থিত হই। নানা প্রশ্নের জবাবে অপহৃত সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ও র‌্যাবের তৎপরতার কারণেই আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাছাড়া,  ১২ বছর ধরে আমি সানারপাড় এলাকায় ব্যবসা করি। এলাকায় আমার বেশ কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে। কারও সঙ্গে কোন দিন কোন ঝামেলা হয়নি। ২০০২ সালে পূর্ব সানারপাড়ে বাড়ি করি। ২ মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে আমাদের সংসার। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সুখেই আছি। তিনি বলেন, আমি এক সময় সামান্য বেতনে ১৯৯৯ সালে ঢাকার মালিবাগে সিটি ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে চাকরি করতাম। পরে সানারপাড়ে ব্যবসা শুরু করি। আজ আমার কয়েকটি ব্যবসা। কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ। কারও সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, গত ৬ মাস আগে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর বিসিকে ব্রাদার্স নিটওয়্যার নামে একটা ব্যবসা শুরু করি। আমি এবং সানারপাড় এলাকার বেলায়েত হোসেন আলম নামে এক ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে। ওই প্রতিষ্ঠানে আমার বিনিয়োগ ২৭-২৮ লাখ টাকা। আর আলমের বিনিয়োগ ৬-৭ লাখ টাকা। কিন্তু উৎপাদন আশানুরূপ না হওয়া ও লোকসানের কারণে আমি ফ্যাক্টরি বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। তখন আলম বলে, বিক্রি করলে তো আমার-আপনার দুইজনেরই লোকসান। এরচেয়ে ভালও ফ্যাক্টরি আমাকে দিয়ে দেন। আমি আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে দেবো। মাসে ৫০ হাজার টাকা করে কিস্তি আকারে পরিশোধ করবো। এতে আমি রাজি হয়ে যাই। আগামী জুন মাসে প্রথম কিস্তি দেয়ার কথা রয়েছে। তাছাড়া, আমি ব্যবসার কারণে লোকজনের কাছে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা পাবো। আর আমি দেনা আছি ২৫-২৬ লাখ টাকা। কিন্তু এ নিয়ে কারও সঙ্গে কোন মনোমালিন্য হয়নি।
অপহরণের ঘটনায় 'জড়িত' ৩ জন গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়ের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলো নুরজাহান বেগম (৩৫), তার স্বামী ইউনুস আলী দুলাল (৫০) ও আকাশ (৩২)। গতকাল ভোরে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ইউনুস-নুরজাহান দম্পতি ও বিকালে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) আবদুল আহাদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত তিন জনই সাইফুল ইসলামের অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রুপের অন্য সদস্যদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত নুরজাহান ও ইউনুস দম্পতি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য। নুরজাহানের কাজ হলো ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে ডেকে নিয়ে যাওয়া। পরে অপহরণকারী চক্রের অন্য সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে আটকিয়ে চাঁদা দাবি করে। এ কাজে তার স্বামী ইউনূস সহায়তা করে। আর আকাশ হলো টাকা ট্রান্সফার কোন মোবাইলে এবং কিভাবে হবে তা ঠিক করে। আকাশ দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বিকাশ আউটলেটের মালিক। এই চক্রের সঙ্গে আবুল কালামসহ আরও কয়েকজন জড়িত।
আদালতে সাইফুলের জবানবন্দি
ওদিকে বিকাল ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে অপহৃত ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জবানবন্দি দিয়েছেন। অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই উত্তম কুমার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সাইফুল ইসলামকে আদালতে নিয়ে আসেন। পুলিশ জানায়, সাইফুল ইসলাম আদালতকে বলেছে, শুক্রবার রাতে বাসায় যাওয়ার পথে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একটি অন্ধকার ঘরে হাত ও চোখ বেঁধে আটকে রাখা হয়। পরদিন শুক্রবার রাতে একটি গাড়ি থেকে লাথি দিয়ে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। সে কাউকে চিনতে পারেনি। কারা তাকে অপহরণ করেছে তিনি তা জানেন না।

লাগলে রিং দিয়েন by এসএ সোহেল @মানবজমিন

অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের দিয়ে রূপগঞ্জে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। ১০-১২ বছরের কিশোররা এখন মাদক বিক্রেতাদের সেলসম্যান। অল্প বয়সী সেলসম্যানরা মাদকসেবীদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদক। ভাই, আমার কাছে আম (ফেন্সিডিল) আর মুরুব্বি (ইয়াবা) আছে। লাগলে রিং (ফোন) দিয়েন'- এক কিশোর তার পরিচিত এক তরুণকে উদ্দেশ করে এসব কথা বলছিল। তার খোলামেলা এ কথা শুনেই যেন ভয় পেয়ে গেল ওই তরুণ। রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটে। এর একদিন আগে এ এলাকায় এক বাড়িতে আকস্মিক হানা দেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা সেবনরত তরুণরা পালিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়া মাত্রই আবারও সেখানে ইয়াবা সেবনের উৎসব শুরু হয়। রূপগঞ্জের মাদকের ভয়াবহতার সামান্য চিত্র এটি। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন, মদসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৩ শতাধিক স্পটে মাদকের ব্যবসা চলছে। এসব স্পটে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মাদক কেনাবেচা হচ্ছে। মাদক ব্যবসায় আশঙ্কাজনকভাবে জড়িয়ে পড়ছে শিশু, নারী ও কিশোররা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতেই মাদক বেচাকেনায় তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে এসব শিশু, নারী ও কিশোর মাদক বহন করতে গিয়ে একসময় নিজেরাই হয়ে পড়ছে মাদকাসক্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক ব্যবসায় জড়িত চুনোপুঁটিদের অনেক সময় আটক করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে রাঘববোয়ালরা। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ, ভোলাবো ফাঁড়ি পুলিশ, কাঞ্চন ফাঁড়ি পুলিশ, ভূলতা ফাঁড়ি পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কিছু অসাধু সদস্যের বিশেষ সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। নোয়াপাড়া, ইছাপুরা, ছনি, বারিয়ারটেক, হারারবাড়ি, বাগবেড়, মঙ্গলখালী, চনপাড়া বস্তি, পূর্বগ্রাম, পিতলগঞ্জ, চনপাড়া গ্রাম, মাছিমপুর, কাঞ্চন, ভূলতা, গোলাকান্দাইল, সাওঘাট, কেন্দুয়া, রূপসী, খাদুন, মৈকুলী, রূপসী কাজীপাড়া, পবনকুল, বরাব, যাত্রামুড়া, দীঘিবরাব, গন্ধর্বপুর, দড়িকান্দি, গঙ্গানগর, বানিয়াদি, হাটাব, কালাদি, আতলাপুর, শিংলাবো, আমলাবো, পাঁচাইখা, মাসুমাবাদ, মর্তুজাবাদ, বিশ্বরোড খালপাড়, বড়ালু, ইছাখালী, নগরপাড়া, নাওড়া, দড়িকান্দি, লাভরাপাড়াসহ ৩ শতাধিক স্পট মাদক কেনাবেচা ও সেবনের চিহ্নিত পয়েন্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন রুটে বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান প্রবেশ করছে। আর এসব মাদক স্পট নিয়ন্ত্রণ করে তিন শতাধিক ব্যবসায়ী। কয়েক যুগ ধরে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন সাম্রাজ্য। তাদের সাম্রাজ্যে প্রতিদিনই নাম লেখাচ্ছে নতুন নতুন মাদক ব্যবসায়ী। এসব স্পটে মাদক বেচার জন্য ব্যবসায়ীদের বেতনভুক্ত কর্মীও রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব স্পটে কেনাবেচা চলছে মাদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি এ প্রতিনিধিকে জানান, থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও র‌্যাব কয়েকটি স্পটে সমপ্রতি অভিযান চালিয়ে কয়েকজন মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করলেও বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। বরং দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব এলাকায় মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনকারীর সংখ্যা। প্রতিনিয়ত যুবকরা এসে যোগ দিচ্ছে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায়। প্রতিদিন নিত্যনতুন কৌশলের মাধ্যমে অভিনব কায়দায় মাদক ব্যবসায়ীরা এই অবৈধ ব্যবসা জমজমাটভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে গাঁজা, ফেনসিডিল, হিরোইন, ইয়াবাসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য সড়ক পথে বিভিন্ন যানবাহনে রূপগঞ্জ উপজেলায় চলে আসছে। মাদক বিক্রেতারা তাদের শরীরে মাদক বহন করে বিক্রি করে বেড়ায়। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মীর বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। পুলিশ মাদক নির্মূলে প্রতিনিয়তই চেষ্টা করে যাচ্ছে। সবার সহযোগিতায় এলাকা মাদকমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশী ইস্যুতে মোদিকে ঘায়েল করলেন মমতা @মানবজমিন

বাংলাদেশ ইস্যুতে বিজেপি থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নরেন্দ্র মোদিকে কাগুজে বাঘ আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, কাগুজে বাঘকে প্রথমেই মুখোমুখি হতে হবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের। নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি এক নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বলেন, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশী অভিবাসীদের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দেবেন। এজন্য তিনি বাংলাদেশী অভিবাসীদের প্রস্তুত থাকতে বলেন। এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একজন মাত্র ব্যক্তিকে স্পর্শ করে দেখুন আমরা দেখতে চাই। গতকাল এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। এতে বলা হয়, মমতা বলেছেন, কাগুজে বাঘকে প্রথমেই জানতে হবে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার কি। প্রথমে তার মুখোমুখি হন। মমতা এ সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিহাস জানেন না বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তার অধীনেই বাংলাদেশীরা ভারতে এসেছেন। তিনি হয়তো জানেন না যে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই কেউ বাংলাদেশী হয় না। ভারতজুড়ে যারা বাংলায় কথা বলে তারা তাকেই বাংলাদেশী হিসেবে দেখে। এটা বৈষম্য। এ অভিযোগ করে মমতা বলেন, নরেন্দ্র মোদি বাঙালিদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এজন্য তিনি বাঙালি ও অবাঙালি ইস্যু সৃষ্টি করেছেন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভাল প্যাকেজ সুবিধা দেয়া হবে বলে সম্প্রতি আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপির সভাপতি রাজনাথ সিং। এর জবাবে মমতা বলেন, এমন সুবিধা আমরা চাই না। বরং বামেদের সময়ে ঋণের বিপরীতে যে অর্থ কেন্দ্র কেটে রাখা হয়েছে তা আমরা ফেরত চাই। তিনি বলেন, ঋণ খাতে এ রাজ্য থেকে এক লাখ কোটি রুপি কেটে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

রাখির নগ্ন ভিডিও নিয়ে তোলপাড় @মানবজমিন

এ পর্যন্ত বলিউডের বিভিন্ন ছবিতে ও গানে ব্যাপক নগ্ন রাখি সাওয়ান্তকে দর্শক দেখেছেন। স্ক্যান্ডালেরও কমতি নেই তার। তবে সবকিছু ছাপিয়ে দু'দিন হলো ইন্টারনেটে প্রকাশ পেয়েছে রাখি সাওয়ান্তের একটি নগ্ন ভিডিও। আর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে বলিউডসহ ভারতীয় মিডিয়ায়। ভিডিওটি এরই মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ডাউনলোড হয়েছে। টুইটার ও ফেসবুকেও ভিডিওটি অনেকে আপলোড করেছেন। তবে নিজের এই নগ্ন ভিডিওর বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রাখি। এই ভিডিওটির নারী তিনি নন, অন্য কেউ বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই ভিডিওটিতে দেখা গেছে রাখি নিজের কাপড় একে একে খুলে শেষ পর্যন্ত নগ্ন হয়ে যান। এরপর বেশ কিছু অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন। ১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে বেশ দ্রুতগতিতে। তবে যারা ভিডিওটি দেখেছেন তারা একেকজন একেক মত প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, ভিডিওটির নগ্ন মডেলটি শতভাগই রাখি। আবার অনেকে বলেছেন, এটা বানোয়াটও হতে পারে। দু-একজন আবার দাবি করেছেন, আলোচনায় আসার জন্য রাখি নিজেই ভিডিওটি ছেড়েছে। তবে এসব কিছুর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে রাখি সাওয়ান্ত বলেছেন, আমি ভিডিওটি সম্পর্কে আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শুনেছি। পরবর্তীতে সেটি দেখেছি। একটু লক্ষ করে দেখলেই বোঝা যাবে এটি আমি নই। শুধুমাত্র আমার চেহারা ব্যবহার করা হয়েছে। মিডিয়া কোন সত্য না জেনেই শুধু শুধুই রঙ মেখে সংবাদটি প্রকাশ করছে। এটা আসলে ঠিক নয়। এদিকে জানা গেছে, এরই মধ্যে ইউটিউবসহ এই ভিডিওটি বিভিন্ন সাইট থেকে মুছে ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন রাখি।

চোখের জল না ফেলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে- খালেদা জিয়া @মানবজমিন

অব্যাহত গুম-খুনের সঙ্গে সরকারের লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী জোট নেতা ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বলেছেন, সারা দেশে আজ মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। নারাায়ণগঞ্জ, নীলফামারী, সাতক্ষীরা, বগুড়াসহ এমন কোন জেলা নেই যেখানে খুনের ঘটনা ঘটেনি। এসব গুম-খুনের সঙ্গে সরকারের লোকজন জড়িত। তাই তাদের বিচার হচ্ছে না।  আজ বিকালে  জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত  গণঅনশনে  প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। বক্তব্য শেষে বিএনপি নেতাদের জুস খাইয়ে অনশন ভাঙান খালেদা জিয়া। বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণঅনশনে সংহতি প্রকাশ করেন তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, চারিদিকে এখন রক্ত আর রক্ত। দেশের মানুষের চোখে শুধু পানি আর পানি। আমরা আর চোখের পানি দেখতে চাই না। চোখের পানি মুছার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। একটি বিশেষ জেলার পুলিশ বেপরোয়া হয়ে গেছে অভিযোগ করে বিরোধী জোট নেতা বলেন, সরকার র‌্যাব-পুলিশকে দলীয় কাজে ব্যবহার করে ইমেজ নষ্ট করে ফেলেছে। আর একটি বিশেষ জেলার পুলিশ বেপরোয়া হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকার চিরদিন ক্ষমতায়  থাকবে না। তখন কোথায় যাবেন। সব কিছুর জবাবদিহি করতে হবে।  এরশাদকে জিয়ার খুনি আখ্যায়িত করে খালেদা জিয়া বলেন, জিয়া ও মঞ্জুরের খুনি এরশাদ। তার বিচার হবে। খালেদা জিয়া বলেন, বাইরে থেকে একটি বিশেষ বাহিনী গঠন করা হয়েছে। সেই বাহিনী এখন দেশব্যাপী গুম-খুন করছে। এই বাহিনী র‌্যাব-পুলিশের চেয়েও শক্তিশালী। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেছেন, আমরা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) যদি ঘটনাস্থলে আগে যাই তাহলে আমরাও গুম হয়ে যেতে পারি। এই হলো বর্তমান দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। খালেদা জিয়া বলেন, সরকারের এসব অন্যায়-অত্যাচার থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামতে হবে। সরকারকে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে। এর আগে সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে অনশন শুরু করেন বিএনপি নেতারা। ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এ গণঅনশনে দিনভর বিভিন্ন সংগঠন ও ১৯ দলের শরিক নেতারা সংহতি প্রকাশ করেন। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে অনশনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, শমসের মবিন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন,  সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আলম, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, মহিলা দলের সভাপতি নূরে আরা সাফা, সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা প্রমুখ।

আসামে মৃতদের দাফনে পরিবারের অস্বীকৃতি @মানবজমিন

ভারতের আসাম রাজ্যে ৩২ মুসলিম নিহত হওয়ার পর কোকড়াঝাড়, চিড়াং ও বকসা জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনা। এদিকে মৃতদের শোকাহত পরিবার একদিকে যেমন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত তেমনি অপরদিকে সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ। তারা তাদের এলাকায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগইয়ের সফর দাবি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সশরীরে এসে তাদেরকে আশ্বস্ত না করা পর্যন্ত তারা নিহতদের দাফন করবে না বলে জানিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। নানকেখাদ্রাবারি এলাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা জানিয়েছে, তরুণ গগই ব্যক্তিগতভাবে তাদের জান-মালের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত না করা পর্যন্ত তারা নারী শিশুসহ ১৮ জনের মরদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন করবে না। সংবাদ কর্মীদের তারা বলেন, আমাদের জীবনের কি কোন মূল্য নেই? আমরা শুধু দাবি করছি যে আমাদের নিরাপত্তা দেয়া হোক। আমাদেরকে যেন ভবিষ্যতে হামলা আর হত্যা না করা হয়। তারা অভিযোগ করে, জেলা কর্তৃপক্ষ সহিংসতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেয়ার পরিবর্তে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে, মৃতদের জানাজা না করলে গ্রেপ্তার করা হবে। শোকাতুর ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মুখ্যমন্ত্রীর সফরের যে দাবি উঠিয়েছে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সূত্র থেকে তাৎক্ষণিক কোন জবাব পাওয়া যায়নি। ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এনডিএফবি-এস এর উগ্রপন্থি জঙ্গিরা শুক্রবার রাতে ১৮ জনকে গুলি করে হত্যা করে আর শতাধিক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ১লা মে থেকে তারা বকসা ও কোকরাঝাড় জেলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হত্যাজজ্ঞ শুরু করেছে। সহিংসতায় এ পর্যন্ত মোট ৩২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। আর ওই দুটি জেলায় হাজারেরও বেশি এখন ঘরছাড়া।

বড়ভাইয়ের বন্ধুরা ধর্ষণ করলো কিশোরীকে

চট্টগ্রামে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে বড়ভাইয়ের কয়েক বন্ধু তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায়  রোববার ভোরে নগরীর এনায়েত বাজার এলাকা থেকে দুই ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।এরা হলেন- মো. বাহার (৪৫) ও মো. রাসেল (২০)। কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নেজাম উদ্দিন বলেন, গত শুক্রবার বিকালে এনায়েত বাজারের তুলাতলী বস্তির বাসা থেকে ওই কিশোরীকে তার বড় ভাইয়ের বন্ধু হিসেবে পূর্ব পরিচিত কয়েকজন যুবক ডেকে এনে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় একটি পাহাড়ে নিয়ে চার-পাঁচজন যুবক ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে সে পুলিশকে জানিয়েছে। পরিদর্শক নেজাম জানান, শনিবার বিকালে ওই কিশোরী বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে তারা পুলিশকে অবহিত করে।মেয়েটি থানায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনা জানায় এবং তার দেয়া বক্তব্য মতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুইজন ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম।

নিষিদ্ধ হচ্ছে আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণের উৎপাদন? by আবুল হাসনাত @প্রথম আলো

আয়োডিন নেই—এমন লবণকে ভোজ্যলবণ হিসেবে বাজারজাত নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এমনকি এমন লবণ উৎপাদন, মজুত এবং বিক্রিও নিষিদ্ধ হতে পারে। আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন-বিপণনে জড়িতদের তিন বছরের কারাদণ্ড কিংবা অপরাধভেদে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের শাস্তিও পেতে হতে পারে। এমন বিধান রেখে আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন-১৯৮৯-এর সংশোধনীর একটি খসড়া তৈরি করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। সংস্থাটি বলছে, ২৪ বছরের পুরনো আইনটিকে সময়োপযোগী এবং কার্যকর করতে একটি সংশোধিত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সব পক্ষের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হবে। আইনটি হয়ে গেলে লবণমিলমালিকদের কারচুপি অনেক কমবে।
জানতে চাইলে বিসিকের পরিচালক আবু তাহের খান বলেন, 'আমরা আইনে লবণের পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে খসড়াটি করেছি। আগের আইনটি শুধু খাবার লবণকেন্দ্রীক ছিল। বেকারি পণ্য ও পোলট্রি খাদ্যে আয়োডিনবিহীন লবণ ব্যবহার হয়। সেসব পণ্য আমরা খাই। এখন ওইসব ক্ষেত্রেও আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই শিল্পে ব্যবহারের লবণ ভোজ্যলবণ হিসেবে বিক্রি হয়। সে জন্য আমরা দুই লবণের আলাদা আলাদা মোড়কের কথা বলেছি।' আইনের খসড়ায় প্রতি কেজি আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণে ৩০ থেকে ৫০ মিলিগ্রাম আয়োডিন মেশানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি আয়োডিনযুক্ত লবণে ন্যুনতম ৯৬ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইট, অদ্রবণীয় পদার্থ সর্বোচ্চ দশমিক ৩ শতাংশ, সোডিয়াম ক্লোরাইট ছাড়া অন্যান্য দ্রবণীয় পদার্থ সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ থাকতে হবে এবং জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৪ শতাংশের বেশি থাকতে পারবে না।
বিসিক বলছে, দেশে উৎপাদিত লবণের ৫৮ শতাংশে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হচ্ছে। আর ৮১ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ ব্যবহার করছে। কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান বিক্রির জন্য পরিশোধিত ভোজ্যলবণ আমাদানি করতে চাইলে তাকে শুধুই আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ আমদানি করতে হবে। আয়োডিনমুক্ত কোনো ভোজ্যলবণ আমদানি করা যাবে না। এ ব্যাপারে খসড়ায় বলা হয়েছে, আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ আমদানির ক্ষেত্রে তা বন্দর থেকে খালাসের আগেই পরীক্ষা করে মান যাচাই করতে হবে এবং যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। আইনের খসড়া অনুযায়ী, কোনোভাবেই ভোজ্যলবণের দাম মোড়কে উল্লেখিত মূল্যের চেয়ে বেশি রাখা যাবে না।
ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাতারী হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানায় শিল্পে ব্যবহার হওয়া লবণ উৎপাদন করতে পারবেন না। তাদের শুধুই ভোজ্যলবণ উৎপাদন করতে হবে। নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভোজ্যলবণ নিজের কারখানা ছাড়া অন্য কারখানা ভাড়া নিয়ে উৎপাদন করতে পারবে না। একইভাবে নিজের কারখানা অন্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ভোজ্যলবণ উৎপাদনের জন্য ভাড়াও দিতে পারবে না। ভোজ্যলবণ উৎপাদনকারী কারখানার পরিদর্শন সম্পর্কে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, বিসিক কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক যেকোনো কারখানার ভোজ্যলবণ সংগ্রহ করে তাতে আয়োডিনের মাত্রা পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারবে। এই আইন বাস্তবায়নে ভোজ্যলবণ উৎপাদন, পরিশোধন, আমদানি ও বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তিকে আইন অনুযায়ী আদেশ দিতে পারবে।
বর্তমান আইনের বিধান লঙ্ঘনকারির জন্য তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে খসড়া আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাতের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য তৈরি কিংবা প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার না করলে সেটাও অপারাধ বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে রাখা হয়েছে তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা কিংবা উভয় দন্ড। তবে খসড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তার জন্য সরাসরি আদালতে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি। খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকার কিংবা সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোনো আদালত এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ বিচারের জন্য আমলে নিতে পারবেন না। আবার এই আইনের অধীন অপরাধগুলো অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য এবং আপোসযোগ্য করার বিধান রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআই) এবং গেইনের সহায়তায় ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিকের সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ (সিআইডিডি) প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ এখন চলছে। বিসিক বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২০১৬ সালের মধ্যে দেশে উৎপাদিত ভোজ্যলবণের ৯০ শতাংশে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হবে এবং শতভাগ পরিবারকে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণের ব্যবহারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
# আয়োডিনমুক্ত কোনো ভোজ্যলবণ আমদানি করা যাবে না। খালাসের আগেই বন্দরে পরীক্ষা করতে হবে
# ভোজ্যলবণ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শিল্পে ব্যবহারের লবণ উৎপাদন করতে পারবে না
# আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাত করলে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান
# ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তার জন্য সরাসরি আদালতে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি
৫৮ শতাংশ লবণে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হচ্ছে
৮১ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ ব্যবহার করছে

ওবামার ঠাট্টা-টিটকারি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক নৈশভোজে অংশ নিয়ে মজার ছলে নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আর সংবাদমাধ্যমকে খোঁচালেন। গতকাল শনিবার রাতে হোয়াইট হাউস করসপন্ডেন্টস ডিনার অনুষ্ঠানে তিনি এমনটা করেন। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, অনানুষ্ঠানিকভাবে 'নার্ড প্রম' নামে পরিচিত এই বার্ষিক অনুষ্ঠানে শীর্ষ সাংবাদিক, বেশ কিছু সেলিব্রেটি ও ক্ষমতাধর বিশিষ্টজনদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ডিনার করে থাকেন। ওবামা তাঁর কৌতুক ও রসিকতা দিয়ে অনুষ্ঠানটি মাতিয়ে রাখেন। ওবামার স্বাস্থ্যসেবা বিমা গ্রহণে নিবন্ধনের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি গোলযোগ দেখা দেয়। সেদিকে দিকে ইঙ্গিত করে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, '২০০৮ সালে আমার স্লোগান ছিল "ইয়েস উই ক্যান"। ২০১৩ সালে আমার স্লোগান হল "কন্ট্রোল+অলটার+ডিলিট"।'
টিভি নিউজ নেটওয়ার্ক নিয়ে রসিকতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, 'আমি মাত্র মালয়েশিয়া থেকে ফিরলাম। সিএনএনের কভারেজ পেতে যত দূর যেতে হয় আর কি!' মালয়েশীয় এয়ারলাইনসের নিখোঁজ বিমানটির খবর সিএনএনে বেশি কভারেজ দেওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন। ওবামা কেনিয়ার বংশোদ্ভূত নাগরিক—এই বিষয়টি ফক্স নিউজ কারণে অকারণে বারবার সামনে এনেছে বলে তিনি ফক্সকে উদ্দেশ করে তির্যক ভাষায় বলেন, 'ফক্স, আমি চলে গেলে তুমি আমাকে খুব মিস করবে। হিলারি একজন কেনিয়ান—এমন কথা আমেরিকানদের বোঝানো খুব কঠিন হয়ে পড়বে।' আগামী নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে জোর গুজব চালু আছে। ওবামার এ বক্তব্যে সে বিষয়টাই আরও জোরালো হয়েছে।

লঞ্চডুবিতে আরও সাত লাশ উদ্ধার, তদন্ত কমিটি

পটুয়াখালীর গলাচিপায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনায় আজ রোববার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত আরও সাতজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। লঞ্চডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ও নিহত ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজের জন্য গলাচিপা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করা নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে। নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে থাকা গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম জানান, ১৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি দায়িত্বে থাকা গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মো. সায়েমুজ্জামান জানান, লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির দাফন বা সত্কার বাবদ নগদ ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের সহকরী পরিচালক ও পটুয়াখালী নৌবন্দরের কর্মকর্তা এস এম বদরুল আলম জানান, গলাচিপায় লঞ্চডুবির ঘটনায় নৌপরিবহনমন্ত্রী মো. শাজাহান খানের নির্দেশে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। তদন্ত কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা  হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায় গলাচিপা নদীতে এমভি শাথিল-১ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি ডুবে যায়।

শরীর কেটে ১৫ কিশোরের প্রতিবাদ

যশোরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৫ কিশোর নিজেদের শরীর কেটে নানা সমস্যার সমাধান দাবি করেছে। কেন্দ্রের সাতটি সমস্যা সমাধানের দাবিতে তাদের এ অভিনব প্রতিবাদ। আজ রোববার সকাল নয়টার পরে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গাজীপুরের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের কিশোরেরাও একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল। সরেজমিনে দেখা গেছে, কিশোরদের কারও বুক, কারও হাত আবার কারও পা দিয়ে অঝোরে রক্ত ঝরছে। শরীরের ক্ষতবিক্ষত অংশে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে। চিকিত্সা দেওয়া স্কুল হেলথ ক্লিনিক যশোরের উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাহাবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কাচের টুকরা দিয়ে ফালি ফালি করে বুক, হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটেছে কিশোরেরা। অন্তত ১৫ কিশোরকে এখানে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে। সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এদিকে কিশোরদের হামলায় পুলিশের দুই সদস্য তুহিন খান ও আলমগীর হোসেন আহত হয়েছেন। তাঁদের যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের কিশোর, কর্মকর্তা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল নয়টায় অ্যাসিম্বিলির পর কিশোরদের কয়েকজন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মো. সাহাবুদ্দিনকে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানায়। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কিশোরেরা তাতে সন্তুষ্ট হয়নি। এ সময় অন্তত ১০০ কিশোর জোটবদ্ধ হয়ে তাত্ক্ষণিক তাদের আবাসিক ও প্রশাসনিক ভবনের জানালার কাচ ভাঙচুর শুরু করে। রান্নার জন্য রাখা কাঠের চালা নিয়ে ও ইট ছুড়ে তারা কেন্দ্রের পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করে। পুলিশের একটি গাড়ির কাচ ভেঙে ফেলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় কিশোরদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন জানালার ভাঙা কাচ দিয়ে নিজেদের শরীর কেটে ক্ষতবিক্ষত করে ক্ষোভ প্রকাশ করে। ১৫ কিশোরদের কয়েকজনের অভিযোগ, তাদের যে পরিমাণ ভাত ও তরকারি দেওয়া হয়, তা খেয়ে পেট ভরে না। ট্রেডভিত্তিক শিক্ষার কোনো উপকরণ নেই, সেখানে তেমন কিছু শেখানো হয় না। কর্মকর্তা ও পুলিশেরা গালি দিয়ে কথা বলে। ওষুধ দেওয়া হয় না। অভিভাবকেরা দেখা করতে এলে তাঁদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়। দেখা করতে গেলে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, সিভিল সার্জন আতিকুর রহমানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা বিক্ষুব্ধ কিশোরদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কিশোরেরা সাতটি সমস্যা চিহ্নিত করেছে। এসব সমস্যা খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে।

ছয় কোটি টাকা নিয়ে খুন করেছে র‌্যাব-কাউন্সিলর নজরুলের শ্বশুরের অভিযোগ by শরিফুল হাসান @প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলামকে র‌্যাব তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় র‌্যাবের সিও (অধিনায়ক) এবং আরও দুই মেজর মিলে ছয় কোটি টাকা নিয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রাইফেল ক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান। তবে এই টাকা কার কাছ থেকে কীভাবে র‌্যাবের সিও নিয়েছেন তার বিস্তারিত তিনি বলেননি। এ সময় নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাংসদ শামীম ওসমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর ওই বক্তব্যের পুরো অডিও বার্তাটি প্রথম আলোর হাতে রয়েছে। তবে এ প্রসঙ্গে র‌্যাবের মহাপরিচালক মোকলেছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর। তদন্ত হলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে।
শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, '২৭ এপ্রিল দুপুরে যখন নজরুলসহ সাতজনকে দুটি গাড়িতে অপহরণ করা হয়, সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বালুশ্রমিকেরা আমাদের জানিয়েছে, সে সময় র‌্যাব-১১ লেখা একটি গাড়ি (মাইক্রোবাস) ছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানকে জানাই। শামীম ওসমান আমাকে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র‌্যাব-১১ সিওর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। আমি সেখানে গেলে সিও আমাকে ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে নানা রকম জিজ্ঞাসাবাদ করেন।' এ সময় শহীদুল অভিযোগ করে বলেন, 'র‌্যাবই আমার জামাতা নজরুলসহ সাত জনকে খুন করেছেন।'
শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমি অপহরণের ঘটনার পরপরই র‌্যাব-১১ সিওসহ জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাই। কিন্তু এসপি ও ফতুল্লা মডেল থানার ওসি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা নেননি। তাঁরা আমাকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না। এই ঘটনার পর থেকে নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।' শহীদ চেয়ারম্যান এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত র‌্যাব সদস্যদের শনাক্ত করে শাস্তি দাবি করেন।
তদন্ত হলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে: র‌্যাব মহাপরিচালক
নজরুল ইসলামের শ্বশুরের অভিযোগের প্রসঙ্গে র‌্যাবের মহাপরিচালক মোকলেছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, 'ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর। তদন্ত হচ্ছে, আগে তদন্ত হোক, তদন্ত হলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে। তখন বোঝা যাবে আসলে কী হয়েছিল। তার আগে আমি কোনো কমেন্টস (মন্তব্য) করতে চাই না।' এ ব্যাপারে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই র‌্যাব-১১-এর সিও তারেক সাইদ মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগের সঙ্গে চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তিনি এখন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকায় এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে পারেন না বলে জানান। উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। পরে তাঁদের মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। অপহরণের পর নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বরত র‌্যাব-১১-এর সিও তারেক সাইদ মাহমুদকে প্রত্যাহার করা হয়।

অনেক দেশ বাংলাদেশকে অনুসরণ করছে: মজীনা

মা ও শিশুর মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশ ও অনেক মঞ্চ বাংলাদেশকে অনুসরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা। আজ রোববার চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালসহ এর কয়েকটি প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় ড্যান মজীনা এ মন্তব্য করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য খাতে উন্নতির জন্য মার্কিন সরকারের শক্তিশালী অংশীদারত্ব রয়েছে। মা ও শিশুর মৃত্যুর হার ৪১ শতাংশ থেকে শূন্যের কোটায় আনতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করছে। ১৯৭১ সালে মা ও শিশুর মৃত্যুর হার যেখানে শতকরা ৬ শতাংশের ওপরে ছিল সেখানে বর্তমানে ২ শতাংশে নেমে এসেছে। এটা সম্ভব হয়েছে চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবির তৃণমূল সফল গবেষণার কারণে। এতে করে বিশ্বের অনেক দেশ, অনেক মঞ্চ বাংলাদেশকে অনুসরণ করছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের লাখ লাখ কৃষকের সঙ্গে আমেরিকার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক জন ডি ক্লেমেন্স, মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মজীনা সকালে মতলবে এসেই পৌর এলাকার দশপাড়া এলাকায় অবস্থিত একটি অস্থায়ী চিকিত্সাকেন্দ্র ও মতলব উত্তর উপজেলার লধুয়া গ্রামে একটি প্রকল্প পরিদর্শন করেন।

নূর হোসেনের বাড়িতে সাত দিন পর কেন রেইড? জিয়া ও মঞ্জুরের খুনি এরশাদ: খালেদা

সাবেক সেনাশাসক এইচ এম এরশাদকে জিয়াউর রহমানের খুনি দাবি করে তাঁর বিচার চেয়েছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ রোববার বিএনপির গণ-অনশন কর্মসূচিতে খালেদা জিয়া এরশাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতা-কর্মীদের নামে 'মিথ্যা' মামলা, গুম-খুন ও 'আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলার' প্রতিবাদে সারা দেশে এ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া বলেন, এরশাদ মঞ্জুর ও জিয়াউর রহমানের খুনি। তাঁর বিচার করতে হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, খুনিদের পাশে নিয়ে চলা যায় না।
খুন-গুমের ঘটনায় আর চোখের পানি না ফেলে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। সরকার ও সরকারি দলকে গুম-খুনের জন্য দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের প্রায় সব জেলায় গুম-খুন হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে ধরা হয়নি, ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ, যারা জড়িত তারা সবাই সরকারের লোক। নারায়ণগঞ্জের সাতজন গুম ও খুনের ঘটনার কয়েক দিন পরে প্রধান আসামির বাড়িতে অভিযানের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, 'নূর হোসেন একজন ক্রিমিনাল। সে কোথায়? জনগণ তাকে কারাগারে দেখতে চায়। সাত দিন পর কেন তার বাড়িতে রেইড হলো?'
খালেদা জিয়া বলেন, 'একটি বিশেষ জেলার পুলিশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের দিকে আমাদের নজর আছে। আওয়ামী লীগ চিরদিন ক্ষমতায় থাকবে না। একদিন বিদায় নেবে। তারপর কোথায় যাবেন? জবাব দিতে হবে—কত মানুষকে গুম-খুন করেছেন।' সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, 'আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আসতেই হবে। তাদের চামচারা যতই লাফালাফি করুক, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকব, সে স্বপ্ন ভুলে যান।'
খালেদা জিয়া বলেন, জনসভা, মানববন্ধন, অনশনের মতো কর্মসূচিতে কাজ না হলে তাঁরা কঠোর ও কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। তাঁরা কঠোর কর্মসূচি দিতে চান না। তাঁরা চান, তার আগেই সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক। বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, তাঁরা শুধু সময়ের দিকে দেখছেন, আশা করছেন সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্রের স্বার্থে সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বক্তব্য শেষে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনশন ভাঙান খালেদা জিয়া। সমাবেশে বিকল্পধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ১৯-দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (একাংশ) কাজী জাফর আহমদসহ শরিক দলগুলোর নেতারা সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই- স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, 'আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।' স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নজরুলসহ সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত নূর হোসেনের সঙ্গে যদি কোনো গডফাদার থাকে, তাদেরও ধরা হবে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে যা করতে হবে তাই করা হবে।' আজ রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ-বিষয়ক এক আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে, এ অবস্থায় র‌্যাবের প্রত্যেককে প্রত্যাহার করা হবে কি না—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এটি তদন্তের ব্যাপার। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দেবেন না।' তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‌্যাবের কমান্ডিং কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও যাদের দরকার, তাদেরও প্রত্যাহার করা হবে।' সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, নূর হোসেনসহ সন্দেহভাজন সব অপরাধীকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে। এর জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান দেরিতে করার অভিযোগ ঠিক নয়—উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নূর হোসেন গোয়েন্দাদের নজরদারিতে ছিলেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপহরণের পর সাইফুল ইসলামকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় ও তত্পর। তারা বসে নেই, কাজ করছে। প্রতিমন্ত্রীর দাবি, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েনি। সে ধরনের কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়লে রাস্তায় কোনো মানুষ বের হতে পারত না।

মমতার পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে: মোদি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। আর এ জন্যই মমতার এত রাগ। আজ রোববার দুপুরে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান জেলার আসান সোল আসনের বিজেপি প্রার্থী ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়র নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে যোগ দিয়ে এ কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদি। মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও এখানের নারীরা নিরাপদ নয়। তিনি দাবি করেন, তাঁর রাজ্য গুজরাটে নারীরা নিরাপদ। মোদি বলেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে অহংকারীদের বিনাশ হবে। এখানের রয়েল বেঙ্গল টাইগার 'ভীরু টাইগার' হয়ে গেছেন। পশ্চিমবঙ্গ আজ নিজের পায়ে চলার ক্ষমতা হারিয়েছে।
মমতাকে উদ্দেশ করে মোদি বলেন, কাগজের বাঘকে এত ভয় কেন? বাঘ চোরদের বাঁচায় না। অভিযুক্তদের বাঁচানো বাঘেদের কাজ নয়। বলেন, ক্ষমতা থাকলে সারদা কেলেঙ্কারি তদন্ত করান। দোষীদের জেলে ঢোকান। তবেই মানব আপনি টাইগার। নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'আমি বদলা নয়, বদলের রাজনীতি করতে এসেছি। আমি বাংলার জন্য কাজ করব। মমতা আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।' মোদি বলেন, গত ৩০ এপ্রিল তৃতীয় দফার নির্বাচনে এই বাংলায় ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। কারচুপি রুখতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, মমতা দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলা তৈরি করে গেছে। সভায় আসান সোলের বিজেপি প্রার্থী সংগীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়কে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য উপস্থিত জনগণের প্রতি আহ্বান জানান নরেন্দ্র মোদি। এর আগে বাঁকুরায় দলীয় প্রার্থী সুভাষ সরকারের নির্বাচনি প্রচারের জন্য  আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন মোদি।

ব্রাজিলের ফুটবলে ‘ভণ্ডামি’ দেখছেন রোমারিও

দানি আলভেজের কলা ভক্ষণের ব্যাপারটি পছন্দ হয়নি রোমারিওর। ব্যাপারটিকে এই ব্রাজিলীয় তারকা 'প্ররোচনামূলক' হিসেবে অভিহিত করে একে তুলনা করেছেন 'ভণ্ডামি'র সঙ্গে। নিজ দেশের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে রোমারিও একহাত নিয়েছেন বিশ্বকাপ আয়োজনকেও। আবারও আক্রমণ করেছেন ব্রাজিলীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে। বর্ণবাদের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আলভেজ কলা খেয়ে প্ররোচনাকে উসকে দিয়েছেন বলে অভিমত রোমারিওর, 'বর্ণবাদ অনেক পুরোনো একটি ব্যাপার। কিন্তু বর্ণবাদী দর্শকের ছুড়ে দেওয়া কলা খেয়ে আলভেজ প্ররোচনামূলক কাজ করেছে বলেই মনে হয়েছে আমার। আমি কখনো আলভেজের মতো কলা খেতাম না। কলা খেয়ে কী আলভেজ নিজেকে বানর হিসেবে পরিচিত করতে চেয়েছে? আমি জানি না। কলা খেয়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে বলে আমি মনে করি না। ব্রাজিলে এই মুহূর্তে ভণ্ডামি সীমা অতিক্রম করেছে।'
বিশ্বকাপ আয়োজনকে 'মাঠের বাইরে ব্রাজিলের হার' হিসেবেই অভিহিত করেছেন তিনি, 'মাঠের বাইরে তো আমরা ইতিমধ্যেই হেরে গিয়েছি। ১১ বিলিয়ন ডলার থেকে খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। প্রথমে জানা গিয়েছিল বিশ্বকাপ ব্যয়ের ৯০ শতাংশ আসবে বেসরকারি খাত থেকে। এখন দেখা যাচ্ছে ৯০ শতাংশই জোগান দিচ্ছে সরকারি খাত। বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে দেশের মানুষ অখুশি। যে ১২টা শহরে বিশ্বকাপ আয়োজিত হচ্ছে, সেই শহরগুলোতে অনেক সমস্যা। এই শহরগুলোতে গণপরিবহনব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর বেশির ভাগই বিশ্বকাপের খরচ সামলাতে বন্ধ। যেগুলোর কাজ চলছে, সেগুলোও নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা যাবে না। এসবই তো আমাদের হার, তাই নয় কি?'
ব্রাজিলের ফুটবল সংস্থাকে 'দুর্নীতিগ্রস্ত' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি, 'ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশনের কথা আর কী বলব। অত্যন্ত অযোগ্য আর দুর্নীতিগ্রস্ত একটি সংগঠন এটি। নতুন সভাপতি মার্কো পোলো দেল নোরো খুব অল্প দিনেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর দৌড় কতটুকু। ফুটবল উন্নয়নে তাঁর যেন কোনো উত্সাহই নেই। এর চেয়ে বরং টিসেরার সময়কে আপনি মন্দের ভালো বলতে পারেন।' বিশ্বকাপের সময়ও ব্রাজিলে বিক্ষোভ চলবে বলেই মনে করেন রোমারিও। তিনি মনে করেন, এই বিক্ষোভ প্রদর্শন ছাড়া ব্রাজিলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের ঘুম ভাঙানোর অন্য কোনো পথ খোলা নেই দেশটির সাধারণ মানুষের সামনে, 'এই বিক্ষোভ মানুষ বাধ্য হয়েই করছে। আমি মনে করি, এই বিক্ষোভ প্রমাণ করবে ব্রাজিলের রাজনীতিকেরা এ দেশটিকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নয়।'
১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন রোমারিও। নিজেও চারটি গোল করে সেই জয়ে রেখেছিলেন অনন্য অবদান। নিজ দেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের সমালোচক হলেও নিজের ফুটবলার সত্তাটি বলছে ঘরের মাঠে ব্রাজিলের ভালো করার যথেষ্ট সম্ভাবনাই রয়েছে, 'কনফেডারেশনস কাপেই প্রমাণিত হয়েছে দেশের মাটিতে ব্রাজিলের ভালো করার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এর মানে এই না যে ব্রাজিলই বিশ্বকাপ জিতবে।' নিজ দেশকে বিশ্বকাপের জন্য ফেবারিট না বললেও রোমারিও উল্লেখ করেছেন এবারের বিশ্বকাপে দুই ফেবারিটের নাম, 'ব্রাজিল হয়তো অংশগ্রহণকারী ৩২টি দলের মধ্যে সেরা নয়। কিন্তু অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সেরা দলও আছে। বিশ্বকাপটা তারাই জিততে পারে। আমার তো মনে হয়, আর্জেন্টিনা ও স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ের যথেষ্ট সম্ভাবনা থেকে যাবে।' ওয়েবসাইট।

‘বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা, হুমকিতে নিরাপত্তা’- দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বড় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বস্তি ও অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। এখনো সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। সম্প্রতি ব্যক্তিজীবনের নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়েছে। এমন অবস্থায় অর্থপাচারের প্রবণতা বাড়বে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এমনটাই মনে করেন। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করে আসন্ন বাজেট নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সংগঠনটি। সেখানেই এসব কথা বলেন সিপিডির এই সাবেক নির্বাহী পরিচালক। বিনিয়োগ সম্পর্কে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিদ্যমান পরিস্থিতির মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসবে না। জাতীয় নির্বাচনের পর কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করা হয়েছিল। মনে হয়েছিল, অর্থনীতি উল্লম্ফন দেবে—তা হয়নি। পুঁজি-পণ্যের আমদানিও কমে গেছে।
প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে সিপিডির এই ফেলো বলেন, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে আর্থিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। বাজেটে প্রাক্কলনের বড় ঘাটতি রয়েছে। বাজেটে প্রাক্কলিত আয় হয় না, আবার ব্যয়ও হয় না। একদিকে, বিনিয়োগ বন্ধ্যাত্ব রয়েছে। অন্যদিকে, আর্থিক কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অর্থনৈতিক কোনো যুক্তিতেই এটা টেকে না। এতে অব্যাহত কর ফাঁকির সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। এটা প্রকৃত করদাতার জন্য শাস্তিস্বরূপ। এতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না। সর্বোপরি এত সুযোগ দেওয়ার পরও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংস্থার ঊর্ধ্বতন গবেষকেরা বক্তব্য দেন। বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। আগামী অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট কর না কমানোর সুপারিশ করেছে সিপিডি। একই সঙ্গে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখে উন্নীত করার প্রস্তাবও দিয়েছে সিপিডি। আবার অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গবেষণা সংস্থাটি। চলতি অর্থবছরে (২০১৩-১৪) মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নিচে নেমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সিপিডি। সংস্থাটি মনে করে, অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা ছিল। নির্বাচনের পরও দ্বিতীয়ার্ধে বিনিয়োগ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা রয়েছে। তাই অর্থনীতি গতি পায়নি।

স্বামী থেকে নিজে, এরপর সন্তানও... by মানসুরা হোসাইন @প্রথম আলো

'চিকিত্সার কাগজপত্র ঘেঁটে যেদিন প্রথম জানলাম, স্বামী এইডস আক্রান্ত, প্রচণ্ড ধাক্কা খেলাম। যাকে এত বিশ্বাস করতাম, সেই মানুষটি আমার কাছে বিষয়টি গোপন করেছে। মানতে পারিনি। আমিও আক্রান্ত হলাম। তারপর যেদিন জানলাম, কয়েক মাস বয়সী মেয়েও আক্রান্ত...সেই দিনের কথা মনে হলে এখনো গায়ে কাঁটা দেয়।' এভাবেই এইডস-আক্রান্ত এক নারী তাঁর জীবনের বিপর্যয়ের কথাগুলো বললেন। তিনি জানালেন, মেয়ের বয়স এখন আট বছর। নিউমোনিয়া, জ্বর, যক্ষ্মাসহ বিভিন্ন অসুখ লেগেই থাকে। মেয়ের পেছনেই কোনো কোনো মাসে খরচ হয় হাজার দশেক টাকা। নিজের জন্য চিকিত্সার তাও রক্ষা—এইডসের ওষুধ এন্টিরেট্রোভাইরালটা অন্তত বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। আর নিজের খরচ তো আছেই।
খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হয় এই নারীকে। এক সময় বিদেশে স্বামীর চিকিত্সার টাকা জোগাতে নিজের গয়না বিক্রি করেছিলেন, অথচ সেই স্বামী তাঁকে ২০০৭ সালেই তালাক দেন। মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাবার বাড়িতে। তবে ভাইবোন কিংবা তাঁদের পরিবারের কাছে যেন এইডস আক্রান্তের খবর না পৌঁছায়, তা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় সব সময়। বিষয়টি গোপন রেখে মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে বলে তিনি জানালেন।
সরকারি হিসাব মতে, ২০১২ সালে দেশে নতুন এইচআইভি সংক্রমিত ৩৩৮ জনের মধ্যে অনূর্ধ্ব ১৫ বছর বয়সী ২০ জনকে শনাক্ত করা হয়। তবে এইচআইভি এইডস নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধিরা বলছেন, সংখ্যাটি একেবারে কম না। যেসব পরিবারে এসব শিশু আছে, সেই পরিবারগুলো এর যন্ত্রণা বুঝতে পারছে। শিশুর পুষ্টিকর খাবারের জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে পরিবারগুলোকে হিমশিম খেতে হয়।
শৈশব হারানোর পথ প্রশস্ত করে
জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি-২০০৫-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুর প্রথম বছরে মা বা পরিচর্যাকারীর অসুস্থতা অথবা মৃত্যু সেই শিশুর পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন ও পুষ্টির মতো মৌলিক চাহিদাগুলোর ক্ষতি করে। এমনকি তার বেঁচে থাকার প্রতিও হুমকি তৈরি করে। বাবা-মা এইডসে আক্রান্ত হলে শিশু পারিবারিক পরিবেশে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। সহিংসতা, নির্যাতন, শোষণ, অপবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলার আর সুযোগ থাকে না তাঁদের। শিশুর শিক্ষার অধিকার বিপন্ন হয়। এইডস পরিবারের দারিদ্র্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়, শিশুরা শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়। খেলাধুলা-বিনোদনসহ সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয় শিশুরা। হারিয়ে যায় তাদের শৈশবটাই।
মুক্ত আকাশ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এম এস মুক্তি প্রথম আলোকে বলেন, এইডসের কারণে ভুক্তভোগী শিশুদের পুষ্টি, কাউন্সেলিং, স্কুলে ভর্তি করানো বা বিভিন্ন বৈষম্য এবং নেতিবাচক মনোভাব দূর করার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো কার্যক্রম নেই। এতিম হয়ে যাওয়া শিশুদের জন্য নেই কোনো কার্যক্রম। বেসরকারি সংগঠনগুলো শিশু ও পরিবারকে ওরিয়েন্টেশন দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সব জানতে পারছে, কিন্তু সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। ২০০৩ সাল থেকে মুক্ত আকাশ বাংলাদেশ এর আওতায় এসেছেন ৫৮৯ জন এইচআইভি পজিটিভ ও এইডস রোগী। এর মধ্যে এইডস আক্রান্ত শিশু ২১ জন।
সরকার কী করছে
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সরকারিভাবে শিশুদের বিষয়টি সেভাবে নজরে আনা হয়নি।
তবে মা থেকে শিশুর মাধ্যমে যাতে রোগটি সংক্রমিত না হয়, সে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার ইউনিসেফের সহায়তায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মা থেকে শিশুর শরীরে এইচআইভি এবং জন্মগত সিফিলিস সংক্রামক প্রতিরোধ কার্যক্রম বিষয়ক একটি প্রকল্প চালু করেছে। সরকারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা গর্ভবতী নারীদের মধ্যে যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ (নিজে বিদেশে ছিলেন বা স্বামী বিদেশে ছিলেনসহ কিছু নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে) তাঁদের এইচআইভি পরীক্ষা করা হচ্ছে। এনজিও থেকে রেফার করা মায়েদেরও এ হাসপাতালে প্রসব করানো হয়েছে।
গত বছরের ১৬ মে শুরু হওয়া সরকারের এ প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার চিকিত্সক মেরিনা আখতার বলেন, এ পর্যন্ত মোট ২০ জন এইচআইভি পজিটিভ মা প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। এর মধ্যে ১১ জনের প্রসব করানো হয়েছে। এ ছাড়া দুজনের গর্ভকালীন জটিলতায় গর্ভেই সন্তান মারা গেছে। গত বছরের আগস্ট থেকে জন্ম নেওয়া মোট ১১ শিশুর মধ্যে নয়জনের দিল্লি থেকে এইচআইভি টেস্ট করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকেও পজিটিভ পাওয়া যায়নি। দুটি শিশুর বয়স এখনো ছয় সপ্তাহ হয়নি। তবে এবার আর দিল্লি থেকে পরীক্ষা করাতে হবে না, হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগেই এ টেস্ট করা হবে। সরকারের এই প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক বেগম নাসরীন বলেন, এইডস আক্রান্ত গর্ভবতী নারীরা বিষয়টি গোপন করে বিভিন্ন হাসপাতালে সন্তান প্রসব করতে বাধ্য হন। এতে করে চিকিত্সক, নার্সসহ অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অথচ বিষয়টি জানা থাকলে এবং প্রসবের সময় বিশেষ ব্যবস্থা নিলে কোনো সমস্যাই হয় না। সেই মা ও নবজাতকও পর্যাপ্ত সেবা পান।
বাবা-মাকেও সচেতন হতে হবে
১৯৯৮ সাল থেকে এইচআইভি এইডস নিয়ে কাজ করছে আশার আলো সোসাইটি। এ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক হাবিবা আক্তার তাঁর অভিজ্ঞতায় বলেন, তিনটি সন্তান জন্মানোর পর বাবা-মা জানতে পারেন তাঁরা এইডস আক্রান্ত। এইডস আক্রান্ত তিন সন্তানকে নিয়ে সংগ্রাম করছে এই দম্পতি। তাই বাবা-মাকেও এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
১৯৯৬ সাল থেকে এইচআইভি এইডস রোগীদের চিকিত্সা দিচ্ছে কনফিডেন্সিয়াল অ্যাপ্রোচ টু এইডস প্রিভেনশন (ক্যাপ)। এ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক হালিদা এইচ খন্দকার বললেন, এইচআইভি এইডস থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে হলে পুরুষদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ যৌন আচরণসহ কোনো কারণে এইডসে আক্রান্ত হয়েই যান, সেই পুরুষের উচিত বিষয়টি স্ত্রীকে জানানো ও কনডম ব্যবহার করা। সন্তান নিতে চাইলেও চিকিত্সকের পরামর্শে যথাযথ ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমেই তা নিতে হবে। নারীদেরও এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো রোগীদের পাশে দাঁড়ান- প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো রোগীদের পাশে দাঁড়াতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের হাতের স্পর্শ, একটু সহানুভূতি রোগীর মনোবল অনেক বাড়িয়ে দেয়। চিকিৎসকদের কাছে দেশ ও জাতির অনেক প্রত্যাশা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'শুধু চিকিৎসা দেওয়াই নয়, আপনাদের মুখের কথাও রোগীকে অনেক সুস্থ করে দেয়।' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) ১২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভাপতিত্ব করেন ও সমাবর্তন বক্তৃতা করেন বিসিপিএসের সভাপতি অধ্যাপক এস এ এম গোলাম কিবরিয়া।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সমাবর্তন গাউন পরে শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ছয় প্রবীণ চিকিৎসকের হাতে বিসিপিএসের অনারারি ফেলোশিপ তুলে দেন। এ ছাড়া ছয় তরুণ কৃতী ফেলোকে স্বর্ণপদক এবং এফসিপিএস ও এমসিপিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ২০ শিক্ষার্থীর হাতে সনদপত্র তুলে দেন। আজকের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোট ৯২৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক সনদপত্র গ্রহণ করেন। তাঁদের মধ্যে ১৬ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞকে ফেলোশিপ দেওয়া হয়। সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি আশা করব, চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে আর্ত, পীড়িত ও দরিদ্র মানুষের মুখে আপনারা হাসি ফোটাবেন। দেশ ও জাতির সেবায় এবং মানবতার কল্যাণে নিজেদেরকে উত্সর্গ করবেন।' তিনি বলেন, 'আপনারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আপনাদের এ অর্জনের পেছনে দেশের সাধারণ মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। তাই আপনাদের দায়িত্ব সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা।'
ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এখন টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামে থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যায় পর্যাপ্ত সব  হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ডিজিটাল নেটওয়ার্কে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাসস।

৭ খুন মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ আলোচিত ৭ হত্যা মামলা তদন্তের অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন। রোববার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমনটাই দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক। এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ৭ জনের হত্যাকাণ্ডটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাই এ মামলার তদন্ত কাজও পরিকল্পনা মাফিক এগুতে হবে। সকল তথ্য সংগ্রহ করে আমরা একটি স্বস্তির জায়গায় পৌছাতে চাই। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।
তদন্ত কাজে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, অভিযানের দিন নূর হোসেনের বাড়িতে ১৬ জন ছিলো। এদের মধ্যে থেকে ৫ জনের কোন সম্পৃক্ততার কোন প্রমাণ নেই। বাকি ১১ জনের কারো বাড়ি সেখানে না হওয়ায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়াও অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মোবাইল ফোন যে ২জনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সকল তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়াও নূর হোসেনের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাইভেটকারটির ব্যাপারে বিআরটিএ থেকে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের খুনীদের হুমকি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে যে মোবাইল নাম্বারটি দেওয়া হয়েছে। সেই মোবাইলের কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখা গেছে। ওই মোবাইল থেকে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কোনো কল দেওয়া হয়নি। তবুও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। বিশেষ করে মামলার বাদীদের ক্ষেত্রে সেটা আরও কঠোর।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ৭জনকে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে নাকি জীবিত অবস্থায় নদীতে ফেলে দেওয়া হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। এতো দেরিতে কেন নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালানো হলো সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করে অভিযান চালাতে হয়। যখন তখন আমরা অভিযান চালাতে পারিনা। এতে করে মামলার তদন্ত কাজ ব্যাঘাত ঘটতে পারে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযানটি চালানো হয়। গত রোববার একটি মামলায় নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন নজরুল। দুপুরের পর তিন সঙ্গীকে নিয়ে প্রাইভেটকার নিয়ে বের হন তিনি, গাড়ি চালাচ্ছিলেন জাহাঙ্গীর। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ওঠার পরপরই এই পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। ওই সময় থেকে নিখোঁজ ছিলেন অ্যাডভোকেট চন্দন ও তার গাড়িচালক। অপহরণের ৩দিন পর তাদের লাশ বুধবার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।

ভারতের লোকসভা নির্বাচন- আমেথি এখনো গান্ধীদের! by সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় @প্রথম আলো

শোলে-র গব্বর সিংয়ের 'অব আয়েগা মজা'-র মতো শোনাল জগদীশ পীযূষের বলা কথাটা: 'এবার ওঁরা হাড়ে হাড়ে টের পাবেন আমেথি কেন গান্ধী পরিবারের খাসতালুক।' জগদীশ পীযূষের পরিচয়টা আগে দেওয়া যাক। ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধী যখন তৃতীয়বারের জন্য আমেথি থেকে লোকসভা ভোটে দাঁড়াচ্ছেন, সেই সময় জগদীশ হঠাৎই একটা স্লোগান দিলেন, 'আমেথি কা ডঙ্কা, বিটি প্রিয়াঙ্কা'। ভোটে দাঁড়িয়েছেন রাজীব, অথচ স্লোগান উঠছে মেয়ের নামে! রাজীব নিজেই বিস্মিত। খোঁজ নিয়ে জানলেন, জগদীশ নামের এক স্থানীয় ছোকরা, একটু-আধটু কবিতা লেখেন আর মনপ্রাণ দিয়ে কংগ্রেস করেন, তাঁর সঙ্গে প্রিয়াঙ্কাকে দেখে এই স্লোগানটি বানিয়েছেন। জগদীশের সঙ্গে কথা বলে রাজীব জানলেন, তাঁকে নিয়েও বহু স্লোগান তৈরি করেছেন ওই যুবক। যেমন, 'রাজীব গান্ধী আয়ে হ্যায়, নই রোশনি লায়ে হ্যায়' কিংবা 'লেঙ্গে বদলা দেঙ্গে খুন, ভাইয়া বিনা আমেথি সুন'। অতঃপর জগদীশের কদর বাড়ল। স্থানীয় কংগ্রেস হয়ে ক্রমে রাজ্য কংগ্রেসে জায়গা হলো, আমেথি আসনের গৌরীগঞ্জে একটা পেট্রলপাম্পের মালিক হলেন এবং আমেথি সমাচার নামে একটা পাক্ষিক পত্রিকা পর্যন্ত বের করলেন। অনেক ঘোরাঘুরির পর গৌরীগঞ্জ বাজারে জগদীশের দেখা মিলল। আম আদমি পার্টির একটা মাঝারি মাপের মিছিলের বাজার পরিক্রমা মন দিয়ে নিরীক্ষণ করছেন।
আম আদমি পার্টি আমেথিতে ২৫ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবী জোগাড় করেছে বলে লক্ষেৗয়ে খবর শুনেছিলাম। কথাটা পাড়তে জগদীশ বললেন, 'সংখ্যাটা একটু বাড়াবাড়ি হলো। তবে ওরা খুবই সিরিয়াসলি এই ভোটটা লড়ছে। ওদের প্রার্থী কুমার বিশ্বাস, ওর সঙ্গে আমি আলাপ করেছি। কবিতা লেখে, কোনো হম্বিতম্বি নেই, খুব সহজে মিশতে পারে, গ্রামে গ্রামে গিয়ে কথা বলছে। কংগ্রেসের নিন্দেমন্দও করছে। কিন্তু ভোট পাবে না।' জগদীশের মতে, আমেথির মানুষের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের একাত্মতা এমনই যে, রাহুলকে বঞ্চিত করে অন্য কাউকে সমর্থন করার কথা তাঁরা এখনো মনেই আনতে পারবেন না। আম আদমি পার্টি সবার আগে ময়দানে নেমেছে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি তারা রাখছে না। কিন্তু আমেথির মানুষ রাহুলকে ছেড়ে কেন ওদের ভরসা করবে, সেই উত্তরটাই খুঁজে পাচ্ছে না।
বছরের পর বছর ক্ষমতার সঙ্গে থাকাটাও আমেথির বাসিন্দাদের কাছে একরকম অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন, জগদীশপুরের প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক সৈয়দ আবদুর রহমান বললেন, 'ভিআইপি কেন্দ্রের ভোটার হওয়ার একটা লাভ এই যে, চাওয়া-পাওয়া বা ক্ষোভ-বিক্ষোভের আঁচটা আসল জায়গায় পৌঁছতে বেশি সময় নেয় না। ভোটে জেতার পর রাহুল গান্ধী আমেথির নাম মনে আনেন না, এমনও নয়। তাঁর দিক থেকে তিনি অনেক সচেষ্ট। মুশকিলটা অন্যত্র।' মুশকিলটা পুরোপুরি রাজনৈতিক। কী রকম? লক্ষেৗ থেকে রায়বেরিলি ৮০ কিলোমিটার রাস্তা ইদানীং শুধু আট লেনই হচ্ছে না, সেটা জাতীয় সড়কের মর্যাদাও পেয়েছে। রাহুলের মা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এই কাজটা করেছেন। টাকাও দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু রায়বেরিলি থেকে আমেথি হয়ে সুলতানপুরের রাস্তা জাতীয় সড়ক নয় বলে সে পথে চলতে শরীরের হাড়গোড় ভেঙে যাওয়ার জোগাড়। কেন? স্থানীয় কংগ্রেসিরা মনে করেন, কারণটা পুরোপুরি রাজনৈতিক। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতায় নেই আজ বহু বছর। ক্ষমতায় থেকেছে হয় সমাজবাদী পার্টি নতুবা বহুজন সমাজ পার্টি। তারা আমেথির রাস্তা সারাইয়ে আন্তরিক নয়, যেহেতু আমেথির ভোট পায় না। 'মুলায়ম-মায়াবতীদের কেন্দ্রগুলো দেখলেই পার্থক্যটা বোঝা যাবে, বললেন জগদীশ পীযূষ। তারকা স্মৃতি ইরানি ঠিক এই জায়গাতেই ঘা মারছেন। জনসংযোগের জন্য তিনিও প্রিয়াঙ্কার মতো গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন। খাটিয়ায় বসে আড্ডা দিচ্ছেন আর হাতপাখায় বাতাস খেতে খেতে বলছেন, 'ঘরে ঘরে আলো পাখা থেকেই বা কী লাভ, যদি বিদ্যুৎই না থাকে? কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে লাভ নেই। ওরা সরকার গড়তে পারবে না। আমরা এবার দিল্লিতে ক্ষমতায় আসছি। নরেন্দ্র মোদির সরকার হবে। বিদ্যুতের অভাবে ডিজেলের পাম্প চালানো বন্ধ হবে।'
প্রতিশ্রুতির হিমালয় গড়ছেন স্মৃতি ইরানি। আর সেই সঙ্গে চলছে কংগ্রেসের চূড়ান্ত গালমন্দ। ১০ বছরের কংগ্রেস শাসনের যাবতীয় দুর্নীতি তুলে গান্ধী পরিবারকে তুলাধোনা করছেন যখন, আমেথির গ্রামীণ মানুষের চোখেমুখে তখন এক বিচিত্র প্রতিক্রিয়া। সে যেন বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব! কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারিকে যেমন তাঁরা অস্বীকার করতে পারছেন না, তেমনই গান্ধী পরিবারকে দুর্নীতিগ্রস্ত ভাবতেও তাঁদের মন সায় দিচ্ছে না। কী করেই বা হবে? এই গান্ধী পরিবারকেই তো তাঁরা সেই ১৯৮০ সাল থেকে একান্ত আপন বলে মনে করেছেন! কী করে ছিন্ন করেন সেই ধারাবাহিকতা? শীতলাপ্রসাদ মিশ্র আমেথি প্রেসক্লাবের সভাপতি। মোদি হাওয়ায় ভর দিয়ে স্মৃতি ইরানি এবং ধূমকেতুর মতো উদয় হওয়া আম আদমি পার্টির প্রভাব স্বীকার করেও তাঁর যুক্তি, আমেথিতে এখন আর উন্নয়নের প্রশ্নে ভোট হয় না। এখানে ভোট হয় বিশ্বাসের প্রশ্নে। আমেথি দেখেছে, হারুক আর জিতুক—একমাত্র গান্ধী পরিবারই সারা বছর পাশে থেকেছে। একমাত্র তারাই বিশ্বস্ত। ১৯৮০ সালে সঞ্জয় গান্ধী ভোটে জিতলেও মারা গেলেন। '৮১ সালে রাজীব এলেন ভাইয়ের জায়গায়। '৯১ সালে রাজীব সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রাণ হারালে জেতেন তাঁরই বন্ধু সতীশ শর্মা। কিন্তু রাহুল-সোনিয়া-প্রিয়াঙ্কা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। '৯৮-৯৯ সালে আমেথির রাজা সঞ্জয় সিংয়ের সঙ্গে মনোমালিন্যের দরুন সতীশ হেরে যান। সোনিয়া আর অপেক্ষায় থাকেননি। '৯৯ সালে নিজে প্রার্থী হন। জিতে এসে আমেথির সঙ্গে তাঁর পারিবারিক বন্ধনকে আবার দৃঢ় করেন। ২০০৪ সালে রায়বেরিলি সরে গিয়ে ছেলে রাহুলকে সঁপে দেন আমেথির ভার। সাংবাদিক শীতলাপ্রসাদ বললেন, 'এই কেন্দ্রে রাজমোহন গান্ধী, মেনকা গান্ধী, কাশীরাম, ভীম সিং, শারদ যাদবরাও লড়ে হেরেছেন। হারের পর এঁদের কেউই একবারের জন্যও আমেথির মাটি মাড়াননি। ব্যতিক্রম গান্ধী পরিবার। প্রিয়াংকা এ বন্ধনকে দৃঢ়তর করেছেন। আমেথি তাই উন্নয়ন-অনুন্নয়নের রাজনীতির চেয়েও সম্পর্ক ও ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে।'
এবারেও তারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে জগদীশ, আবদুর রহমান আর শীতলাপ্রসাদের বিশ্বাস। তবে এবারে নাটকীয় উপাদানের আধিক্য একটা ব্যতিক্রম। সেই ১৯৮০ সাল থেকে গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াইটা সব সময় একপেশে হয়ে এসেছে। বিপক্ষের জামানত জব্দ হয়েছে সব সময়। সেই তুলনায় এবারের লড়াই একপেশে হবে না। সাংবাদিকতার ঢঙে জগদীশ পীযূষ বললেন, 'আমেথি হলো রাজনীতির শ্রীহরিকোটা। রাজনৈতিক ক্ষেপণাস্ত্র এখান থেকেই ছোড়া হয়। এবারের ভোটেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না। এত দিন ফাঁকা মাঠে গোল হয়েছে, এবার অন্তত খেলোয়াড়েরা রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, মোদি আসছেন প্রচারে। আসুন, বুঝবেন আমেথি কেন গান্ধী পরিবারের খাসতালুক।'

ইউক্রেন সংকট- রক্তপাতের পর পূর্বাঞ্চলে অভিযান আরও জোরদার @প্রথম আলো

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী রুশপন্থীদের সরাতে অভিযানের প্রথম দিন গত শুক্রবার ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এরপর গতকাল শনিবার অভিযান আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেনের সরকার। স্লাভিয়ানস্কসহ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের আরও কয়েকটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ ভবন সপ্তাহ দুয়েক ধরে দখল করে রেখেছে রুশপন্থী অস্ত্রধারীরা। এ নিয়ে ইউক্রেন ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার বাদানুবাদ চলছে। অস্ত্রধারীদের নিষ্ক্রিয় করার জন্য পশ্চিমারা রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ অবস্থায় সামরিক হেলিকপ্টার ও সাঁজোয়া যান নিয়ে গতকাল ওই অঞ্চলে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে ইউক্রেনের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী। ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ জানায়, অস্ত্রধারীরা তাদের দুটি সামরিক হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এতে সেনাবাহিনীর দুই সদস্যসহ চারজন নিহত হয়। আর বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংঘর্ষে তাদের তিন সদস্য ও দুজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, সেনাবাহিনীর অভিযান চলাকালে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওডিসা শহরের একটি ভবনে আগুন ধরে যায়। এতে অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়। এদের বেশির ভাগ মারা যায় ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে বা তড়িঘড়ি করে বের হওয়ার সময় পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে। ভবনটিতে ওই সময় যারা ছিল, তাদের বেশির ভাগই বিচ্ছিন্নতাবাদী।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরসেন আভাকভ জানান, ভ্লাভিয়ানস্ক থেকে ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণের ক্রামাতোর্সক শহরে অভিযান শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আভাকভ বলেন, ক্রামাতোর্সক শহরে রাতভর অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে একটি টেলিভিশন ভবনের দখল নিয়েছে। বিমানবন্দরের পথে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তল্লাশি কেন্দ্রগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আরও জোরদার করা হবে। এই অভিযানের সমালোচনা করে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিযুক্ত রাশিয়ার প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, শুক্রবারের এই হতাহতের জন্য কিয়েভই দায়ী এবং পশ্চিমারা তাদের মদদ দিচ্ছে। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, রাশিয়া তাদের এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে দেশটির ওপর আরও কঠোর অবরোধ আরোপ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ গতকাল বলেন, ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর মস্কোর আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এএফপি।

সাক্ষাৎকারে অমর্ত্য সেন- মনমোহন দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ

প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং একজন ট্র্যাজিক ব্যক্তিত্ব, যিনি দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক ভিত্তি সংহত করতে ব্যর্থ এই মানুষ নিজের অসহায়ত্বের কাছে নতি স্বীকার করেছেন। বিখ্যাত পত্রিকা হেরাল্ড ট্রিবিউনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এ কথা বলেন। অমর্ত্য সেন বলেন, মনমোহন দুর্নীতি প্রতিরোধে অনেক কিছু করতে চেয়েছিলেন। যাঁরা তাঁকে একজন নিরীহ মানুষ হিসেবে জানেন, তাঁরা তাঁকে মনে রাখবেন। তবে দুর্নীতি নির্মূল করার মতো ক্ষমতা তাঁর ছিল না। ভোট দেওয়ার জন্য দীর্ঘ ক্লান্তিকর বিমান ভ্রমণ করে নিউইয়র্ক থেকে দিল্লি, তারপর দিল্লি থেকে অন্য বিমানে কলকাতা এবং সবশেষে ট্যাক্সিতে চড়ে নিজ শহর বোলপুর যান অমর্ত্য সেন। বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে অমর্ত্য সেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের। তিনি নির্বাচনে জিততে না পারলেও তাঁকে অসফল বলা যাবে না। হিন্দুস্তান টাইমস।

পোশাকশিল্প পার্কে চীনের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত ৭ মে

মুন্সিগঞ্জে চলমান পোশাকশিল্প পার্ক প্রকল্পে চীনের বেসরকারি বিনিয়োগের বিষয়টি ৭ মে চূড়ান্ত হবে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পোশাকশিল্প পার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে আয়োজিত এক বহুপক্ষীয় সভায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু আজ রোববার এ কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পোশাকশিল্প পার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূরীকরণে করণীয় সম্পর্কে সম্মিলিত কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় সভায় উত্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়। শিল্পমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনসে দুর্ঘটনার পর বিদেশি ক্রেতারা দেশীয় পোশাক খাতের বিভিন্ন ইস্যুতে প্রশ্ন তুললেও ইতিমধ্যে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে তাঁদের মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি অব্যাহত রেখেছেন এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবেন। আমির হোসেন আমু বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জোট ইতিমধ্যে এক হাজার ২০০ পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে মাত্র ১২টি কারখানাকে তারা ত্রুটিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে, যাতে মাত্র ২০টি কারখানা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পোশাক কারখানাকে পরিকল্পিত শিল্পনগরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে সরকার পোশাকশিল্প পার্ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রসঙ্গত, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় তৈরি পোশাক খাতের জন্য পোশাকশিল্প পার্ক গড়ে তুলতে কাজ চলছে। একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির শিল্প পার্ক স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে চীনের বেসরকারি উদ্যোক্তারা প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁরা নিজস্ব অর্থায়নে ১২০ কোটি ডলার বিনিয়োগে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী। এতে ২৫০ পোশাক কারখানা স্থাপন করা হবে। কর্মসংস্থান হবে ১০ লাখ লোকের। এ শিল্প পার্ক থেকে বছরে ৩০০ কোটি ডলার রপ্তানি হবে বলে উদ্যোক্তারা আশা প্রকাশ করছেন।

দীপিকা, রণবীর, প্রিয়াঙ্কা, বানশালীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

গত বছর মুক্তি পাওয়া 'গলিও কি রাসলীলা: রাম-লীলা' ছবি মুক্তির আগেই বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। ছবিটির মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গত ২২ নভেম্বরের আগে ছবি মুক্তির ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ১৫ নভেম্বর ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়। সম্প্রতি ছবিটির নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বানশালী, প্রযোজক কিশোর লুল্লা, ছবির তিন অভিনয়শিল্পী দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর সিং, প্রিয়াঙ্কা চোপড়াসহ ছবির সংগীত পরিচালক ও গীতিকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 'রাম-লীলা' ছবির কয়েকটি দৃশ্য ও সংলাপের মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে মামলা হয়েছিল। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি 'রাম-লীলা' ছবির প্রযোজক, নির্মাতা, তিন অভিনয়শিল্পী, সংগীত পরিচালক ও গীতিকারের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়। কিন্তু আদালতে হাজির না হওয়ায় গতকাল ৩ মে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস পি সিং। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া। ম্যাজিস্ট্রেট এস পি সিং মুম্বাই পুলিশ কমিশনারকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি আগামী ৪ জুন আদালতে হাজির করতেও বলেছেন।
প্রসঙ্গত, শেকসপিয়ারের 'রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট' অবলম্বনে 'গলিও কি রাসলীলা: রাম-লীলা' ছবিটি তৈরি করেন সঞ্জয় লীলা বানশালী। এতে 'রাম' ও 'লীলা' চরিত্রে অভিনয় করেন রণবীর সিং ও দীপিকা। ছবিটিতে আরও অভিনয় করেন রিচা চাদ্ধা, সুপ্রিয়া পাঠক, গুলশান দেবিয়া প্রমুখ। এ ছাড়া ছবির 'রাম চাহে লীলা' আইটেম গানে অংশ নেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। 'রাম-লীলা' ছবিটির মাধ্যমে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার পাশাপাশি যৌনতা, সহিংসতা এবং অশ্লীলতার অভিযোগ তোলা হয়। এসব অভিযোগে মামলা দায়েরও করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, ছবির শিরোনাম 'রাম-লীলা' হলেও হিন্দু দেবতা রামের জীবনের সঙ্গে ছবির গল্পের কোনো মিল নেই। এতে করে দর্শকেরা বিভ্রান্ত হবেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ নভেম্বর 'রাম-লীলা' ছবির পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানশালী ও পরিবেশক সংস্থা ইরোস ইন্টারন্যাশনালকে ছবিটি মুক্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন আদালত। আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নির্ধারিত তারিখ ১৫ নভেম্বরেই মুক্তি পায় ছবিটি। মুক্তির পরপরই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভের ঝড় ওঠে। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর ভারতের রাজধানী দিল্লির পাশাপাশি ইন্দোর, রাজকোট, জলন্ধরসহ আরও কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভের ঝড় উঠলেও প্রথম দিনেই দারুণ ব্যবসা করে ছবিটি। এর মধ্যে ছবিটির বক্স অফিস আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে।

দুনিয়া বদলে গুগলের সাত প্রকল্প

মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাবে উড়ুক্কু সাইকেল, রাস্তায় চলবে চালকবিহীন গাড়ি, মানুষের চোখে থাকবে বিশেষ চশমা; এগুলো এখন আর কোনো বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বিষয় নয়। এসব নিয়েই কাজ করছে গুগল। মার্কিন প্রযুক্তি-বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, গুগল যে সব বিষয় নিয়ে কাজ করছে তা আর কেউ করছে না। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, গুগলের প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ ধারণা করছেন, দুনিয়া বদলে দেওয়ার মতো পরিবর্তন আনবে গুগল। সার্চ দিয়ে যেমন তথ্য পাওয়ার বিষয়টিকে বদলে দিয়েছে গুগল তেমনি চশমা কিংবা অন্যান্য যন্ত্রপাতি দিয়েও দুনিয়াতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে গুগল। অনেকেই গুগলের গোপন পরীক্ষাগার 'এক্স ল্যাব' এর কথা শুনেছেন। গুগলের এ পরীক্ষাগারে অদ্ভুত সব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলে। যার কোনোটি বাস্তবে আলোর মুখ দেখে আবার কোনো কোনোটি পরীক্ষাগারেই সুপ্ত থেকে যায়। প্রচলিত যে, যত অদ্ভুত ধারণাই হোক না কেনো গুগলের প্রকৌশলীরা তা গুগলের এ পরীক্ষাগারে বাস্তবায়ন করে দেখার সুযোগ পান। সম্প্রতি ব্যবসা ও প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডারে দুনিয়া বদলে দিতে পারে গুগলের এমন ৭টি প্রকল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

চালকবিহীন গাড়ি
দীর্ঘদিন ধরেই চালকবিহীন গাড়ি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে গুগল। গুগলের গাড়ি ইতিমধ্যে হাইওয়েতে নিরাপদভাবে চলাচলও করেছে৷ ভিডিও ক্যামেরা, রাডার সেন্সর ও লেজারের ব্যবহার এবং আশেপাশের গাড়ি ও পরিবেশ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সামনে চলতে পারে গুগলের 'বুদ্ধিমান' গাড়ি। ২০১৭ সালের মধ্যে চালকবিহীন গাড়ি ব্যবহারের উপযোগী হবে বলে গুগল আশা করছে। এরপর সেটাকে পুরোপুরি বাণিজ্যিকীকরণ করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আরও কয়েক বছর লাগবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গাড়ির পাশাপাশি চালকবিহীন স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি তৈরির পরিকল্পনাও করেছে গুগল। গুগলের এই গাড়িতে নির্দিষ্ট রাস্তায় যাত্রী ওঠা-নামার সুবিধা থাকবে। গুগলের এ গাড়ির নাম হবে রোবো ট্যাক্সি। গুগলের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, চালকবিহীন ট্যাক্সি সুবিধা চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ধরন পাল্টে যাবে। চালক ছাড়াই নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাত্রীকে পৌঁছে দেবে গুগলের গাড়ি। গাড়ির উন্নত প্রযুক্তি দুর্ঘটনা কমাবে এবং পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে না।

উড়ুক্কু সাইকেল
যানজটে আটকে থাকা আর নয়। মাথার ওপর দিয়ে উড়বে পরিবেশ বান্ধব উড়ুক্কু সাইকেল। গুগলের প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ উড়ুক্কু বাইক তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। এটা এখনও নিছক কল্পনা হলেও মানুষ আরও বেশি পরিবেশবান্ধব যান হিসেবে সাইকেল ব্যবহার করবে এটাই তাঁর চাওয়া। তবে গুগলের উড়ুক্কু যান সাইকেল যে একেবারেই অসম্ভব নয় তা গুগলের সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো দেখলেই বোঝা যায়। বিশ্লেষকেরা বলেন, গুগলের যে প্রযুক্তি সক্ষমতা ও দক্ষ প্রকৌশলী রয়েছে তা দিয়ে সহজেই ড্রোন বা চালকবিহীন বিমান তৈরি করা সম্ভব। আর এই প্রযুক্তিতে একদিন উড়ুক্কু সাইকেলও তৈরি করা সম্ভব হতে পারে। এ ছাড়াও গুগল এরমধ্যেই রোবট গবেষণায় জোর দিয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যেই নতুন প্রজন্মের রোবট তৈরি করতে পারে এমন সাতটি প্রতিষ্ঠানও কিনেছে গুগল। অবশ্য, গুগল তাঁদের রোবট নিয়ে পরিকল্পনার কথা কঠোরভাবে গোপন রেখেছে। এ বিষয়ে একেবারেই মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা। গুগলের বিনিয়োগ দেখে ধারণা করছেন আগামী এক দশকের মধ্যে নতুন কিছু উপহার দিতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশেষ কন্টাক্ট লেন্স
একটি বিশেষ কন্টাক্ট লেন্স নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে গুগল। এই কন্টাক্ট লেন্সের মাধ্যমে চোখের পানিতে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হবে।গুগলের দাবি, তাদের তৈরি বিশেষ এই কন্টাক্ট লেন্স ডায়াবেটিস রোগীদের কাজে লাগবে। তাদের তৈরি কন্টাক্ট লেন্সে দুটি স্তর থাকবে। এই স্তরের মধ্যে ক্ষুদ্র ওয়্যারলেস চিপ ও গ্লুকোজ সেন্সর বসানো থাকবে। এই লেন্সের সঙ্গে বসানো ক্ষুদ্রাকার এলইডি লাইট চোখের পানিতে গ্লুকোজের পরিমাণ জানাবে। গুগল একজোড়া স্মার্ট কন্টাক্ট লেন্স তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ এই কন্টাক্ট লেন্সটিকে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে এখনও অনেক কাজের প্রয়োজন হবে। তাই এটি হাতের নাগালে পেতে আরও কিছুদিন দেরি হবে।

ইন্টারনেট বেলুন
'প্রজেক্ট লুন' নামের একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে গুগল। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ইন্টারনেট বেলুনের সাহায্যে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। মাটির নিচে বা প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে অভিনব এক পদ্ধতি গুগলের লুন প্রকল্পটি। ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড থেকে প্রায় ৩০টি সুপারপ্রেসার বেলুন আকাশে উড়িয়ে এই প্রকল্পটি পরীক্ষা করে দেখে গুগল। এ বেলুনগুলো নিয়ন্ত্রিত পথে উড়তে সক্ষম হবে। এর নেটওয়ার্ক তৃতীয় প্রজন্মের ইন্টারনেটের (থ্রিজি) মতো গতি দেবে। গুগলের দাবি, সংযোগ বিচ্ছিন্ন বিপর্যয়গ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ততপরতায় সহায়তা করার ক্ষেত্রে একসময় ব্যবহার করা হবে ইন্টারনেট সরবরাহকারী এ বেলুন। এ প্রকল্পের আওতায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা এ ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা পাবে।

মডুলার স্মার্টফোন
নিজের সুবিধা অনুযায়ী কম্পিউটার আপডেট করার মতো যন্ত্রাংশ বদল করে স্মার্টফোনও আপডেট করে নেওয়া যাবে। এমন একটি প্রকল্প 'আরা'। এ প্রকল্প নিয়ে অনেকদূর এগিয়েছে গুগল। গুগল জানিয়েছে, 'আরা' নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্রাহকরা তাঁদের স্মার্টফোনের জন্য প্রয়োজনমতো হার্ডওয়্যার আপগ্রেড করে নিতে পারবেন। কাস্টোমাইজ করার সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোন তৈরির ক্ষেত্রে 'ফোনব্লকস' নামের একটি উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গুগল। বাজার বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, 'আরা' প্রকল্পটি সফল হলে প্রতি বছর নতুন ফোন কিনতে হবে না। এর পরিবর্তে নতুন প্রসেসর, কিংবা উন্নত ক্যামেরা মডিউলের মতো যন্ত্র কিনে নিয়মিত মোবাইল ফোন সর্বশেষ প্রযুক্তি দিয়ে হালনাগাদ করার সুবিধা থাকবে।

গুগল গ্লাস
গুগল গ্লাস বা গুগলের প্রযুক্তি চশমা এরমধ্যে প্রযুক্তি বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। এই চশমা মানুষকে প্রযুক্তির আরও কাছাকাছি আনছে। এ বছর ভার্জিন আটলান্টিক গুগল গ্লাস ব্যবহার করে বিমানবন্দরে যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। গুগল গ্লাসের উন্নত কয়েকটি সংস্করণ তৈরিতে কাজ করছে গুগল। ভিডিও দেখা, ছবি তোলা ও ওয়েবসাইট দেখার পাশাপাশি স্মার্টফোনের মতো বিভিন্ন কাজ করা যাবে এই গ্লাসের সাহায্যে। স্মার্টফোনের সঙ্গে এর মূল পার্থক্য কমান্ড দেওয়ার পদ্ধতিতে। কণ্ঠস্বর প্রযুক্তি চশমাটির ডান কাচের ওপর একটি ছোট ডিসপ্লে স্ক্রিন আছে। এটি গুগলের অ্যান্ড্রয়েডে চলে। গুগলের এ চশমাকে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা পরিধানযোগ্য কম্পিউটিং পণ্য হিসেবে দেখছেন। ভবিষ্যতে পরিধেয় কম্পিউটার পণ্য ব্যবহারে আগ্রহী হবে মানুষ।

গুগল ফাইবার
গিগাবিট গতিতে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে ফাইবার প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে গুগল। সেকেন্ডে ১০ গিগাবিট গতিতে তথ্য স্থানান্তর করা যাবে গুগলের ফাইবার প্রকল্পের মাধ্যমে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরির লক্ষে গুগলের নেওয়া এই পদ্ধতিটিকে বলা হচ্ছে 'পরবর্তী প্রজন্মের ইন্টারনেট' ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রে চালু করা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গুগল ফাইবার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে এক গিগাবিট তথ্য স্থানান্তর করে গুগল। এবার গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এমন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে যাতে তথ্য স্থানান্তরের এই গতি আরও দ্রুততর হবে। ২০১৭ সাল নাগাদ দ্রুতগতির এই ইন্টারনেট সেবা চালু করতে সক্ষম হবে গুগল।

ধানমন্ডি মাঠ নিয়ে রিট শুনতে বিচারপতি বিব্রত

রাজধানীর ধানমন্ডি মাঠের নির্মাণ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন শুনতে বিব্রতবোধ করেছেন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি আজ রোববার কার্যতালিকায় ছিল। বেলা আড়াইটার দিকে দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করেছেন জানিয়ে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে একজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
ধানমন্ডি খেলার মাঠের নির্মাণ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন শুনতে গত ২৮ এপ্রিল অপারগতা প্রকাশ করে তা কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি হাবিবুল গনির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। এরপর বিষয়টি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের দ্বৈত বেঞ্চে পাঠানো হয়। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইকবাল হাবিব, ফারজানা শাহনাজসহ স্থানীয় ছয় বাসিন্দা ২১ এপ্রিল রিটটি করেন। ধানমন্ডির আবাসিক এলাকায় ৮ নম্বর সড়কসংলগ্ন খেলার মাঠে নির্মাণকাজ প্রসঙ্গে ৯ এপ্রিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়। এতে বলা হয়, ওই চিঠি ইমারত নির্মাণ আইনের ৩ ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আবেদনে ধানমন্ডি খেলার মাঠে সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধে তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়ার সঙ্গে ওই চিঠির কার্যকারিতা স্থগিতের আরজি রয়েছে। এ ছাড়া, মাঠের ভেতর চলমান সব ধরনের অবৈধ স্থাপনার নির্মাণকাজ বন্ধে এবং সেখানে থাকা অবৈধ স্থাপনা অপসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। উন্মুক্ত স্থান বা খেলার মাঠ হিসেবে ওখানে জনগণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ মর্মেও রুল চাওয়া হয়।

স্বতঃস্ফূর্ত হরতালে স্তব্ধ নারায়ণগঞ্জ by শরিফুল হাসান @প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে হত্যার প্রতিবাদে আজ রোববার জেলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল চলছে। হরতালের সমর্থনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহরে মিছিল বের করেছে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। হরতালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন ও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরে রিকশাও চলাচল করেনি। দোকানপাটও বন্ধ ছিল। হরতালকে কেন্দ্র করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মিছিল, সমাবেশ
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে হরতালের সমর্থনে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে যায়। এ সময় আইনজীবী সমিতির নেতারা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের বঙ্গবন্ধু সড়কে চেয়ার বসিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে সেখানে বক্তব্য দেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন জানান, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করছে। হরতালের সমর্থনে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গণসংহতি আন্দোলন বিক্ষোভ করেছে। একই জায়গায় পৃথকভাবে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ হরতালের সমর্থনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সেখানে বক্তব্য দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বিসহ অন্য নেতারা। সেখানে জেলা বাসদ-সিপিবিও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
ট্রেন, বাস, রিকশা চলাচল বন্ধ
হরতালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করেনি। সকাল সাতটার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লাইনে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জগামী একটি ট্রেন আটকে দেয় পিকেটাররা। রেলওয়ে নারায়ণগঞ্জ স্টেশনমাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, সকাল সাতটার দিকে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে আসা একটি ট্রেন পিকেটাররা আটকে দেওয়ার পর থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের চাঁদমারী এলাকায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে হরতালের সমর্থনে আইনজীবী ও তাঁদের সহকারীরা মিছিল করেছেন। এ সময় তাঁরা সড়কে বাস ফেলে রেখে ব্যারিকেড দেন। যুবকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে যান চলাচলে বাধা দেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে পিকেটাররা একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। শহরে রিকশাও চলেনি। মানুষ হেঁটে চলাচল করছে। হরতালে শহরের দোকানপাট বন্ধ ছিল।

'যানবাহন বন্ধ থাকলেও আমাদের কষ্ট হচ্ছে না'
পোশাক কারখানার কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, 'গুম, খুনের কারণে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। হরতালে মানুষের কষ্ট হলেও মানুষ এই হরতালকে সমর্থন করছে। এ কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও আমাদের কোনো কষ্ট হচ্ছে না। আমরা চাই দেশ থেকে সব গুম, খুন বন্ধ হোক এবং হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হোক।'
সিটি করপোরেশনে কর্মবিরতি
নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে হত্যা, প্রশাসনের ব্যর্থতা ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ নগর ভবনের সামনে সকাল ১০টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত্ আইভী ও কাউন্সিলররা বক্তব্য দেন।
গডফাদারদের কাছ থেকে মানুষ মুক্তি চায়: আইভী
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত্ আইভী বলেন, একের পর এক হত্যাকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একটি পরিবারের কাছে নারায়ণগঞ্জবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে। গডফাদারদের কাছ থেকে মানুষ মুক্তি চায়। মেধাবী ছাত্র ত্বকী, ব্যবসায়ী আশিক, ভুলু, নাট্যকার দিদারুল ইসলামের খুনিদের বিচার হয়নি। তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ গুম, হত্যা চায় না। নারায়ণগঞ্জের মানুষ শান্তি চায়। তাই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। তবে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগ এই কর্মসূচির আওতার বাইরে ছিল।
সতর্ক অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদউদ্দিন জানান, হরতালে কোথাও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

নূর হোসেনের গাড়ি মিলল শামীম ওসমানের আত্মীয়ের কারখানায় by শরিফুল হাসান @প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে নূর হোসেনের ব্যবহূত ব্যক্তিগত গাড়িটি (প্রাইভেট কার) উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাংসদ শামীম ওসমানের স্বজনদের মালিকানাধীন একটি গ্লাস ফ্যাক্টরিতে গাড়িটি পাওয়া গেছে। আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়িটি নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তাঁর চার সহযোগীকে অপহরণ মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ব্যবহার করতেন। এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকার জেএমএস গ্লাস ফ্যাক্টরি থেকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। গাড়িটির নম্বর (ঢাকা মেট্রো: গ ২৯৮৮৬২)। ওই ফ্যাক্টরিটি সাংসদ শামীম ওসমানের শ্বশুর সাইফুদ্দিন আহমেদ, দুই মামাশ্বশুর শামসুদ্দিন আহমেদ, জালালউদ্দিন আহমেদ ও শ্যালক তানভীর আহমেদের মালিকানাধীন বলে জানা গেছে। কারখানার মহাব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়াল বলেন, প্রায়ই গাড়িটি এখানে রাখা হতো। সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুরে গাড়িটি কারখানায় রাখা হয়। গাড়িটি কেন রাখতে দিতেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেটা আপনারা বুঝে নেন।' জেএমএস গ্লাস ফ্যাক্টরিটি সাংসদ শামীম ওসমানের মামাশ্বশুর শামসুদ্দিন আহমেদ ও জালালউদ্দিন আহমেদের বলে তিনি জানান। জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। রেকার দিয়ে গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।