বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে নির্যাতন করার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের
উপ-কমিশনার (ডিসি) মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে পুলিশ কোনো নির্যাতন করেনি। উনি একজন সংসদ সদস্য। তাকে আমরা কেন নির্যাতন করবো?"
উপ-কমিশনার (ডিসি) মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে পুলিশ কোনো নির্যাতন করেনি। উনি একজন সংসদ সদস্য। তাকে আমরা কেন নির্যাতন করবো?"ডিসি মনিরুল বলেন, "দেশের প্রচলিত আইন, হাইকোর্টের আদেশ, তার (সালাউদ্দিন কাদের) সামাজিক অবস্থা, পুলিশের বিধান, সবগুলো বিষয় বিবেচনায় রেখেই যথাযথ নিয়মে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।" বিজয় দিবসে বৃহস্পতিবার ভোররাতে বনানীর একটি বাসা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও পুলিশ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আটকের আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তারের পর অন্য একটি মামলায় পাঁচদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়। হেফাজত চেয়ে পুলিশের করা আবেদন শুনানির সময় আদালতে সালাউদ্দিন কাদের অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে নির্যাতন করেছে।
বিএনপির ডাকা হরতালের একদিন আগে গত ২৬ জুন মগবাজার রেলক্রসিংয়ের কাছে একটি প্রাইভেটকারে আগুন ধরানো হয়। এতে আহত হন দুজন। অগ্নিদগ্ধ ফারুক হোসেন পরে হাসপাতালে মারা যান।
পুলিশ বাদি হয়ে করা ওই মামলায়ই সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সালাউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, "তাকে যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুধুমাত্র সেই প্রসঙ্গেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। "জিজ্ঞাসাবাদে তিনি (সালাউদ্দিন) কয়েকজন নেতার নাম জানিয়ে বলেছেন, এই বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করেন। আমি নয়, তারাই বলতে পারবেন, কার নির্দেশে এটা হয়েছে।"
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তারের জন্য যুদ্ধাপরাধ তদন্তে গঠিত সংস্থা বুধবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে।
এই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে রোববার। ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান গোলাম আরিফ টিপু নেতৃত্বে তদন্ত দল একাত্তরে চট্টগ্রাম নগরীতে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত বিভিন্ন ভবন ও বধ্যভূমি পরিদর্শন এবং বিভিন্ন জনের সাক্ষ্য নেয় গত সেপ্টেম্বর মাসে।
তখন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে '৭১ এ কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যার অভিযোগ তদন্ত দলকে জানান তার ছেলে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ। চট্টগ্রামে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের স্থান এবং বিভিন্ন জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী দল একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে সংসদ সদস্য সালাউদ্দিনের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়।
তবে মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে আসছেন।