Tuesday, January 11, 2011

অস্ট্র্রেলিয়ায় বন্যা: ব্রিসবেন ছেড়ে গেছে হাজার হাজার মানুষ

স্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের রাজধানী ব্রিসবেনে বন্যার পানি বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছে হাজার হাজার মানুষ। ব্রিসবেনের পশ্চিমে ছোট শহর টুউমবাতে সোমবার রাতে আকস্মিক বন্যায় ৯ জনের প্রাণহানি এবং ৭২ জন নিখোঁজ হয়।

বন্যা পরিস্থিতি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করার আলামত পেয়ে লোকজনকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ব্রিসবেন নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকায় বন্যার পানিতে ৬ হাজার ৫০০ বাড়িঘর ভেসে যেতে পারে বলে সতর্ক করেন ব্রিসবেনের মেয়র ক্যাম্পবেল নিউম্যান।

এর পরপরই বাসে, ট্রেনে এবং গাড়িতে করে হাজার হাজার মানুষ ব্রিসবেন ছেড়ে যায় বলে জানিয়েছে এএফপি। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িঘরের ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে করে ৪০ জনেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু ৫৯ জনের হদিস এখনো পাওয়া যায়নি।

গত ৫০ বছরের মধ্যে কুইসল্যান্ডে ভয়াবহ এ বন্যায় গত দু' সপ্তাহে ১৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা টুউমবাত শহরের পরিস্থিতিকে স্থল সুনামি অভিহিত করে বলেন, "সুনামির মতো তুফান লকিয়ার উপত্যকার দিকে ধেয়ে গেছে।"

লকিয়ারের মেয়র স্টিভ জোনস এ ঘটনাকে পরমাণু বোমার আঘাতের সাথে তুলনা করে বলেন, পরিস্থিতির তীব্রতা বর্ণনা করা অসম্ভব। টিভিতে প্রচারিত দৃশ্যে দেখা যায়, বাদামি রংয়ের পানি প্রবলভাবে টুউমবা টাউনের কেন্দ্রের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে, লোকজন টেলিফোনের থাম ধরে ও ছাদের উপর উঠে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে।

গাড়ির ভয়ার্ত যাত্রীরা গাড়ির ছাদে উঠে এই প্লাবন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই এলাকায় নদীর পানি কোথাও কোথাও এক ঘণ্টায় ২৫ ফুটের মত বেড়ে গিয়ে এলাকাবাসী ও কর্তৃপক্ষকে হতভম্ব করে দেয়। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর ব্রিসব্রেনের দিকেও বন্যার পানি সুনামির মতো ধেয়ে যায়। ফলে শহরের নিুাঞ্চলের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।

ব্রিসবেনের বন্যা পরিস্থিতি বুধ অথবা বৃহস্পতিবার নাগাদ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছেন নিউম্যান। ধ্বংসাত্মক এ বন্যা গত মাসের খ্রিস্টীয় বড়দিনের আগে থেকে শুরু হয়। এতে এ পর্যন্ত ৬শ' কোটি ইউএস ডলার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় দুই লাখ মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

No comments:

Post a Comment