Tuesday, January 11, 2011

যুদ্ধাপরাধের বিচারে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র: আইনমন্ত্রী

কাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আম্বাসাডার-অ্যাট-লার্জ স্টিফেন জে র‌্যাপ-এর সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, "মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আম্বাসাডার-অ্যাট-লার্জ স্টিফেন জে. র‌্যাপ।" যে আইনে বিচার হচ্ছে তা নিয়ে স্টিফেন র‌্যাপ কোনো প্রশ্ন তুলেছেন কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, "আইন নিয়ে তারা কোনো প্রশ্ন তোলেননি। আইনটি ঠিকই আছে।

"তবে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের পর্যাপ্ত সময় দিতে বলেছেন। ওই আইনের বিধিমালাকে আরো উপযোগী করা হলে ভালো হয় বলে তারা মনে করছেন।" বিধিমালা সংশোধন হবে কি না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সেটা ট্রাইব্যুালের নিজস্ব বিষয়। আইনেই বলা আছে, প্রয়োজন হলে বিধিমালা সংশোধন করা যাবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, "অভিযুক্তদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সব ধরনের সুযোগই ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে রয়েছে। যেমন আইনজীবী নিয়োগ, ট্রাইব্যুালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল।" তবে তিনি আলাদা অপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিষয়টি নাকচ করে দেন।

তিনি বলেন, "বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। তার আপিল বিভাগেই ট্রাইব্যুলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রাখা হয়েছে।" আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর স্টিফেন র‌্যাপ সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের হয় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনমন্ত্রীও এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আম্বাসাডার-অ্যাট-লার্জ আরো বলেন, "আমি এ বিষয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের সঙ্গেও আলোচনা করবো।" এর আগে মঙ্গলবার সকালে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরির্দশন করেন। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান, সদস্য, নিবন্ধক এবং আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

এছাড়া যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবীদের সঙ্গেও আলোচনা করেন র‌্যাপ। গত ১০ জানুয়ারি সরকারের আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। সিয়েরা লিওনে গৃহযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের বিচারে গঠিত বিশেষ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন তিনি।

আাগামী ১৩ জানুয়ারি তার ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে উদ্যোগ নেয়। গত বছরের ২৫ মার্চ গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী প্যানেল। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইতোমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর তাদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

No comments:

Post a Comment