Sunday, May 06, 2012

টেকনাফে ব্যবসায়ী দিদারকে হত্যার চেষ্টাকারীদের শাস্তি দাবি

টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী দিদারের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভমিছিল-সমাবেশ করেছে স্থানীয়রা।

রোববার সকালে পর্যটন মোড় থেকে বিক্ষোভমিছিলটি বের হয়ে টেকনাফের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে স্থানীয় বাসস্টেশনে সমাবেশ করে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল ওরফে জলু সওদাগরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, প্রফেসর মোহাম্মদ ইসমাইল, হামলার শিকার দিদারুল আলম দিদার, তার বড় ভাই মোস্তাক আহমদ।

আগামী তিন দিনের মধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অভিযুক্তদের আটক করতে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দেন বক্তারা।

উল্লেখ্য, ৩ মে বিকেলে স্থলবন্দর ব্যবসায়ী দিদারুল আলম সী-বীচে ভ্রমণ শেষে ফিরে আসছিলেন। পথে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় তার গাড়ির সামনের ও পেছনের কাঁচ ভেঙে যায়।

উখিয়ায় ইয়াবাসহ নারী গ্রেফতার

উখিয়া থানা পুলিশ কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের যাত্রীবাহী গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৩৯৫ পিস ইয়াবাসহ রুবি বালা নামের এক নারীকে গ্রেফতার করেছে।

উখিয়া থানার এসআই ফজলুল হক জানান, শুক্রবার রাত ১০টায় কক্সবাজারগামী একটি যাত্রীবাহী গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল গ্রামের নিরঞ্জন পালের মেয়ে রুবি বালাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তার ব্যাগ তল্লাশি করে ৩৯৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
উখিয়া থানা পুলিশ পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা বটতলী গ্রামে অভিযান চালিয়ে বন আইনে ১ বছরের বিনাশ্রম সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহাম্মদের ছেলে আমির হামজাকে গ্রেফতার করেছে।
উখিয়া থানার এএসআই হাবিব জানান, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও আদালতে হাজির না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট তার অনুপস্থিতিতে ১ বছর সাজা প্রদান করেছেন।

ডাকাত সন্দেহে গ্রেফতার ২
উখিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ঘুমধুমে পুলিশ গত শুক্রবার রাতে দুই ডাকাতকে আটক করেছে। উখিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, রাজাপালং ইউনিয়নের মধুর ছড়া গ্রামের ধৃত আনোয়ার ওরফে বড় কাশেম ও আবদুস সালামের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ডাকাতি মামলা রয়েছে।
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন জানান, গভীর রাতে এলাকায় সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করার সময় ডাকাত সন্দেহে তাদের আটক করা হয়েছে।

রামুতে আড়াই শ বছরের পুরাকীর্তি হুমকির মুখে

কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদর থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি। সড়কপথে তিন কিলোমিটার এগোলেই চোখে পড়ে রাস্তার পাশ ঘেঁষে প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত একটি জাদি (বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্যাগোডা)। এর নাম চাতোপা জাদি। আনুমানিক ২৫০ বছরের স্মৃতিবিজড়িত এ জাদিটির উচ্চতাও প্রায় ১০০ ফুট।

পাহাড়টির চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের ছড়াছড়ি। উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থানের কারণে অনেক দূর থেকে এ জাদির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। পাশাপাশি ওই জাদির পাশে দাঁড়ালে দেখা মেলে ২০ কিলোমিটার দূরের কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সব মিলিয়ে জাদিটি এক সময় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকত। এলাকাবাসীর কাছেও সেটি ছিল আকর্ষণীয় স্থান। অথচ এখন পর্যটক তো দূরের কথা, স্থানীয় বাসিন্দারাও পারতপক্ষে ওদিকে যায় না। এর কারণ, অযত্নে-অবহেলায় থাকতে থাকতে এ পুরাকীর্তি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাহাড়ধসের কারণে বর্তমানে ধ্বংসের প্রহর গুনছে প্রাচীন এ স্থাপনাটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়টির চারপাশে দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি সীমানাপ্রাচীরটি বর্তমানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সঞ্চৃতিচিহ্ন হয়ে এখনো তার কিছু কিছু অবশিষ্ট রয়েছে। পাহাড়ের উত্তর পাশের মাটি ধসে পড়ার কারণে জাদিটি বর্তমানে ভেঙে পড়ার উপক্রম। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় ৫০ ফুটেরও বেশি পাহাড় ধসে জাদিটির গোড়া ছুঁয়েছে। আবার উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ওই জাদিতে যাওয়ার জন্য পরিকল্পিত কোনো সিঁড়িও নেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, পাহাড়ধস ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে যেকোনো সময়ে বিশালাকারের এ জাদিটি ভেঙে পড়তে পারে। আর তা পাহাড়ের নিচে অবস্থিত বাড়িঘরের ওপর পড়লে ঘটতে পারে প্রাণহানি।
স্থানীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু উচেকা চারা মহাথের জানান, এ জাদির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠার সময়কাল নিয়ে মতের ভিন্নতা রয়েছে। তবে ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে জাদিটি সংস্কার করা হয় এবং ২০১১ সালে রং লাগানো হয়। কিন্তু পাহাড়ধসের কারণে প্রাচীন এই স্থাপনাটির অস্তিত্ব বর্তমানে হুমকির মুখে। পাহাড়ধস রোধে জরুরি ভিত্তিতে গাইড ওয়াল না দেওয়া হলে আসছে বর্ষাতেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
উথোয়েনছি রাখাইন ও কেতন বড়ুয়া বলেন, জাদিটি রেঙ্গুনি কারুকাজে তৈরি। বর্তমান সময়ে কোটি টাকা ব্যয় করেও এ রকম জাদি তৈরি করা যাবে না। কিন্তু পাহাড়ধস রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে প্রাচীন এ পুরাকীর্তি ধ্বংস হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কক্সবাজার জেলা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহসানের মতে, সংস্কার করা হলে এ জাদিটি রামুর প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বলেন, রামুর বিভিন্ন বৌদ্ধ পুরাকীর্তির মধ্যে এ জাদিটি অন্যতম। পাহাড়ধস ঠেকাতে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।