Sunday, June 17, 2012

চট্টগ্রাম শহরের বড়ো কোনো পরিবর্তন হয়নিঃ আলী হাসান চৌধুরী

মেয়র মনজুর আলম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে গতানুগতিক পরিবর্তন ছাড়া বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনতে পারেননি বলে মনে করেন কঙ্বাজার পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি আলী হাসান চৌধুরী।

চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড় সংলগ্ন হিলভিউ হাউজিং সোসাইটিতে থাকা বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করেন কক্সজারের এ ব্যবসায়ী। মাসে প্রায় এক সপ্তাহ তার সময় কাটে চট্টগ্রামেই।
তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'চট্টগ্রামের একজন হেভিওয়েট নেতাকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মনজুর আলম। দীর্ঘ দু'দশক ধরে মেয়র পদে থাকা মহিউদ্দিন চৌধুরীর শাসনের চেয়ে উন্নতমানের শাসন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের আশায় নগরবাসী মনজুর আলমকে নির্বাচিত করেছেন। এ কারণে মনজুর আলমের কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশাও বেশি। কিন্তু নগরের গতানুগতিক পরিবর্তন ছাড়া আহামরি কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। চাক্তাই খাল খনন হয়নি। সামান্য বৃষ্টিতেই আগের মতো নাসিরাবাদ, প্রবর্তক মোড়, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট, মেডিকেল কলেজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা ডুবে যায়। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থারও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।'
তবে মেয়র মনজুর আলমের আমলে বড় ধরনের কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড না হওয়ার পেছনে সরকারের সহযোগিতার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, 'প্রবর্তক এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নালার উপর নির্মিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন ভেঙে নালা উন্মুক্ত করা প্রয়োজন।' এ ধরনের কর্মকাণ্ডসহ চট্টগ্রামের আমূল পরিবর্তন আনতে সরকার ও নগরবাসীর সহযোগিতার পাশাপাশি মেয়র মনজুর আলমকে আরো সময় দেওয়া উচিত বলে মনে করেন এ ব্যবসায়ী।
অপরদিকে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্পর্কে আলী হাসান চৌধুরী বলেন, 'মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রায় দু'দশক চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তার সময়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বেশি হবে। এছাড়া প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যে কোনো কাজ এককভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল তার। মেয়র পদে সময় বেশি পাওয়ায় তার অবস্থানও শক্ত ছিল।'

ভারি বর্ষণঃ কক্সবাজারে রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতি

গত তিন দিনের টানা ভারি বর্ষণে কক্সবাজার শহরের পাকা, আধা পাকা ও কাঁচা সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কাদা মাটিতে সয়লাব হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি সড়ক।

এছাড়া জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে নিচু এলাকা। ফলে পর্যটন শহর কক্সবারের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিনের ভারি বর্ষণে কঙ্বাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, গোলদীঘির পাড়, প্রধান সড়কের বাজারঘাটা, আলিরজাহাল, হাসপাতাল সড়ক, ঘোনারপাড়া, বৈদ্যঘোনা, পাহাড়তলী, হোটেল-মোটেল জোন এলাকা, পেশকারপাড়া, ফুলবাগ এলাকা, টেকপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে এসব এলাকায় পাহাড়ি ঢলে জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হয়। ফলে মানুষের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে এসব এলাকায়।
শহরের পেশকারপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আবুল কাশেম বলেন, 'আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতেই পাহাড়ি মাটি ও ঢলে পুরো এলাকা ডুবে গেছে। শুক্রবারের ভোর রাতের বৃষ্টিতে হু হু করে বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ে কাদা মাটি ও পানি।' নিচু এলাকার প্রায় সব বাড়িতেই পানি ঢুকে পড়েছে বলে তিনি জানান।
শহরের বৌদ্ধ মন্দির এলাকার রনজিত বড়ুয়া জানান, বর্ষা মওসুমে এমনিতে এই সড়কে হাঁটু পরিমাণ পানি থাকে। এর ওপর গত তিন দিনের ভারি বর্ষণের সময় সড়কে কোমর পরিমাণ ও সড়ক সংলগ্ন বাসাবাড়িতে হাঁটু পরিমাণ পানি ঢুকে পড়ে।' ওই সড়কে নালা ছোট হওয়ার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'অতিরিক্ত পানি রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সড়কে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল এক প্রকার বন্ধ আছে।'
কলাতলী হোটেল-মোটেল জোন এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বলেন, 'পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় ভারী বর্ষণে পুরো এলাকা জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। পাকা, আধা পাকা, কাঁচা রাস্তাগুলো ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।'
এসব বিষয়ে কঙ্বাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র রাজবিহারী দাশ বলেন, 'বর্ষা মওসুমকে সামনে রেখে ময়লা-আর্বজনা নালায় না ফেলা ও পাহাড়ের মাটি না কাটতে পৌরবাসীকে সর্তক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পৌর নাগরিকদের অসচেতনতার কারণে তারা নালা ভরাট করে ফেলে। যার কারণে বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতায় রাস্তা ও বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়।' তিনি জানান, বিজ্ঞপ্তি জারির পরও যদি কেউ নালা ভরাট করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ভারি বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা হবে।