Wednesday, January 12, 2011

পুলিশের সঙ্গে 'ডাকাতের সংঘর্ষে' কলেজছাত্র নিহত

রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে 'ডাকাতের সংঘর্ষে' এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছে। পরিবার বলছে সে নির্দোষ। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নিহত ওই কলেজছাত্রের নাম ইমতিয়াজ হোসেন আবির (১৭)। রাজধানীর পল্লবীতে সোমবার রাতে পায়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। ওইরাতেই পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সোমবার রাতে পুলিশ জানিয়েছিল, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে 'ডাকাত' আবির গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পুলিশের এক কনস্টেবলের পায়েও গুলি লাগে। আবিরের বাবা কাজি গোলাম ফারুক তিতাসের প্রধান কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (হিসাব শাখা)। মা মনোয়ারা বেগম একই প্রতিষ্ঠানের মিরপুর শাখার একজন কর্মকর্তা। তারা মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। তার আরো এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। বড় বোন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ছোট ভাই মিরপুর মণিপুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।

মঙ্গলবার আবিরের চাচা আবু জাফর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আবিরের বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ নেই। সে মোহাম্মদপুরের নর্দান কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত।" পল্লবী থানার অপারেশন অফিসার ফিরোজ হোসেন মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আবিরের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা কিংবা অভিযোগ নেই।"

তবে সোমবার রাতের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে তিনটি মামলা করেছে বলে জানান ফিরোজ। তিনটি মামলাতেই আবিরকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলো হলো- অস্ত্র উদ্ধারের একটি, 'পুলিশকে গুলি করে আহত করার ঘটনায়' একটি এবং ডাকাতির প্রস্তুতির সময় পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে একজন নিহত ঘটনায় একটি মামলা হয়।

পল্লবী থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেন সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাউনিয়া বাঁধ বালুর মাঠ এলাকায় কয়েকজন সন্ত্রাসী ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পুলিশ অভিযান চালায়।" "অভিযানের সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে," জানিয়ে তিনি বলেন, "এসময় এক সন্ত্রাসী পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে রাতে জানা যায় তার নাম আবির।"

সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুলিশ কনস্টেবল সাইদুর রহমান আহত হন জানিয়ে ওসি ইকবার বলেন, "ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।" আবিরের চাচা আবু জাফর জানান, সোমবার সন্ধ্যার দিকে মায়ের কাছ থেকে দুশ টাকা নিয়ে সে বাসা থেকে বের হয়। রাতে না ফেরায় তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে অন্য একজন ফোন ধরে কথা না বলে কেটে দেয়।

তিনি জানান, রাত থেকেই আবিরের খোঁজ শুরু করা হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আবিরের লাশ শনাক্ত করা হয়। "শুধু পায়ে গুলি লাগার কারণে কিভাবে তার মৃত্যু হতে পারে?" প্রশ্ন তুলে আবু জাফর বলেন, "পুলিশ আন্তরিক হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো।" এ ঘটনায় মামলা করা হবে কি না জানতে চাইলে আবু জাফর বলেন, এ বিষয়ে পারিবারিকভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

No comments:

Post a Comment