Wednesday, January 12, 2011

বাংলাদেশের সঙ্গে পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করতে আগ্রহী ভুটান

ফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লিওনচেন জিগমে ওয়াই থিনলে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশে তাঁর সরকার ঢাকার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী। বঙ্গভবনে গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য দেখা করেন।
প্রধানমন্ত্রী থিনলে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে বলেন, 'আমাদের আছে পাহাড়-পর্বত আর আপনাদের আছে সমুদ্র। ফলে আকর্ষণীয় বাংলাদেশ-ভুটান ট্যুরিজম প্যাকেজ প্রস্তাব দেওয়ার মাধ্যমে আমরা বিপুল বিদেশি পর্যটককে আকৃষ্ট করতে পারি।' খবর বাসসের।
বৈঠককালে রাষ্ট্রপতি ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ভুটানকে তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দুটি দেশের মধ্যে অন্যতম ছিল ভুটান। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে দেশটির চতুর্থ রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সাক্ষাৎকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিওনপো জাংলে ডুকপা ও অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
'পাশ্চাত্য মডেলে সুখ-সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়'
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জানান, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লিওনচেন জিগমে ওয়াই থিনলে বলেছেন, পাশ্চাত্য মডেল দিয়ে সুখ-সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব নয়। পাশ্চাত্য মডেল দীর্ঘমেয়াদি এবং বাস্তবসম্মতও নয়। এ অঞ্চলের মানুষের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য আলাদা কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এই কাঠামো অর্থনৈতিক ও সামাজিক অনুষঙ্গগুলোর ওপরও গুরুত্ব দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত 'গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস' শীর্ষক এক বক্তৃতায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি জানান, ভুটান এই দর্শন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এবং জনগণ এর ফল ভোগ করছে। সবাই মিলে ভালো থাকাই হচ্ছে সুখ। সুখ অর্জনের জন্য সবার জীবনধারাও পাল্টে ফেলতে হবে। এই অঞ্চলের মানুষ যা চায় সেটাই করতে হবে।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটলেও মানুষ অসুখী রয়ে গেছে। কাজেই প্রতিটি মানুষের সুখের জন্য আলাদা প্যারাডাইস গড়ে তুলতে হবে। জিডিপি অনুসারে এগিয়ে গেলে এ অঞ্চলের মানুষ সুফল পাবে না। তাই জিডিপির ধারণা বাদ দিতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পারস্পরিক সম্পর্কসহ নানাবিধ কাজে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য কাজ না করে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

No comments:

Post a Comment