Wednesday, January 12, 2011

সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান

বাংলা সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষে বাঙালি মুসলমানের ‘বুদ্ধির-মুক্তি’ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা সা’দত আলি আখন্দের নামে বাংলা একাডেমী ১৯৯০ সালে ‘সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তন করে। এবার কবি মহাদেব সাহা সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০১০-এ ভূষিত হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমীর সেমিনার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে পুরষ্কার তুলে দেয়া হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমীর সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী।
কবীর চৌধুরী বলেন, কবি মানেই যোদ্ধা। তাঁরা সমাজের সকল অসঙ্গতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং প্রেমের জাদুস্পর্শের হাওয়ায় মানুষকে মোহিত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কবিতাঙ্গনে কবি মহাদেব সাহার স্থান প্রথম সারিতে। তাঁর কবিতা স্নিগ্ধ ও নিম্নকণ্ঠের অথচ শক্তিশালী প্রতিবাদের ভাষায় সমৃদ্ধ।
স্বাগত ভাষণে শামসুজ্জামান খান বলেন, সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার দেশের সাহিত্যাঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার। বহুমাত্রিক বিবেচনায় কবি মহাদেব সাহাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হলো। এই পুরস্কার বাংলা একাডেমীর গুরুত্ব ও মর্যাদা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।
পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে কবি মহাদেব সাহা বলেন, আজকের দিনটি আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দের। আমি পুরস্কারের জন্য লিখি, মানুষের প্রশংসা ও ভালোবাসার জন্য লিখি। এটি আমার উপলব্ধি। কারণ পুরস্কার মানুষকে কাজের অনুপ্রেরণা যোগায়, তার কর্মের মূল্য দেয় এবং তাকে ঋদ্ধ করে। তাই পুরস্কারও সার্থক কাজের একটি অংশ। তিনি বলেন, আমি আমার সকল পুরস্কার এদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করতে চাই। আজকের পুরস্কারটিও এদেশের মানুষ বিশেষ করে যাঁরা দেশের মুক্তির জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তাঁদের অমর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করছি।
সা’দত আলি আখন্দ কন্যা তাহমিনা হোসেন বলেন, জীবিকার্জনে সা’দত আলি আখন্দ পুলিশের চাকরিতে নিয়োজিত থাকলেও সাহিত্যের প্রতি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাকে সফলতায় রূপ দেওয়ায় বাংলা একাডেমীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

ব্যঙ্গচিত্রে মূর্ত হলো ঢাকার দৈনন্দিন জীবন
গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে প্রবেশ করছেন এক যুবক। প্রবেশের আগে তাকে স্বাগত জানানোর পালা। কখনও অজ্ঞান পার্টি, কখনও মলমপার্টি, লোডশেডিংসহ নিত্যদিনের ঢাকার নানাবিদ অসংগতি তাকে স্বাগত জানালো। অর্থ্যাৎ ব্যঙ্গচিত্রর মাধ্যমে শিল্পী আবু হাসান তুলে ধরেছেন ঢাকার যাপিত জীবন। প্রদশনীর অন্য ছবিগুলোর বিষয় ‘ঢাকা নগরী’।
নগরবাসীর যাপিতজীবনের নানা সমস্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের উন্মুক্ত চত্বরে আয়োজন করা হয়েছিলো তিনদিনব্যাপী ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনী। ব্যঙ্গচিত্রশিল্পীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট এসোসিয়েশন’ আয়োজিত এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পী কাইয়ূম চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, শিশির ভট্টাচার্য এবং আহসান হাবীব। আলোচিত এ প্রদর্শনীর গতকাল ছিলো শেষ দিন।
ঢাকা নিয়ে নগরবাসীর নিত্য জটিলতা, দুর্ভোগ, যানজটসহ নানা বিষয় ব্যঙ্গচিত্রগুলোতে বিদ্রুপের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পীরা। এর মধ্যে রয়েছে: আকাশ ছোঁয়ার নেশায় মত্ত ভবনগুলোর ভূমিকম্পভীতি, ২০৫০ সালের ঢাকা: যেখানে নেই কোন গাছ; স্পেসস্যুট পড়ে হাটছে মানুষ। বুড়িগঙ্গার পাড়ে অক্সিজেন মাস্ক পড়ে প্রেমিকজুটি। পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চড়ে ঢাকার যানজটের কাল্পনিক দৃশ্য। ব্যঙ্গচিত্রে উঠে এসেছে আবাসনের নামে মুরগীর খোপ, লোকাল বাস, মশা নিধনে ঘুমন্ত সিটিকর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরগুলোর নাজুক পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ রাজধানীর নাগরিক সকল সমস্যা।

অলিয়ঁস ফ্রঁসেজে মোনালিসা ও গুয়ের্নিকা
একটি উঁচু পাহাড় ঢেকে আছে হলুদাভ তৃণলতায়, এসবের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি লম্বা গাছ। পাহাড়টির পাশ ঘেসে বয়ে যাওয়া মেঠো পথে আছে কয়েকজন পথিক। প্রদর্শনীর শুরুতেই আছে এমন একটি চিত্রকর্ম। এটি বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি চিত্রকর অগাস্ত রেনোয়ার ‘পাথ উইন্ডিং থ্রো দ্য হাই গ্রাস’-এর পুনরুৎপাদন। ইউরোপের বিখ্যাত ১৩ জন শিল্পীর চিত্রকর্মের পুনরুৎপাদন প্রর্দশিত হচ্ছে ধানমন্ডির লা গ্যালারিতে। প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘পেইন্টিং অব দ্যা পাস্ট’। আয়োজন করেছে ‘আর্ট ক্যাফে’। প্রদর্শনীতে আরও যাঁদের চিত্রকর্মের পুনরুৎপাদন স্থান পেয়েছে, তাঁরা হলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, ভিনসেন্ট ভ্যানগগ, এডগার দেগা, পাবলো পিকাসো, সালভাদর দালি, পল গগাঁ, পল সেজান, ক্লদ মনেঁ, ক্যামিল পিসারো, আলফ্রেড সিসলি, পল ক্লি ও হেনরি মাতিস। এতে প্রায় অর্ধশত চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। এসবের মধ্যে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির বিশ্ববিখ্যাত মোনালিসা; পাবলো পিকাসোর গুয়ের্নিকা ও ওল্ড গিটারিস্ট ; সালভাদর দালির পার্সিস্টেন্স অব মেমোরি, ভিনসেন্ট ভ্যানগগের স্টারি নাইট, ইয়েলো হাউজ; এডগার দেগার ব্যালে ড্যান্সার; পল ক্লির মাজারো; পল গগাঁর সেল্ফ পোর্ট্রেট উইথ ইয়েলো ক্রাইস্ট এবং পল সেজানের স্টিল লাইফ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রদর্শনী চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।

No comments:

Post a Comment