Wednesday, January 12, 2011

নকনে শীতের মধ্যেই উৎসব আমেজে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ৭২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে পৌর নির্বাচন শুরু হয়ে গেলো। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এসব পৌরসভায় একটানা ভোটগ্রহণ চলবে বলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব আব্দুল বাতেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

এ দুই বিভাগের নির্বাচনযোগ্য পৌরসভাগুলোয় মোট ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩১ ভোটার রয়েছে। রংপুর বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ নির্বাচন কমিশনার সুভাষ চন্দ্র সরকার সকাল সোয়া ৮টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

তীব্র শীতের কারণে শুরুতে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি কম হলেও সময় গড়ালে তা বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জসিমউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার রাতে জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের গোলযোগের আশঙ্কা করছেন না তিনি।

নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতির প্রয়োজন তার সবই নেওয়া হয়েছে। ভোটারা যাতে নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন এবং ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন সে লক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ

এ দুই বিভাগের ৭২ পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ৯৯২ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে ৪ হাজার ৭২৩ জন।

রংপুরের ২৩ পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী ১৩১ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ৩১৬ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১০১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব পৌরসভায় মেয়র ছাড়া ২১৯টি সাধারণ ও ৭৩টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে লড়ছেন তারা।

এসব পৌরসভায় ৭ লাখ ১৯ হাজার ৪১ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট কেন্দ্র ৩৬৩ ও ভোট কক্ষ রয়েছে ২২০১টি।

রাজশাহী বিভাগের ৪৯ পৌরসভায় মেয়র পদে ২৩২, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৭৩ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২২৬৫ জন প্রার্থী রয়েছে। পৌরসভায় ৪৯ মেয়র, ৪৭১ সাধারণ ও সংরক্ষিত ১৫৭ পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা।

এ বিভাগের পৌরসভাগুলোর ১৪ লাখ ৪ হাজার ৯৯০ ভোটারের বিপরীতে ৭৩২ ভোটকেন্দ্র ও ৪৪২৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে।

যে সব পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে: রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, পাটগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, রানীশংকৈল, পীরগঞ্জ, নীলফামারী, জলঢাকা, সৈয়দপুর, হারাগাছ, বদরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, উলিপুর, নাগেশ্বরী, গাইবান্ধা, গোবিন্দগঞ্জ, সুন্দরগঞ্জ, দিনাজপুর, সেতাবগঞ্জ, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, হাকিমপুর ও বীরগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচন হবে।

দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌরসভায় নির্বাচন হবে ২৭ জানুয়ারি।

রাজশাহী বিভাগের ভবানীগঞ্জ, কাটাখালী, গোদাগাড়ী, কাঁকনহাট, তানোর, মুন্ডুমালা, কেশরহাট, দুর্গাপুর, আড়ানী, তাহেরপুর, চারঘাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শিবগঞ্জ, রহনপুর, নাচোল, নাটোর, বড়াইগ্রাম, সিংড়া, গুরুদাসপুর, নলডাঙ্গা, গোপালপুর, জয়পুরহাট, আক্কেলপুর, কালাই, পাঁচবিবি, সিরাজগঞ্জ, উল¬াপাড়া, কাজীপুর, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ, বেলকুচি, নওগাঁ, নজীপুর, বগুড়া, শেরপুর, সান্তাহার, শিবগঞ্জ, সারিয়াকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম, কাহালু, গাবতলী, পাবনা, ভাঙ্গুরা, ফরিদপুর, সুজানগর, ঈশ্বরদী, চাটমোহর ও সাঁথিয়া।

সেনা ও বিডিআর থাকছে যে পৌরসভায়

রাজশাহী বিভাগের যে সব পৌরসভায় সেনা মোতায়েন: নাটোর জেলার নাটোর সদর, নলডাঙ্গা, সিংড়া, গুরুদাসপুর ও গোপালপুর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ। সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর ও শাহজাদপুর। বগুড়া জেলার বগুড়া সদর ও শেরপুর এবং পাবনা জেলার পাবনা সদর, সুজানগর ও ঈশ্বরদী।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের যেসব পৌরসভায় বিডিআর মোতায়েন: পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড়, লালমনিরহাটের লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম, ঠাকুরগাঁওয়ের ঠাকুরগাঁও, রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জ, নীলফামারীর নীলফামারী, জলঢাকা ও সৈয়দপুর, রংপুরের হারাগাছ, কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধার গাইবান্ধা ও গোবিন্দগঞ্জ, দিনাজপুরের হাকিমপুর, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর, গোদাগাড়ী ও কাঁকনহাট, তানোর ও মুন্ডুমালা, কেশরহাট ও চারঘাট এবং জয়পুরহাটের জয়পুরহাট সদর।

দেশে সর্বশেষ পৌর নির্বাচন হয়েছিলো ২০০৪ সালের মে মাসে। বছর দুয়েক আগে অধিকাংশ পৌরসভা নির্বাচনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।

এ দফায় পাঁচ দিনে সারাদেশে আড়াই শতাধিক পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। ১৩ জানুয়ারি খুলনা ও বরিশাল বিভাগে, ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিভাগে, ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে এবং ২৭ জানুয়ারি বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও ভোট কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং কোনো ধরনের সহিংসতা ও অনিয়ম রোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এছাড়া সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের তাৎক্ষণিক বিচার ব্যবস্থার জন্য দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদেরও সব সময় সতর্ক থাকতে নিদের্শ দিয়েছে কমিশন। সংশি¬ষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছে ইসি।

No comments:

Post a Comment