Tuesday, April 29, 2014

দখলের জন্য লুটপাট!-রেলওয়ের রজ্জুপথটি বিক্রি করা যাবে না

দখল ও লুটপাটের জন্য কতটা পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়া যায়, তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ রেলওয়ের একমাত্র রজ্জুপথ বিক্রির প্রস্তাব থেকে। ১৯৬৪ সালে স্থাপিত এই রজ্জু রেলপথ বাংলাদেশ রেলওয়ের এক ঐতিহ্যের অংশ। দুর্বৃত্ত চক্র এই পথকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে অনেকটা সফলও হয়েছে। এ কারণে রেলওয়ে থেকেই এখন পথটি বিক্রি করে দেওয়ার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রস্তাব উঠেছে।
অন্যান্য পথে পাথর আনা সহজ হওয়ায় এই পথ এখন আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। রেলওয়ের ঐতিহ্য হিসেবে এই রজ্জুপথ একটি সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবেই রয়ে গেছে। কিন্তু প্রভাবশালী চক্র এই রজ্জুপথের সংরক্ষিত বাংকার থেকে গত দুই বছরে অন্তত ৫০ কোটি টাকার পাথর তুলে নিয়ে গেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কেন তা ঠেকাতে পারল না, নাকি তাদের যোগসাজশে কাজটি হয়েছে, সেটা সত্যিই এক বড় প্রশ্ন।
সংরক্ষিত এই বাংকারগুলো থেকে পাথর তুলে নেওয়ার ফলে রজ্জুপথই বিপন্ন হয়ে পড়েছে। পাথর তোলার ফলে বিভিন্ন স্থানে ১০ থেকে ১৫ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে রজ্জুপথ বিভিন্ন স্থানে উপড়ে গেছে। লুটপাটের এই প্রাথমিক পর্ব শেষ হওয়ার পর পুরো জায়গাটি বিক্রি করে লুটপাটের দ্বিতীয় পর্ব সারার উদ্যোগ চলছে।
সংরক্ষিত স্থাপনায় লুটপাট ঠেকাতে ব্যর্থ বা লুটপাটের সহযোগী রেলওয়ের কর্তৃপক্ষই এই রজ্জুপথ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিলেটের প্রধান পরিদর্শক সাইদুর রহমানের দাবি, যেহেতু এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, সেহেতু এটি তিনি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছেন। রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, সম্পত্তি রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়ার পর এই কর্মকর্তার চাকরি থাকে কীভাবে?
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে সরকারি দলের এক নেতার নেতৃত্বে পাথর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। রেলওয়ের কারা এই লুটপাটে সহায়তা করেছেন, তার তদন্ত ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আর রেলওয়ের ঐতিহ্যবাহী এই রজ্জুপথকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে রেলওয়ে ও সরকারের উচ্চমহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

No comments:

Post a Comment