Friday, July 15, 2011

খরায় ধুঁকছে সোমালিয়া, অগণিত মৃত্যুর আশঙ্কা

ফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে খরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে অগণিত মানুষ মারা যেতে পারে। ব্রিটেনের টেলিভিশন চ্যানেল 'চ্যানেল ফোর'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোমালিয়ায় কর্মরত এক ত্রাণকর্মী এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। জেন্স ওপারম্যান নামের এ কর্মী শিগগিরই সেখানে আন্তর্জাতিক সাহায্য বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলের হর্ন অব আফ্রিকাভুক্ত দেশগুলোতে গত ৬০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম খরা দেখা দিয়েছে। সোমালিয়া, কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও জিবুতি খরার আক্রমণে পড়েছে। তবে সোমালিয়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে মারাত্মক। খাদ্য ও পানির আশায় লাখ লাখ লোক সেখানে ছোটাছুটি করছে। সোমালিয়ায় 'অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার' নামের দাতব্য সংস্থার প্রধান হিসেবে কাজ করছেন ওপারম্যান। চ্যানেল ফোর নিউজকে তিনি জানান, 'সোমালিয়ার পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। মানুষ এখানে অকল্পনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।' সোমালিয়ায় প্রায় ২৮ লাখ লোকের জরুরি মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন বলে জানান তিনি। দেশটিতে গড়ে প্রতি তিন শিশুর একটিই অনাহারে দিন কাটাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ওপারম্যান জানান, 'খরা-আক্রান্ত এলাকার ত্রাণকর্মীরা মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের কাছে আসা শিশু ও পরিবারগুলো মানসিক ও শারীরিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত। অনেকেই মারাত্মকভাবে অসুস্থ বা আহত। অনেক লোককেই সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে অনাহারে থাকতে হয়।
ত্রাণ শিবিরগুলোতে আসা লোকদের প্রাণ বাঁচানোই দুষ্কর হয়ে পড়েছে।' সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামগুলোর খরা পরিস্থিতি মারাত্মক এবং শিশু, গর্ভবতী নারী ও বয়স্ক লোকরাই এর সবচেয়ে বড় শিকার বলে জানান ওপারম্যান।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার প্রধান আন্তোনিও গুতিয়েরেস আফ্রিকার খরাকে 'বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবীয় বিপর্যয়' বলে উল্লেখ করেন গত সোমবার। সোমালিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বিদেশি ত্রাণকর্মী প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিকসংখ্যক সাহায্য সংস্থাকে সোমালিয়ায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গুতিয়েরেস।
আন্তর্জাতিক সাহায্যের অপরিহার্যতা উল্লেখ করে জেন্স ওপারম্যান বলেন, 'এই পরিস্থিতিকে বিবেচনায় না নিলে আমার আশঙ্কার হচ্ছে, অকল্পনীয় মাত্রায় মৃত্যুর ঘটনা দেখতে হবে আমাদের।'

No comments:

Post a Comment