Sunday, March 18, 2012

পানের বরজ স্থাপনে চলছে পাহাড় কাটা

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় সংরক্ষিত পাহাড় দখল করে
অন্তত আট হাজার পানের বরজ স্থাপন করা হয়েছে।

বনের গাছ ও পাহাড় কেটে এসব বরজ করা হলেও তা উচ্ছেদে বন বিভাগ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে বরজ স্থাপনের জন্য বিচ্ছিন্নভাবে স্থানীয় লোকজন পাহাড় কাটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের পর থেকে উপজেলার বড় মহেশখালী, হোয়ানক, কালারমারছড়া, শাপলাপুর ও ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সংরক্ষিত বনের ভেতরে পাহাড়ের ঢালু ও চওড়ায় অবৈধভাবে পানের বরজ স্থাপন করে স্থানীয় লোকজন। আর এসব বরজ স্থাপন করতে গিয়ে কাটতে হয়েছে সংরক্ষিত বনের গাছ ও পাহাড়। প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে সংরক্ষিত বনের ভেতরে গজিয়ে উঠেছে বরজ।
হোয়ানক ইউনিয়নের কালালিয়াকাটার বাসিন্দা আমির হোসেন, কলিম উল্লাহ ও নুর মোহামঞ্চদ জানান, পাহাড় কাটা আইনগতভাবে অপরাধ, সেই কথা এই এলাকার অনেকেই জানেন না। তাই পাহাড় কেটে বরজ তৈরি করছে বলে তাঁরা দাবি করেন। কালারমারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব আধারঘোনার বাসিন্দা নূর মোহামঞ্চদ জানান, এক সপ্তাহ আগে পানের বরজে মাটি দেওয়ার জন্য পাহাড় কাটতে গিয়ে মোহামঞ্চদ ইদ্রিচ (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন আরও ছয়জন। এর পরও পাহাড় কেটে বরজ স্থাপন বন্ধ হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীতে এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সংরক্ষিত পাহাড়ের ভেতর ও চওড়ায় পান চাষ হচ্ছে এক হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে ছয়টি পানের বরজ করা যায়। আর পাহাড়ে পানের বরজের সংখ্যা ছোট-বড় মিলে প্রায় আট হাজার। পানচাষিদের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার।
উপকূলীয় বন বিভাগের মহেশখালীর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহামঞ্চদ বজলুর রহমান বলেন, উপজেলার কালারমারছড়া, হোয়ানক, বড় মহেশখালী, ছোট মহেশখালী ও শাপলাপুর এলাকায় বন বিভাগের ১৮ হাজার ২৮৬ একর সংরক্ষিত বনভূমি রয়েছে। তার মধ্যে ১০ হাজার একরের সংরক্ষিত পাহাড়ি বনভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে। এসব পাহাড়ি বনভূমির গাছ ও পাহাড় কেটে অবৈধভাবে হাজার হাজার পানের বরজ স্থাপন করে। তবে জনবল না থাকায় এসব বরজ উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

No comments:

Post a Comment