Wednesday, September 12, 2012

টেকনাফ সৈকতের ঝাউবাগানে নতুন রোহিঙ্গা বস্তি!

মিয়ানমারের অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা নতুন বস্তি তৈরি করেছেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সমুদ্র সৈকতের ঝাউবাগানে। টেকনাফ সমুদ্র সৈকতের তুলাতুলী এলাকার মোহনায় তৈরি করা হয়েছে এ নতুন বস্তি।

ওই বস্তিতে ইতোমধ্যে শতাধিক ছোট ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আর ওইসব রোহিঙ্গাদের খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণও করছে বিভিন্ন সংস্থা।
স্থানীয় লোকজন বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরের জুন মাসে মিয়ানমারের আরকান রাজ্যে সংঘটিত জাতিগত সহিংসতা শুরু হয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালান। টেকনাফের নাফনদী পেরিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে কোস্টগার্ড, বিজিবি ও পুলিশের নজরদারির কারণে তা কিছুটা রোধ হয়।

কিন্তু এরপরও বিভিন্ন কৌশলে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে টেকনাফের বিভিন্নস্থানে আশ্রয় নিয়েছে। আর এসব রোহিঙ্গা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে টেকনাফের পশ্চিম উপকূলীয় সৈকতের ঝাউবাগানে ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছেন।

বন বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ১৯৯৪ সালে উপকূলীয় বন বিভাগ সবুজ বেস্টনি প্রকল্পের আওতায় উপজেলার পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা বাহারছড়া, টেকনাফ সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের ৩৭ কিলোমিটার সৈকতে ঝাউবাগান করা হয়। দীর্ঘ ১৮ বছরে ওই বাগান বড় বাগানে পরিণত হয়েছে। আর ওখানেই রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছেন।

রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয়রত হাসিনা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূ বাংলানিউজকে জানান, এলাকার স্থানীয় ফিশিং বোটের মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সহায়তায় তারা মিয়ানমার থেকে এসে ঝাউবাগানে আশ্রয় নেন। তার স্বামী ফিশিং বোটে মাছ ধরেন। তার স্বামী মতো বস্তি প্রায় পুরুষ সাগরে মাছ ধরতে যান।

রফিকুল আলম (২৩) নামে স্থানীয় এক যুবক বাংলানিউজকে জানান, স্বল্প বিনিয়োগে অধিক লাভের ফাঁদে ফেলে ফিশিং বোটের মালিকরা তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। ওসব অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা বস্তিতে বিদেশিরাও তৎপর রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গত দেড় মাস ধরে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে নিয়মিতভাবে মাংস, চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, সেমাইসহ নগদ অর্থ সহায়তা দিতে দেখা গেছে।

টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মোনাফ বাংলানিউজকে জানান, সোমবার সন্ধ্যায় মৌলবাদীরা অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা বস্তিতে খাদ্য ও নগদ অর্থ বিতরণের খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ৫ জনকে আটক করা হয়।

এরা হলেন- তুরস্কের নাগরিক মো. ইসমাইল শরীফ (৫০), কিশোরগঞ্জ জেলার জার্মান প্রবাসী মাওলানা আজিজুল হক (৫২), টেকনাফের শামলাপুর গ্রামের গোলাম কবিরের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুছ (২৯), মুছা আলীর ছেলে মোহাম্মদ কবির (৪৫) ও ফজর করিমের ছেলে শফি আলম (৪৭)। এ সময় খাদ্য সামগ্রী ও নগদ টাকা জব্দ করে পুলিশ।

No comments:

Post a Comment