Tuesday, February 12, 2013

চকরিয়ায় সেতু ভেঙে বাস নদীতে, নিহত ১৮

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভায় আজ সোমবার ভোররাতে সেতুর রেলিং ভেঙে একটি যাত্রীবাহী বাস মাতামুহুরী নদীতে পড়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় ২২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার আসার পথে বাসটি এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। হতাহত যাত্রীরা গাজীপুরের বাসিন্দা।
গাজীপুর সদর থেকে ৪৩ জন যাত্রী নিয়ে নিরাপদ সুপার সার্ভিসের বাসটি গত শনিবার ওরসে যোগ দিতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারি শরিফে যায়। ওরস শেষে গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিয়ে বাসটি ফটিকছড়ি থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। আজ ভোররাত চারটার দিকে বাসটি চকরিয়ায় পৌঁছানোর পর এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আটজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এঁরা হলেন: গাজীপুর সদরের শিউলী (১৪), জয়নাব বেগম (৪৮), মফিজা বেগম (৩৭), লাল মিয়া (৬০), আবদুল জলিল (৫০), মোহাম্মদ (৬৫), রফিক উদ্দিন (৪২) ও শিল্পী (২৮)।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিৎ কুমার বড়ুয়া ঘটনাস্থল থেকে প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আজ ভোররাত চারটার দিকে মাতামুহুরী নদীর ওপর এসে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় সেতুর রেলিং ভেঙে বাসটি ২৫ ফুট নিচে বাদাম খেতে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ১২ জন মারা যান। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জমজম হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও পাঁচজন। ২২ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে বাকি চারজন যাত্রীর এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. রশিদুন্নবী প্রথম আলো ডটকমকে জানান, গুরুতর আহত ১৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. আজাদ মিয়া এ বিষয়ে প্রথম আলো ডটকমকে জানান, দুপুর দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিত্সাধীন অবস্থায় আহত আরও একজন মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোররাতে সেতুর নিচে হইচই শুনে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে পুলিশ সদস্য, ফায়ার সার্ভিস ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করেন।
দুর্ঘটনার খবর পৌঁছার পর গাজীপুরের সদর উপজেলার হাড়িনাল বাজার ও নোয়াগাঁও গ্রামে কান্নার রোল পড়ে গেছে। হতাহত যাত্রীরা সবাই ওই দুই গ্রামের বাসিন্দা। নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, তাঁদের গ্রামের একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন।
টেলিভিশনে দুর্ঘটনার সর্বশেষ খবর জানতে গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন গ্রামবাসী। আশপাশের গ্রামের মানুষ নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের বাড়ি গিয়ে তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

No comments:

Post a Comment