Tuesday, February 12, 2013

কক্সবাজারে সেতুর রেলিং ভেঙে বাস নদীতে, নিহত ১৯ : সবাই গাজীপুর সদরের বাসিন্দা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গতকাল এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ২৬ জন। পর্যটকদের বহন করা একটি বাস চকরিয়া পৌরসভার
চিরিংগা মাতামুহুরী ব্রিজের রেলিং ভেঙে নদীতে পড়ে গেলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের চমেক, চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, আহত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও শিশু। তারা সবাই গাজীপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা। এদের ৭ জন একই পরিবারের সদস্য।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার রাতে গাজীপুর পৌরসভার নোয়াগাঁও মহল্লার ৪৬ জন যাত্রী নিরাপদ সুপার সার্ভিসের একটি বাস ভাড়া করে চট্টগ্রামের ফড়িকছড়িতে হজরত মাইনুদ্দিন আল হাসানীর ৭৬তম খোশরোজ শরিফে যোগ দিতে যান। সেখানকার অনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রোববার রাত ২টার দিকে ৪৪ জন যাত্রীসহ বাসটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশে রওনা দেয়। বাসটি গতকাল ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া পৌরসভার চিরিংগা মাতামুহুরী নদীর ব্রিজ অতিক্রম করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে যায়। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় নদীতে পানি না থাকলেও ব্রিজ থেকে অন্তত ৫০ ফুট নিচে বালুচরে উল্টোভাবে পড়ে বাসটি কাদা মাটিতে দেবে যায়।
যাত্রীদের চিত্কারে আশপাশের মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও দমকল সদস্যরা এসে যাত্রীদের উদ্ধার করা শুরু করেন। এ সময় বাস থেকে ১৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত অন্যদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়।
সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, মাতামুহুরী ব্র্রিজের মাঝখানে ফুটো হয়ে যাওয়া মেরামত করে পাটাতন দিয়ে একটি বক্স করা হয়েছে। ওই বক্সে দ্রুতগতিতে বাসটি উঠিয়ে দিলেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন জানান, গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সবার লাশ গাজীপুর পৌরসভায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, পুলিশ সুপার আজাদ মিয়া, সহকারী পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান, চকরিয়া পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, আওয়ামী লীগ নেতা জাফর আলম এমএ, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার তত্পরতা তদারকি করেন।
নিহতদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় জানা গেছে। এরা হলেন গাজীপুর পৌর এলাকার নোয়াগাঁও গ্রামের একই পরিবারের লাল মিয়া, লাল মিয়ার প্রথম স্ত্রী জয়নব বেগম, দ্বিতীয় স্ত্রী মফিজা আক্তার, মেয়ে শিউলি আক্তার, ভাই আবদুর রশিদ, ভগ্নিপতি আবদুল জলিল ও নাতনি নুসরাত জাহান। একই গ্রামের অন্য ৫ জন হলেন আফসার উদ্দিন পালোয়ান, আইয়েস আলী, আবদুর রউফ, হানিফ মিয়া ও মোহাম্মদ আলী। এছাড়া ৩ জন হলেন হাড়িনাল গ্রামের আইনাল হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন, লাগালিয়া গ্রামের মইন উদ্দিনের ছেলে আবদুস ছাত্তার ও শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর স্ত্রী লতিফা বেগম। এদের মধ্যে বাসটির চালক ও হেলপারও রয়েছেন।

No comments:

Post a Comment