Friday, March 01, 2013

ঈদগাঁওতে দফায় দফায় সংঘর্ষ- নিহত ১,আহত ২শতাধিক,যানবাহনে অগ্নি সংযোগ, গুলি বর্ষণ,আটক ৯

কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে পুলিশ ও সাঈদী সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ১ ও গুরুতর আহত অপর একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত আবদুর রশিদ সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বোয়ালখালীর হাজী ইলিয়াছের পুত্র ও ২ সন্তানের জনক আবদুর রশিদ (৩২) আর গুরুতর আহত শফি আলম (২৫), একই ইউনিয়নের পাঁহাশিয়াখালীর মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র।
পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও বিভিন্ন দোকানপাট ভাংচুর ও পুলিশের ম্যাজিক গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া সহ ১০/১২টি যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ২৮ ফেব্র“য়ারী দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণার পর থেকে বাসষ্টেশন ও বাজারে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের দু’শতাধিক আহত ও ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও নানা সূত্র জানায়, সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষিত হবার পর বাজারে সাঈদী সমর্থকদের বিরাট মিছিল সহকারে লাটিসোঠা ও ইটপাটকেল নিয়ে বাসষ্টেশনের দিকে যাবার সময় ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্র এলাকায় পৌঁছলে তারা পুলিশি বাঁধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুটতে থাকে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করতে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করলে মিছিলকারীরা পিছু হটে। পরক্ষণে তারা সংঘবদ্ধ ভাবে পুলিশকে লক্ষ করে আবারো ইট পাটকেল ছুটতে ছুটতে তদন্ত কেন্দ্রে এসে ভাংচুর চালায়। তখন পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করতে বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ করে। ঘন্টাব্যাপী উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এদিকে একই সময়ে বাসষ্টেশনে বিক্ষুব্ধ শ্রমিক পুলিশের একটি ম্যাজিক গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং ১০/১২টি যানবাহনে ভাংচুর চালায়। উভয় স্থানের সংঘর্ষে দু’শতাধিক আহত ও ৩০জন গুলিবিদ্ধ হতে পারে বলে নানা সূত্রের দাবী। খবর পেয়ে সদর ইউএনও কাজী মোঃ আবদুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার, সদর মডেল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এসআই শাহেদ ঘটনাস্থলে অবস্থান করেন। অন্যদিকে সংঘর্ষের ব্যাপকতার খবরে র‌্যাব ও বিজিবির টহল দল এলাকায় টহল অব্যাহত রেখেছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত আবদুল আজিজ পোকখালী নাইক্যংদিয়ার নুরুল আলমের পুত্র বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের পর পুলিশ ৯ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হচ্ছে ইসলামাবাদের আউলিয়াবাদের মৃত ছৈয়দুল হকের পুত্র আবু তালেব (২৮), খুটাখালী ফরেষ্ট অফিস পাড়ার জেবর মুল্লুকের পুত্র আবদুর রশিদ পুতিয়া (৩০), ঈদগাঁও জাগির পাড়ার কালা মিয়ার পুত্র আহমদ উল্লাহ টুলু (৩৫), ইসলামাবাদ গজালিয়ার হাজী আবদুল খালেকের পুত্র কবিরাজ ডাঃ নুরুল আলম (৪৫), বর্তমান ঈদগাঁও বাঁশঘাটার অনন্ত দাশের পুত্র নও মুসলিম সাইফুল ইসলাম (২২), খুটাখালী গর্জনতলীর নুর উদ্দিনের পুত্র রহমত উল্লাহ (১২), ইসলামাবাদ ইউছুপেরখীলের মোহাম্মদ আলমের পুত্র জিয়াউল হক (১৭), ঈদগাঁও মাইজ পাড়ার সাইফুল ইসলামের পুত্র আনচারুল হক (২৫) প্রমুখ। সংঘর্ষের সময় তদন্ত কেন্দ্রের উভয় পার্শ্বে পুলিশ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। রাতে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত বাসষ্টেশন, কলেজ গেইট, খোদাইবাড়ী, বাজারের বিভিন্ন নানা পয়েন্টে বিজিবি-পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। সংঘর্ষের পর থেকে বাজার ও বাসষ্টেশনের সমস্ত দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। মহাসড়কের যানবাহন চলাচল ও বন্ধ থাকে। এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা কালে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মোঃ মনজুর কাদের ভূঁইয়া ও নিহতের খবর সঠিক কিনা বলতে পারেননি। অন্যদিকে খুটাখালীতে দুপুর থেকে খন্ড খন্ড মিছিল মহাসড়ক অবরোধ ও দোকান পাঠ বন্ধ রেখে বিক্ষুভ মিছিল হয়েছে। এ সময় হাজার হাজার সাঈদী সমর্থক ও জনতা স্লোগান তুলে। সাঈদীর ফাঁসি মানিনা,মানবনা। পরে খুটাখালী থেকে ঈদগাঁও মুখী একটি বিরাট মিছিল নতুন অফিস অতিক্রম করলে বিজিবি ও টহল পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। পরে সন্ধ্যায় র‌্যাবের একটি দল বাজারে এসে এলোপাতাড়ি মারধর ও ধাওয়া করে। এতে বেশ কজন লোক গুরুতর আহত হয়।

No comments:

Post a Comment