Wednesday, January 26, 2011

মস্কোর বিমানবন্দরে হামলা চালায় নারী আত্মঘাতী

স্কোর দোমোদেদোভো বিমানবন্দরে এক নারী আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই নারী মুসলিম উত্তর ককেসাস অঞ্চলের জঙ্গি। নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে।

ওই হামলার জন্য বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। দোমোদেদোভো বিমানবন্দরের অভ্যর্থনাকক্ষে গত সোমবার বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৩৫ জন নিহত ও দেড় শতাধিক লোক আহত হয়। হতাহতদের মধ্যে বিদেশি নাগরিকও আছে। বিস্ফোরণের পরপরই গোয়েন্দা সদস্যরা জানান, এক ব্যক্তির মাথা বিচ্ছিন্ন পাওয়া গেছে। এই ব্যক্ত্যিই আত্মঘাতী হামলাকারী হতে পারেন। তাঁকে দেখে আরব বংশোদ্ভূত মনে হচ্ছে।
একজন রুশ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, এক নারী ব্যাগ খোলার সঙ্গে সঙ্গে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। ওই নারীই সম্ভবত আত্মঘাতী হামলাকারী। তাঁর সঙ্গে একজন পুরুষও ছিলেন। ওই পুরুষ তাঁর পাশে দাঁড়ানো ছিলেন। বিস্ফোরণে পুরুষটির মাথা উড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, হামলার বৈশিষ্ট্য ও আলামত দেখে মনে হচ্ছে, উত্তর ককেশাস অঞ্চলের জঙ্গিরাই এ হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়ার কোমারসান্ত পত্রিকার খবরে বলা হয়, এই হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। উত্তর ককেশাসের নারী আত্মঘাতী একটি জঙ্গি দল মস্কোতে ঢুকেছে। এর এক সদস্য সোমবার আত্মঘাতী হামলা চালান। এই দলের আরেক সদস্য গত ৩১ ডিসেম্বর মস্কোর একটি স্পোর্টস ক্লাবে হামলা চালান।
পত্রিকায় আরও বলা হয়, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে ওই আত্মঘাতী হামলাকারী একাই মস্কোতে ঢুকেছেন। বরং তিনি একটি বড় আত্মঘাতী দলের অংশ হতে পারেন। এতে বলা হয়, গত ৩১ ডিসেম্বর আত্মঘাতী হামলা চালানো নারীর স্বামী জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার দায়ে এখন কারাগারে।
উত্তর ককেশাসের বিদ্রোহীরা রাশিয়ায় চলতি বছরের পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ শহর ও বাণিজ্যকেন্দ্রে হামলার হুমকি দিচ্ছে। হামলার জন্য দোমোদেদোভো বিমানবন্দরকে বেছে নেওয়ায় মনে হচ্ছে, হামলাকারীরা রাশিয়া সীমান্তের বাইরেও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে চাইছে।
আত্মঘাতী হামলার জন্য বিমানবন্দরের দুর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থাকে দায়ী করে প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘এটি অবশ্যই সন্ত্রাসী এবং অনেক পরিকল্পিত হামলা। সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য ছিল যত বেশি সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি করা। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থায় ঘাটতি ছিল। এ জন্যই হামলাকারী নিরাপত্তাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে বিমানবন্দরের অভ্যর্থনাকক্ষে ঢুকতে পেরেছে।’
মেদভাদেভ বলেন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ওই সময় সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অবশ্যই কৈফিয়ত দিতে হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আরইএ নোভোস্তি জানায়, এক সপ্তাহ আগেই কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল, এক মাসের মধ্যে মস্কোর কোনো একটি বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে। এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি ও এপি।

No comments:

Post a Comment