Tuesday, January 25, 2011

শুকনো মরু হয়ে গিয়েছিল নায়াগ্রা

প্রাকৃতিক শক্তির এক অফুরান উৎস নায়াগ্রা জলপ্রপাত। এই জলপ্রপাত দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে পড়ছে ৬০ হাজার গ্যালনের বেশি পানি। কামান দাগার শব্দ সেই জলরাশির কান ফাটানো গর্জনের কাছে ম্লান। এমন শক্তিধর জলপ্রপাত যদি শুকিয়ে খটখটে মরুর মতো হয়ে যায়, তাহলে কেমন দেখাবে?

নায়াগ্রা সম্পর্কে যাঁরা জানেন, তাঁরা মোটেও পাত্তা দেবেন না এই প্রশ্ন। অনেকে বরং বাঁকা হেসে বলবেন, এটা আবার প্রশ্ন হলো? কিন্তু বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, আজ থেকে ৪১ বছর আগে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের একটি বড় অংশ সত্যিই ঊষর মরুর রূপ নিয়েছিল। নায়াগ্রা নদীতে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে জলপ্রপাতের প্রবাহ সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্যদিকে। ১৯৬৯ সালে জলপ্রপাতের তলদেশ থেকে আলগা পাথর অপসারণের লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা নিয়েছিল মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এর সাক্ষ্য বহন করছে ওই সময় তোলা কিছু ছবি।
দীর্ঘ চার দশক পর এসব ছবি উদ্ধার করেন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা রাস গ্ল্যাসন। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসব ছবি তোলেন। পুরোনো একটি জুতার বাক্স থেকে ছবিগুলো উদ্ধার করা হয়। বাক্সটি পড়ে ছিল ওই বাড়ির গ্যারেজে।
এ ব্যাপারে গ্ল্যাসন বলেন, ‘১৯৬৯ সালের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সেনাসদস্যরা জলপ্রপাতের ওই অংশে উন্নয়নমূলক কাজ করেন। এ সময় আমার শ্বশুরবাড়ির স্বজনেরা কয়েকবার সেখানে গিয়ে এসব ছবি তোলেন।’
১৯৩১ ও ১৯৫৪ সালে দুটি পাথরধসের ঘটনায় জলপ্রপাতের তলদেশে পাথরের বড়সড় স্তূপ জমে গিয়েছিল। ১৯৬৫ সালে স্থানীয় পত্রিকা নায়াগ্রা ফলস গেজেট-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জমে থাকা এসব পাথর না সরালে জলপ্রপাতের ধারা কমতে কমতে একেবারে থেমে যেতে পারে। এর চার বছর পর সেনা প্রকৌশলীরা এসব পাথর সরানোর কাজে নামেন। এ জন্য নায়াগ্রা নদীতে ৬০০ ফুট চওড়া একটি বাঁধ নির্মাণ করেন তাঁরা। ওই বাঁধ নির্মাণে ২৭ হাজার ৮০০ টন পাথর লেগেছিল। জলপ্রপাতের গতিপথ বদলে বইয়ে দেওয়া হয় কানাডীয় অংশ দিয়ে, যা হর্সশু ফলস নামে পরিচিত। এর আগে ১২ হাজার বছর ধরে একটানা বয়ে গেছে এই জলপ্রপাত।
জলপ্রপাতের তলদেশ থেকে পাথর অপসারণকালে হাজার হাজার দর্শক এই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়। ১৯৬৯ সালের ২৫ নভেম্বর দুই হাজার ৬৫০ জন দর্শকের সামনে সরিয়ে ফেলা হয় বাঁধ। তখন সগর্জনে আবার লাফিয়ে পড়তে থাকে জলপ্রপাতের অফুরান পানি। ডেইলি মেইল অনলাইন।

No comments:

Post a Comment