Tuesday, January 25, 2011

ভালোবাসা, জীবন—সব হেরেছে যৌতুকের কাছে!

ভালোবেসে সুমন সরদারকে বিয়ে করেছিলেন আইরিন আক্তার। যৌতুকের এক লাখ টাকা দিতে না পারায় সেই মনের মানুষের হাতেই খুন হতে হলো তাঁকে।

আইরিনকে খুন করেই ক্ষান্ত হননি সুমন সরদার, তাঁর লাশটিও গুম করার চেষ্টা চালিয়েছেন। পুলিশের কাছে এসব কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার চরমালগাঁও গ্রামে ১৪ ডিসেম্বর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহত আইরিনের মা লিপি বেগম গত শুক্রবার ডামুড্যা থানায় সুমন সরদারসহ সাতজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ডামুড্যা থানার পুলিশ গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি বিল থেকে আইরিনের লাশ উদ্ধার করেছে। একই দিন তারা সুমন সরদারকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডামুড্যা থানা ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চরমালগাঁও গ্রামের মজিবর সরদারের ছেলে সুমন সদর উপজেলার রুদ্রকর গ্রামের আব্বাস সরদারের মেয়ে আইরিন আক্তারকে (১৮) ছয় মাস আগে বিয়ে করেন। বিয়ের আগে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর সুমন বদলে যান। তিনি আইরিনকে তাঁর মা-বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। টাকা না দেওয়ায় আইরিনকে তাঁর স্বামীর বাড়ি নেওয়া হয়নি। ১৩ ডিসেম্বর সুমন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। এ সময় তিনি শাশুড়ি ও স্ত্রীকে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরের দিন স্ত্রীকে নিয়ে কেনাকাটা করার কথা বলে সুমন শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে যান।
মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা গেছে, ১৪ ডিসেম্বর রাতে কয়েকজন সহযোগীর সহায়তায় সুমন তাঁর স্ত্রী আইরিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তাঁরা আইরিনের লাশ বালিয়াকান্দি বিলের কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন। ১৬ ডিসেম্বর সুমনের মা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে জানান, তাঁর ছেলে আইরিনকে হত্যা করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান আ. রাজ্জাক বিষয়টি ডামুড্যা থানার পুলিশকে জানান। পুলিশ সুমনকে আটক করে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বালিয়াকান্দি বিল থেকে আইরিনের লাশ উদ্ধার করে।
ডামুড্যা থানা হাজতে থাকা সুমন সরদার বলেন, ‘আমার শাশুড়ি আমার সঙ্গে সব সময় দুর্ব্যবহার করতেন। তিনি আমাদের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। তাই মানুষের পরামর্শে ও সহযোগিতায় আইরিনকে হত্যা করেছি।’
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদির ভূঁইয়া জানান, সুমন স্ত্রী আইরিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আইরিনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment