Friday, February 11, 2011

দুই ময়নাতদন্তের অমিল খতিয়ে দেখার নির্দেশ

রীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা গ্রামের কিশোরী হেনার মৃতদেহের দুটি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অমিল খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করতে স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত কমিটিকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতে ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে ভুল এড়াতে সুপারিশসহ ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আর যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নজরদারি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হেনার পরিবারের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার ও নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের নির্দেশে গতকাল হাইকোর্টে হাজির হন হেনার বাবা দরবেশ খাঁ ও খালাতো বোন মিনু বেগম। হাজির হন শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন গোলাম সারোয়ার, সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র দাস, চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজেশ মজুমদার, গাইনি বিশেষজ্ঞ হোসনে আরা, চিকিৎসক সুলতান আহমেদ, নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের, উপপরিদর্শক মো. আসলাম উদ্দিন ও সালিস বৈঠকে নেতৃত্ব দেওয়া ইদ্রিস ফকির। আদালত তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণের পর নির্দেশসহ আদেশ দেন।
শুনানিকালে আদালত বলেন, ফতোয়া একটি ফৌজদারি অপরাধ। দেশে ফতোয়া চলবে না। চিকিৎসকদের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনারা একটা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।’ এ ধরনের ঘটনা অতীতেও ঘটেছে—এমন মন্তব্য করে আদালত বলেন, গ্রামে-গঞ্জে এ ধরনের মিথ্যা, ভুয়া পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ওপর একটি মামলার বিচার নির্ভর করে। এ ধরনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হলে প্রকৃত আসামিরা পার পেয়ে যাবে, সাজা হবে না। আদালত বলেন, ‘আপনারা যে রিপোর্ট দাখিল করেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যা। পুনরায় ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে শরীয়তপুরের চিকিৎসকদের রিপোর্টের ব্যবধান আকাশ আর জমিনের।’
আদালতের আদেশ: হেনার ঘটনায় যাঁরা ফতোয়া দিয়েছেন ও দোররা মেরেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের এবং মামলার অন্য আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হেনার সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী নড়িয়ার উপপরিদর্শক আসলাম উদ্দিন ও এজাহার নথিভুক্তকারী পরিদর্শক (তদন্ত) মির্জা এ কে আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়।
এ ছাড়া উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের প্রতিনিধিসহ আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছে। আর ফতোয়ার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে ফতোয়া দেওয়া যে অপরাধ, তা তুলে ধরে প্রচার চালাতে তথ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ স্থানীয় পর্যায়ে ফতোয়াবিরোধী প্রচার চালানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে ধর্ম ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
আদালত ইদ্রিস ফকিরকে গ্রেপ্তারের তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বক্তব্য উপস্থাপন: সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আদালতে হাজির হন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শুনানি হয়। শুনানিতে নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তাঁরা।
শুরুতে আদালত সিভিল সার্জনকে দ্বিতীয় দফায় করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পড়তে বলেন। গোলাম সারোয়ার আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে উল্লেখ করলে আদালত বলেন, ‘আপনারা হেনার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাননি। কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করা পুনঃ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে একাধিক আঘাতের চিহ্ন উল্লেখ করা হয়েছে। এটা কীভাবে হলো? হেনার শরীরের আঘাতগুলো (ইনজুরি) কেন আপনারা শনাক্ত করতে পারলেন না?’
সিভিল সার্জন বলেন, দুটি টিমের ডাক্তারদের মধ্যে অভিজ্ঞতার তফাত রয়েছে।
এটা কি আপনার ব্যাখ্যা? হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কত সময় পর হেনার মৃত্যু হয়েছে?
—২৫ জানুয়ারি হেনা হাসপাতালে ভর্তি হয়। ৩০ জানুয়ারি সকাল ১০টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়। যখন ছাড়া পায়, তখন হেনা পুরোপুরি সুস্থ ছিল। কিন্তু হেনা মৃত্যুবরণ করে ৩১ তারিখ রাত নয়টায়। ফলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এবং মৃত্যুর মাঝে ব্যবধান ছিল ৪৮ ঘণ্টা। সিভিল সার্জন সময় ভুল বলায় তা শুধরে দিয়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান বলেন, ৩৪ ঘণ্টা ব্যবধান ছিল।
আদালত সিভিল সার্জনের উদ্দেশে বলেন, তাহলে ভূত এসে মেয়েটিকে (হেনা) মেরে দিল? আদালত সিভিল সার্জনকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আদালতের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করলে আপনাকে জেলে পাঠানো হবে। সত্য বললে অনুকম্পা পেতে পারেন।’ আদালত জানতে চান, কে কে ময়নাতদন্ত করেছেন?
সিভিল সার্জন অন্য তিন চিকিৎসকের নাম উল্লেখ করেন।
—আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন) ও শিশু বিশেষজ্ঞ কি যোগ্য?
—জেলা পর্যায়ে তাঁরাই ময়নাতদন্ত করে থাকেন।
এ পর্যায়ে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনটি পড়তে বলেন আদালত।
—একটি আঘাতের চিহ্ন ছিল।
ঢাকায় করা দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে এর ভিন্নতা সম্পর্কে মতামত দেন।
—দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
দুটি সত্য হতে পারে না। একটি সত্য হলে অন্যটি মিথ্যা হবে। শরীয়তপুরের প্রতিবেদনে ইনজুরি নেই, ঢাকার প্রতিবেদনে ইনজুরি আছে। কত দিন পেশায় আছেন?
—৩১ বছর।
আকাশ-জমিন পার্থক্য হলো কেন? মতামত দেন। সম্পূর্ণ অমিলের কারণ কী? সত্য বলেন। সত্য না বললে কাউকে ছাড়া হবে না।
সিভিল সার্জন চুপ করে থাকেন।
আদালত অপর চিকিৎসকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামের একটা বিষয় আছে।
মারা গেল কীভাবে?
—সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তাকে (হেনা) ৩০ জানুয়ারি ছাড়া হয়।
হাসপাতাল ত্যাগের সঙ্গে মারা যাওয়ার সময়ের ব্যবধান কত সময়?
—৪৮ ঘণ্টার মতো।
পৌনে একটার দিকে হেনার ঘটনা নিয়ে সংবাদপত্রের প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহ্বুবে আলম। তিনি বলেন, ‘বলা হয়েছে, দাগ না থাকলে আমরা কী করব—বলে সিভিল সার্জন মন্তব্য করেন কীভাবে!’ এ বিষয়ে আদালত সিভিল সার্জনকে বক্তব্য রাখতে বলেন। সিভিল সার্জন বলেন, ‘এটা আমি বলিনি।’ আদালত মন্তব্য করেন, সাংবাদিকেরা মিথ্যা, ভুল তথ্য দেন না। সাংবাদিকেরা যা বলেছেন, তা সত্য হয়েছে। আপনারা যা বলেছেন তা মিথ্যা, ভুল। আদালত জানতে চান, ৩৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু কীভাবে হলো, এটা কি স্বাভাবিক? সিভিল সার্জন বলেন, এটা আনন্যাচারাল (অস্বাভাবিক)।
অপর চিকিৎসক হোসনে আরার কাছে প্রতিবেদনের অমিল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুটিতে কোনো মিল নেই। আদালত জানতে চান, কার চাপে ছিলেন? হোসনে আরা বলেন, ‘আমি চিকিৎসায় ছিলাম না।’
সোয়া একটার দিকে আদালত হেনার বোন মিনু বেগমের বক্তব্য শুনতে চান।
আপনি কি হেনার সঙ্গে হাসপাতালে ছিলেন?
মিনু বলেন, ছয় দিন ছিলাম।
হাসপাতাল ছাড়ার সময় হেনা সুস্থ ছিল কি?
অল্প সুস্থ ছিল। ধরে ধরে নিয়ে যেতে হয়, হাঁটতে পারছিল না। বাড়িতে নেওয়ার পর বিছানায় পড়ে ছিল। রুহুল খান (আসামি মাহাবুবের বাবা) নাম কেটে (হাসপাতাল থেকে) দেওয়ার জন্য বলেছে। ডাক্তাররা ভালো করে চিকিৎসা করেনি।
ডাক্তারদের বলেছিলেন?
—সে পুরো সুস্থ হয়নি।
এরপর আদালত উপপরিদর্শক আসলামকে সুরতহাল প্রতিবেদন পাঠ করতে বলেন। আসলাম সুরতহাল প্রতিবেদন পাঠ করেন। আদালত বলেন, সিআরপিসির ১৭৪ ধারায় সুরতহাল প্রতিবেদনের কথা বলা রয়েছে। কিন্তু আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় কি বলা রয়েছে কার সঙ্গে প্রেম ছিল এটা সুরতহাল প্রতিবেদনে আসবে? মাহাবুবের সঙ্গে হেনার প্রেম ছিল, এটা সুরতহাল প্রতিবেদনে কেন লিখেছেন? লাশের শরীরে কোনো ইনজুরি আছে কি না, সেটা বের করার দায়িত্ব আপনার। আপনি তদন্ত না সুরতহাল প্রতিবেদন করতে গেছেন, সত্য কথা বলেন। আসলাম বলেন, মিথ্যা বলিনি। আদালত প্রশ্ন করেন, কাকে বাঁচানোর জন্য এটা করেছেন? তিনি নিশ্চুপ থাকেন।
এরপর আদালত স্থানীয় ইউপি মেম্বার ইদ্রিস ফকিরকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাকেন। আদালত বলেন, সংবাদপত্রে প্রতিবেদন বেরিয়েছে, আপনি এ মৃত্যুর ঘটনাটি টাকার মাধ্যমে আপসরফা করতে চেয়েছিলেন।
ইদ্রিস বলেন, ‘আমি হেনার চিকিৎসার জন্য তার পিতা দরবেশ খাঁকে ২০-৫০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য মাহাবুবের পিতাকে বলেছিলাম। কোনো আপসের প্রস্তাব দেইনি।’
এই পর্যায়ে আদালত হেনার পরিবারের সদস্যদের ডাকেন। হেনার পিতা দরবেশ খাঁ ইদ্রিস ফকিরকে দেখিয়ে বলেন, ‘তিনি হেনার মৃত্যুর ঘটনাটি সাড়ে তিন লাখ টাকায় আপসরফার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি থানায় গিয়ে এজাহার দায়ের করেছি।’
আদালত বলেন, ‘আপনি কি নিজ হাতে এজাহার লিখেছেন?’
—আমি মুখে ঘটনা বলেছি, থানার লোক সেটা লিখেছে।
এজাহার আপনাকে পড়ে শোনানো হয়েছে?
—না। আমি লেখাপড়া না জানায় শুধু টিপসই দিয়েছি।
আদালত নড়িয়া থানার ওসির কাছে জানতে চান, দরবেশ খাঁকে কেন এজাহার পড়ে শোনানো হয়নি? এজাহারে ধর্ষণ-সম্পর্কিত কোনো তথ্যও নেই। ওসি বলেন, ‘আমি ওই দিন থানায় দায়িত্বে ছিলাম না। দায়িত্বে ছিলেন পরিদর্শক এ কে আজাদ। তবে ইদ্রিস ফকির সালিসে জড়িত ছিলেন।’
এ পর্যায়ে দরবেশ খাঁ বলেন, ‘আমি থানায় বলেছি আমার মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওই মেম্বার (ইদ্রিস ফকির) বলে, মেয়েকে ১০১টা ও ছেলেকে ২০১টা মার। মারা যাওয়ার আগে মিটমাট করার কথা বলে মেম্বার টাকা দিতে চায় সাড়ে তিন লাখ।’
আদালত বলেন, ‘সাত লাখ টাকা মেম্বার আপনাকে দিতে চেয়েছেন না?’ দরবেশ বলেন, না, সাড়ে তিন লাখ।
এ পর্যায়ে আদালত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, সুরতহাল রিপোর্টে প্রেমের কাহিনি আইন অনুসারে আসে কি না?
—না।
কেন ইদ্রিসকে গ্রেপ্তার করা হয়নি?
—খুঁজে পাইনি। ঢাকায়ও চেষ্টা করা হয়েছে। এফআইআরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন-সংক্রান্ত আইনের ৯ ধারা কেন উল্লেখ করা হয়নি?
—উনি (দরবেশ খাঁ) যা বলেছেন, তা লেখা হয়েছে।
উনি (দরবেশ) বলেছেন, তাঁকে পড়ে শোনানো হয়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কে?
—প্রথমে আসলাম দেখেছেন। এখন এ কে আজাদকে তদন্ত কর্মকর্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা অনেকটা শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো। এরপর আদালত আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোতে ‘মেয়েটির জন্য কারও মায়া হলো না!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিন প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি সীমা জহুর। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি আদালত দোররা মারার পর নিহত শরীয়তপুরের হেনা আক্তারের লাশ তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করতে নির্দেশ দেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে তা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের মাধ্যমে আদালতে জমা দেওয়া হয়।
আমাদের শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, মামলার প্রধান আসামি মাহাবুবকে গতকাল শরীয়তপুর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরই মধ্যে মামলাটি সিআইডিতে ন্যস্ত করা হয়েছে। ফলে সিআইডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামান মাহাবুবের সাত দিনের রিমান্ড চান। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম অশোক কুমার দত্ত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হেনা হত্যা মামলাটি পরিচালনার জন্য স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা মাদারীপুর লিগ্যাল এইড অ্যাসোসিয়েশন একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছে। সংস্থাটি মামলার যাবতীয় ব্যয় বহনের ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থাটির শরীয়তপুর জেলা সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল বলেন, ‘মামলাটি সরকারপক্ষ পরিচালনা করবে। কোনো গাফিলতি যাতে না থাকে, সে জন্য এ হত্যা মামলাটি পরিচালনা করার জন্য আমরা একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছি।’
সিআইডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামান জানান, মাহাবুবকে সিআইডির হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment