Sunday, March 04, 2012

রামুর ঐতিহ্যবাহী প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার ধসে পড়ার আশঙ্কা

কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি এলাকার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারটি সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
যে কোনো মুহূর্তে এটি ধসে পড়ার আশঙ্কায় নতুন করে বনবিহার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী।

সরেজমিন জানা যায়, ১৭৬৭ সালে তত্কালীন রাখাইন সম্প্রদায় প্রায় ১২ একর জমিতে এ বনবিহারটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে কাঠ দিয়ে তৈরি বনবিহারের সঙ্গে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন বুদ্ধধাতু জাদি, সীমাবিহার ও চৈত্যমন্দির। কালের পরিক্রমায় এগুলো এখন অতি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, এ মন্দিরে শতাধিক বুদ্ধমূর্তি ছিল। যথাযথ তদারকি ও রক্ষণা্বেক্ষণের অভাবে অধিকাংশ মূর্তি উধাও হয়ে গেছে। অনেক মূর্তি বিনষ্ট ও স্থান সঙ্কুুলান না হওয়ায় জেলার বিভিন্ন মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে। প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারের অধ্যক্ষ, শ্রীমত্ সারমিত্র মহাথের জানান, এটি বহু পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী মন্দির। প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে রাখাইন সম্প্রদায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করে। পরে মিয়ানমারে চলে যান। সেই থেকে গ্রামবাসী এ মন্দিরটি দেখাশোনা করে আসছেন। বর্তমানে মন্দিরটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই এ বিহারের পাশে নতুন একটি পাকা মন্দির নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, অর্থাভাবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় পুরনো এ মন্দিরটি এখন ভেঙে ফেলা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া জানান, প্রায় আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মন্দির এলাকাবাসী রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন। বুদ্ধ পূর্ণিমা, স্বর্গপুরী উত্সব, কঠিন চীবর দানসহ নানা ধর্মীয় আয়োজনে দূর-দূরান্তের পুণ্যার্থীর উপস্থিতিতে এ মন্দির সারাবছর মুখরিত থাকে। তিনি এ মন্দিরের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সহায়তা কামনা করেছেন।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদ মোহাম্মদ ছাইদুল হক জানান, প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার একটি পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধমন্দির। এ মন্দিরের উন্নয়নে সরকারিভাবে সহায়তা দেয়া হবে। মন্দিরের জমি দখলের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

No comments:

Post a Comment