Sunday, March 04, 2012

দুই দিনের ভারী বৃষ্টিঃ মহেশখালীতে ভেসে গেছে কয়েক কোটি টাকার লবণ

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় গত শুক্র ও গতকাল শনিবারের ভারী বৃষ্টিতে লবণচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে অন্তত ছয় কোটি টাকার লবণ। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, গত বছর নভেম্বর মাসের শুরুতেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষিরা লবণ চাষ শুরু করেন।

তাঁরা মাঠ থেকে উৎপাদিত লবণ বিক্রি করছিলেন মণপ্রতি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে। লবণচাষিরা জানান, গত ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি মণ সাদা লবণ ১৮০ টাকা ও কালো লবণ ১৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এতে তাঁদের মুখে হাসি ফোটে এবং লবণের বাম্পার ফলনের জন্য পুরোদমে কাজ করেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত মাস থেকে মাঠপর্যায়ে লবণের দাম পড়ে যাওয়ায় চাষিরা কিছুটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তার পরও মাঠে লবণ উৎপাদন করতে মরিয়া হয়ে চাষিরা কাজ করেন। কিন্তু দুই দিনের বৃষ্টিতে চাষিদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদন করা লবণ ভেসে যায়।
উপজেলা লবণ চাষি ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও বড়মহেশখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ বাদশাহ প্রথম আলোকে বলেন, এতে এই উপজেলার লবণচাষিরা অন্তত ছয় কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মগডেইল এলাকার লবণচাষি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ বছর লবণের ন্যায্যমূল্যের আশায় পাঁচ একর জমিতে লবণ চাষ করেছি। আশা করেছিলাম, এবারের লবণ বিক্রির টাকা দিয়ে মেয়ে বিয়ে দেব। কিন্তু অসময়ে প্রবল বৃষ্টির পানিতে মাঠ থেকে প্রায় ৮০০ মণ লবণ ভেসে গেছে।’
কালারমার ছড়া ঝাপুয়া এলাকার লবণচাষি মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিনের বৃষ্টিতে চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হলেও তাঁরা হাল ছাড়েননি। এই মুহূর্তে বৃষ্টি আর না হলে মাঠ থেকে লবণ উৎপাদন করতে চাষিদের সময় লাগবে আরও ১৫ দিন। এ সময় অনেক চাষি তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করবেন বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কক্সবাজারের গবেষণা কর্মকর্তা এ টি এম ওয়ালি উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এবারের লবণ মৌসুমে মহেশখালীতে ১৭ হাজার ৮০০ একর জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। কিন্তু গত দুই দিনে জেলার অন্তত ২৫-৩০ হাজার টন উৎপাদিত লবণ ভেসে গেছে। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে মাঠপর্যায়ে পুনরায় লবণ উৎপাদন করতে চাষিদের আরও সাত থেকে ১০ দিন সময় লাগবে।

No comments:

Post a Comment