Friday, September 28, 2012

টেকনাফ থানায় হামলা, গুলি, পরিদর্শকসহ আহত ৫০

টেকনাফে বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদকে থানায় নেয়ায় তার সমর্থকরা হামলা করে সেখানে। এ সময় পরিদর্শক (তদন্ত)সহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

ঘটনায় সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় এসআই রাজিব কুমার শাহ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। বুধবার রাতে টেকনাফ বিএনপির সম্পাদক মো. আবদুল্লাহর পিতা সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহমদের হোটেল নাফ কুইনের অফিসে বসাকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুুর রহমান বদি তার অফিসে এসে বসেন। এ সময় তিনি বলেন, চাচা আমার মুরব্বি।
কিন্তু আপনার পুত্ররা আমার নেইম প্লেট ভেঙে দিয়েছে। আর তা যেন চাচা ঠিক করে দেন। এ কথা বলে চলে আসতেই সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদকে থানায় নিয়ে এসে তার অফিস কক্ষে বসিয়ে রাখেন ওসি। এ খবরে মুহূর্তের মধ্যে তার দুই পুত্র, আত্মীয় ও সমর্থকরা হাজারো নারী-পুরুষ নিয়ে এসে টেকনাফ থানা ঘেরাও করে। এতে পুলিশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তারা থানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় দফায় দফায় গুলিবিনিময়। সমর্থকরা বাউন্ডারি প্রাচীর, মাথিন মিউজিয়াম ও ওসির অফিস কক্ষে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে পুলিশ হামলাকারীদের দিকে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার মজুমদার, এসআই রাজিব কুমার শাহ, কনস্টেবল সুমন, টিসু ও মিঠুন আহত হন। এছাড়া এক পথচারী বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন। অপরদিকে আবদুুল্লাহ’র সমর্থকদের মধ্যে আলমগীরসহ কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গভীর রাতে সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল)-এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোদার বিল এলাকায় বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে ৬ জনকে আটক করে। অন্যদিকে টেকনাফ সি-বিচ সংলগ্ন নির্মাণাধীন সড়কে কয়েকটি এমপির নামফলকের ভিত্তিপ্রস্তর রয়েছে। কয়েক দিন আগে ওই ভিত্তিপ্রস্তরগুলো ধ্বংস করা হয়। এ সংবাদে বুধবার সন্ধ্যায় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, ওসি ফরহাদ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পরিদর্শনে যান। পরে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহর পিতা আলী আহম্মদ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করে তাকে থানায় ডেকে আনেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ওই হামলা চালানো হয়।
এদিকে টেকনাফ বিএনপির সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ জানান, গত ৩১শে আগস্ট একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ইয়াবা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ওই প্রতিবেদনে তার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এর জের ধরে বুধবার সন্ধ্যায় সরকার দলীয় এমপি আবদুর রহমান বদি ও একদল সন্ত্রাসী তাদের মালিকানাধীন মার্কেটে গিয়ে টিভিতে সাক্ষাৎকার দেয়ার কারণ জানতে চায়। একপর্যায়ে এমপির নির্দেশে সন্ত্রাসী কায়দায় তার পিতাকে তুলে থানায় নিয়ে আসে। এ খবরে উত্তেজিত লোকজন টেকনাফ থানায় আসে। এ সময় পুলিশ নীরব থাকলেও এমপির সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি করে উত্তেজিত জনতাকে ধাওয়া করার চেষ্টা করে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফরহাদ জানায়, থানায় আনার তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে থানায় হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হামলাকারীদের আটকে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

No comments:

Post a Comment