Monday, January 28, 2013

মহেশখালীতে “সন্ত্রাসী” হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা নিহত

মহেশখালীতে “সন্ত্রাসীদের” হামলায় পৌর আওয়ামী লীগ নেতা আবু বক্কর ছিদ্দিক (৩৫) নিহত হয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের
বিগত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আনছারুল করিমের ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
সোমবার রাত ৮টায় উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হামলায় জনপ্রিয় এ আওয়ামী লীগ নেতা খুন হয় বলে নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

নিহত আবু বক্কর মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা দাসিমাঝি পাড়া এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে।

নিহত আবু বক্করের ছোট ভাই আবু ছিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়ে স্থানীয় একটি সালিশে অংশ নেওয়ার জন্য আবু বক্কর ও তার সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতা সোহাগ কামালের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে উপজেলার কুতুবজোমের দৈলার পাড়া বাজার এলাকায় যান।

সন্ধ্যায় কুতুবজোমের স্থানীয় দৌলার পাড়া বাজার এলাকায় শালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন আবু বক্কর।

এসময় স্থানীয় প্রভাবশালী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের পরিচয় দানকারী হাজী জালাল আহমদের ছেলে সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০ জনের এক দল সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবু বক্করের ওপর হামলা চালায়।

এসময় খুব কাছ থেকে ছোড়া এলজির গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার শরীরে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। এক পর্যায়ে গুরুতর আহত বক্করকে মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়।

পরে আশপাশের লোকজন তাকে মুর্মূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে স্থানীয় অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, শালিসি বৈঠকের পর উভয় পক্ষের উত্তেজনা থেমে গেলে অন্যান্য লোকজনকে সঙ্গে আবু বক্কর দৈলার পাড়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে অবস্থান করছিল। এসময় সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল যুবক এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আবু বক্করকে হত্যা করে।

এদিকে তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী-পুরুষ হাসপাতাল এলাকায় তাকে এক নজরে দেখার জন্য ভিড় করে। পরে খবর পেয়ে মহেশখালী থানা পুলিশের একটি ইউনিটও হাসপাতালে যায়। এসময় বিক্ষুব্ধ লোকজন হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন প্রকার স্লোগান দিতে থাকেন।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিব বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ ইতোমধ্যে কুতুবজোমের ওই এলাকায় অভিযান শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, মহেশখালী পৌর আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনে আবু বক্কর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিল। আনছারুল করিমের সমর্থনে কাজ করায় তার ওপর আওয়ামী লীগের অপর একটি মহল ক্ষুদ্ধ ছিল বলে জানা গেছে। এনিয়ে আওয়ামী লীগে চরম গ্রুপিং ছিল বলেও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন।

আবু বক্কর যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নোতা এম ছালামত উল্লাহ।

নিহত আবু বক্করের ভাগিনা মো. আবু তৈয়ব বাংলানিউজকে জানান, এটি একটি পরিকল্পিত রাজনীতিক হত্যাকান্ড।

No comments:

Post a Comment