Monday, January 28, 2013

হরিষে বিষাদ, ব্রাজিলের নৈশ ক্লাবে নিহত ২৪৫

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শান্তা মারিয়ার একটি নৈশ ক্লাবে আগুন লেগে ২৪৫ জন মারা গেছেন। রয়টার্স জানায়, আজ রোববার নৈশ ক্লাবটিতে একটি গানের দলের পরিবেশনার সময় আতশবাজি থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত।
জরুরি নির্গমনপথ খুঁজে না পেয়ে অনেকই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
সামরিক পুলিশের উদ্ধারকারী দলের তত্ত্বাবধায়ক গারসন দা ফেরেইরা বলেন, ‘কিস’ নামের নৈশ ক্লাবটি থেকে এখনো মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত ১৮০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে ফেরেইরা বলছেন, মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, শ্বাসরুদ্ধ বা পদদলিত হয়ে এঁরা মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, যখন রাত আড়াইটার দিকে আগুন লাগে, তখন সেখানে শ পাঁচেক লোক ছিলেন।
টেলিভিশনে দেখা গেছে, অনেক মানুষ ক্লাবের বাইরে রাস্তার ওপরে বসে কাঁদছেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্লেজ হাতুড়ি দিয়ে ক্লাবটির একটি দেয়াল ভেঙে লোকজনকে বের করার চেষ্টা করছেন।
দুর্ঘটনা থেকে যাঁরা রক্ষা পেয়েছেন, তাঁদের অন্যতম হলে ২৯ বছর বয়সী অ্যালিন সান্তোষ সিলভা। তিনি গ্লোবো নিউজ টিভিকে বলেন, ‘খুব দ্রুত সব ঘটে গেল। চারদিকে শুধু ধোঁয়া, অন্ধকার-কালো ধোঁয়া। দরজার কাছে ভিআইপি এলাকায় ছিলাম বলে আমরা তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসতে পেরেছিলাম।’
প্রেসিডেন্ট দিলমা রোসেফ তাঁর চিলি ভ্রমণ সংক্ষেপ করে দেশে ফিরেছেন। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র তাঁর দেশে ফেরার খবর নিশ্চিত করেছেন।
শান্তা মারিয়ার পুলিশ কর্মকর্তা লুইজা সোসা বলেন, গানের দলটির এক সদস্য আতশবাজি পোড়ালে ক্লাবটির ছাদে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তে তা পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে, ২০০৩ সালে রোড আইল্যান্ডের ওয়েস্ট ওয়ারউইকের এক নৈশ ক্লাবে আগুন লেগে ১০০ এবং ২০০৪ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের আরেক নৈশ ক্লাবে আগুনে প্রায় ২০০ মানুষ মারা যান। ওই দুই ক্ষেত্রেও গানের দলের সদস্যদের আতশবাজি থেকে আগুনের সূত্রপাত।
২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের এবং ২০১৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আয়োজক ব্রাজিল। এ দুর্ঘটনা দেশটির নিরাপত্তার মান ও জরুরি উদ্ধার তত্পরতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রিও গ্রান্দে দো সুল প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিরো সিমোনি বলেন, ঘটনাস্থলে সব ধরনের জরুরি ওষুধপত্র পাঠানো হয়েছে।
শান্তা মারিয়া শহরটি প্রদেশের রাজধানী পোর্তো আলিগ্রি থেকে ১৮৬ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। প্রদেশটির গভর্নর তারসো গেনরো টুইটারে বলেন, ‘একটি বিষাদভরা রোববার! সম্ভাব্য সব ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে।’ তিনি নিজেও ঘটনাস্থলের দিকে রওয়া দিয়েছেন বলে জানান।

No comments:

Post a Comment