Friday, February 15, 2013

জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় নারীসহ নিহত ৪

কক্সবাজার শহরে জামায়াত-শিবিরের কয়েকটি ঝটিকা মিছিল থেকে সহিংসতার ঘটনায় নারী পথচারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। জামায়াত দাবি করেছে, পুলিশের গুলিতে তাদের তিনজন কর্মী নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর পৌন ২টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত। প্রায় দুই শতাধিক জামায়াত-শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, শুক্রবার পৌন ২টার দিকে কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা মসজিদ থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা একটি মিছিল বের করে প্রধান সড়কের পূর্ব দিকে যেতে থাকে। পুলিশও তাদের সঙ্গে এগিয়ে যায়। এর মধ্যে পূর্ব দিকে এগিয়ে শহরের তারাবনিয়ারছড়া মসজিদ থেকে আরো একটি ঝটিকা মিছিল বের করে তারা। এতে পুলিশ দুটি মিছিলের মধ্যখানে পড়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা চালায় শিবির কর্মীরা। এতে সংঘর্ষ ব্যাপক আকারে রূপ নেয়। এর মধ্যে শহরের হাশেমিয়া মাদ্রাসা মসজিদ থেকে আরো একটি মিছিল এতে সংঘর্ষে অংশ নেয়। এতে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় এবং পুলিশও পাল্টা গুলি করে। একই সময় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। তারাও ওখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ফলে পরিস্থিত ভয়াবহ রূপ নেয়।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে দায়িত্বরত সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ পুলিশের দুই সদস্যসহ ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কক্সবাজার শহরে জামায়াত পরিচালিত আল ফুয়াদ হাসপাতালে প্রায় গুলিবিদ্ধ ৩০ জনকে আনা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করছেন। ফুয়াদ হাসপাতালে গেট বন্ধ করে ভেতরে এদের রাখা হয়েছে।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়ে আল ফুয়াদের চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এতে মধ্যে রয়েছে তোফায়েল (৩০) নামের হাশেমিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্র, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মোক্তার আহমদের পুত্র আবদুল্লাহ (২২)। অপর একজন অনুমানিক ৩২ বছর বয়সী এক নারী রয়েছে। তার পরিচয় জানা যায়নি। চতুর্থজনের পরিচয়ও পাওয়া যায়নি।

এর আগে কক্সবাজার শহরের জামায়াত-শিবিরের ব্যাপক নাশকতার আশংকা করে গোয়েন্দা সংস্থা। এ নাশকতা ঠেকাতে কক্সবাজার শহরব্যাপী পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জড়ো হওয়া জামায়াত শিবিরের কর্মীদের আটকও করে। কিন্তু এরপর নাশকতা ঠেকাতে পারেনি পুলিশ।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আকতার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান এবং টহল জোরদার করা করা হলে জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে বেলা ৩টা পর্যন্ত দুই শতাধিক জমায়াত-শিবির কর্মীকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশের ২০ সদস্য আহত হয়। এতে তিনি নিজেইও আহত হয়েছেন।

গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র জানিয়েছে, আল্লামা সাঈদী মুক্তি পরিষদ নামের একটি ব্যানারে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ সমাগম করে এ নাশকতা চালানো হয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বেলা ৩টা থেকে বিজিবি নেমেছে। এখানো জামায়াত-শিবির কর্মীরা জড়ো হয়ে রয়েছে বিভিন্ন স্থানে।

No comments:

Post a Comment