Friday, February 15, 2013

কক্সবাজারে চার কর্মী নিহতঃ সোমবার সারা দেশে জামায়াতের হরতাল

কক্সবাজারে চার কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সোমবার সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে কাল থেকে কক্সবাজারে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি।
বিকালে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়। আজ কক্সবাজারে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয়। জামায়াত দাবি করেছে, পুলিশের গুলিতে নিহত চারজনই তাদের কর্মী। জুম্মার নামাজের পর শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে জামায়াত শিবিরের কর্মীরা মিছিল করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশসহ শতাধিক আহত হন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সংঘর্ষের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২২জনকে গ্রেপ্তার করে।
জামায়াতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্র“টমেজরিটির জোরে ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধনের উদ্যোগ, বিরোধী দলের মিছিলে নির্বিচারে গুলি বর্ষণের প্রতিবাদ, বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল, শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ১৮ই ফেব্র“য়ারি সারাদেশে হরতাল কর্মসূচি পালন করা হবে। সরকার আগুন নিয়ে খেলছে মন্তব্য করে  মাওলানা রফিক বলেন, তারা ফ্যাসিবাদী কায়দায় জামায়াত শিবির, আলেম সমাজ ও বিরোধী দলের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিচার বিভাগের ওপর অবাঞ্ছিতভাবে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাসহ কয়েকজন রাজনীতিবিদকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। সরকারের এই জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে যাতে কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে সে জন্য জামায়াত শিবির, ওলামায়ে কেরামসহ বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে না দিয়ে তাদের মিছিলে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে শত শত লোককে আহত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের দুঃশাসনের খবর যাতে জনগণ জানতে না পারে সেজন্য সংবাদপত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতা হরণের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালের আইন ২০০৯ সালে ১ম বার সংশোধন করা হয়। ওই আইনে বিচার কাজ চলা অবস্থায় সরকারের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য দ্বিতীয় বার সংশোধন করা হয়। ওই আইনে ২টি মামলার রায় হওয়ার পরে যখন সরকার দেখল এ আইনে তাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধি হচ্ছে না তখন আবার  আইনটির তৃতীয় দফা সংশোধনের উদ্দেশ্যে সংসদে বিল আনা হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে, সরকার জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ কয়েকজন নেতাকে হত্যা করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যই বিচারের নামে প্রহসন করছে। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে শাহবাগের সমাবেশ থেকে জামায়াত শিবিরের রাজনীতিসহ ইসলামী দল নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে তাদের ধরে ধরে বিনা বিচারে হত্যা করার উস্কানীমূলক বক্তব্য দেয়ার মাধ্যমে জাতিকে ফ্যাসিবাদের দিক্ষা দিচ্ছে। সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীগণকেও ওই সমাবেশের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে, সরকার কার্যত অঘোষিতভাবে জাতির ঘাড়ে বাকশালী শাসন চাপিয়ে দিচ্ছে।

No comments:

Post a Comment