Friday, February 15, 2013

কক্সবাজারে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব, নিহত ৪ by নুপা আলম

কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির ও পুলিশের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো শতাধিক ব্যক্তি। এ ঘটনার পর শহরজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর পৌন ২টা থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত। প্রায় দুই শতাধিক জামায়াত-শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জিএম রহিমুল্লাহ দাবি করেছেন, পুলিশের গুলিতে তাদের চারজন কর্মী নিহত হয়েছে।

তারা হলেন কক্সবাজার সদরের গোদার পাড়ার করিম উল্লাহর ছেলে তোফায়েল আহমদ (২০) (তিনি হাশেমিয়া মাদ্রাসার ছাত্র), কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মোক্তার আহমদের ছেলে আবদুল্লাহ (৪৫), চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হামিদ আলীর ছেলে সালেহ আহমদ (৪০) ও নুরুল হক।

এর আগে একজন নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও তিনি গুরুতর আহত বলে জানা গেছে।

নিহতদের মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে দুইজন এবং অপর দুইজনের লাশ রয়েছে আল ফুয়াদ হাসপাতালে।

আহতদের মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পুলিশের পাঁচসদস্যসহ ২০ জন, জামায়াত পরিচালিত আল ফুয়াদ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধসহ ৪০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, শুক্রবার পৌনে ২টার দিকে কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা মসজিদ থেকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা একটি মিছিল বের করে প্রধান সড়কের পূর্ব দিকে যেতে থাকে। পুলিশও তাদের সঙ্গে এগিয়ে যায়। এর মধ্যে পূর্ব দিকে এগিয়ে শহরের তারাবনিয়ারছড়া মসজিদ থেকে আরো একটি ঝটিকা মিছিল বের করা তারা।

এতে পুলিশ দুটি মিছিলের মধ্যখানে পড়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা চালায় শিবিরকর্মীরা। এসময় সংঘর্ষ ভয়াবহ রূপ নেয়। এরই মধ্যে শহরের হাশেমিয়া মাদ্রাসা মসজিদ থেকে আরো একটি মিছিল বের হয়ে সংঘর্ষে অংশ নেয়।

মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় এবং পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একই সময় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। তারাও ওখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি করে। ফলে পরিস্থিত রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। এরপর বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির কর্মীরা জড়ো হয়ে রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আকতার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান এবং টহল জোরদার করা করা হলে জামায়াত-শিবির পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দুই শতাধিক জমায়াত-শিবির কর্মীকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশের ২০ সদস্য আহত হয়। এতে তিনি নিজেইও আহত হয়েছেন।

এদিকে, এ ঘটনার পর বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। ফলে কক্সবাজারের ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসক।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. আজাদ মিয়া বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অনিদিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

No comments:

Post a Comment