Friday, December 10, 2010

তিন দেশের নিরাপত্তা বাড়াতে গোপন পরিকল্পনা করে ন্যাটো

সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় বাল্টিক রাষ্ট্র এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থা বাড়ানোর গোপন পরিকল্পনা করে। উইকিলিকসে প্রকাশিত নথির বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকা গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এদিকে উইকিলিকসের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, জঙ্গিদের হাতে যাতে অস্ত্র না পৌঁছায়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আরব দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইরান ও সিরিয়ায় ইসলামি জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র সরবরাহে বাধা দিতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে ওয়াশিংটন।

উইকিলিকসের তথ্য অনুযায়ী, ন্যাটো রাশিয়ার ‘হুমকি’ থেকে বাল্টিক রাষ্ট্র এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াকে রক্ষায় গোপন পরিকল্পনা করে। চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির আহ্বানে ন্যাটোর সদর দপ্তর বেলজিয়ামের ব্রাসিলিয়ায় এ পরিকল্পনার খসড়া করা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ওই পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে এই পরিকল্পনা গোপন রাখা হয়। ২০০৮ সালে রাশিয়া-জর্জিয়া যুদ্ধের পর বাল্টিক তিন রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থা জোরদার করতে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র পোল্যান্ডের নিরাপত্তা বাড়ানোরও প্রস্তাব দেয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থা বাড়াতে ওই অঞ্চলের দুটি বন্দরে বিশেষ নৌসেনা মোতায়েনেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে গত মাসে অনুষ্ঠিত ন্যাটোর সম্মেলনে জোটের নেতারা খসড়া গোপন ওই পরিকল্পনার অনুমোদন দেন। লিসবন সম্মেলনেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থা এবং আরও কিছু নিরাপত্তা ইস্যুতে একমত হয় রাশিয়া ও ন্যাটো। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া-জর্জিয়া যুদ্ধের পর ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার নতুন সম্পর্কের সূচনা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের নীতি গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পোল্যান্ড ও তিন বাল্টিক রাষ্ট্র আক্রান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, পোল্যান্ডসহ ন্যাটো জোটের নয়টি ডিভিশন একসঙ্গে অভিযান চালাবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর বাল্টিক অঞ্চলে সাময়িক মহড়া চালানোর কথা রয়েছে ন্যাটোর।
এর আগে জার্মানিসহ পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার উদ্বেগের কারণে বাল্টিক অঞ্চলে ন্যাটোর ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিল।
উইকিলিকসের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, সিরিয়া লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর কাছে গোপনে অস্ত্র সরবরাহ করলে যুক্তরাষ্ট্র এর প্রতিবাদ জানায়।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘সিরিয়া আমাদের নিশ্চিত করেছে, তারা নতুন করে হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করছে না। আমরা এ ব্যাপারে সচেতন আছি।’ এএফপি, বিবিসি।

No comments:

Post a Comment