Wednesday, December 29, 2010

'সরকার অপকর্মের সমালোচনা সহ্য করছে না'

'বর্তমান সরকার অতীতের মতো অপকর্মের সমালোচনা' সহ্য করছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার। এমকে আনোয়ার বলেন, ''১৯৭২-৭৫ সালের সরকার ভিন্নমতের সমালোচনা সহ্য করতো না। আজো নির্যাতন চালিয়ে তারা সব কিছু দাবিয়ে রাখতে চায়।''

মঙ্গলবার বিকালে নয়াপল্টনে মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিন দশক উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর কৃষক দলের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বর্তমান প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে দলীয়করণের মাধ্যমে এক দলীয় শাসনে সরকার দেশ পরিচালনা করছে বলেও অভিযোগ করেন এমকে আনোয়ার।

বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থাকে সংকটজনক অভিহিত করে তিনি বলেন, "দেশে কোনো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নেই। ভারতীয় ব্যাংকের দেওয়া ঋণের প্রকল্প অনুমোদন করতে হবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে দেশকে সরকার অকার্যকর করে ফেলেছে।"

সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ বহুদল ও গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগে থাকলে রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায়।" উচ্চতর আদালতে জামিন আদেশ সরকারের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্থগিত করে রাখছে অভিযোগ তুলে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে আনোয়ার বলেন, "প্রধান বিচারপতি নিজেই বলেছেন, কেউ বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। তাহলে আপনার অথবা হাইকোর্টের জামিন আদেশ কিভাবে অ্যার্টনি জেনারেল আটকিয়ে রাখেন তা আমরা জানতে চাই।"

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ সাংসদ বলেন, "রাজনেতিক বিবেচনার নামে সরকার ছয় হাজার সাতশ মামলা প্রত্যাহার করে বিচার বিভাগের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এসব মামলায় দেড় লাখ দাগী আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মুক্তির ফলে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি, খুন ও ধর্ষণ বেড়েছে।" রাষ্ট্রপতি বির্তকিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নাটোরের ২০ ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করে দেওয়া আইনসম্মত হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, "ওই আসামিরা মুক্তি পেয়ে নাটোরের উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবুকে হত্যা করেছে।"

সভাপতির বক্তব্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "টিআইবি প্রতিবেদনে দেশে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছেÑ প্রকাশ হওয়ার পর তাদের ওপরও সরকারের মন্ত্রীরা বিষোদ্গার করছেন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের মতো গর্বিত ব্যক্তিকেও তারা প্রশ্নের মুখে ফেলে বির্তকিত করছেন।"

আলোচনা সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য শামসুজ্জামান দুদু, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শরফত আলী সপু, ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এ্যাব'র সদস্য সজিব হাসান জাফির তুহিন প্র্রমুখ বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক প্রতিমন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী, সাংসদ শাম্মী আখতার, মহিলা দলের সভাপতি নুরে আরা সাফা, কৃষক দলের সহসভাপতি এমএ তাহের, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, সহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন মো. জসিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment