Wednesday, December 29, 2010

চিঠিকে স্বাগত জানিয়েছে টিআইবি। আজই তথ্য উপাত্ত পাঠাবেঃ টিআইবির প্রতিবেদনের তথ্য উপাত্ত চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাম্প্রতিক জরিপের প্রতিবেদন ও তথ্য-উপাত্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পত্রবাহকের মাধ্যমে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয়।

সূত্র জানায়, ডেপুটি রেজিস্ট্রার বদরুল আলম ভুঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘২৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন দৈনিকে বিচার বিভাগের দুর্নীতি-সংক্রান্ত সংবাদ আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। প্রতিবেদনের অনুলিপি ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র প্রেরণ করে বাধিত করবেন। যেসব তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, তা সরবরাহ করে সহযোগিতা করুন। অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তথ্য-উপাত্ত চেয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বরাবর এই চিঠি পাঠানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার বদরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, টিআইবির প্রতিবেদন ও তথ্য-উপাত্ত চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য চিঠিতে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠি ইতিবাচক। এটাকে স্বাগত জানাই।’ টিআইবির প্রতিবেদন ও তথ্য-উপাত্ত আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। তিনি বলেন, প্রতিবেদনের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে চিঠি পাঠানো উৎসাহব্যঞ্জক।
টিআইবির প্রতিবেদন: টিআইবি ২৩ ডিসেম্বর সেবা খাতে দুর্নীতিসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলেছে, দেশের ১৩টি সেবা খাতের মধ্যে বিচার বিভাগে গিয়ে সবচেয়ে বেশি হয়রানি, অনিয়ম, ঘুষ দেওয়া তথা দুর্নীতির শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। ২০০৯-১০ সালে বিচারপ্রার্থীদের ৮৮ শতাংশ শুনানির সময় নির্ধারণ থেকে শুরু করে নথিপত্র গায়েব, উৎকোচ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের শিকার হয়েছে। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত—বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরে ঘুষের দৃষ্টান্ত থাকলেও জরিপের শীর্ষে রয়েছেন উচ্চ আদালত।
২০০৯ সালের ৯ জুন থেকে এ বছরের ২০ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিভাগীয় শহর ও গ্রামাঞ্চলের ছয় হাজার খানার (পরিবার) ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০১০’ প্রকাশ করা হয়।
টিআইবি বলছে, ২০০৭ সালের খানা জরিপে ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবার বিচার বিভাগের দুর্নীতির শিকার হয়েছিল। কিন্তু এ দফায় তা বেড়েছে। জরিপে অংশ নেওয়াদের শতকরা ১০ দশমিক ৯ শতাংশ বিচার বিভাগ থেকে সেবা নিয়েছে। তাদের ৮৮ শতাংশ দুর্নীতির শিকার হয়েছে।
টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জুন ২০০৯ থেকে মে ২০১০ পর্যন্ত যারা বিচার বিভাগের শরণাপন্ন হয়েছে, তাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ মানুষ ঘুষ ও অনিয়মের শিকার। ২০০৭ সালের তুলনায় এই হার অনেক বেশি। তিন বছর আগে পরিচালিত ওই জরিপে ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ ঘুষ ও অনিয়মের শিকার হয়।

No comments:

Post a Comment