Tuesday, January 04, 2011

'প্রকৃত' যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সমর্থন দেবে বিএনপি

বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেছেন, 'প্রকৃত' যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিএনপিও চায়। তাদের বিচার করা হলে সরকারকে সমর্থন দেবে দলটি। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন যে, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে, ডানে-বাঁয়ে যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত ৪৩ জন শিক্ষক সোমবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে খালেদার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, সরকার প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে যারা সরকারের সমালোচনা করছে বা বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাদেরকে যুদ্ধাপরাধী কিংবা জঙ্গি বলে গ্রেপ্তার করছে। তা দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আওয়ামী লীগে থাকলে রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায়।

তিনি বলেন, "আমরাও প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই। কিন্তু কারা ওই সময় প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে ক্ষমা করেছিল? সত্যিকার যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে আসুন, আমরা ওদের বিচারে সরকারকে সমর্থন জানাব।'' বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব ) এর সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারি অধ্যাপকসহ ৪৩ জন শিক্ষক-চিকিৎসক রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

স¤প্রতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের এসব শিক্ষক-চিকিৎসককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ সময় চাকরিচ্যুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মতিউর রহমান মোল্লা, অধ্যাপক শাহিদা আখতার, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির, অধ্যাপক নাসিমা আখতার জাহান, অধ্যাপক আবুল কাশেমসহ ১৩ জন অধ্যাপক, ১০ জন সহযোগী অধ্যাপক, ১৫ জন সহকারি অধ্যাপক ও পাঁচজন চিকিৎসক ছিলেন।

দুই বছরে মহাজোট সরকারের কোনো 'সফলতা' নেই বলে দাবি করেন বিরোধী দলীয় নেতা। তিনি বলেন, "দেশের মানুষ আর এই ব্যর্থ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তাই আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।''

স¤প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতির ঘটনার নিন্দা জানান খালেদা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার এভাবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যোগ্য ব্যক্তিদের চাকুরিচ্যুত করে নিজেদের অনুগতদের অবৈধভাবে নিয়োগ দিচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে অবশ্যই ওইসব নিয়োগ বাতিল করা হবে।

সেইসঙ্গে খালেদা আশ্বাস দেন যে, বর্তমান সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত চিকিৎসকদের পুনর্বহালসহ মূল্যায়ন করা হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের সব প্রতিষ্ঠান থেকে যোগ্য কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে দলীয় অযোগ্য ব্যক্তিদের উচ্চ পদে বসাচ্ছে। ফলে সব কিছুই স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ একটি অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, "অঘোষিত বাকশালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। তিনি (হাসিনা) কেবল সরকার প্রধানই নন, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও পুলিশের আইজির দায়িত্বও পালন করছেন। এক ব্যক্তিই রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন। আদালতও নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি।''

এ সময় অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস, ড্যাব সভাপতি এ কে এম আজিজুল হক, মহাসচিব এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মাযহারুল ইসলাম দোলনসহ ড্যাব নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment