Tuesday, January 04, 2011

ফুলকোর্ট সভায় বিচারপতিরাঃ বাংলাদেশের সংসদ সার্বভৌম নয়

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা মনে করেন, বাংলাদেশের সংসদ সার্বভৌম নয়। তাই সংসদীয় কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে সুপ্রিম কোর্ট বাধ্য নয়। সোমবার বিকালে সুপ্রিম কোর্টের সম্মেলন কক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের ফুলকোর্ট সভায় বিচারপতিরা এ মত প্রকাশ করেন।

দুই বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ওই সভা করেন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। সভায় উপস্থিত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সুপ্রিম কোর্টের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে সংসদীয় কমিটির তলব করার ঘটনাকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পরিপন্থী হিসেবে অভিহিত করা হয় সভায়। গত ২০ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানান, সংসদীয় কমিটি চাইলে যেকোনো সরকারি চাকরিজীবীকে কমিটির সামনে হাজির হতে হবেÑ এমন একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।

কমিটির সভা শেষে সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "কমিটির আগামী বৈঠকে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে খসড়া আইন উপস্থাপন করবে।" এর পরদিন (২১ ডিসেম্বর) কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচার বিভাগ কার কাছে জবাবদিহি করবে সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।

সুপ্রিম কোর্টের সোমবারের ফুলকোট সভায়র্ চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠন প্রসঙ্গে বলা হয়, সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্ত নেবে না সুপ্রিম কোর্ট। এ বেঞ্চ গঠনে গতবছর আশা প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় বলা হয়, "সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট সার্কিট বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্ত নেবে না। সুপ্রিম কোর্ট যদি মনে করে সার্কিট বেঞ্চ গঠন প্রয়োজন তাহলে তারা নিজেরাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।"

সংসদের কাছে সুপ্রিম কোর্টের জবাবদিহিতার বিষয়ে সভায় বলা হয়, "বাংলাদেশের সংসদ সার্বভৌম নয়। যুক্তরাজ্যের সংসদ সার্বভৌম হলেও বিচারপতিদের জবাবদিহিতার জন্য কখনো ডাকেনি।" এছাড়া বিচার বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবি'র প্রতিবেদন এবং এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি উপস্থিত বিচারপতিদের অবহিত করেন।

সভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সম্পদের হিসাব দেওয়ারও আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি গত ৩০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে তার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতি তাদের সম্পদের হিসাব দিলে স্বচ্ছতা বাড়বে।"

No comments:

Post a Comment